সবকিছু মিলিয়ে মনে হয় খুলনা শহর শুধুই তুহিন’র

291
Spread the love


মিলি রহমান।।
খুলনা-২ আসনের সম্ভাব্য ধানের শীষের কান্ডারী মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম তুহিন নেতাকর্মীদের সম্মানে ডিনারের আয়োজন করে প্রশংসায় ভাসছেন। ঈদ উল আযহার দ্বিতীয় দিন গত রাতে হাজার হাজার নেতাকর্মীদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে নগরীর বসুপাড়া এলাকায় তুহিনের বাসভবনে। এদিকে খুলনা সদর আসনে বিএনপির প্রার্থী, সাবেক জনপ্রিয় ছাত্রদল ও যুবদল নেতা, রাজপথের ত্যাগী এবং কর্মীবান্ধব নেতা শফিকুল আলম তুহিনের প্যানা ও বিলবোর্ডে ভরে গেছে গোটা শহর। রাস্তায় বের হলেই চোখে পড়ে নানা রঙের প্যানা বিলবোর্ড। সবকিছু মিলিয়ে মনে হয় খুলনা শহর শুধুই তুহিনের।


প্রথমে মহানগর শাখার সদস্য সচিব, পরে কাউন্সিল করে নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক হওয়ার মধ্য দিয়ে তুহিন দলে নিজের অবস্থান সুদৃঢ় করেছেন। হেভিওয়েট প্রার্থী হিসাবে খুলনা- ২ (সদর-সোনাডাঙ্গা) আসনে তুহিন এখন রীতিমতো ফ্যাক্টর। নেতা-কর্মীদের সুখে দুখে তুহিনকে সব সময়েই পায় এটা দলের মধ্যে ওপেন সিক্রেট। পাশাপাশি দিন রাত চব্বিশ ঘন্টা তুহিনের বাসার দরজা নেতা-কর্মীদের জন্য খোলা থাকছে। তুহিনের স্ত্রী সাবেক ছাত্রদল নেত্রি লাকি নিজেও মানবিক গুণের অধিকারী। দলের অধিকাংশ নেতা-কর্মীই লাকি আপার পরিচিত। যার কারণে নেতা-কর্মীরা তুহিনের বাসায় গেলে লাকি আপার আতিথেয়তা কিংবা সাহচর্য পেয়ে যথেষ্ট কমফোর্ট ফিল করে থাকে।


১৯৮৩ সালে বানিয়াখামার মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি, ১৯৮৫ সালে আযমখান কমার্স কলেজ থেকে এইচএসসি, ১৯৮৭ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও ১৯৮৯ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেয়া তুহিন বসুপাড়া “বন্ধন” নিবাসে বেড়ে উঠা ৬ ভাই ৪ বোনের মধ্যে ৮ম। ১৯৮৭ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি ছাত্রদল নেত্রী লাকিকে বিয়ে করেন। স্ত্রী লাকি একজন কলেজ শিক্ষিকা।

দুই পুত্র সন্তানের জনক তুহিন ছোট্ট বেলা থেকেই ফুটবলের পাগল ছিলেন। প্রিয়দল মোহামেডানের সমর্থক তুহিন। প্রিয় রং আকাশী হওয়ায় আকাশের মত বিশাল হৃদয়ের পুরোটাই জুড়ে আছে নেতাকর্মীদের জন্য অফুরান্ত ভালোবাসা।


১৯৮৩ সালে ছাত্রদলের কর্মী হিসেবে রাজনৈতিক জীবনে পদার্পন করেন শফিকুল আলম তুহিন। ১৯৮৪ সালে কমার্স কলেজ ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৮৬ সালে কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক। ১৯৮৬ সালে মহানগর ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত তুহিন স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে রাজপথে সাহসী ভূমিকা রাখেন। সাহসী ভূমিকা রাখার কারনে ১৯৯৩ সালে মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি নির্বাচিত হয়ে খুলনা মহানগর ছাত্রদলকে সুসংগঠিত করেন। এরপর আর তাকে ফিছু ফিরে তাকাতে হয়নি। পরবর্তীতে যুবদলের সভাপতি নির্বাচিত হন। ২০২১সালে মহানগর বিএনপির সদস্য সচিবের দায়িত্ব পান তিনি। সেদস্য সচিবের দায়িত্ব পাওয়ার পরে মহানগরীর ৩১টি ওয়ার্ড ও ৩টি ইউনিয়নের প্রথমে ভোটের মাধ্যমে আহবায়ক কমিটি। পরে আবারো ভোটের মাধ্যমে পুর্নাঙ্গ কমিটি করে সারাদেশে আলোচনায় আসেন। চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি দীর্ঘ ১৬ বছর পর খুলনা মহানগর বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনের মাধ্যমে তুহিন সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ওইদিন সকাল সাড়ে ১০ টায় খুলনার সার্কিট হাউজ মাঠে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য আমানউল্লাহ আমান। সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসাবে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান । ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তার বক্তব্যে তুহিনের রাজনৈতিক দক্ষতা নিয়ে ভূয়সী প্রশংসা করেন। পতিত হাসিনা সরকার বিরোধী আন্দোলনে শতাধিক মামলার আসামী ছিলেন। কারাবরণ ছিলো তার নিত্য দিনের সঙ্গী।


দলীয় সূত্রে জানা গেছে, এর আগে ২০০৯ সালের ২৫নভেম্বর খুলনা মহানগর বিএনপির সর্বশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। গেলো রোজার মাসে তুহিন খুলনা- ২ আসনের অন্তর্ভুক্ত সকল ওয়ার্ডে ইফতার মাহফিলে যেমন যোগ দিয়েছিলেন তেমনি প্রতিটি ইফতার মাহফিলে তুহিন নিজ থেকে পর্যাপ্ত সাহায্য সহযোগিতা করে দলের নেতা-কর্মীদের কাছে প্রশংসিত হয়েছিলেন। নিজেকে ইতিমধ্যে কর্মীবান্ধব নেতা হিসেবে প্রমান করেছেন। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শের সৈনিক হিসেবে রাজপথেই চার দশক সময় পার করেছেন তুহিন।


মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক, ছাত্রদল ও যুবদলের সাবেক নেতা তুহিন বলেন, খুলনার মাটি বিএনপির ঘাটি। ইনশাআল্লাহ আগামীতে খুলনা শহরের দুটি আসনেই বিএনপি প্রার্থী জয়লাভ করবে। গত ১৭ বছরে দলের পরে অনেক ঝড় ঝঞ্জা বয়ে গেছে। তারপরেও দলের পরিধি বেড়েছে। নেতা-কর্মীর সংখ্যা বেড়েছে। গুটি কয়েক নেতা দল ছেড়ে গেছেন। তাতে দলের বিন্দুমাত্র ক্ষতি হয়নি। আপন গতিতে হাজার হাজার নেতা-কর্মীর সিক্ত ভালবাসায় দল চলছে।


তিনি আরো বলেন, সম্মেলনের আগে নগরের প্রতিটি ওয়ার্ডে বিভিন্ন পেশার জনগনকে দলে সম্পৃক্ত করতে সব বয়সী পেশার লোকজনের উপস্থিতিতে সুধি সমাবেশ করা হয়েছে। নগরবাসীর আস্থা শ্রদ্ধেয় নেত্রী, গনতন্ত্রের আপোষহীন নেত্রি বেগম জিয়া- দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দিকেই রয়েছে। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে রাষ্ট্র কাঠামো বিনির্মাণে ৩১ দফা ঘরে ঘরে পৌছানো হয়েছে। দলের শত শত নারী কর্মী দলের জন্য সবসময়ে কাজ করছে। তারা ভোটের জন্য, আগামীতে ধানের শীষের জয়ের জন্য কাজ করছে।

সম্মেলনের আগে অন্তত ৫০ হাজার নতুন সদস্য ফরম পুরন করে শুভাকাঙ্ক্ষী হিসাবে দলে নাম লিখিয়েছেন। একজন এমপিকে জনগন সার্বক্ষণিক কাছে পেতে চায়। এমপি হওয়া মানে জনগনের জন্য- সবসময় নিজেকে আত্মনিয়োগ করা। খুলনাবাসীর জন্য আমার দরজা সবসময়ের জন্য খোলা থাকবে বললেন দিন রাত মিলিয়ে ষোল থেকে আঠারো ঘন্টা কাজ করা, রাজপথ থেকে উঠে আসা আপাদমস্তক কর্মীবান্ধব এই নেতা।