শরণখোলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি
ঘুর্ণিঝড় সিডরের ১৩ বছরেও শরণখোলা বাসীর প্রাণের দাবী টেকসই বেরীবাধ নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায় এলাকাবাসীর মাঝে আজও আতংক বিরাজ করছে। শরণখোলাবাসী দোয়া মাহফিল সহ ১৫ নভেম্বর সিডর দিবস পালন করবে অজানা আতংক নিয়ে। ৩ বছর মেয়াদের এ বেরিবাঁধ প্রকল্প ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত আরো এক বছর বৃদ্ধি করে কাজের মেয়াদ ৩ দফা বাড়ানো হয়েছে। মেগা বাজেটের বেরিবাঁধে নদী শাসনের ব্যবস্থা না থাকায় নির্মীয়মাণ বাঁধ নদীতে বিলীনের আশংকা সাধারণ মানুষের।
বগী গ্রামের বীরমুক্তিযোদ্ধা রুস্তুম আলী বলেন, বলেশ্বর নদে ওয়াপদা বেরিঁবাধ ভেঙ্গে যাওয়ায় ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হলে আমরা আতংকে থাকি। সিডরের ১৩ বছরেও টেকসই বেরিঁবাধ নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায় তিনি হতাশা প্রকাশ করেন। সাউথখালী ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন বলেন, নদী শাসন ছাড়া বেরীবাঁধ নির্মিত হলে তা পানিতে ভেসে যাবে জনগণের কোন কাজে আসবে না। ইতোমধ্যে সাউথখালীর গাবতলা ও বগী এলাকায় নতুন ওয়াপদা বেরীবাঁধ নির্মাণের স্থানে আকস্মিকভাবে কয়েকদফা শত শত মিটার এলাকা জুড়ে সিসি ব্লকসহ বেরীবাঁধ বলেশ্বর নদীতে বিলীন হয়েছে। এতে মানুষের মধ্যে আতংক ছড়িয়েছে এবং নদী শাসনের বিষয়টি খুবই জোড়ালো হয়ে উঠেছে। নদী শাসনের কাজ দ্রুত শুরু করার জন্য তিনি সরকারের প্রতি জোর দাবী জানান।
এ ব্যপারে উপকূলীয় বেরিবাঁধ উন্নয়ন প্রকল্পের (সি.ই.আই.পি) খুলনার নির্বাহী প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) আশরাফুল আলম মুঠোফোনে বলেন, বগী এলাকায় বলেশ্বর নদীর ভাঙ্গনের তীব্রতায় নতুন করে ডিজাইন ও জমি অধিগ্রহনের জন্য প্রকল্পের কাজের মেয়াদ ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত আরো এক বছর বাড়ানো হয়েছে। তিনি আরো বলেন, বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে ৩’শ কোটি টাকা ব্যায়ে সি.এইচ.ডব্লিউ.ই নামে চাইনিজ একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ২০১৬ সালের ২৬ জানুয়ারী থেকে ৩৫/১ পোল্ডারের ৬৩.২ কিলোমিটার দীর্ঘ বেরিবাঁধ নির্মাণের কাজ করছে। কাজ শুরুর তিন বছরে ৩৫/১ পোল্ডারে ৮০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলে তিনি জানান।
২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় সিডরের সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে শরণখোলা উপজেলায় ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। শরণখোলায় সহ¯্রাধিক মানুষের প্রানহানী ঘটে। হাজার হাজার বাড়িঘর ও গাছ পালা বিধস্ত হয়। ধসে যায় মাইলের পর মাইল ওয়াপদা বেরিঁবাধ। পরবর্তীতে উপজেলাবাসীর পক্ষ থেকে আধুনিক, টেকসই ও উঁচু বেরিবাঁধ নির্মাণের দাবী ওঠে। এদাবীর বাস্তবতা উপলদ্ধি করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শরণখোলা মোড়েলগঞ্জ বাসীকে দুর্যোগের হাত থেকে রক্ষা করতে একটি উঁচু ও টেকসই বেরিবাঁধ নির্মাণের নির্দেশ দেন যা আজও শেষ হয়নি।