সবার দাবি-দাওয়া নিয়ে একসঙ্গে সংস্কার কার্যক্রম চালাতে চাই

6
Spread the love

ঢাকা অফিস।।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, এতটুকু বার্তা সবার কাছে পৌঁছে দিতে চাই যে, আমরা সমাজের সব শ্রেণি-পেশার মানুষের দাবি-দাওয়া নিয়ে একসঙ্গে সংস্কার কার্যক্রম চালাতে চাই। হতে পারে বিভিন্ন মানুষের কাছে বিভিন্ন বিষয় গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু আমরা চাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশকে সামনে নিয়ে যেতে।


ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপি আয়োজিত রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তিবিষয়ক দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালায় গতকাল ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তারেক রহমান এসব কথা বলেন। একই দিন একই বিষয়ে পঞ্চগড় ও দিনাজপুর জেলা বিএনপি আয়োজিত কর্মশালায়ও বক্তব্য দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।

ঠাকুরগাঁওয়ের কর্মশালায় তারেক রহমান বলেন, আমাদের মাঝে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মতপার্থক্য থাকতেই পারে। গণতন্ত্রে মতপার্থক্য থাকবে- এটিই স্বাভাবিক। আমরা বসব, আমরা আলোচনা করব এবং সামনে এগিয়ে নিয়ে যাব। কোনোভাবেই যেন গণতন্ত্রের উত্তরণ, মানুষের ভোটের অধিকার এবং রাজনৈতিক অধিকার বাধাগ্রস্ত না হয়। কারণ মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার এবং রাজনৈতিক অধিকার যদি বাধাগ্রস্ত হয়, তাহলে সবকিছু ধ্বংস হয়ে যাবে। সবকিছুই বাধাগ্রস্ত হবে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, বিগত ১৫ বছর জনগণের রাজনৈতিক অধিকার বা ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছিল এবং ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছিল। তার ফলে আমরা কি দেখেছি? দেশের বিচারব্যবস্থা ধ্বংস হয়েছে, দেশের অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস হয়েছে। সমাজের বিভিন্ন ধরনের অধপতন শুরু হয়েছে। অর্থাৎ প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে প্রভাব পড়েছে। ব্যাপারটি অনেকটা ডায়াবেটিস রোগীর মতো। তিনি বলেন, আমরা যেমন ৩১ দফা পালন করব, ৩১ দফার বাস্তবায়নও করব সুযোগ পেলে। একইভাবে আমরা যেই সংগ্রামে রাজপথে নেমে এসেছিলাম, বিগত ১৫ বছরে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার। এ সংগ্রামের জন্য আমাদের বহু নেতাকর্মী গুম-খুনের শিকার হয়েছেন, বহু নেতাকর্মী পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। তাদের এই বলিদান কোনোভাবেই বৃথা হতে দেওয়া যাবে না।

তারেক রহমান বলেন, পৃথিবীর কোনো দেশেই যুদ্ধ না হলে শিশু হত্যা হয় না। কিন্তু জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে আমরা দেখেছি, সেই পলাতক স্বৈরাচারের নির্বিচার অত্যাচারের কারণে এ দেশের একশরও বেশি শিশুকে হত্যা করা হয়েছে। এসব শিশুর কোনো অপরাধ ছিল না।

‘দেশে ভালো কাজগুলোর ৭০ শতাংশ বিএনপি করেছে’

পঞ্চগড়ের কর্মশালায় তারেক রহমান বলেন, দেশের ভালো কাজগুলোর ৭০ শতাংশই করেছে বিএনপি। এটি কাগজ-কলমের হিসাব। সে জন্যই দেশের মানুষ আস্থা রাখে বিএনপির ওপর।

পঞ্চগড় পৌর মাঠে আয়োজিত এ কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাহেরুল ইসলাম কাচ্চু। এতে উপস্থিত ছিলেন তারেক রহমানের উপদেষ্টা ড. মাহাদি আমিন, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির পল্লী উন্নয়নবিষয়ক সম্পাদক ও পঞ্চগড় জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ফরহাদ হোসেন আজাদ, ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান মিন্টু, সাবেক এমপি রেহেনা আক্তার বানুসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।

‘নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ ভোটব্যবস্থায় জবাবদিহিতা বৃদ্ধি পাবে’

দিনাজপুরে আয়োজিত কর্মশালায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ ভোটব্যবস্থা যখন তৈরি হবে, তখন স্বয়ংক্রিয়ভাবে জবাবদিহিতাও বৃদ্ধি পাবে। মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে হলে নির্বাচন তথা ভোটাধিকারের ব্যবস্থা করতে হবে। নির্বাচনব্যবস্থাকে যত বেশি শক্তিশালী ও চালু রাখতে পারব, তত বেশি জবাবদিহিতা বৃদ্ধি পাবে। তিনি আরও বলেন, গত ১৫ বছর দেশে জবাবদিহিতা ছিল না বলেই এত লুটপাট ও দুঃশাসন হয়েছে।

নাজমা গার্ডেনে আয়োজিত এ কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট মোফাজ্জল হোসেন দুলাল। প্রধান আলোচক ছিলেন বিএনপির মিডিয়া সেলের প্রধান অধ্যাপক ডা. মওদুদ আহমেদ। এ ছাড়া আলোচনা করেন অধ্যাপক মোরশেদ খান, মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা, ফারজানা শারমিন পুতুল, মো. আবদুস সাত্তার পাটোয়ারী ও ফজলুর রহমান খোকন প্রমুখ।