বেনাপোলে তীব্র গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন, জনশূন্য রাস্তাঘাট

5
Spread the love


বেনাপোল প্রতিনিধি।।
তীব্র রোদ আর প্রচণ্ড গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে জনজীবন। বৃষ্টিপাত না হওয়ায় গরমের মাত্রা সহ্যের সীমা
ছাড়িয়ে যাচ্ছে।দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল জেলা শহর যশোরে বইছে ৪২ বা তদূর্ধ্ব ডিগ্রি সেলসিয়াস
তাপমাত্রা। তীব্র গরমের রেশ পড়েছে জেলার ব্যস্ততম বন্দর নগরী বেনাপোলে। অতি তীব্র গরমে জনশূন্য
হয়ে পড়েছে বন্দরসহ বেনাপোল এবং শার্শার রাস্তাঘাট। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছে না কেউ।
তীব্র গরমে বেশি দুর্ভোগে পড়েছে খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষ। সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন শিশু ও বৃদ্ধরা।
রাস্তায় রিকশা-ইজিবাইক, ঠেলাগাড়ি, ভ্যানরিকশা নিয়ে যারা বের হয়েছেন, তারা ঘেমে একাকার হয়ে উঠেছেন।
রাস্তার তাপে যেনো পুড়ে যাচ্ছেন ফুটপাথের ব্যবসায়ীরা। একটু স্বস্তি পেতে গাছের ছায়াতলে আশ্রয় নিচ্ছেন
অনেকেই।
যশোর বিমানবন্দর মতিউর রহমান ঘাঁটিস্থ আবহাওয়া অফিস সূত্র জানা গেছে, গত কয়েকদিনে তাপমাত্রা
রেকর্ড করা হয়েছে ৪০ থেকে ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপমাত্রা
আরও বাড়তে পারে বলে আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) বেলা ১২টার দিকে বেনাপোল-যশোর মহাসড়কের বেনাপোল ও শার্শায় এ দৃশ্য
চোখে পড়ে।
শুক্র ও শনিবার ব্যতীত প্রতিদিনই তীব্র যানজট লেগে থাকে বেনাপোল বন্দরসহ বেনাপোল শহরজুড়ে।
অথচ তীব্র তাপদাহের কারনে জনশূন্য হয়ে পড়েছে রাস্তাঘাট।মানুষের উপস্থিতি যেমন
কম,তেমনি যানবাহনের উপস্থিতিও নগণ্য। সড়কে নেই যানবাহনের উপস্থিতি।
দু-একটা ইজিবাইক দেখা গেলেও যাত্রীর অপেক্ষায় মোড়ে মোড়ে বসে থাকতে দেখা গেছে চালকদেরকে।
শার্শা এলাকার ভ্যানচালক ইমরান হোসেন বলেন, তীব্র রোদ আর প্রচণ্ড গরমে রাস্তায় ভ্যান চালানো যাচ্ছে
না। গরমে মাথা পুড়ে যাচ্ছে। প্রচন্ড রোদের দাপটে বন্দর এলাকার লোকজন বাইরে কম বের হচ্ছে। এতে করে
আয় রোজগার কমেছে। প্রতিদিন ভ্যান মালিককে ১৫০ টাকা, নিজের দুপুরের খাবার, চা নাস্তার
খরচ মিলিয়ে আগে ৩৫০ টাকা আয় করতে হবে। এরপর সংসার খরচের হিসাব। এই গরমে না পেরে ভ্যান নিয়ে ছায়া
য় বসে আছি।
বেনাপোল এলাকার ইজিবাইক চালক মাসুম হাসান বলেন, গরমে জামা কাপড় সব ভিজে যাচ্ছে। সকালে গরম একটু
কম থাকলেও দুপুরের পর অসহ্য গরম লাগে। বাইরে বের হওয়া যায় না। যাত্রীও পাওয়া যাচ্ছে কম। কিছু কিছু
জায়গায় রাস্তার পিচ গলে গাড়ির টায়ারের সাথে উঠে আসছে।

পথচারী রেজাউল ইসলাম  বলেন, বাসায় অসুস্থ রোগী তাই বাড়ি থেকে ওষুধ কিনতে বের হয়েছি।
রাস্তায় মোটরসাইকেল রেখে দুই মিনিটের জন্য ফার্মেসিতে এসেছি। এখন মোটরসাইকেলের ওপর বসা 
যাচ্ছে না। রোদে পুড়ে যাচ্ছি।
ছোট আঁচড়া গ্রামের বাসিন্দা তুহিন হোসেন বলেন, বাজার করতে হবে এজন্য বের হয়েছি। তাছাড়া এই গরমে বাড়ি
থেকে বের হতাম না। বাড়ি থেকে বেনাপোল কাঁচা বাজারে আসতে অনেক কষ্ট হয়েছে রোদে শরীর যেন পুড়ে গেছে।
শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডা. লঙ্কীন্দার কুমার দে বলেন, তীব্র গরমে হিটস্ট্রোক এড়াতে
সবাইকে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এ সময়ে ডায়রিয়া, ইনফ্লুয়েঞ্জা, সর্দি-
কাশি, পক্স, হিটস্ট্রোক, স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক ইত্যাদি হতে পারে।
তিনি আরও বলেন,  এই  গরমে  ফ্রিজের পানি পান করা থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।  প্রচুর পানি, ডাবের পানি,
দেশি ফলমূল খাওয়া পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের না হতে বলা হচ্ছে।