স্টাফ রিপোর্টার
দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলসহ সারাদেশে ৭২ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘট ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক শ্রমিক সমন্বয় পরিষদ। সড়ক পরিবহন আইন সংশোধনসহ আট দফা দাবিতে আগামী ১২ আগস্ট সকাল ৬টা থেকে ১৫ আগস্ট সকাল ৬টা পর্যন্ত ৭২ ঘণ্টা এ পরিবহন ধর্মঘট কর্মসূচি পালিত হবে।
বাংলাদেশ পরিবহন সংস্থা শ্রমিক ইউনিয়ন কার্যালয়ে এক সভা শেষে এ ঘোষণা দেয়া হয়। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির মহাসচিব সাইফুল আলম এ ঘোষণা দেন।
সভায় খুলনা, বরিশাল বিভাগ ও বৃহত্তর ফরিদপুর অঞ্চলের পরিবহন মালিক ও শ্রমিক নেতারা উপস্থিত ছিলেন। সভায় উল্লেখ করা হয়, সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ একটি কালো আইন। এ আইনের ৯৮ ও ১০৫ নং ধারাসহ অন্যান্য আমাদের সুপারিশকৃত ধারাগুলি সংশোধন করতে হবে।
বাণিজ্যিক মোটরযানের ইকোনমিক লাইফ ২০ ও ২৫ বছর থেকে বৃদ্ধি করে ৩০ বছর পর্যন্ত বিবেচনা করতে হবে। বাজেটে বাণিজ্যিকভাবে চলাচলকারী যানবাহনের উপর আরোপিত দ্বিগুণ অগ্রিম ট্যাক্স কমিয়ে আগের মতো বহাল রাখতে হবে।মেয়াদ উত্তীর্ণ যানবাহন রাস্তা থেকে সরানোর জন্য সহায়ক হিসেবে বাণিজ্যিক রিকন্ডিশন যানবাহন আমদানির মেয়াদ ৫ বছর থেকে বৃদ্ধি করে ১২ বছর করতে হবে। দুর্ঘটনা কবলিত গাড়ি থানায় আটক হলে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে মালিকের জিম্মায় দেয়ার বিধান কার্যকর করতে হবে। মেয়াদ উত্তীর্ণ পুরাতন যানবাহনের জন্য স্ক্র্যাপ নীতিমালা তৈরি করতে হবে।
মহাসড়কে তিন চাকার যানবাহন (অটো-টেম্পু, অটোরিকশা)সহ বিআরটিএ, কর্তৃক অ-অনুমোদনবিহীন হালকা যানবাহনের পৃথক লেনে চলাচলের ব্যবস্থা করতে হবে। এছাড়া ড্রাইভিং লাইসেন্স ও নবায়ন দ্রুততার সঙ্গে ডেলিভারি দিতে হবে এবং শ্রমিক ফেডারেশনের ১২ দফা দাবি বাস্তবায়ন করতে হবে।
সংগঠনের খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের খুলনা বিভাগের সভাপতি আনিসুর রহমান লিটনের সভাপতিত্বে সভায় বাংলাদেশ পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি আব্দুর রহিম বক্স দুদু, মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ বরিশাল বিভাগের সাধারণ সম্পাদক ইউসুফ আলী বক্তব্য দেন। অপরদিকে একই দাবিতে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান রমেশ চন্দ্র ঘোষ, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির খানসহ সংগঠনের অন্যান্য নেতারা সারাদেশে স্বতঃস্ফূর্তভাবে সকল বাণিজ্যিক পরিবহন ধর্মঘট সফল করতে সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহবান জানান।
নেতৃবৃন্দ দেশের সকল সাধারণ যাত্রীদের প্রতি আহবান জানান নিরাপদ সড়ক ও যাত্রীদের নিরাপদে সঠিক গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য এই দাবির প্রতিও তাদের সহযোগিতা ও সমর্থন আশা করেন।
পরিবহন মালিকদের ৮ দফা দাবি। ১. সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ এর ৯৮ ও ১০৫ ধারাসহ সুপারিশকৃত অন্যান্য ধারা সংশোধন। ২. বাণিজ্যিক মোটরযানের ইকোনমিক লাইফ ২০ ও ২৫ বছর থেকে বৃদ্ধি করে ৩০ বছর করা এবং সমস্যা সমাধান না হওয়া পর্যন্ত পুরাতন গাড়ির বিরুদ্ধে বিআরটিএর অভিযান স্থগিত। ৩. বাজেটে দ্বিগুণ অগ্রিম আয়কর (প্রিজাম্পটিভ ইনকাম ট্যাক্স) কমিয়ে আগের মতো বহাল রাখা। ৪. মেয়াদোত্তীর্ণ যানবাহন সরানোর জন্য রিকন্ডিশনড যানবাহন (বাস, ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান, প্রাইম মুভার) আমদানির সময়সীমা ৫ বছর থেকে বাড়িয়ে ১২ বছর করা। ৫. দুর্ঘটনাকবলিত গাড়ি থানায় আটক হলে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে মালিকের জিম্মায় দেওয়ার বিধান করা। ৬. মেয়াদোত্তীর্ণ যানবাহনের জন্য স্ক্র্যাপ নীতিমালা প্রণয়ন। ৭. মহাসড়কে তিন চাকার যান (অটো-টেম্পো, অটোরিকশা) ও অনুমোদনহীন হালকা যানবাহনের পৃথক লেনে চলাচলের ব্যবস্থা করা। ৮. ড্রাইভিং লাইসেন্স ও নবায়ন দ্রুত সরবরাহ এবং শ্রমিক ফেডারেশনের ১২ দফা দাবি বাস্তবায়ন।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব মো. সাইফুল আলম বলেন, সড়ক পথে যাত্রী ও পণ্য পরিবহন সচল রাখার স্বার্থে সরকারকে জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহে ১৫ দিন সময় বেধে দেয়া হয় যাতে করে মহাসড়ক থেকে তিন চাকা ওঅনুমোদিত ছোট ছোট যানবাহন চলাচল বন্ধ করার জন্য। কিন্তু এখনো সরকারের কোন সংস্থাই সে ব্যপারে বিন্দু মাত্র গুরুত্ব বা পদক্ষেপ গ্রহন করেনি। তাই আগামী ১১ আগস্ট পর্যন্ত সময়ের মধ্যেও যদি এর কোন সঠিক ব্যবস্হা গ্রহন না করা হয় তাহলে ১২ আগস্ট ভোর থেকে দক্ষিণ পশ্চিমা নাচল সহ সারাদেশের সকল রুটে বাণিজ্যিক পরিবহন চলাচল বন্ধ থাকবে।











































