দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের হাসপাতালগুলোতে করোনা পরীক্ষার কিট সংকট, বিকল পিসিআর মেশিন

18
Spread the love

মো: রাজু হাওলাদার।।
দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের হাসপাতালগুলোতে নেই করোনা ভাইরাস পরীক্ষার পর্যাপ্ত কিট। যার কারণে মিলছে না সংক্রমনের তথ্যও। তবে দেশব্যাপী করোনার ফের চোখ রাঙানিতে প্রস্তুত করা হয়েছে হাসপাতালগুলো। এ অঞ্চলের সর্ববৃহৎ চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ৪০টি শয্যা প্রস্তুত করা হয়েছে। পাশাপাশি ১০টি আইসিইউ শয্যা প্রস্তুত করা হচ্ছে। তবে হাসপাতালটিতে মাত্র ৭৫টির মতো র‌্যাপিট এন্টিজেন কিট রয়েছে, যা চাহিদার তুলনায় খুবই সামান্য। করোনা পরীক্ষার জন্য মন্ত্রণালয়ে ৫০০০ হাজার কিটের চাহিদাপত্র পাঠিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এছাড়া পিসিআর মেশিনটিও যান্ত্রিক ত্র“টির কারণে বন্ধ রয়েছে। তবে খুলনা জেনারেল (সদর) হাসপাতালে ৪০০শ’টির মতো কিট রয়েছে।
শনিবার সরেজমিনে যেয়ে এসব তথ্য জানা গেছে। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটের আরএমও ডাঃ খান আহমেদ ইশতিয়াক বলেন, করোনার প্রাদুর্ভাব নতুন করে দেখা দেয়ায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। আমরা একটা কমিটি গঠন করেছি। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক প্যানেলও প্রস্তুত। বর্তমানে ৪০টি আইসোলেশন এবং ১০টি আইসিইউ শয্যা প্রস্তুত আছে। এনেসথেশিউলোজিস্ট বিশেষজ্ঞ এবং করোনার জন্য মেডিসিন বিশেষ চিকিৎসক প্রস্তুত আছেন। খুলনাবাসীর করোনা চিকিৎসা দিতে প্রস্তুত রয়েছি।
খুমেক হাসপাতাল সূত্র জানায়, ২০২৩ ও ২০২৪ সালে খুলনাতে করোনা পরীক্ষাই হয়নি। ফলে মজুদকৃত কিটের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। খুলনাতে এপর্যায়ে এখনো পর্যন্ত করোনা পজেটিভ শনাক্ত হয়নি। তবে করোনা উপসর্গ নিয়ে আসা রোগীদের পৃথক ভাবে চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে খুমেক হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডাঃ মিজানুর রহমান বলেন, জরের সাথে সর্দি-কাশি ও সমস্ত শরীরে ব্যথা এ রকম কোনো রোগী পেলে আমরা তাৎক্ষণিক ভাবে তার পরীক্ষা করতেছি। শ্বাস কষ্টসহ করোনা অন্যান্য উপসর্গ নিয়ে আসছেন, তাদেরকে আলাদা ভাবে নিয়ে চিকিৎসা দিচ্ছি।
এখানে লাল-হলুদ ও গ্রীণ জোন ভাগ করে পৃথকভাবে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। নমুনা সংগ্রহকারীদের দেয়া তথ্যমতে, এখনিই প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ জন করে করোনার উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে আসছেন।
শনিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত দু’জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। আরটিপিসিয়ার মেশিন ব্যবহার করার জন্য ব্যক্তিগত সুরক্ষা যন্ত্রপাতি হাসপাতালে নেই। অক্সিজেন সার্বক্ষণিকভাবে প্রস্তুত আছে এছাড়াও অতিরিক্ত ৫০০ সিলিন্ডার হাসপাতালে মজুদ রয়েছে। ইতোমধ্যে হাসপাতালে যে করোনা পরীক্ষা কার্যক্রম চলছে, তবে কোন পজেটিভ পাওয়া যায় নি।
সূত্রমতে, ২০২০ সালের ২৩ মার্চ থেকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু হয়; সেই থেকে প্রায় ১৩ হাজার করোনা রোগী এখানে চিকিৎসা সেবা নিয়েছিলেন। সহস্রাধিক রোগী এই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছিল। এবারের প্রস্তুতি অবস্থায় হতাশ খুলনাবাসী।
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডাঃ মোঃ আখতারুজ্জামান বলেন, করোনা পরীক্ষার জন্য আমাদের হাসপাতালে যতো কিট ছিল, সেগুলোর মেয়াদোর্ত্তীণ হয়ে গেছে। আমাদের হাতে মাত্র ৭৫টি কীটস্ আছে। শিগগরিই আমার কীটস্ কিনবো। পিসিআর মেশিনটি বন্ধ আছে। উল্লেখিত বিষয়গুলি ইতিমধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে অবগত করা হয়েছে বলে তিনি জানান।