মিলি রহমান।।
একটি সম্পর্কের মূল ভিত যদি কিছু হয়, তবে ‘বিশ্বাস’ তার প্রথম শর্ত। একটি সুস্থ ও মজবুত সম্পর্ক গড়ে ওঠে পারস্পরিক শ্রদ্ধা, সততা ও নির্ভরতার উপর। তবে সময়ের সঙ্গে অনেক সম্পর্কেই দেখা দেয় বিশ্বাসের সংকট। কেউ কাউকে বিশ্বাস করতে না পারলে সম্পর্ক ধীরে ধীরে ভেঙে পড়তে থাকে। প্রশ্ন উঠতে পারে—একবার বিশ্বাস ভেঙে গেলে কি সম্পর্ক আর টিকিয়ে রাখা সম্ভব? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজেছেন মনোবিদরা। তাদের মতে, শুধু ভালোবাসা নয়, বিশ্বাস বজায় রাখার জন্যও প্রয়োজন সচেতন চেষ্টা ও ধৈর্য। সম্পর্কের প্রতিটি ধাপে ছোট ছোট কিছু অভ্যাস বদলে নেয়ার মাধ্যমে আবারও গড়ে তোলা যেতে পারে ভেঙে পড়া সেই ‘বিশ্বাস’।
কেন বিশ্বাস ভাঙে ?
বিশ্বাস হারানোর কারণ হতে পারে নানা রকম। অতীতে প্রতারণার শিকার হওয়া, আগের কোনো সম্পর্কের খারাপ অভিজ্ঞতা, নিজের ভেতরে অতিরিক্ত সন্দেহপ্রবণতা বা সঙ্গীর অতি গোপনীয় আচরণ—সব মিলিয়ে ধীরে ধীরে বিশ্বাসে চিড় ধরে। অনেকে হয়তো নিজেরই বুঝতে পারেন না, কেন এত সন্দেহ কাজ করছে। আবার কেউ কেউ ভয় পান বিশ্বাস করতে, কারণ তারা বারবার বিশ্বাস ভেঙে যাওয়ার যন্ত্রণা পেয়েছেন।
মনোবিদদের মতে, এই ভয়কে জয় করতে প্রথমেই প্রয়োজন নিজের মনকে বোঝা। নিজেকে জিজ্ঞেস করুন—আপনার সঙ্গী কি বিশ্বাসযোগ্য? তার প্রতি যে সন্দেহ তৈরি হয়েছে, তা কি বাস্তবতাসম্মত নাকি শুধুই অতীত অভিজ্ঞতার ছায়া?
বিশ্বাসে সংকটের লক্ষণ
>>বিশ্বাসের সমস্যা আছে কি না, তা বোঝার জন্য কিছু লক্ষণ দেখা যায়:
# আপনি বা আপনার সঙ্গী একে অপরকে নিয়ে মিথ্যা ধারণা পোষণ করেন।
# অতীত সম্পর্কের আঘাতের কারণে বর্তমান সম্পর্কেও ভরসা রাখতে পারেন না।
# সঙ্গীর বন্ধু বা সামাজিক জীবনের সঙ্গে আপনি পরিচিত নন।
# সঙ্গী অতিরিক্ত গোপনীয় আচরণ করেন, যা আপনাকে অস্বস্তিতে ফেলে।
# কীভাবে গড়া যেতে পারে আবারও বিশ্বাস?
# মনোবিদরা বলেন, বিশ্বাস একদিনে তৈরি হয় না, তেমনি ভেঙে গেলেও তা একদিনে গড়া সম্ভব নয়। তবে আন্তরিক প্রচেষ্টা থাকলে সম্পর্ক আবারও ফিরে পেতে পারে
তার পুরোনো উষ্ণতা। নিচে কিছু কার্যকর উপায় তুলে ধরা হলো:
১. খোলামেলা যোগাযোগ
সম্পর্কে স্বচ্ছতা আনার প্রথম ধাপ হচ্ছে কথাবার্তা। খোলাখুলি আলোচনা করুন, মনের দুঃখ-কষ্ট ভাগ করে নিন। ছোট ছোট বিষয়েও কথা বলুন, ভুল বোঝাবুঝি যেন না জমে।
২. দৈনন্দিন জীবনের অংশীদার হোন
প্রতিদিনের অভিজ্ঞতা, অফিস বা বন্ধুদের সঙ্গে কাটানো মুহূর্ত সঙ্গীর সঙ্গে শেয়ার করুন। এতে বিশ্বাসের জায়গাটা আরও দৃঢ় হয়।