তুচ্ছ কারণেও বারবার ‘সরি’, কিন্তু কেন?

5
Spread the love


মিলি রহমান।।

মানুষ মাত্রই ভুল করে। বাসায় কিংবা কর্মস্থল- তুচ্ছ কিংবা গুরুতর ভুল সবখানেই হতে পারে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, যখন একজনের ভুল হয়, তখন আরেকজন কি আন্তরিকভাবে বলতে পারেন ‘সরি’? আপনি জানেন কি, এই একটি শব্দই আপনার সম্পর্কের বন্ধনকে আরও মজবুত করতে পারে।আসলে ক্ষমা চাওয়ার মাধ্যমে বোঝানো হয়, সম্পর্কের চেয়ে অহংবোধ বড় নয়।অপরাধবোধে ভোগা থেকে মুক্তির সহজ উপায় হলো দুঃখ প্রকাশ করা। এতে অভিমান দূর হয়ে যায়, মনে প্রশান্তি আসে।


বিশেষজ্ঞরা বলেন, ‘দুঃখ প্রকাশ করা দুর্বলতার লক্ষণ নয়, বরং এটি আত্মবিশ্বাস ও দায়িত্বশীলতার প্রতীক। এটি অন্যের চোখে আপনাকে আরও গ্রহণযোগ্য করে তোলে।’

তারা আরও বলেন, দুঃখ প্রকাশ না করলে অনেক সময় সম্পর্কের মধ্যে একধরনের চাপা ক্ষোভ তৈরি হয়, যা পরে বড় সমস্যায় রূপ নিতে পারে। কিন্তু ‘সরি’ বলার মাধ্যমে সে ক্ষোভ দূর হতে পারে।

অনেকেই আছেন, যারা সামান্য কিছুতেই সরি বলেন, আবার ক্ষমাও চান। বারবার বারণ করলেও অনেকেই এই অভ্যাসটা ছাড়তে পারেন না। এতে সামনের জন অনেক সময় অস্বস্তিতে পড়েন। কিন্তু একটুতেই ক্ষমা চান যারা, তাদের মন এবং এমন আচরণের নেপথ্য কারণ বোঝাও কিন্তু খুব জরুরি।

এবার জেনে নিন, তুচ্ছ কারণেও বারবার ‘সরি’ বলেন কারা-

শান্তিপ্রিয় মানুষ

দোষ না থাকলেও অনেকেই ‘সরি’ বলেন, বারবার ক্ষমা চান। হতে পারে, তারা দ্বন্দ্ব এড়াতে চাইছেন। আবার শান্তি বজায় রাখতে কিছু না করেও অনেকেই আপনা থেকে ‘সরি’ বলে থাকেন।

একটু বেশি সংবেদনশীল

কিছু মানুষ একটু বেশি সংবেদনশীল হন। তাদের চেতনা ও অনুভূতি অত্যন্ত গভীর। অন্যজনকে কোনোভাবে আঘাত না করে ফেলেন, সবসময় এই ভয়টাই পান তারা। হয়ত কিছুই করেননি, কিন্তু সামনের জন আহত হয়ে থাকতে পারেন ভেবেই ক্ষমা চেয়ে নেন। কারও আবার হয়ত সম্পূর্ণ ভিন্ন কারণে মন খারাপ। তারাও কিন্তু ক্ষমা চেয়ে বসেন।

শিষ্টাচার ও বিনয়ের পরিচয়

ক্ষমা চাওয়ার অভ্যাস শিষ্টাচার ও বিনয়েরও পরিচয়। কথার মাঝে কথা বলে ফেললেও ক্ষমা চান অনেকে।তুচ্ছ কারণেই ‘সরি’ বলেন। যদিও এ কাজে কেউ কখনো ছোট হয়ে যায় না।

নিখুঁত হতে চাওয়া

কিছু মানুষ নিজেই নিজের জন্য উচ্চ মানদণ্ড, লক্ষ্য নির্ধারণ করে রাখেন। ভালো মানুষ হওয়াও সেই লক্ষ্যে শামিল থাকে। তারা সবক্ষেত্রেই নিখুঁত হতে চান। এ কারণে ছোট ছোট ভুলের জন্য ক্ষমা চাওয়া তাদের কাছে একেবারে স্বাভাবিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়।

নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন যারা

যারা উৎকণ্ঠা ও নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন, তাদেরও একটুতে ‘সরি’ বলার অভ্যাস থাকতে পারে। ভবিষ্যতে খারাপ কিছু ঘটতে পারে-এমন আঁচ করে তারা আগেভাগেই ক্ষমা চেয়ে নেন।

অভ্যাস

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ক্ষমা চাওয়াও কিছু মানুষের অভ্যাসে পরিণত হয়। উল্টোদিক থেকে কেউ হয়ত ধাক্কা দিল, কিন্তু তারা যেচে সরি বলেন। নিজেরাও বুঝতে পারেন না যে ক্ষমা চাওয়া অভ্যাসে পরিণত হয়েছে।

সমালোচনার ভয়

অনেককে সমালোচনা ও প্রত্যাখ্যাত হওয়ার ভয় তাড়িয়ে বেড়ায়। তাই মন জয়ের চেষ্টা চালিয়ে যান তারা। এ কারণে কেউ রূষ্ট হওয়ার আগেই তারা ‘সরি’ বলে থাকেন।