আমরা দুর্নীতি করলে সেটিও দেখিয়ে দেবেন: দুদক চেয়ারম্যান

5
Spread the love


খুলনাঞ্চল রিপোর্ট
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন স্বীকার করেছেন, নিজ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধেও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে, এবং সেটি একেবারে উড়িয়ে দেওয়ার মতো নয়। তিনি বলেন, “অনেক সময় আমাকে শুনতে হয় যে আপনারা দুর্নীতি নিয়ে কথা বলেন, অথচ নিজের অফিসেই দুর্নীতি হচ্ছে। আমি সেটাকে অবহেলা করি না। যদি আমাদের মধ্যেই দুর্নীতি থাকে, তাহলে আর অন্যদের কিছু বলার নৈতিক অধিকার কোথায় থাকে?”
রোববার সকালে নীলফামারী জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক গণশুনানির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। “সবাই মিলে গড়বো দেশ, দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ” স্লোগানে আয়োজিত এই গণশুনানির আয়োজন করে দুদকের রংপুর কার্যালয়, নীলফামারী জেলা প্রশাসন এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি।
গণশুনানিতে জেলার বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগকারীদের সরাসরি অভিযুক্তদের মুখোমুখি করা হয়। লিখিতভাবে ৮১টি অভিযোগ উত্থাপিত হয়, যার মধ্যে ৫৭টি অভিযোগ তাৎক্ষণিকভাবে নিষ্পত্তি করা হয়। দু’টি অভিযোগ আদালতে বিচারাধীন এবং কিছু অভিযোগ ছিল অপ্রাসঙ্গিক।
প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নেওয়া পদক্ষেপগুলো ছিল গণশুনানির অন্যতম উল্লেখযোগ্য দিক। উদাহরণস্বরূপ, নীলফামারী সদর উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আতাউল গনি ওসমানী ভুয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে বদলির নির্দেশ পান। একইভাবে, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যালয়ের সহকারী বোরহান উদ্দিনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন বিদ্যালয় থেকে অর্থ আদায়ের অভিযোগেও বদলি নির্দেশ দেওয়া হয়।
চেয়ারম্যান আবদুল মোমেন বলেন, “বাংলাদেশের অন্যান্য জেলার তুলনায় নীলফামারীতে দুর্নীতির মাত্রা কম। তাই এটিকে একটি মডেল জেলা হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব। আশা করি একদিন আপনারাই বলবেন—নীলফামারী হচ্ছে দেশের প্রথম দুর্নীতিমুক্ত জেলা।”
প্রতিষ্ঠান প্রধানদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, “প্রতিষ্ঠান ঠিকমতো পরিচালিত হলে সেবা-ভোগীদের অভিযোগ আসার কথা নয়। অভিযোগ যখন আসে, তখন প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ পর্যায়ের দায়িত্বহীনতা থাকেই।”
দুদকের ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমরা এখনো বেশি সময় ব্যয় করি অতীতের দুর্নীতি খুঁজে বের করতে। অথচ আমাদের মূল মনোযোগ হওয়া উচিত, ভবিষ্যতের দুর্নীতি কীভাবে প্রতিরোধ করা যায়, সেটি নিয়ে। আমরা সবাই জানি কোথায় দুর্নীতি হয়। তাহলে আগে থেকেই সতর্ক না হলে, পরিবর্তন কীভাবে সম্ভব?”