কুয়েটে ফের অস্থিরতা : স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনা জরুরি

12
Spread the love


খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) আবারও অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। মঙ্গলবার আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা তালা ভেঙে ছয়টি আবাসিক হলে প্রবেশ করেছেন। এর আগে হল খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়ে সাড়া না পেয়ে তারা সংবাদ সম্মেলন করে উপাচার্যের পদত্যাগে এক দফা দাবির ঘোষণা দেন। উল্লেখ্য, গত ৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে শতাধিক ব্যক্তি আহত হন। পরদিন প্রশাসনিক ভবনসহ সব একাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। সেদিন দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় কুয়েটে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়। ২৫ ফেব্রুয়ারি সব আবাসিক হল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এদিকে গত সোমবার সিন্ডিকেট সভায় ৩৭ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয় কুয়েট প্রশাসন। ফলে ক্যাম্পাসে শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরে আসা নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। এ পরিস্থিতির অবসান জরুরি।
গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আশা করা হয়েছিল, ছাত্রসমাজ পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহে ইতিবাচক ভূমিকা অব্যাহত রাখবে। স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বেশকিছু ছাত্র সংগঠন ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন করেছিল। পরবর্তীকালে সেই ঐক্যে যে ফাটল ধরে, আমরা এর বহিঃপ্রকাশ দেখতে পাই কুয়েটে। এটি কাম্য নয়। শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনৈক্য দেখা দিলে এর সুযোগ নিয়ে অপশক্তি আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে। আমরা দেখেছি, গত সরকারের আমলে শিক্ষাঙ্গনে ছাত্ররাজনীতির নামে পেশিশক্তি ও একচেটিয়া আধিপত্য বিস্তারের মহড়া চলেছে। দেশে এখন আর সেই পরিস্থিতি নেই। কাজেই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার সুস্থ পরিবেশ ফিরিয়ে আনার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবাইকে মনোনিবেশ করতে হবে। ক্যাম্পাসে সবসময় শান্তি বজায় রাখতে হবে। বহিরাগতদের তৎপরতা বন্ধ করতে হবে। বস্তুত শিক্ষার পরিবেশ বিঘ্নিত হয়, এমন যে কোনো কিছু করা থেকে সবাইকে বিরত থাকতে হবে। এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের যেমন দায়িত্ব রয়েছে, তেমন দায়িত্ব রয়েছে সব ছাত্র সংগঠন ও সাধারণ শিক্ষার্থীদেরও। আমরা আশা করব, কুয়েটে যে অস্থির পরিস্থিতি বিরাজ করছে, শিগগিরই তার অবসান হবে এবং শুরু হবে একাডেমিক কার্যক্রম। দেশের সব উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্যাম্পাসে শান্তি ও শিক্ষার সুস্থ পরিবেশ বজায় রাখার বিষয়ে ঐক্য প্রতিষ্ঠা অত্যন্ত জরুরি। এ ব্যাপারে সবাই শুভবুদ্ধির পরিচয় দেবেন, এটাই কাম্য।