নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা, ঢাকায় ১৮ হাজার পুলিশ মোতায়েন

6
Spread the love


ঢাকা অফিস।।

বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উদযাপন উপলক্ষে রাজধানী ঢাকাকে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। রাজধানীকে ২১টি সেক্টরে ভাগ করে নিরাপত্তা পরিকল্পনা করা হয়েছে। নিরাপত্তায় দায়িত্ব পালন করবেন ১৮ হাজার পুলিশ সদস্য। এ ছাড়া র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অন্যান্য সংস্থার সমন্বয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে। নববর্ষ উদযাপনে কোনো নিরাপত্তা হুমকি নেই বলে জানিয়েছেন র‍্যাব-পুলিশের কর্মকর্তারা।


ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী গতকাল বলেন, নববর্ষ উদযাপনে নিরাপত্তাব্যবস্থায় কোনো ঘাটতি নেই। ১৮ হাজার পুলিশ সদস্য পয়লা বৈশাখকেন্দ্রিক নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত থাকবেন। এ ছাড়া র?্যাব, সেনাবাহিনী ও অ্যান্টিটেররিজম ইউনিট থাকবে। অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থা সহযোগিতা করবে। এখন পর্যন্ত কোথা থেকে কোনো ধরনের ঝুঁকি নেই। বাংলা বর্ষবরণ উৎসবকে কেন্দ্র করে ঢাকা মহানগরকে ২১টি সেক্টরে ভাগ করে ইউনিফর্ম ও সাদা পোশাকধারী পর্যাপ্তসংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হবে।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাস্থলে ডগ স্কোয়াড দ্বারা সুইপিং করা হবে। রমনা পার্ক, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানসহ মোট ২১টি স্থানে ব্যারিকেড থাকবে। প্রতিটি অনুষ্ঠানস্থলের প্রবেশমুখে আর্চওয়ে ও হ্যান্ড মেটাল দিয়ে তল্লাশি করা হবে। অনুষ্ঠানস্থলে যাওয়া ও শোভাযাত্রার রুটগুলো সিসি ক্যামেরা, স্থির ও ভিডিও ক্যামেরা ও ড্রোনের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হবে। অনুষ্ঠানের চারপাশে পর্যাপ্ত পরিমাণ ফুট প্যাট্রোল থাকবে। সিটিটিসি, সোয়াত ছাড়াও পর্যাপ্ত পরিমাণে পোশাকে ও সাদা পোশাকে পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবেন।

পুলিশ জানিয়েছে, বাংলা নববর্ষ উদ?যাপনের শোভাযাত্রা চারুকলা থেকে শুরু হয়ে শাহবাগ মোড়, টিএসসি, শহীদ মিনার, দোয়েল চত্বর, বাংলা একাডেমি, টিএসসি হয়ে পুনরায় চারুকলায় গিয়ে শেষ হবে। শোভাযাত্রার পুরো রুট নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা থাকবে। পাশ থেকে, বিকল্প পথে শোভাযাত্রায় প্রবেশ করা যাবে না। শোভাযাত্রার সময় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পশ্চিম পাশে চারুকলার বিপরীতে যে গেট আছে, সেটি বন্ধ থাকবে। সে সময় কেউ এই গেট দিয়ে রাস্তায়ও যেতে পারবে না।

শোভাযাত্রায় যারা যোগদান করবেন, তাদের শাহবাগ মোড় থেকে অথবা ছায়ানটের অনুষ্ঠান শেষে যারা শোভাযাত্রায় অংশ নিতে চান, তারা শাহবাগ হয়ে কাঁটাবন মোড় দিয়ে নীলক্ষেত মোড় হয়ে ঢাবি উপাচার্যের বাংলোর সামনে থেকে অংশ নেবেন।

পুলিশ জানিয়েছে, রমনা ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ভেতরে ‘লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ড সেন্টার’ থাকবে। সেখানে মাইকিং ব্যবস্থা থাকবে। গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি ও সাইবার প্যাট্রোলিংয়ের মাধ্যমে নববর্ষকেন্দ্রিক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচার রোধে নজরদারি করা হচ্ছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অনুষ্ঠান শেষ করতে হবে, অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করতে হবে। কোনো ধরনের আতশবাজি ফোটানো ও ফানুস ওড়ানো যাবে না। শব্দদূষণ হয় এমন কোনো বাঁশি ব্যবহার করা যাবে না। বর্ষবরণকে কেন্দ্র করে কোনো ধরনের বাণিজ্যিক পণ্য বাজারজাত করা যাবে না। বিশেষ করে শোভাযাত্রায় ও অন্যান্য অনুষ্ঠানস্থলে।

ডিএমপি কমিশনার বলেছেন, রমনা বটমূলে ছায়ানটের অনুষ্ঠান শুরু হবে সকাল ৬টায়। এ অনুষ্ঠানে যাওয়ার জন্য তিনটি গেট দিয়ে ঢুকতে হবে রমনা বটমূলে। তবে অনুষ্ঠানস্থল থেকে বের হওয়া যাবে দুটি গেট ব্যবহার করে।

র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) মহাপরিচালক (ডিজি) এ কে এম শহিদুর রহমান জানিয়েছেন, পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান ঘিরে ঢাকাসহ সারাদেশে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান ঘিরে পুলিশ, র‌্যাবসহ গোয়েন্দা বাহিনী সম্মিলিতভাবে কাজ করছে। দেশব্যাপী গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। নিরাপত্তার বিষয়ে কোনো ঝুঁকি নেই।