অধ্যাপক ডা. মো.ছায়েদুল হক।।
দৃষ্টিশক্তি হলো চোখের এক ধরনের সক্ষমতা, যার মাধ্যমে চোখ দেখতে পায়। চোখকে অনেকটা ডিজিটাল ক্যামেরার সঙ্গে তুলনা করা যায়। ক্যামেরার মতোই আলোকরশ্মি চোখের ভেতরে প্রবেশ করে এবং চোখের পেছনে অবস্থিত বিশেষ সংবেদনশীল পর্দা বা রেটিনায় মিলিত হয়। আলোকরশ্মি সরাসরি আলোক সংবেদনশীল কোষ বা ফটোরিসেপ্টরকে উজ্জীবিত করে। ফলে মিলিত বিন্দুটিতে এক ধরনের বিদ্যুৎ তরঙ্গ বা সিগন্যাল তৈরি হয়। এই বিদ্যুৎ তরঙ্গ বা সিগন্যালটি অপটিক নার্ভ নামক স্নায়ুর মাধ্যমে প্রবাহিত হয়ে মস্তিষ্কে পৌঁছায়। মস্তিষ্কের একদম পেছন দিকের বিশেষ একটি অংশ (ভিজুয়েল কর্টেক্স) উক্ত তরঙ্গ বা সিগন্যালকে বিশ্লেষণ করে বস্তুর ইমেজ তৈরি করে এবং আমরা দেখতে পারি। এখন যদি কোনো কারণে আলোকরশ্মির আপতিত হওয়ার পর চোখের ভেতরে রেটিনাতে মিলিত না হয়ে রেটিনার আগে ব পড়ে মিলিত হয় তখন রেটিনা উজ্জীবিত হতে পারে না এবং ফলে সিগন্যাল যথাযথভাবে তৈরি হতে পারে না কিাজটি বিঘ্নিত হয়। এটি হলো সাধারণ দৃষ্টি সমস্যা চশমার মাধ্যমে সমাধান করা হয়।
আমরা জানি আলোকরশ্মি সব সময় সমান্তরালে চলে। সমান্তরালে আপতিত আলোকরশ্মি চোখের উপরিভাগ থেকে একটি নির্দিষ্ট দূরত্বে অবস্থিত সংবেদনশীল পর্দা বা রেটিনাতে মিলিত হতে গেলে তার দিক পরিবর্তিত হওয়া আবশ্যক। এই কাজটি সম্পন্ন হয়ে থাকে চোখের উপরিভাগের স্বচ্ছ পর্দা বা কর্নিয়া এবং তার ঠিক পেছনে চোখের ভেতরে অবস্থিত প্রাকৃতিক লেন্সের মাধ্যমে। এই দুটি অঙ্গ চোখে প্লাস পাওয়ারের লেন্সের মতো কাজ করে। চোখের সম্মুখ পশ্চাৎ চোখের দৈর্ঘ্যরে ওপর নির্ভর করে রেটিনা চোখের উপরিভাগ বা কর্নিয়া থেকে কতটুকু দূরত্বে অবস্থান করবে। এই দুটি বিষয় এক সঙ্গে ঠিক করে মিলিত বিন্দুটি রেটিনাতে পড়বে নাকি তার আগে বা পিছে পড়বে। যদি মিলিত বিন্দুটি রেটিনাতে পড়ে তবে তার কোনো দৃষ্টি সমস্যা হবে না। অর্থাৎ তার দৃষ্টিশক্তি হবে ৬/৬। আর যদি মিলিত বিন্দুটি রেটিনার আগে পড়ে তবে এটিকে বলা হবে মায়োপিয়া বা দূরদৃষ্টির সমস্যা যার জন্য মাইনাস পাওয়ারের চশমা পরতে হবে। মিলিত বিন্দুটি রেটিনার পেছনে পড়ে তাকে হাইপারমেট্রোপিয়া বলা হয় যার জন্য প্লাস লেন্সের চশমা পরতে হবে।
আমিষ ও শাকসবজি জাতীয় খাবার দৃষ্টিশক্তির জন্য ভালো। দৃষ্টিশক্তির সমস্যা থাকলে অবশ্যই চশমা পরতে হবে। না হলে অন্যান্য চোখের সমস্যা বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে স্থায়ী অন্ধত্ব বা এম্লায়োপিয়া; চোখ ট্যারা ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে যা কারওরই কাম্য নয়।
চেম্বার : অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান
মার্কস মেডিক্যল কলেজ, ঢাকা।
চেম্বার : আইডিয়াল আই কেয়ার সেন্টার
লিং রোড, শ্যামলী, ঢাকা। ০১৯২০৯৬২৫১২