স্টাফ রিপোর্টার
খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি এড. শফিকুল আলম মনা বলেছেন, দ্বিতীয় স্বাধীনতা বলে কিছু নেই। যারা দ্বিতীয় স্বাধীনতার কথা বলে তারা স্বাধীনতা দিবসের দিনকে খাটো করে দেখাতে চায়। তাদের মুক্তিযুদ্ধে কোনো ভূমিকা ছিল না। একাত্তরের ২৫ মার্চ কালো রাতে অকস্মাৎ গর্জে উঠলো পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হাতিয়ার। নিরস্ত্র, নিরপরাধ, ঘুমন্ত জাতির উপর হিংস্র হায়েনার মতো ঝাঁপিয়ে পড়লো হানাদার বাহিনী। বেঘোরে প্রাণ হারালেন অগণিত মানুষ। তাদের আর্তচিৎকারে কেঁপে উঠলো আকাশ-বাতাস। রাজপথ, অলি-গলিতে বয়ে গেল রক্তের স্রোতধারা। রাজনৈতিক নেতৃত্বহীন, অপ্রস্তুত, অসংগঠিত জাতি তখন দিশাহীন। ঠিক সেই মুহূর্তে কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে ভেসে এলো একটি বজ্রকণ্ঠ ‘আই মেজর জিয়া ডু হিয়্যার বাই ডিক্লেয়ার্ড দ্য ইন্ডিপেনডেন্স অব বাংলাদেশ। রাজনৈতিক নেতৃত্ব যখন ভাসমান, সৈনিক জিয়া তখন হাল ধরলেন। আশাহত, শঙ্কিত জাতিকে আশা জাগানিয়া গান শোনালেন। তিনি ঘোষণা করলেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা। জিয়াউর রহমান অত্যন্ত দক্ষতার সাথে বাঙ্গালি সৈন্যদের একত্রিত করতে সক্ষম হয়েছিলেন। সেনাবাহিনীর সকলকে একত্রিত করে প্রথম বিদ্রোহ ঘোষণা জিয়াই করেছিলেন।
বুধবার (২৬ মার্চ) বাদ জোহর কেডি ঘোষ রোডস্থ বিএনপি কার্যালয়ে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের আলোচনায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এড. মনা আরো বলেন, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে জিয়াউর রহমান যেভাবে চিন্তা করতেন, সেটা অন্যরা করেননি। জিয়াই প্রথম চিন্তা করলেন পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে ফলপ্রসু আঘাত হানতে হলে ‘রেগুলার ওয়েল ট্রেইন্ড আর্মি’ দরকার। সেই লক্ষ্যে তিনি ব্রিগেড গঠন করেন। ভারতীয়রা প্রথমে রাজি হননি। জিয়াউর রহমান তা অগ্রাহ্য করে প্রথম ব্রিগেড গঠন করেন এবং নাম দেন তার নামের আদ্যক্ষর দিয়ে ‘জেড ফোর্স’। এটি ছিল একটি পূর্ণাঙ্গ ও শক্তিশালী ব্রিগেড। ‘জেড ফোর্স’র সদস্যরা রণাঙ্গনে অনেক গৌরবদীপ্ত ভূমিকা রেখেছে। এই ফোর্স স্বাধীনতা যুদ্ধে সবচেয়ে বেশি সাহসিকতার পদক অর্জন করে। ফলে আত্মদান ও শহীদের সংখ্যাও ছিল বেশি এই ফোর্সে।
জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে নতুন করে স্বৈরাচারকে তাড়িয়ে স্বাধীনতার নতুন স্বাদ পেয়েছি উল্লেখ করে মনা বলেন, এটিকে অনেকে বলেন দ্বিতীয় স্বাধীনতা। আসলে আজকের স্বাধীনতা দিবস প্রমাণ করে, দ্বিতীয় স্বাধীনতা বলে বাংলাদেশে কিছু নেই। যারা দ্বিতীয় স্বাধীনতার কথা বলেন, তারা আজকের স্বাধীনতা দিবসকে একটু খাটো করতে চান, একাত্তরের স্বাধীনতায় তাদের কোনো ভূমিকা ছিল না। খুলনা মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম তুহিনের পরিচালনায় আলোচনায় অংশগ্রহন করেন ও উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনপির আহবায়ক মনিরুজ্জামান মন্টু, এড. মোমরেজুল ইসলাম, বিএনপি নেতা বেগম রেহানা ঈসা, শেখ সাদী, মাসুদ পারভেজ বাবু, চৌধুরী হাসানুর রশিদ মিরাজ, কেএম হুমায়ুন কবীর, হাফিজুর রহমান মনি, এড. শেখ মোহাম্মাদ আলী বাবু, মুর্শিদ কামাল, কাজী মিজানুর রহমান, মোল্লা ফরিদ আহমেদ, আসাদুজ্জামান আসাদ, হাবিবুর রহমান বিশ^াস, শেখ ইমাম হোসেন, আবু সাঈদ হাওলাদার আব্বাস, চৌধুরী শফিকুল ইসলাম হোসেন, যুবদলের আহবায়ক আব্দুল আজিজ সুমন, সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম রুবেল, স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক হয়েছেন মিরাজুর রহমান মিরাজ, সদস্য সচিব ইস্তিয়াক আহম্মেদ ও জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক মুন্তাসির আল মামুন, মহিলা দলের সভাপতি আজিজা খানম এলিজা, শ্রমিকদলের আহবায়ক মজিবর রহমান, সদস্য সচিব শফিকুল ইসলাম শফি, জাসাসের আহবায়ক ইঞ্জি. নুর ইসলাম বাচ্চু, সদস্য সচিব (ভারপ্রাপ্ত) কে এম এ জলিল, কৃষকদলের আক্তারুজ্জামান সজিব তালুকদার, ছাত্রদলের তাজিম বিশ^াসসহ খুলনা মহানগর বিএনপি, থানা বিএনপি, ওয়ার্ড বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সকল নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া ৫৫তম মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনে খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপি দিবসের প্রথম প্রহরে গল্লামারী স্বাধীনতা সৌধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পুষ্পস্তাবক অর্পণ করেন। সূর্য্যদ্বেয়ের সাথে সাথে সকল দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, সকল দলীয় কার্যালয় আলোকসজ্জা করা হয়।