শিক্ষার্থীদের হস্তক্ষেপে দখলমুক্ত হলো পঞ্চবিথী ক্লাব: ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া

24
Spread the love



স্টাফ রিপোর্টার
পঞ্চবিথী ক্রীড়া চক্র দখল করে গড়ে ওঠা গণ অধিকার পরিষদের দলীয় কার্যালয় দখল মুক্ত করতে গিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থী ও গণ অধিকার পরিষদের নেতা কর্মীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটেছে। পরে যৌথ বাহিনীর এসে দখল মুক্ত করে ভবনটি সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে বুঝিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে।
মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) রাত নয়টার দিকে ছাত্র-জনতা নগরীর শান্তিধাম মোড়ে পঞ্চবিথী ক্রীড়া চক্রের সামনে গিয়ে দখল করে দলীয় কার্যালয় গড়ে তোলার প্রতিবাদ জানায়। এ সময় তারা ভবনে বিভিন্ন স্থানে রাখা গণ অধিকার পরিষদের প্যানা পোস্টার ছিড়ে ফেলে বিক্ষোভ করে।


শিক্ষার্থীরা জানান, সাধারণ ছাত্রসহ সাধারণ মানুষ এই ক্লাবটির সাথে দীর্ঘদিন জড়িত। এই ক্লাবে অনেক খেলোয়াড় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে খেলাধূলার সাথে যুক্ত হয়েছেন। কিন্তু রাজনৈতিক দলের ব্যানারে কতিপয় ব্যক্তি এই ক্লাবটি দখলদাররা দখল করে দলের কার্যালয় বানিয়েছে। এই কারণে গণ অধিকার পরিষদ থেকে তাদের সাধারণ সম্পাদককে বহিষ্কারও করে। আমরা সাধারণ ছাত্র ছাত্রীরা আমরা ক্লাবটি দখল মুক্ত করে ক্রীড়ামোদী মানুষের কাছে ফিরিয়ে দিতে চাই।
দখল উচ্ছেদকালে গণ অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা ভবনের দ্বিতীয় তলায় দাঁড়িয়ে পাল্টাপাল্টি শ্লোগান দেয়। এর কিছুক্ষণ পর গণ অধিকার পরিষদের নেতা কর্মীরা নিচে নেমে আসে। তখন শিক্ষার্থীদের সাথে গণ অধিকার পরিষদের নেতা কর্মীদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। তারা শিক্ষার্থীদের মারধর করে ও বিভিন্নভাবে হুমকি প্রদর্শন করে।
গণ অধিকার পরিষদের নেতারা দাবি করে, ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের দোসরা তাদের দলীয় কর্যালয় ও নেতাকর্মীদের উপর হামলা করেছে। তারা সেখানে নানা ধরনের শ্লোগান ও দিতে থাকেন।
প্রথম দফায় গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের হামলার পরে কিছুটা পিছু হটলেও কিছু সময় পর সাধারণ শিক্ষার্থীরা পঞ্চবিথী ক্রীড়া ক্লাবে ফিরে আসে ও ক্লাবটি দখল মুক্ত করেন।


সরকারি বিএল কলেজের শিক্ষার্থী সাদমান রাতুল জানান, গণ অধিকার পরিষদ এটি দখল করার জন্য তাদের নেতা কর্মীকে বহিষ্কার করে। আমরা তাদের সাথে ২০-৩০ মিনিট ধরে তাদের বুঝিয়েছি। তাদের ক্রীড়া ক্লাবটি দখলমুক্ত করতে অনুরোধ করি। তখন তারা আমাদের চাঁদাবাজ ও ছাত্রলীগ আখ্যা দিয়ে আমাদের উপর হামলা করে। আমরা সে সময় ছত্রভঙ্গ হয়ে যাই। আমরা পরবর্তীতে ফিরে এসে এটি দখল মুক্ত করেছি।
তারা বলেন, এটি গণপূর্ত বিভাগের সরকারি জমি দখল করেছে গণ অধিকার পরিষদ। তাদের সেটি বললে তারা আমাদের উপর হামলা করে। এতে আমাদের ৭/৮ জন আহত হয়েছি।
অপরদিকে গণ অধিকার পরিষদের নেতাদের দাবি, এখানে আওয়ামী লীগের দোসররা পঞ্চবিথী ক্রীড়া চক্রের নামে জুয়োসহ নানা অসামাজিক কাজে লিপ্ত ছিলো। আমরা এটি দখলমুক্ত করেছি। আজ ছাত্রলীগ ও তাদের দোসররা আমাদের উপর অতর্কিত হামলা করেছে।
উল্লেখ্য গত ২৭ জানুয়ারি পঞ্চবিথী ক্রীড়া চক্রের সাইনবোর্ড সরিয়ে গণ অধিকার পরিষদ খুলনা মহানগর ও জেলা শাখার নামে দলীয় কার্যালয়ের সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেয়।
২৮ জানুয়ারি এ ঘটনায় গণ অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক শাকিল উজ্জামান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, খুলনা মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক শেখ রাশেদুল ইসলামকে বহিষ্কার করেছে কেন্দ্র। কিন্তু তারপরও গণ অধিকার পরিষদের শেখ রাশেদুল ইসলাম ভবনটি দখলে রাখেন। সেখানে তার অনুসারীদের নিয়ে নানা কর্মসুচী পালন করে আসছিলেন।
এ বিষয়ে খুলনা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ হাওলাদার সানোয়ার হোসনে মাসুম জানান, আমরা ভবনটি এখন দখলমুক্ত করেছি। এখানে এখন কোন পক্ষই নেই। আমরা ভবটি গণপূর্ত বিভাগকে বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছি। তিনি বলেন একটি দখলকৃত সরকারি ভবন দখলমুক্ত করতে গিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে ধাঁওয়া পাল্টা ধাঁওয়া হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।