স্পোর্টস ডেস্ক।।
নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির রেকর্ড শিরোপা জিতল ভারত। ফাইনালের মঞ্চে ৪ উইকেটে জিতেছে রোহিত শর্মার দল। যেখানে প্রথম দল হিসেবে আসরের তিনটি ট্রফি ঘরে তুলেছে টিম ইন্ডিয়া।
এর আগে ২০০২ সালে শ্রীলংকার সাথে যৌথভাবে প্রথমবার শিরোপার স্বাদ পায় ভারত। এরপর মাহেন্দ্র সিং ধোনির নেতৃত্বে ২০১৩ সালে চ্যাম্পিয়ন হয় দলটি। সেবার রিকি পন্টিংয়ের অস্ট্রেলিয়ার সমান দুটি শিরোপা জিতে যৌথভাবে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সর্বোচ্চ ট্রফির মালিক হয় ভারত। আর এবার অজিদের ছাড়িয়ে এককভাবে শীর্ষে উঠল তারা।
আজ রবিবার দুবাই ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করা নিউজিল্যান্ড নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ২৫১ রান করে। জবাবে ৬ উইকেট হারিয়ে ও এক ওভার বাকি থাকতে আসরে অপরাজিত থেকে চ্যাম্পিয়ন হয় ভারত।
নিউজিল্যান্ডের দেওয়া ২৫২ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ওপেনিংয়ে মাত্র ১৮ ওভার ৪ বলেই ১০৫ রান যোগ করেন গিল ও রোহিত। ৫০ বলে ৩১ রান করে কিউই অধিনায়ক মিচেল স্যান্টনারের বলে আউট হন গিল। দুর্দান্ত ক্যাচ ধরেন পরীক্ষিত গ্লেন ফিলিপস। শতরান পার করার পরপরই ভারতের ইনিংসে কিছুটা ধস নামে।
দলীয় ১০৬ রানে আউট হয়ে যান সেমিফাইনালের নায়ক বিরাট কোহলিও। দ্বিতীয় বলেই মাইকেল ব্রেসওয়েলের বলে এলবিডব্লিউ হন তিনি। দারুণ ব্যাট করতে থাকা রোহিত আউট হন দলীয় ১২২ রানে। রাচিন রবীন্দ্রর বলে তাকে স্ট্যাম্পিং করেন টম ল্যাথাম। ৮৩ বলে ৭টি চার ও ৩ ছক্কায় ৭৬ রান করেন ভারত অধিনায়ক। এরপর শ্রেয়াসের সঙ্গে জুটি বাঁধেন অক্ষর।
এক পর্যাায়ে রান আসতে থাকে সাবলীল গতিতে। রান তাড়া আবারও হয়ে উঠছিল একতরফা। কিন্তু নিউজিল্যান্ড লড়াই চালিয়ে যায়। দুটি করে চার ও ছক্কায় শ্রেয়াসকে ৪৮ রানে থামান কিউই অধিনায়ক স্যান্টনার। ২৯ রানে থাকা অক্ষর হুট করেই বাজে শটে ক্যাচ দিয়ে বসেন লং অনে।
তবে ভারতের ব্যাটিং লাইন আপ এত লম্বা যে, বড় দুর্ভাবনায় তাদের পড়তে হয়নি। এক পাশে আস্থা হয়ে দলকে এগিয়ে নেন লোকেশ রাহুল। তাকে সঙ্গ দেন হার্দিক পান্ডিয়া। জয়ের কাছে গিয়ে পান্ডিয়া (১৮ বলে ১৮) ফেরেন জেমিসনের দুর্দান্ত বাউন্সে। বাকি পথটুকু অনায়াসে পাড়ি দেন রাহুল ও জাদেজা। রাহুল ৩৩ বলে ৩৪ ও জাদেজা ৯ রানে অপরাজিত থাকেন।
এর আগে প্রথমে ব্যাট করা নিউজিল্যান্ড শুরুর ৩ ওভার দেখেশুনে খেললেও এরপর ব্যাট হাতে ঝড় তোলেন রাচিন ও ইয়ং। তবে মাঝের ওভারগুলোর ব্যর্থতায় সেই ধারা ধরে রাখতে পারেনি কিউইরা। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ২৫১ রানের বেশি করতে পারেনি দলটি।
প্রথম পাওয়ার প্লের ১০ ওভারে ৬৯ রান করে নিউজিল্যান্ড। তবে এর মধ্যেই এক উইকেট হারায় তারা। লেগ স্পিনার বরুণ চক্রবর্তীর করা অষ্টম ওভারের পঞ্চম বলে এলবিডব্লিউ হয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন ইয়ং (২৩ বলে ১৫)। পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার পর ১১তম ওভারের প্রথম বলেই আউট দারুণ ব্যাট করতে থাকা রাচিন। ২৯ বলে ৩৭ রান করা এই ওপেনারকে সরাসরি বোল্ড করেন চায়নাম্যান স্পিনার কুলদীপ যাদব। ৪টি চারের পাশাপাশি একটি ছক্কা হাঁকান তিনি। কুলদীপ তার পরের ওভারে ফেরান নিউজিল্যান্ডের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ব্যাটার কেন উইলিয়ামসনকেও। বল বুঝে উঠতে না পেরে সরাসরি কুলদীপের হাতে সহজ ক্যাচ উঠিয়ে দেন। ১৪ বলে ১১ রান করেই শেষ হয় তার ইনিংস। চাপে পড়ে নিউজিল্যান্ড।
৭৫ রানে ৩ উইকেট হারানো নিউজিল্যান্ড চতুর্থ উইকেট হারায় ১০৮ রানে। এরপর পঞ্চম উইকেটে ৫৭ রান যোগ করেন ড্যারিয়েল মিচেল ও গ্লেন ফিলিপস। তবে তারা ছিলেন বেশ ধীরগতির। ৫২ বলে ৩৪ রান করে আউট হন ফিলিপস। তবে মাটি কামড়ে উইকেটে পড়ে থাকেন মিচেল। দলীয় ২১১ রানে তিনি যখন ফেরেন তখন তার ব্যক্তিগত সংগ্রহ ১০১ বলে ৬৩ রান।
শেষদিকে কিউইদের রান আড়াইশ ছাড়ান মাইকেল ব্রেসওয়েল। ৪০ বলে ৩টি চার ও ২ ছক্কায় ৫৩ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি।
ভারতের হয়ে ২টি করে উইকেট নেন বরুণ চক্রবর্তী ও কুলদীপ যাদব। একটি করে শিকার করেছেন মোহাম্মদ শামি ও রবীন্দ্র জাদেজা।