বিদ্রোহ ‘প্রত্যাহার’ অনুশীলনে ফেরার সিদ্ধান্ত সাবিনাদের

1
Spread the love


স্পোর্টস রিপোর্টার

বেশ কিছুদিন ধরেই ক্রীড়াঙ্গনে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল নারী ফুটবলারদের বিদ্রোহ। বৃটিশ কোচ পিটার বাটলারের প্রতি অনাস্থা এনে অনুশীলন বয়কট করে আসছিলেন ১৮ নারী ফুটবলার। যাদের মধ্যে ১৬ জনই ছিলেন সবশেষ সাফজয়ী দলের সদস্য। বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়াল দু’বার আলোচনায় বসেও সমস্যার সমাধান করতে পারেননি। অবশেষে ১৬ দিনের টানাপোড়েনের পর সেই সংকট এখন সমাধানের পথে। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, চলমান সমস্যার অবসান হয়েছে। যার বিরুদ্ধে এত অভিযোগ, সেই কোচ পিটার জেমস বাটলারের অধীনেই সাবিনা-মাসুরারা অনুশীলন করবেন; তবে ছুটি কাটিয়ে ফিরে। অস্বস্তিকর পরিস্থিতি ও অচলাবস্থা নিরসনে গতকাল বাফুফে ভবনে মেয়েদের সঙ্গে আবার আলোচনায় বসেন কিরণ। সেখানেই সাবিনা-মারিয়া-মনিকাসহ সবাই চুক্তিতে ও অনুশীলনে যোগ দেওয়ার ‘নিশ্চয়তা’ দিয়েছে বলে দাবি তার। তিনি জানিয়েছেন কোচ পিটার বাটলার থাকলে খেলবেন না বলে গণ অবসরের হুমকি দেওয়া ফুটবলাররা নিজেদের অবস্থান থেকে সরে এসেছেন। তারা বাটলারের অধীনেই অনুশীলনে ফিরতে রাজি হয়েছেন। অবশ্য এখনই অনুশীলনে ফিরছেন না সাবিনা ঋতুপর্ণারা। বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দলের আসন্ন সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরেও তারা থাকছেন না। বিদ্রোহ করা ফুটবলাররা ছুটিতে গিয়ে ফিরে এসে অনুশীলন শুরু করবেন। কিরণ বলেন, ‘ক্যাম্প বন্ধ হয়ে যাবে ২৪শে ফেব্রুয়ারি। টিমও সেদিন চলে যাবে আরব আমিরাতে। এই সময়ে সিনিয়র মেয়েরাও (১৮ বিদ্রোহী ফুটবলার) চাচ্ছে একটা ছুটিতে যেতে। এটা তাদের জন্য একটা বিরতি বলতে পারেন। এরপর আবার তারা ক্যাম্পে ফিরবে এবং অনুশীলন শুরু করবে। ক্যাম্পে ফিরলেই তাদের সঙ্গে চুক্তি হবে।’ দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে স্থায়ী ছিল ১৮ নারী ফুটবলারের এই বিদ্রোহ। গত ৩০শে জানুয়ারি বাফুফে ভবনের সামনে সংবাদমাধ্যমের কাছে কোচ পিটার বাটলারের বিরুদ্ধে তিন পৃষ্ঠার লিখিত অভিযোগ তুলে ধরেন সাবিনারা। বাটলারকে কোচ রেখে দেওয়া হলে অনুশীলনে যোগ দেবেন না, এবং সবাই একযোগে অবসরের হুমকি দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে তাৎক্ষণিকভাবে সিনিয়র সহসভাপতি ইমরুল হাসানকে চেয়ারম্যান করে সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে বাফুফে। সেই কমিটি তদন্ত শেষে বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়ালের কাছে প্রতিবেদন জমা দেয়। এরপর কয়েক দফা বাফুফে সভাপতিও এই বিদ্রোহী ফুটবলারের অনুশীলনে ফেরার আহ্বান জানান। বাফুফের নারী উইং থেকেও একাধিকবার বৈঠক হয় মেয়েদের সঙ্গে। কিন্তু এই ১৮ ফুটবলার সিদ্ধান্ত বদলাতে রাজি হননি। এই সময়ে বিদ্রোহের বাইরে থাকা জাতীয় দলের ১৩ জনসহ মোট ৩৭ জন ফুটবলারকে নিয়মিত অনুশীলন করান বাটলার। যাদের সঙ্গে এরিমধ্যে চুক্তিও করেছে বাফুফে। পুরোনো সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে চুক্তি করবেন সাবিনারাও। বিদ্রোহী ফুটবলাররা ক্যাম্পে ফেরার পর তাদের সঙ্গে কোচকে নিয়ে আলোচনায় বসবে বাফুফে। সেখানে সংকট পুরোপুরি কেটে যাবে জানিয়ে কিরণ বলেন, ‘অনুশীলন শুরুর সময় সভাপতি, কোচ, মেয়েদের নিয়ে সভা করে যে ভুল বোঝাবুঝি আছে সেটা মিটিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হবে। একসঙ্গে অনুশীলন করবে সবাই, কেউ কারো সঙ্গে অসন্তোষ থাকলে ভালো কিছু হবে না। আজ আমাকে বলেছে যোগ দিয়ে চুক্তিতে সই করবে।’ আগামী ২৬শে ফেব্রুয়ারি এবং ২রা মার্চ দুটি আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচ খেলার জন্য বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের ২৪শে ফেব্রুয়ারি সংযুক্ত আরব আমিরাত যাওয়ার কথা রয়েছে।