মো: রাজু হাওলাদার।।
পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবনের বাঁকে বাঁকে এখন হরিণের দেখা মেলে। বনের খাল বা নদীর ধারে দলবেঁধে হরিণের চলাফেরার দৃশ্য হরহামেশা চোখে পড়ছে। সুন্দরবনে মায়া ও চিত্রা নামের দুই প্রজাতির হরিণের দেখা যায়। তবে এরমধ্যে চিত্রা হরিণের সংখ্যাই বেশি। কিন্তু সৌন্দার্য্যে নয়, শিকারিদের লোলুপ দৃষ্টি এই প্রাণির দিকে। প্রতিনিয়ত হত্যার শিকার হচ্ছে মায়াবী হরিণ।
২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসের ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর দ্য কনজারভেশন অব নেচারের (আইইউসিএন) জরিপের তথ্য মতে, বর্তমানে সুন্দরবনে ১ লাখ ৩৬ হাজার ৬০৪টি হরিণ রয়েছে। এর আগে ২০০৪ সালে হরিণের সংখ্যা ছিল ৮৩ হাজারটি। সেই হিসেবে ১৯ বছরের ব্যবধানে সুন্দরবনে হরিণ বেড়েছে ৫৩ হাজার ৬০৪টি।
খুলনা অঞ্চলের প্রধান বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো বলেন, কয়েক বছরে বনের জীববৈচিত্রে পরিবর্তন এসেছে। এখন সুন্দরবনে গেলেই হরিণ দেখা যাচ্ছে, যা আগে ছিল না। হরিণের সঙ্গে বাঘও দেখতে পাচ্ছেন সুন্দরবন দর্শনার্থীরা। হরিণের সংখ্যা বাড়ার কারণ হিসেবে তিনি জানান, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও বন বিভাগের নিয়মিত টহল ও বনে দস্যু কমার পাশাপাশি রাসমেলা বন্ধ হওয়ার কারণে হরিণ শিকার আগের তুলনায় অনেকাংশে কমেছে।
তাঁর দাবি, বনে সারা বছরই দস্যু ও বছরের শেষের দিকে দুবলারচরে রাসমেলায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ৫০ হাজারের বেশি মানুষ আসত। ওই সময় বিপুল পরিমাণ হরিণ শিকার করা হতো। অল্প লোকবল দিয়ে এত মানুষের নিরাপত্তা দেয়া সম্ভব হতো না। তবে সুন্দরবনসংলগ্ন এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, সুন্দরবনে হরিণ শিকার বন্ধ করা যাচ্ছে না। গত এক মাস ধরে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে কয়েকটি চোরাশিকারি চক্র। গরু ও খাসির মাংসের তুলনায় হরিণের মাংসের দাম কম হওয়ায় সুন্দরবন-সংলগ্ন এলাকায় এই বন্যপ্রাণীর মাংসের চাহিদা বাড়ছে। এ সুযোগে বেপরোয়া হয়ে উঠছে চোরাশিকারিরা চক্র।
খুলনার সুন্দরবন একাডেমির নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক আনোয়ারুল কাদির বলছেন, সাম্প্রতিক সময়ে সুন্দরবনে বাঘ হত্যা কিছুটা কমলেও একেবারে তা বন্ধ হয়নি। আর বাঘের প্রধান খাবার হরিণ শিকার হচ্ছে প্রায়ই। একই কথা বলছেন সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী সাংবাদিক শুভ্র শচীন।
অধ্যাপক কাদির বলেন, বন্যপ্রাণী শিকার নিষিদ্ধ হলেও আইন অমান্য করে সুন্দরবনের প্রধান আকর্ষণ চিত্রা হরিণ শিকার করছে কয়েকটি চক্র। যে পরিমাণ হরিণের মাংস ও চামড়া আটক হয়, তার থেকে কয়েকগুণ বেশি পরিমাণ হরিণ শিকার করা হয়। মাঝেমধ্যে দুই একটি অভিযানে হরিণের মাংস, চামড়া, মাথা উদ্ধার হলেও মূল চোরাশিকারি ও পাচারকারীরা আটক হয় না। অধিকাংশ ক্ষেত্রে হরিণের মাংস বহনকারীরাই ধরা পড়ে। আর যারা আটক হন, তারা দুর্বল আইনের কারণে কয়েকদিন পর জেল থেকে ফিরে একই কাজে লিপ্ত হন।
সাংবাদিক শুভ্র শচীন বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন অভিযানে আটক হরিণ শিকারিদের তথ্যে দেখা গেছে, বনের পাশে যাদের বাড়ি, তারাই বেশি হরিণ শিকারের সঙ্গে যুক্ত। সুন্দরবনের চারটি রেঞ্জসংলগ্ন গ্রামগুলোয় দেড় শতাধিক শিকারি দল রয়েছে। বিশেষ করে খুলনার কয়রা, দাকোপ ও পাইকগাছা উপজেলা, সাতক্ষীরার শ্যামনগর এবং বাগেরহাটের মোংলা ও শরণখোলার মানুষ বেশি হরিণ শিকার করে। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বনজ সম্পদ আহরণসহ নানা উপায়ে সুন্দরবনের ওপর নির্ভরশীল মানুষের আয় কমেছে। যে কারণে বনজীবীদের কেউ কেউ জীবীকার তাগিদেও এসব কাজে লিপ্ত হচ্ছে।
গত ১৫ জানুয়ারি রাতের অন্ধকারে গহিন বন থেকে অবৈধভাবে হরিণ শিকার করে মাংস নিয়ে ফিরছিল শিকারির দল। সুন্দরবনের খাল ধরে তাদের নৌকা এগোচ্ছিল লোকালয়ের দিকে। এমন সময় সেখানে হাজির হন সুন্দরবনের কাশিয়াবাদ ফরেস্ট স্টেশনের বনরক্ষীরা। তদের দেখে নৌকার মধ্যে মাংসের বস্তা ফেলে পালিয়ে যায় হরিণশিকারিরা। পরে ওই নৌকা থেকে তিনটি বস্তায় থাকা ৮০ কেজি হরিণের মাংস উদ্ধার করা হয়। সুন্দরবনের সত্যপীরের খাল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এর আগে ৭ জানুয়ারি দুপুর ২টায় মোংলার ফেরিঘাট সংলগ্ন এলাকা ১১ কেজি হরিণের মাংসসহ ছয় জনকে আটক করে কোস্টগার্ড। কোস্টগার্ড জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মোংলা থেকে ঢাকাগামী একটি মাইক্রোবাসে তল্লাশি চলিয়ে ১১ কেজি হরিণের মাংসসহ ছয়জন চোরাচালানকারীকে আটক করা হয়। আটক ব্যক্তিরা হলেন মো. রবিন (৪০), তাইজুল ইসলাম (৩৮), সোহেল হোসেন (৩৯), সাইদুল ইসলাম (৪৭), কল্পনা আক্তার নাজু (৩০) ও মুক্তা আক্তার (৩২)। তাদের সবার বাড়ি ঢাকার কেরানিগঞ্জে।
এর আগে গত ৩ জানুয়ারি সকাল সাড়ে ৮টার দিকে খুলনার কয়রা উপজেলার কালনা বাজার এলাকায় প্রায় ৩০ কেজি হরিণের মাংসসহ ইকবাল মোড়ল নামে এক তরুণকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে স্থানীয় লোকজন। ২৩ বছর বয়সী ইকবাল পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনি ইউনিয়নের বাসিন্দা।
কয়রা থানার ওসি জি এম ইমদাদুল হক জানান, জিজ্ঞাসাবাদে ইকবাল জানিয়েছেন, কয়রার সুন্দরবন-সংলগ্ন এলাকা থেকে মনিরুল ইসলাম নামের এক হরিণ শিকারি তাকে এ মাংস দিয়েছেন। ৩০ কেজি হরিণের মাংস নিতে মনিরুলকে ২ হাজার ৪০০ টাকা দিয়েছেন। হরিণ শিকারি মনিরুলের সঙ্গে আগে থেকেই ইকবালের পরিচয় ছিল।
কয়রা উপজেলার স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, খুলনার সর্বদক্ষিণের সুন্দরবনঘেরা সমুদ্রউপকূলবর্তী উপজেলা কয়রা। এ উপজেলাটিকে ঘিরে রেখেছে কপোতাক্ষ, কয়রা এবং শাকবাড়িয়া নদী। উপজেলাটির তিন দিক নদীবেষ্টিত এবং ৭টি ইউনিয়নই সুন্দরবনের সীমানায় অবস্থিত। সুন্দরবন প্রভাবিত উপজেলাটির গ্রামগুলোতে বেশিরভাগই শ্রমজীবী মানুষের বসবাস। এসব গ্রামের প্রতিটি পরিবারের কেউ না কেউ সুন্দরবনকেন্দ্রিক কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত। এ উপজেলার ৩০টির বেশি চোরাশিকারি চক্র নির্বিচারে সুন্দরবনের হরিণ নিধন করছে। এরমধ্যে দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়নের আংটিহারা ও জোড়শিং এলাকায় হরিণশিকারি চক্রের আধিপত্য বেশি। আর হরিণ পাচারের নিরাপদ রুট হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে বজবজা ও খাসিটানা বন টহল ফাঁড়ি এলাকা। এছাড়া মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের নয়ানি, হড্ডা, বানিয়াখালী, শেখেরকোনা ও তেঁতুলতলার চর; কয়রা সদর ইউনিয়নের ৪ নম্বর, ৫ নম্বর ও ৬ নম্বর কয়রা; উত্তর বেদকাশী ইউনিয়নের পাথরখালী, কাটকাটা; মহারাজপুর ইউনিয়নের পূর্ব মঠবাড়ি, মঠেরকোনা গ্রাম হরিণশিকারি চক্রের তৎপরতা রয়েছে।
কয়রার দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের বাসিন্দা শহিদুল সরদার বলেন, উপজেলার একটি ছোট নদী পেরোলেই সুন্দরবনের গহিন জঙ্গল। পেশাদার হরিণ শিকারিরা গোপনে সুন্দরবনে ঢুকে নাইলনের দড়ির ফাঁদ পেতে রাখেন। চলাচলের সময় হরিণ সেই ফাঁদে আটকে যায়। তারপর বনরক্ষীদের চোখ ফাঁকি দিয়ে হরিণের মাংস বিক্রি করা হয়। এক মাস ধরে এলাকায় হরিণ শিকারিদের দৌরাত্ম্য বেড়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সুন্দরবনঘেঁষা মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা জানান, স্থানীয় পদ্ধতিতে মাংস, চামড়া, মাথাসহ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংরক্ষণ করে পাচার করে চোরাশিকারিরা। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ থাকে এজেন্ট-ব্যবসায়ীদের। এই এজেন্টদের মাধ্যমে কখনো অগ্রিম অর্ডার, আবার কখনো মাংস এনে তারপর বিক্রি করা হয়। এই চক্রের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন স্থানে পৌঁছে যায় হরিণের মাংস।
ক্রেতারাও অনেক সময় প্রতারণা ভেবে হরিণ নিজ চোখে না দেখে মাংস কিনতে চান না। তাই চোরাশিকারিরা জীবন্ত হরিণ লোকালয়ে এনে জবাই করেন। সুন্দরবনসংলগ্ন এলাকায় প্রতি কেজি হরিণের মাংস ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায় পাওয়া যায়। তবে জেলা শহরে প্রতি কেজি হরিণের মাংসের দাম ১০০০ টাকা থেকে ২০০০ টাকা পর্যন্ত। আর আস্ত একটি জীবিত হরিণের দাম চাওয়া হয় ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা। অবৈধ জেনেও হরিণের মাংস কেনেন মানুষ।
ধনাঢ্যব্যক্তিরা হরিণের মাংস দিয়ে উৎসব পালন করেন। কেউ কেউ স্বজনদের হরিণের মাংস উপহার দেন। আবার বড় ধরনের স্বার্থসিদ্ধির জন্যও কর্তাব্যক্তিদের খুশি করতে গোপনে হরিণের মাংস সরবরাহ করা হয়। হরিণের চামড়া-শিং সৌখিনব্যক্তিরা সংগ্রহ করে ড্রইংরুম সাজান। সুন্দরবন সংলগ্ন খুলনার দাকোপ উপজেলার নলিয়ান গ্রামের বাসিন্দা ও স্থানীয় সংবাদকর্মী মো. আবুল বাশার বলেন, ঢাংমারী, খাজুরা, বানীশান্তা, সুতারখালী ও কালাবগি গ্রামের চিহ্নিত হরিণশিকারিরা রাতে এবং দিনে দলবদ্ধভাবে সুন্দরবনে প্রবেশ করে নিয়মিত হরিণ শিকার করে।
এছাড়া মোংলার চিলা, জয়মনি, বৈদ্যমারী, কাটাখালকুল, বাঁশতলা, কাটাখালী; মোরেলগঞ্জের জিউধরা, গুলিশাখালী, সন্ন্যাসী; শরণখোলার ধানসাগর, তাফালবাড়ী, সোনাতলা, পানিরঘাট, রাজাপুর, রসুলপুর, চালিতাবুনিয়া, সাতক্ষীরার শ্যামনগরের বেশ কিছু গ্রামে হরিণ শিকারিদের তৎপরতা রয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে সুন্দরবনে হরিণ শিকারিদের দৌরাত্ম্যের বিষয়ে বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো বলেন, মূলত শুষ্ক মৌসুমে সুন্দরবনের ভেতরে খাল ও নদীতে পানি শুকিয়ে যাওয়ায় হরিণের বিচরণ বেড়ে যায়। যে কারণে চোরাশিকারিরা এ সময় তৎপর হয়। তবে বিচ্ছিন্ন কিছু শিকারের ঘটনা ঘটলেও সেটা আগের চেয়ে তুলনামূলক অনেক কম। অল্প জনবল দিয়ে এত বড় বনে অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করতে হিমশিম খেতে হয় বনবিভাগের।
তিনি বলেন, শিকারিদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের কারণেই মাংসসহ হরিণ শিকারি ধরা পড়ছে। সুন্দরবনের বন্যপ্রাণিরক্ষায় অপরাধে জড়িতদের তথ্যপ্রদানকারীকে সরকার পুরস্কার বিধিমালা-২০২০ অনুমোদনের ফলে এখন চোরা শিকারিদের ব্যাপারে সাধারণ মানুষ তথ্য প্রদানে উৎসাহিত হচ্ছে। হরিণের ক্ষেত্রে বনের ভেতরে অপরাধ উদঘাটনের তথ্য দেওয়ায় ২০ হাজার টাকা এবং বনের বাইরে ১০ হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষণা দেওয়া আছে।
এ অবস্থায় বনে শিকার বন্ধ এবং শিকারিদের ধরতে ১১ পরিকল্পনা নিয়ে অভিযান শুরু করেছে বন বিভাগ। এ সম্পর্কে সুন্দরবন খুলনা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘হরিণ শিকারের বিষয়ে আমাদের “জিরো টলারেন্স” বা শূন্য সহনশীলতা থাকবে। শিকার হওয়ার পর মৃত হরিণের মাংস উদ্ধারে প্রকৃতপক্ষে কোনো কৃতিত্ব নেই। বরং শিকার হওয়ার আগেই হরিণকে রক্ষা করতে পারাটাই আমাদের সফলতা। আমরা সেই লক্ষ্যে হরিণের মাংস ক্রেতা, বিক্রেতা ও শিকারিদের চিহ্নিত করছি। ১১টি বিষয়ে কর্মপরিকল্পনা করে এগোচ্ছি। এটি বাস্তবায়নে ১৫ জানুয়ারি থেকে সব ফরেস্ট স্টেশন ও বন অভ্যন্তরের টহল ফাঁড়ির দায়িত্বরত কর্মকর্তারা কাজ শুরু করেছেন।’
১৫ জানুয়ারি বনরক্ষীদের উদ্দেশে পাঠানো চিঠিতে সহকারী বন সংরক্ষক শরিফুল ইসলাম ১১টি বিষয় উল্লেখ করে লিখেছেন, প্রতিটি স্টেশন ও টহল ফাঁড়িতে নতুন করে হরিণ শিকারিদের নামের তালিকা প্রস্তুত করতে হবে। হরিণের মাংসের সম্ভাব্য ভোক্তার উৎস চিহ্নিত করতে হবে। সুন্দরবন সংলগ্ন লোকালয়ে হেঁটে টহল জোরদার করতে হবে। বনাঞ্চলের মধ্যেও নিয়মিত টহল করতে হবে এবং টহলের সময় যদি হরিণ শিকারের ফাঁদ পাওয়া যায়, তবে ওই স্থানের লোকেশন সঠিকভাবে অফলাইন ম্যাপে ছবি নিতে হবে। অপরাধ উদ্ঘাটনের পর দ্রুত সময়ে বন মামলা দিতে হবে। প্রতিটি ফরেস্ট স্টেশন ও টহল ফাঁড়ির বনাঞ্চলে প্রতিদিন হেঁটে কতটুকু টহল করা হয়েছে, সেটি প্রতিবেদন আকারে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে অবহিত করতে হবে।
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে সচেতনতামূলক সভা করতে হবে। গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়াতে অপরাধ উদ্ঘাটনে তথ্যদাতার পরিচয় গোপন রেখে তাঁকে পুরস্কার দেওয়া হবে। মাছ ও কাঁকড়া ধরার অনুমতিপত্রধারী জেলেদের পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে। অভয়ারণ্য এলাকায় কোনো জেলে যেন প্রবেশ করে মাছ ও কাঁকড়া আহরণ করতে না পারে, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ক্যাম্পসহ সবাইকে সার্বিক সহযোগিতা করতে হবে। বন বিভাগের একটি লঞ্চ বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করে টহল কার্যক্রম পরিচালনা করবে।
উল্লেখ্য, চোরা শিকারিরা জেলে সেজে নৌকা নিয়ে দু-তিনজনের ছোট দলে বনের গহিনে প্রবেশ করে। তারা নাইলনের দড়ির একধরনের ফাঁদ হরিণের নিয়মিত যাতায়াতের পথে পেতে রাখে। চলাচলের সময় হরিণগুলো সেই ফাঁদে আটকে যায়।