খুলনাঞ্চল ডেস্ক
নয়াদিল্লিতে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশনের উদ্দেশে বিক্ষোভ মিছিলের ঘোষণা দিয়েছে ভারতের হিন্দুত্ববাদী রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘ (আরএসএস)। ছবি : সংগৃহীত
আগামী সপ্তাহে নয়াদিল্লিতে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশনের উদ্দেশে বিক্ষোভ মিছিলের ঘোষণা দিয়েছে ভারতের হিন্দুত্ববাদী রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘ (আরএসএস)। ভারতের দুই শতাধিক সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধিত্বকারী সুধীসমাজের সদস্যরা এতে অংশ নেবেন বলে আরএসএসের একজন কর্মকর্তা শুক্রবার জানিয়েছেন। পিটিআইয়ের বরাত দিয়ে দি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
এ বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে আরএসএসের দিল্লি ইউনিটের গণমাধ্যম ও যোগাযোগ বিভাগের সহ-ইনচার্জ রাজনীশ জিন্দাল জানান, ‘দিল্লির সুধীসমাজ’ ব্যানারে এই মিছিলটি আগামী মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত হবে, যা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস হিসেবে পালন করা হয়।
জিন্দাল বলেন, ‘বাংলাদেশে হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর চলমান নির্যাতনের ঘটনায় গোটা দেশ (ভারতের জনগণ) ক্ষুব্ধ ও ক্ষোভে ফেটে পড়েছে। আমরা ১০ ডিসেম্বর দিল্লিতে বাংলাদেশ দূতাবাসে একটি প্রতিবাদ মিছিল করব এবং বাংলাদেশে হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতনের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলব।’
দিল্লির দুই শতাধিক সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় সংগঠনের প্রতিনিধিরা এই বিক্ষোভ মিছিলে যোগ দেবেন জানিয়ে জিন্দাল বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশ দূতাবাসে একটি স্মারকলিপি জমা দেব। পাশাপাশি জাতিসংঘ, জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদ (ইউএনএইচআরসি), বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউএইচও), অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, এডিবিসহ সব আন্তর্জাতিক সংগঠনে এই স্মারকলিপি পাঠানো হবে।
আমরা তাদের কাছে আহ্বান জানাব, তারা বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর চলমান নির্যাতন ও সহিংসতা বন্ধে অবিলম্বে হস্তক্ষেপ করুক।’
এ ছাড়া প্রতিবাদ মিছিলের আগের দিন সোমবার (৯ ডিসেম্বর) দিল্লির প্রতিটি জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে এই বিষয়ে একটি স্মারকলিপি জমা দেওয়া হবে বলেও আরএসএসের কর্মকর্তা জানান।
আয়োজকরা একটি বিবৃতিতে বলেছেন, এই প্রতিবাদ মিছিলের লক্ষ্য ‘জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নীতিনির্ধারকদের’ মনোযোগ আকর্ষণ করা এবং বাংলাদেশে হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর ‘সহিংসতা ও নিপীড়নের’ বিরুদ্ধে তাদের হস্তক্ষেপ দাবি করা।
সংবাদ সম্মেলনে ভারতের বাংলাদেশে নিযুক্ত সাবেক হাইকমিশনার বীণা সিক্রি ও ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর (আইবি) সাবেক মহাপরিচালক রাজীব জৈন বাংলাদেশে ‘মানবাধিকার পরিস্থিতির অবনতি’ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
বীণা সিক্রি বলেন, ‘এটি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের পর বাংলাদেশে হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি।’ পাশাপাশি তিনি দাবি করেন, বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে থাকা অনেক হিন্দুকে ‘জোরপূর্বক’ পদত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে।
অন্যদিকে আইবির সাবেক প্রধান ও ভারতের জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের (এনএইচআরসি) সাবেক সদস্য রাজীব জৈন বলেন, “বাংলাদেশে হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকারগুলোর একটি ‘প্রকাশ্য লঙ্ঘন’ হচ্ছে এবং দেশটির অন্তর্র্বতীকালীন সরকার তাদের সুরক্ষা দিতে ‘অক্ষম’।”