স্পোর্টস রিপোর্টার
এবারের বিপিএল ড্রাফটে আগ্রহের তালিকায় শীর্ষেই ছিলেন লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেন। জাতীয় দলের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত, লিটন কুমার দাস, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদদের নিয়েও আগ্রহ ছিল। লিটন, রিয়াদরা সহজেই দল পেলেও অপেক্ষা করতে হয় রিশাদ ও শান্তকে। ড্রাফট থেকে প্রত্যেক দল লক্ষ্য অনুযায়ী খেলোয়াড় ভিড়িয়েছে। তবে দল গোছানো শেষ হয়নি। ড্রাফট থেকেই পরেও সরাসরি চুক্তিতে খেলোয়াড় দলে ভেড়াতে পারবে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো। প্রথম দফার দুই রাউন্ডে ৭ দলই দুজন করে খেলোয়াড় কিনেছে। কিন্তু পরের দফায় খেলোয়াড় কিনেছে মাত্র ২ দল। বাকিরা শুধু ‘পাস’ করে গেছেন। ফলে দল গোছানোর প্রক্রিয়া চলমান থাকছে।
গতকাল প্লেয়ার্স ড্রাফটে ১৩ জন খেলোয়াড় দল পাওয়ার পর ১৪তম খেলোয়াড় হিসেবে শান্তকে দলে ভেড়ায় ফরচুন বরিশাল। তবে রিশাদের অপেক্ষাটা হয় আরও লম্বা। তার প্রতি আগ্রহই দেখাচ্ছিল না কোনো। এক পর্যায়ে ষষ্ঠ রাউন্ডে স্থানীয় ৪২ ক্রিকেটারের ডাক শেষেও দল না পেলে রিশাদকে ঘিরে বিস্ময়ের সৃষ্টি হয়। গত আসরে ‘ই’ ক্যাটাগরিতে ছিলেন রিশাদ। এবার তাকে রাখা হয় ‘এ’ ক্যাটাগরিতে। শেষ পর্যন্ত দেশি ক্রিকেটারদের সপ্তম রাউন্ডে গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সফলতম বোলারকে দলে নেয় ফরচুন বরিশাল।
গত বছরের মতো এবারও বিপিএলে ৭টি ফ্র্যাঞ্চাইজি অংশ নেবে। ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রাজশাহী অংশ নিচ্ছে নতুন মালিকানায়। ঢাকার ফ্র্যাঞ্চাইজি খেলবে ঢাকা ক্যাপিটালস নামে আর চট্টগ্রাম খেলবে চিটাগং কিংস নামে। এবার নতুন সংযোজন হয়েছে দুর্বার রাজশাহী। বিপিএলে সর্বোচ্চ ৪ বারের চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস এবার অংশ নিচ্ছে না। বিপিএলে খেলার জন্য প্লেয়ার্স ড্রাফটে অংশ নেন ৪৪০ বিদেশি ক্রিকেটার।
এর আগে ড্রাফটের প্রথম রাউন্ডে দল পান লিটন কুমার দাস। প্রথম ডাকেই তাকে দলে ভেড়ায় ঢাকা ক্যাপিটালস। একই রাউন্ডে শামিম হোসেন (চিটাগং কিংস), তাসকিন আহমেদ (দুর্বার রাজশাহী), মাহমুদউল্লাহ (ফরচুন বরিশাল), রনি তালুকদার (সিলেট স্ট্রাইকার্স), হাসান মাহমুদ (খুলনা টাইগার্স) ও নাহিদ রানাও দল পান (রংপুর রাইডার্স)। আর দ্বিতীয় ডাকে নিজেদের গত দুই আসরের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজাকে দলে নেয় সিলেট।
মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে দলে নেয় ফরচুন বরিশাল। গত বছরও এই দলে খেলেন তিনি। টানা দ্বিতীয় আসরে একসঙ্গে খেলবেন তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহীম ও মাহমুদউল্লাহ। স্থানীয় ক্রিকেটারদের তৃতীয় সেটের প্রথম রাউন্ডে দল পান সাব্বির রহমান ও ইবাদত হোসেন। দুজনের কেউই সর্বশেষ বিপিএলে খেলতে পারেননি। দশম আসরে দল না পাওয়া সাব্বিরকে এবার দলে নিয়েছে ঢাকা ক্যাপিটালস। আর চোটের কারণে এক বছরের বেশি সময় ধরে মাঠের বাইরে থাকা ইবাদতকে খেলবেন ফরচুন বরিশালের হয়ে। চোটে পড়ার আগে ২০২৩ সালের বিপিএলেও এই দলে ছিলেন তিনি।
প্লেয়ার্স ড্রাফট থেকে সবচেয়ে বেশি ১৩ খেলোয়াড় কিনেছে ফরচুন বরিশাল। বিপিএলের বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা ১০ জন স্থানীয় ক্রিকেটারের সঙ্গে ৩ জন বিদেশিকে দলে ভেড়ায়।
নতুন মালিকানায় আসা চট্টগ্রাম ও রাজশাহী নেয় ১২ জন করে। এ ছাড়া সিলেট স্ট্রাইকার্স ১১, এবং ঢাকা, রংপুর ও খুলনা ১০ জন করে খেলোয়াড় দলে টেনেছে। প্লেয়ার্স ড্রাফট থেকে ৭ ফ্র্যাঞ্চাইজি মিলের ৪৪০ জন বিদেশি খেলোয়াড় থেকে কিনেছে মাত্র ১৬ জন। সর্বোচ্চ তিনজন করে কিনেছে ফরচুন বরিশাল ও সিলেট স্ট্রাইকার্স। সরাসরি চুক্তিতেই বেশি ভরসা করছে তারা। সব মিলিয়ে ১৬ জন বিদেশিসহ মোট ৭৮ জন ক্রিকেটার দল পেয়েছেন ড্রাফট থেকে। তবে ড্রাফট শেষ মানেই দল গোছানো শেষ নয়। দলগুলো সরাসরি চুক্তিতে খেলোয়াড় দলে ভেড়াতে পারবে। আগামী ২৭শে ডিসেম্বর শুরু হবে বিপিএলের ১১তম আসর।
কোন দল কেমন হলো
ঢাকা ক্যাপিটালস
দেশি: মোস্তাফিজুর রহমান, তানজিদ হাসান, লিটন দাস, হাবিবুর রহমান, মুকিদুল ইসলাম, আবু জায়েদ, মুশফিক হাসান, সাব্বির রহমান, মুনিম শাহরিয়ার, আসিফ হাসান, শাহাদাত হোসেন।
বিদেশি: থিসারা পেরেরা, জনসন চার্লস, শাহনেওয়াজ দাহানি, মির হামজা, স্টিভেন এসকিনেজি, সাইম আইয়ুব, আমির হামজা।
চিটাগং কিংস
দেশি: সাকিব আল হাসান, শরীফুল ইসলাম, শামীম হোসেন, পারভেজ হোসেন, খালেদ আহমেদ, আলিস আল ইসলাম, মোহাম্মদ মিঠুন, নাঈম ইসলাম, মারুফ মৃধা, রাহাতুল ফেরদৌস, শেখ পারভেজ, মার্শাল আইয়ুব।
বিদেশি: মঈন আলী, উসমান খান, হায়দার আলী, অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস, মোহাম্মদ ওয়াসিম জুনিয়র, বিনুরা ফার্নান্দো, গ্রাহাম ক্লার্ক, টমাস ও’কনেল।
দুর্বার রাজশাহী
দেশি: এনামুল হক (বিজয়), তাসকিন আহমেদ, জিশান আলম, ইয়াসির আলী, সাব্বির হোসেন, সানজামুল ইসলাম, মেহরব হোসেন, আকবর আলী, হাসান মুরাদ, শফিউল ইসলাম, মোহর শেখ। বিদেশি: সাদ নাসিম, লাহিরু সামারাকুন।
খুলনা টাইগার্স
দেশি: মেহেদী হাসান মিরাজ, আফিফ হোসেন, নাসুম আহমেদ, হাসান মাহমুদ, মোহাম্মদ নাঈম, ইমরুল কায়েস, মাহিদুল ইসলাম, আবু হায়দার, জিয়াউর রহমান, মাহফুজুর রহমান, মাহমুদুল হাসান।
বিদেশি: ওশানে টমাস, মোহাম্মদ হাসনাইন, লুইস গ্রেগরি, মোহাম্মদ নেওয়াজ।
রংপুর রাইডার্স
দেশি: নুরুল হাসান, মেহেদী হাসান, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, নাহিদ রানা, সাইফ হাসান, সৌম্য সরকার, রাকিবুল হাসান, রেজাউর রহমান, ইরফান শুক্কুর, কামরুল ইসলাম, তৌফিক খান।
বিদেশি: অ্যালেক্স হেলস, খুশদিল শাহ, আল্লাহ গজনফর, স্টিভেন রায়ান টেলর, সৌরভ নেত্রবালকার, আকিফ জাভেদ, কার্টিস ক্যাম্ফার।
সিলেট স্ট্রাইকার্স
দেশি: জাকির হাসান, জাকের আলী, তানজিম হাসান, রনি তালুকদার, মাশরাফি বিন মুর্তজা, আল আমিন হোসেন, আরাফাত সানি, রুয়েল মিয়া, আরিফুল হক, নিহাদউজ্জামান, নাহিদুল ইসলাম। বিদেশি: পল স্টার্লিং, জর্জ মানসি, রাকিম কর্নওয়াল, সামিউল্লাহ শেনোয়ারি, রিস টপলি।
ফরচুন বরিশাল
দেশি: তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম, তাওহিদ হৃদয়, মাহমুদউল্লাহ, তানভীর ইসলাম, নাজমুল হোসেন, রিপন মণ্ডল, ইবাদত হোসেন, নাঈম হাসান, রিশাদ হোসেন, তাইজুল ইসলাম, শহিদুল ইসলাম, আরিফুল ইসলাম।
বিদেশি: ডেভিড ম্যালান, কাইল মায়ার্স, মোহাম্মদ নবী, ফাহিম আশরাফ, আলী মোহাম্মদ, খান জাহানদাদ, জেমস ফুলার, পাতুম নিশাঙ্কা, নান্দ্রে বার্গার।