ডুমুরিয়ায় আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস পালিত
ডুমুরিয়া(খুলনা)প্রতিনিধিঃ
ডুমুরিয়া উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস ২০২৪ উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা র্যালি ও মহড়া অনুষ্ঠিত। আগামী প্রজন্মেকে সক্ষম করি, দূর্যোগ সহনশীল ভবিষ্যৎ গড়ি এ সোলগান কে সামনে রেখে ডুমুরিয়ায় আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস-২০২৪’ পালিত হয়েছে। আলোচনা অনুষ্ঠান, গোলটেবিল বৈঠক, ভূমিকম্প ও অগ্নিকান্ড বিষয়ক সচেতনতা বৃদ্ধি মহড়া, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার ইত্যাদি । দিবসটি উদ্যাপনের অংশ হিসেবে ডুমুরিয়া উপজেলা প্রসাশনিক ভবন মিলনায়তনে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ কর্মকর্তা মোঃ আশরাফ হোসেনের সঞ্চালনায় সভায় সভাপতিত্ব করেন ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আল আমিন, বক্তব্য দেন ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ ইনসাদ ইবনে আমিন, সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা জিল্লুর রহমান রিগান, উপজেলা রিসোর্স সেন্টারের ইন্সট্রাক্টর মোঃ মনির হোসেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী হুমায়ুন কবির,চেয়ারম্যান শেখ দিদার হোসেন, গাজী হুমায়ূন কবির বুলু, শেখ হেলাল উদ্দিন, জহুরুল হক, সমারেশ মন্ডল, তুহিনুল ইসলাম তুহিন, সাবেক চেয়ারম্যান জি এম আমানুল্লাহ, সমাজ সেবক আলহাজ্ব হযরত মাওলানা মুফতী আব্দুল কাইয়ুম জমাদার,ডুমুরিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি এস এম জাহাঙ্গীর আলম, সাধারণ সম্পাদক শেখ মাহতাব হোসেন,ডুমুরিয়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলাম ডুমুরিয়া উপজেলা শাখার সেক্রেটারি মাওলানা হাবিবুর রহমান, খুলনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডুমুরিয়া জোনাল অফিসের এজি এম কম আব্দুস সালাম, শিক্ষক শরিফুল ইসলাম,সহ আরো অনেকে।
উল্লেখ্য যে কোনো দুর্যোগে যথাযথ পূর্বাভাস, প্রস্তুতি ও ঝুঁকিহ্রাস করে জনগণের জনমালের ক্ষতি কমিয়ে আনা সম্ভব। ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় বহুমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় বর্তমান সরকারের নীতি পরিকল্পনায় ইতোমধ্যে দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস কৌশল অন্তর্ভুক্ত হয়েছে এবং সবধরনের দুর্যোগের প্রস্তুতি সরকার বহুমুখী কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। এতে বহিঃর্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরো উজ্জ্বল হয়েছে এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় আমাদের সক্ষমতার পরিচিতি বৃদ্ধি পেয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার আলোচনা সভা শেষে ডুমুরিয়ার জলাবদ্ধতা নিরসনে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।
স্বামীর প্রতারণার পর বাবার বকুনি, ফাঁস নিলেন গৃহবধূ
নিজস্ব প্রতিনিধি
সাতক্ষীরার শ্যামনগরে বাবার বকুনি খেয়ে আসমা আক্তার নামে (২২) এক গৃহবধূ আত্মহত্যা করেছেন। শনিবার (১২ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে উপজেলার রমজাননগর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
আসমা আক্তার একই গ্রামের মুজিবর গাজী ওরফে বাঘ মুজিবরের মেয়ে এবং সোনারমোড় এলাকার আবুজার হোসেনের স্ত্রী। ইয়াছিন আরাফাত নামে সাড়ে ৩ বছরের একটি সন্তান রয়েছে তার।
নিহতের পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, স্বামীর সঙ্গে মনোমালিন্যের জেরে গত তিন-চার মাস ধরে বাবার বাড়িতে অবস্থান করছিলেন আসমা। শনিবার বিকেলে বাবা মুজিবর রহমান বকুনি দিয়ে তাকে নিজের বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে বলেন। সন্ধ্যার পর পরিবারের সদস্যরা অন্য কক্ষে অবস্থানের সুযোগে আসমা শোবার ঘরের আড়ার সঙ্গে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন।
মুজিবর রহমান জানান, পারিবারিক কারণে তাকে সামান্য বকাঝকা করেছিলেন। তবে মেয়ের আত্মহত্যার জন্য তার জামাই আবুজার দায়ী। তালাক দেওয়া প্রথম স্ত্রীকে আবারো সংসারে ফিরিয়ে আনায় কষ্ট পেয়ে তার মেয়ে তিন-চার মাস আগে স্বামীর বাড়ি ছেড়ে চলে এসেছিল। সে মানসিক কষ্টে ভুগছিল বলেও দাবি করেন তিনি।
এ বিষয়ে আবুজার হোসেন জানান, তার প্রথম স্ত্রীর বিষয়ে আসমা সবকিছু জানতেন। পরবর্তীতে বাবা-মার প্ররোচনায় সে রাগ করে বাবার বাড়িতে চলে যায়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য শেখ জাহাঙ্গীর আলম জানান, স্বামীর প্রতারণার পর বাবার বকুনি খেয়ে অভিমানে আত্মহত্যা করেছে আসমা।
শ্যামনগর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) ফকির তাইজুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।
পদ্মায় বিলীন ১০০ একর জমি-টাওয়ার
নিজস্ব প্রতিনিধি
কুষ্টিয়ার মিরপুরে পদ্মায় আবারো তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। উপজেলার বহলবাড়িয়া ইউনিয়নের মির্জানগর এলাকায় পদ্মার পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে ভাঙনের তীব্রতা বেড়েছে।
শনিবার (১২ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পানির তোড়ে তলিয়ে গেছে জাতীয় গ্রিডের দ্বিতীয় নম্বর বৈদ্যুতিক টাওয়ার পোল। নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে আবাদি জমি, বসতবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ অনেক স্থাপনা। হুমকির মুখে রয়েছে কুষ্টিয়া-পাবনা মহাসড়ক।
এর আগে, গত ১৯ সেপ্টেম্বর কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার পদ্মা নদীতে তলিয়ে যায় পাওয়ার গ্রিড অব বাংলাদেশের (পিএলসি) ১ লাখ ৩২ কেভি একটি টাওয়ার পোল। গত এক সপ্তাহে মিরপুর উপজেলার সাহেবনগর, মির্জানগর, তালবাড়িয়া এলাকায় প্রায় ১০০ একর জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
মিরপুর উপজেলার বহলবাড়িয়া গ্রামের কৃষক ইসাহক জানান, এরই মধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে বেশ কয়েক বিঘা জমি। বসতবাড়িই এখন সম্বল। যেভাবে ভাঙছে নদী তাতে শেষ সম্বল বসতবাড়ি যেকোনো সময় বিলীন হয়ে যাবে।
একই এলাকার আমেনা খাতুন জানান, সহায় সম্বল বলতে বাড়িটুকুই। জমি জায়গা যা ছিল তা আগেই নদী কেড়ে নিয়েছে। বাড়িটুকু হারালে পরিবার নিয়ে কোথায় গিয়ে দাঁড়াবো।
বহলবাড়িয়া জামিউল মাদরাসার সহকারী শিক্ষক ফিরোজ আহমেদ জুয়েল জানান, মাদরাসার খুব কাছাকাছি চলে এসেছে পদ্মা নদী। যেভাবে ভাঙছে তাতে যেকোনো মুহূর্তে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে মাদরাসাটি। এ নিয়ে চরম আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন বলেও জানান তিনি।
স্থানীয় পদ্মা নদী রক্ষা কমিটির নেতা মুফতি ইয়াকুব বিন আজমল বলেন, পদ্মার পানি কমার কারণে সম্প্রতি ভাঙনের তীব্রতা বেড়েছে। শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় পদ্মা নদীতে তলিয়ে গেছে জাতীয় গ্রিডের দ্বিতীয় নম্বর বৈদ্যুতিক টাওয়ার পোল। হুমকির মুখে রয়েছে স্থানীয় সাহেবনগর জামিউল মাদরাসার ভবনটি।
এদিকে, শনিবার দুপুরে ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শনে যান বিআইডব্লিউটিএ ও কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা।
কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাশিদুর রহমান জানান, পদ্মায় পানি কমার সঙ্গে ভাঙনও তীব্র হচ্ছে। প্রাথমিক পর্যায়ে যেসব এলাকায় ভাঙন তীব্র হচ্ছে সেই এলাকায় ভাঙন রোধে জিও ব্যাগ ফেলানো হচ্ছে। এরই মধ্যে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। পানি কমলেই কাজ শুরু করা হবে।
প্রভাবশালীদের দখলে হিসনা নদী, গড়ে উঠছে অট্টালিকা
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার প্রাণ হিসেবে পরিচিত হিসনা নদী গিলে খাচ্ছে প্রভাবশালীরা। কোনো কিছুর তোয়াক্কা না করে স্থানীয় একটি মহল ভেড়ামারার পৌর অংশে নদীর জায়গা দখল করে নির্মাণ করেছে স্থায়ী অট্টালিকা, নদীতে বাঁধ দিয়ে লিজের নামে ব্যক্তি মালিকানায় চলছে মাছ চাষ আর শুকনো মৌসুমে চাষাবাদ।
স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, হিসনা নদী প্রতিনিয়তই দখল হচ্ছে কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ জেলা প্রশাসন নির্বিকার। তাদের দাবি সরকার আসে, সরকার যায়, দখলদারিত্বের কিছু অংশ হাতবদল হয় কিন্তু হিসনার ভাগ্য অপরিবর্তিত থেকে যায়।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, এক সময়ের খরস্রোতা হিসনা নদী ও এর শাখাসমূহ উপজেলার পৌরসভাসহ ধরমপুর, জুনিয়াদহ, চাঁদগ্রাম, মোকারমপুর ইউনিয়নের অন্তত ২০ গ্রামের ওপর দিয়ে বয়ে চলেছে। নদীটি দৌলতপুরের মুসলিমনগরে পদ্মা নদীর শাখা হিসেবে উৎপত্তি হয়ে মিরপুরের চিথুলিয়া হতে সাগরখালী নাম ধারণ করে চাপাইগাছি বিলে পতিত হয়েছে। এর দৈর্ঘ্য ৫২ কিলোমিটার ও প্রস্থ ৪২ মিটার। ভেড়ামারা অংশে নদীটির দৈর্ঘ্য প্রায় ১৫-২০ কিমি এবং এর শাখা নদীসহ আরও ২০ কিমি।
উপজেলার বিভিন্ন ভূমি অফিস থেকে পাওয়া তথ্যমতে, উপজেলার হিসনা ব্রিজ পয়েন্ট থেকে কাঠেরপুলের শেষ সীমানা পর্যন্ত ১৩৬০, ১৩৬২, ১৩৫৩, ১৩৪০-৪১, ১৩২৪-২৫, ১৩১৮, ১৩১৬ দাগগুলো নদীর ভেতরে অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু ৫৩ ও ৬২ দাগ ব্যক্তি মালিকানায় অধিভুক্ত আছে। ১৩৫৩ দাগের রেকর্ড সালেহা খানমের নামে। সম্প্রতি তাকে ভূমি অফিসে ডেকে নোটিশ করা হয়েছে। ১৩৬২ দাগের ওপর নির্মিত বাড়ি নিয়ে ইউএনও অফিসে একাধিকবার সালিশ হয়েছে কিন্তু সুরাহা হয়নি।
বাকি দাগগুলো নদীর খাসজমি, যা অন্যরা চাষাবাদ ও ভোগ দখল করছে। জানা গেছে, ১৯৫৬-৫৭ সালে অনেকেই ‘স্থায়ী বন্দোবস্ত’ (পিআর) এর মাধ্যমে নদীর জমি সরকারের থেকে লিজ নিয়ে ১৯৭৬ সালে আর এস (রিভিশনাল সার্ভে) এর মাধ্যমে তা নিজ নামে রেকর্ড করে নেয়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হিসনা ব্রিজের দক্ষিণ পাশে নদীর কিছু অংশে প্রস্থ ৪০ মিটার আছে। বাদবাকি অধিকাংশ জায়গায় তা কমে ১৫-২০ মিটারের মতো আছে। কৌশলে ব্রিজের নিচে বাঁধ দিয়ে পানি চলাচলের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়েছে। দুই পাশে চলছে নদী দখল ।
কাঠেরপুল অংশে গিয়ে দেখা যায়, নদীর দুপাশ দখল হয়ে প্রস্থ কমে সরু হয়ে নদী মরাখালে পরিণত হয়েছে। অথচ এই অংশ দিয়েই চলত এক সময় বড় বড় নৌকা। অভিযোগ আছে, এখানে নদীর জায়গা দখল করে নির্মিত হয়েছে অন্তত ১০টি দালান বাড়ি। তবে প্রতিটি বাড়িওয়ালা নিজেদের কাগজ আছে বলে সাফাই গেয়েছেন। এই অংশে নদীর ওপর নির্মিত কাঠেরপুল নদীর প্রস্থের অর্ধেকেরও কম।
ভূমি অফিস থেকে পাওয়া তথ্যে দেখা গেছে, ১ ও ১৫২ দুটি পাশাপাশি দাগের নদীর অস্তিত্ব ম্যাপে থাকলেও নদীর জায়গা বিভিন্ন ব্যক্তি মালিকদের নামে রেকর্ড হয়ে আছে। এখানে নদীর ওপর নির্মিত ব্রিজের ১৫১নং দাগটি আবার সরকারের নামে। ব্রিজটি নদীর প্রস্থের ৮ ভাগের ১ ভাগ (যা আইনসিদ্ধ নয়)। ১ নং ও ১৫২নং দাগের ঠিক পাশের ৭২১নং দাগটি আবার নদীর নামে। প্রফেসর পাড়ার এই অংশেও নদীর জায়গা হরিলুট করে বাড়ি, স্থাপনা আর বাঁধ দিয়ে চলছে মাছ চাষের কাজ।
সম্প্রতি নদীর জায়গা দখল করে বালি ফেলার অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগ নেতা তাপস ও ব্যবসায়ী রুবেলের বিরুদ্ধে। ভূমি অফিস থেকে বারবার মাটি সরানোর নোটিশ করেও সুরাহা মেলেনি। তাদের সঙ্গে মোবাইলে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।
তাছাড়াও বিত্তিপাড়ায় তাপসের জায়গার পাশেই ওয়াল দিয়ে নদীর জায়গা দখলের অভিযোগ আছে আওয়ামী লীগ নেতা কুষ্টিয়ার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আতার বিরুদ্ধে। তার পার্শ্ববর্তী বাসিন্দা আশরাফুল বলেন, আতার জমি ৪ কাঠা কিন্তু সে বাউন্ডারি দিয়েছে ১০ কাঠার ওপরে। আতা পলাতক থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
ভেড়ামারার উত্তর রেলগেট এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, শুকনো মৌসুমে নদীতে ধান চাষ হয়। দখলরা নদীর অস্তিত্ব অস্বীকার করে। দখলকৃত জমি একাধিকবার হাত বদলও হয়েছে। নদীর এই অংশের ওপর নির্মিত ফারাকপুর ব্রিজের নিচে ইট দিয়ে স্থায়ী বাঁধ দেওয়া হয়েছে। স্রোত ও নাব্যতা হারিয়ে মরাখালে পরিণত হয়েছে নদীর এই অংশটি।
স্থানীয় বাসিন্দা রমজান আলী বলেন, প্রশাসন মাঝেমধ্যে ব্যবস্থা নিলেও অজ্ঞাত কারণে আবার চলতে থাকে। এভাবে চললে আগামী ২০ বছরেই হিসনা নদীর অস্তিত্ব সম্পূর্ণ বিলীন হয়ে যাবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাশেদুর রহমান বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, আমরাও বিষয়টি লক্ষ করেছি। সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক নদীর ওপর নির্মিত প্রত্যেকটি ব্রিজকে অবশ্যই নদীর প্রস্থের সমান হতে হবে।
নদীর জায়গা দখল নিয়ে তিনি বলেন, মূলত বন্দোবস্তের মাধ্যমে অনেকেই সরকারের থেকে লিজ নেওয়া নদীর জায়গা পরবর্তীতে নিজের নামে রেকর্ড করে রেখেছে। সরকারিভাবে নদী খননের উদ্যোগ নিলেই কেবল অবৈধ স্থাপনা দূর করতে পারব।
ভেড়ামারা উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা শাম্মি শিরিন বলেন, উপজেলার মধ্যে সরকারি খাস খতিয়ানের অন্তর্ভুক্ত কোনো জলাধারের আয়তন যদি ২০ একরের কম হয় তবেই সেটা উপজেলা জলমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটি নিয়ন্ত্রণ করে। প্রবহমান কোনো নদীর গতিরোধ করে মাছ চাষ করার কোনো সুযোগ নেই।
উপজেলা জলমহাল কমিটির সদস্য ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) আনোয়ার হোসাইন বলেন, ইতোমধ্যে সংস্কারের লক্ষ্যে হিসনা নদীর নাম আমরা পাঠিয়েছি। নদী সংস্কারের ব্যাপারে নির্দেশনা পেলে নদী দখল মুক্ত করার জন্য যা প্রয়োজন সেটাই আমরা করব।
ভেড়ামারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা জলমহালের সভাপতি মো. মিজানুর রহমান বলেন, যারা বাঁধ দিয়ে নদীর স্রোতপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত করছে, নদীর জমি দখল করে ঘরবাড়ি নির্মাণ করেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইজারা দিয়ে উন্মুক্ত নদীতে ব্যক্তি বিশেষকে মাছ চাষ করতে দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
বৃষ্টিতে সবজি খেত ক্ষতিগ্রস্ত, বাজারে সরবরাহ কমে যাওয়ায় দাম চড়া
মাগুরা প্রতিনিধি
মাগুরায় দুই সপ্তাহের টানা বৃষ্টিতে নিম্নাঞ্চলের বেশির ভাগ সবজি খেতে পানি জমেছে। তাতে সরবরাহ কমে যাওয়ায় বাজারে সবজির দাম বাড়ছে। এ নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি, এমনকি হাতাহাতির ঘটনাও ঘটছে। রোববার মাগুরার কয়েকটি কাঁচা বাজার ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এই তথ্য জানা গেছে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বেগুন কেজিতে ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহে ছিল ১০০ টাকা। কাঁচা মরিচের কেজি ৫০০ টাকা, পটল ৯০ টাকা, বরবটি ৭০, সবুজ শাক ৬০, উস্তে ১০০, লাউ ১০০, কচুর মুখী ৭০, পুঁই শাক ৬০, ঢেড়শ ৬০, মিষ্টি কুমড়ো ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতারা বলছেন, গত সপ্তাহে এসব সজবির দাম কেজিতে গড়ে ১০ থেকে ২৫ টাকা কম ছিল।
পুরোনো বাজারের খুচরা বিক্রেতা রশিদ মিয়া বলেন, ‘দুই সপ্তাহ ধরে প্রতিদিনই বৃষ্টি হচ্ছে। তবে দুই দিন ধরে বৃষ্টি নে। এর আগে এক মাস বৃষ্টি হয়েছে এলাকায়। ফলে সবজির এলাকা আলিধানী, বেলনগর, হাজিপুর, শিবরামপুর, শালিখার তালখড়িসহ নানা জায়গায় পানি জমেছে। এ জন্য সেখান থেকে সবজি কম আসছে। সামনে নতুন করে সবজি জমিতে না হলে এই সংকট কাটবে না।’
নতুনবাজারে লাউ কিনতে আসা গৃহিণী লতিফা বানু বলেন, ‘এই সপ্তাহে তরকারির দাম বেশি বেড়েছে। এমনকি প্রতিদিনই দাম বাড়ছে। এখন ৫০০ টাকার শুধু তরকারি কেনা লাগছে। মাছ বা দুধ কেনা যাচ্ছে না। বিক্রেতাদের কিছু বললে মারমুখী আচরণ করছে। বাজারে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটছে। এ জন্য সঠিক বাজার মনিটরিং দরকার সরকারের পক্ষ থেকে।’
দাম বেশি হওয়ায় অনেক খুচরা বিক্রেতা সবজি বেচাকেনা করতে পারছেন না বলে জানান খুচরা বিক্রেতা সমিতির সভাপতি জিয়াউল হাসান। তিনি বলেন, ‘এখন অনেক বিক্রেতাই বেশি সবজি কিনতে পারছে না। কারণ দাম বেশি হওয়ায় তা কিনে বিক্রি করাটা কঠিন হয়ে গেছে। বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি, ঝগড়া কেউ করতে চায় না। এ জন্য খুচরা বাজারে সবজির সংকট দেখা দিয়েছে।’
মাগুরা একতা কাঁচা সবজির পাইকারি বাজারের বিক্রেতা বাবলু বিশ্বাস বলেন, মাল খুব কম পাচ্ছি। ধরেন পেঁয়াজ ও আলু বাদে আর সব সবজির দাম বেশি। প্রতিদিন যে পরিমাণ মালের চাহিদা সে পরিমাণ বাজারে আসছে না। ফলে দাম বেশি হয়ে যাচ্ছে। খুচরা বাজারে তা আরও বেড়ে যাচ্ছে। পানি না কমলে নতুন করে সবজি চাষ হবে কি করে। নতুন সবজি বাজারে আসতে এখনো দেড়-দুই মাস লাগবে। সে পর্যন্ত বাজারে সবজি পাওয়াটাও কঠিন হয়ে যাবে বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে মাগুরা সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হুমায়ন কবির বলেন, ‘নভেম্বরে বোরো মৌসুম শুরু হচ্ছে। এখন টানা বৃষ্টিতে কিছু জমি ক্ষতির মুখে পড়েছে। বলা যায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে নিম্নাঞ্চলের কৃষি জমিতে। এর ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণের চেষ্টা করা হচ্ছে। মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের সহযোগিতা করার চেষ্টা করা হচ্ছে। পানি কমে গেলে খুব তাড়াতাড়ি সবজিসহ অন্য ফসল আবার চাষাবাদ শুরু হবে। তখন বাজারে কৃষিপণ্যের সরবরাহ ঠিক হয়ে যাবে।’
যশোরে গৃহবধূর লাশ উদ্ধার, স্বামী পলাতক
অভয়নগর (যশোর) প্রতিনিধি
যশোরের অভয়নগরে পিতি মণ্ডল (২১) নামে এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার উপজেলার সুন্দলী ইউনিয়নের আড়পাড়া গ্রাম থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনার পর থেকে তার স্বামী পলাতক রয়েছেন।
পিতি মণ্ডল উপজেলা সুন্দলী ইউনিয়নের ডাঙ্গামশিহাটি গ্রামের উত্তম মণ্ডলের মেয়ে ও আড়পাড়া গ্রামের সৌমিত্র ধরের স্ত্রী। তিনি যশোর মহিলা কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষে বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন।
পিতি মণ্ডলের বাবা উত্তম মণ্ডলের অভিযোগ; পারিবারিক কলহের জের ধরে স্বামী সৌমিত্র পিতিকে হত্যার পরে পালিয়ে যায়।
স্থানীয়রা জানান, দুই বছর আগে পরিবারের অমতে সৌমিত্র ধরের হাত ধরে পিতি মণ্ডল তাদের বাড়ি চলে যায়। সৌমিত্রের পরিবার নিজেদের দায়িত্বে তাদের বিয়ের ব্যবস্থা করে। বিয়ের পর থেকেই সৌমিত্রের পরিবার তাকে মেনে নিতে পারেনি। প্রায় তাদের মধ্যে সাংসারিক বিষয় নিয়ে ঝগড়া বিবাদ লেগে থাকত।
পিতি মণ্ডলের বড় ভাই হরিনাথ বিশ্বাস বলেন, ‘আমার বোন মারা গেছে এমন খবর পেয়ে দ্রুত তার স্বামীর বাড়ি আড়পাড়াতে যাই। গিয়ে দেখি খাটের ওপর পিতির মরদেহ পড়ে আছে। তার স্বামী ও পরিবারের লোকেরা পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। আমার বোনকে হত্যা করে বাড়ি থেকে সবাই পালিয়েছে। এখন মিথ্যা নাটক সাজাচ্ছে, গলায় ফাঁস দেওয়ার কথা বলে। আমার বোনের হত্যাকারীর গ্রেপ্তার ও কঠোর শাস্তির দাবি করছি।’
অন্যদিকে সৌমিত্র মণ্ডলের মা স্বপ্না মণ্ডল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। আমার বউমা নিজেই গলায় শাড়ি পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করছে।’
এ বিষয়ে অভয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম আকিকুল ইসলাম বলেন, ‘রাতেই গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য যশোর জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এটা হত্যা নাকি আত্মহত্যা বলা যাচ্ছে না। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে তারপর বলা যাবে।’
কয়রায় আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রমশন দিবস পালন
কয়রা(খুলনা)প্রতিনিধি
কয়রা উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস পালন উপলক্ষে শোভাযাত্রা, আলোচনা, ভুমিকম্প ও অগ্নিকান্ড বিষয়ক মহড়া অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার (১৩ অক্টোবর) সকাল ১০ টায় এ উপলক্ষে শোভাযাত্রা ,মহড়া শেষে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুলী বিশ্বাসের সভাপতিত্বে ও৷ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার মোঃ মামুনার রশিদের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন উপজেলা জমায়াতের আমির মাওলানা মিজানুর রহমান, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক এম,এ হাসান,জামায়াতের সেক্রেটারী মাওলানা সাইফুল্লাহ, প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মোস্তফা শফিকুল ইসলাম, আলহাজ্ব সদর উদ্দিন আহমেদ, উপজেলা ব্লাড ডোনার ক্লাবের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান, শিক্ষক অরবিন্দ কুমার মন্ডল, এনজিও প্রতিনিধি মোঃ মোস্তাক মাহমুদ, নিজাম উদ্দীন, ফারুক হোসেন, আঃ মজিদ, কুদরত উল্লাহ বিজু, সিপিপি সদস্য সাইফুল ইসলাম, সাদিয়া আক্তার প্রমুখ।
বাগেরহাটে ডেঙ্গু প্রতিরোধে বিএনপি’র লিফলেট বিতরণ
স্টাফ রিপোটার,বাগেরহাট
বাগেরহাটে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতামুলক লিফলেট বিতরণ করেছে জেলা বিএনপি। রবিবার দুপুরে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এম এ সালাম দলীয় নেতৃবৃন্দকে সাথে নিয়ে শহরের রেল রোড থেকে শুরু করে শহরের বিভিন্ন দোকানে ও সাধারণ মানুষের মধ্যে এডিস মশা থেকে রক্ষায় গণসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে লিফলেট বিতরণ করেন। বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে বাগেরহাটে ৬ অক্টোবর থেকে জেলাব্যাপী ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতামুলক লিফলেট বিতরণ করছে বিএনপি।
বাগেরহাটে লিফলেট বিতরন কালে অন্যান্যেরা মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক খাদেম নিয়ামুল নাসির আলাপ, আহবায়ক কমিটির সদস্য শেখ শাহেদ আলী রবি,মাহাবুবর রহমান টুটুল, মেহেবুবুল হক কিশোর, হাদিউজ্জামান হিরো, জেলা শ্রমিকদলের সাবেক সভাপতি সরদার লিয়াকত আলী, বিএনপি নেতা শেখ নজরুল ইসলাম, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি এ্যাড মোশারেফ হোসেন মন্টু, জেলা সেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম শান্ত, জেলা জাসাসের সভাপতি মো. কামরুজ্জামান প্রমূখ।
তালায় নানান কর্মযজ্ঞের মধ্য দিয়ে শেষ হলো শারদীয় দূর্গা উৎসব
ইলিয়াস হোসেন, তালা(সাতক্ষীরা)::
সাতক্ষীরার তালায় টানা পাঁচ দিন ধরে ঢাকের বোল, কাঁসরের ঘণ্টা, শাঁখের ধ্বনি আর পুণ্যার্থীদের সমাগমে জমজমাট হয়ে থাকা পূজামণ্ডপগুলো নীরব হয়ে পড়েছে। রবিবার মধ্যাহ্নের পর থেকে, প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে বাঙালি হিন্দু ধর্মালম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দূর্গাপূজা। গত বুধবার ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছিল পাঁচ দিনের এই উৎসব। এবার তালা উপজেলায় প্রায় ১৭৮ টি মণ্ডপে পূজা হয়েছে।
তালার অন্যতম মাঝিয়াড়া মহাশ্মান মন্দির এর পূজারি প্রাকাশ ভাট্রাচর্জ্য জানান, দশমী পূজা ছিল ভোর ৬টা ১৩ মিনিট থেকে শুরু হয়ে বেলা ১২টা পর্যন্ত । এর মধ্যেই বিভিন্ন মন্দিরে দশমীর বিহিত পূজা সম্পন্ন হয়েছে। এরপর দর্পণ বিসর্জনের ভেতর দিয়ে পাঁচ দিনের শারদীয় দূর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়। দর্পণ বিসর্জনের ভেতর দিয়েই মূলত দেবী দূর্গার বিসর্জন সম্পন্ন হয়।
প্রাকাশ ভাট্রাচর্জ্য বলেন, এবার দেবী এসেছেন দোলায়, গেছেন ঘোটকে। এর তাৎপর্য এ বছর মহমারী, বণ্যা, অনাকাঙ্খিত দূর্ঘটনার হার বাড়বে। তবে দেবীর চরণে অঞ্জলি দিয়ে শান্তি আর কল্যাণই কামনা করেছেন সকলেই।
দর্পণ বিসর্জনের পরে তালার বিভিন্ন মন্দিরে বিবাহিত নারীরা সিঁদুর খেলায় অংশ নেন। প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরেও তালা উপজেলার স্থায়ী মন্দিরগুলোতেই সিঁদুর খেলার আয়োজন করা হয়। তবে এ বছর তরুণীরা সিঁদুর খেলায় অংশ না নিলেও দেবীকে বিজয়ার প্রণাম জানাতে অনেক তরুণ তরুণী মন্দিরগুলোতে আসেন। তাতে বিজয়ার বিষাদের মধ্যেও মিশে থাকে আনন্দের আবহ।
তালা বাজার দূর্গ মন্দিরে সাকালে গিয়ে দেখা গেল, লাল-সাদা শাড়ি পরে শত শত গৃহিণী বরণডালা ও সিঁদুরের কৌটা নিয়ে মেতেছেন দেবীর চরণ স্পর্শ করে সঙ্গী বা উপস্থিত অন্য ভক্তদের কপালে কপালে সিঁদুর মাখিয়ে দেওয়াই।
তালা সদরের রত্না মজুমদার বলেন, আমি বরণডালা নিয়ে এসেছি আমার স্বামী একজন চাকুরীজীবি, কাজ করেন বে-সরকারী একটি সংস্থায়। স্বামীর সংসারের কল্যাণ কামনায় বরণডালা সাজিয়ে এনেছি আমদের দূর্গা মন্দিরে। তিনি জানান, বিসর্জনের পর এই সিঁদুর খেলা মূলত বিবাহিত নারীদের একটি মাঙ্গলিক আচার। স্বামী-সংসারের মঙ্গল কামনা করে সবাই বরণডালা সাজিয়ে বা সিঁদুরের কৌটা সঙ্গে নিয়ে আসেন। এই সিঁদুর দেবীর চরণ স্পর্শ করিয়ে কৌটায় করে সংরক্ষণ করেন। এই সিঁদুরই তাঁরা সারা বছর ব্যবহার করেন। যাঁরা বরণডালা সাজিয়ে আনেন, তাতে থাকে ধান, দূর্বা, বেলপাতা, কাঁচা হলুদ, কড়ি, যেকোনো ধরনের অন্তত একটি ফুল, নাড়ু আর মিষ্টি। আর সিঁদুরের কৌটা তো থাকেই। এই বরণডালা নিয়েই দেবী প্রণাম করে ঘরে ফিরবো।
তালা কেন্দ্রীয় মহা শশ্মানের সভাপতি কল্যাণ বসু বলেন, এবার তাঁরা মণ্ডপ তৈরি ও সাজসজ্জায় দেশি ও পরিবেশবান্ধব উপকরণের প্রাধান্য দিয়েছেন। পূজায় প্রতিদিনই প্রসাদ বিতরণ করা হয়েছে। তালা উপজেলার অধিকাশং মন্দির এর প্রতিমা কপোতাক্ষ নদের পাড়ে আনা হয়। এরপর সন্ধ্যায় বিসর্জন দেওয়া হয় কপোতক্ষ নদে।
জানাজায় মানুষের ঢল : বিএনপির শোক
সাবেক কাউন্সিলর মনি’র স্ত্রীর দাফন সম্পন্ন
।। খবর বিজ্ঞপ্তি।।
খুলনা মহানগর বিএনপির সদস্য, সোনাডাঙ্গা থানা বিএনপির আহ্বায়ক, কেসিসি ১৮ নং ওয়ার্ডের জনপ্রিয় সাবেক কাউন্সিলর হাফিজুর রহমান মনি’র সহধর্মিণী ও মহানগর ছাত্রদল নেতা ইসবুর রহমান ইমুল’র মমতাময়ী মাতা ইয়াসমিন আক্তার (৪৬) শনিবার (১৩ অক্টোবর) দিনগত ভোর রাত আনুমানিক ৪ টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তিনি এক কন্যা ও পুত্র সন্তানসহ অসংখ্য গুনগ্রাহী রেখে গেছেন। পেশায় তিনি স্কুল শিক্ষিকা ছিলেন। এলাকার বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষের বিপদে আপদে পাশে দাড়াতেন। বেশ কিছুদিন যাবৎ তিনি মরণব্যধি ক্যন্সারে আক্রান্ত ছিলেন। পতিত সরকারের মিথ্যা গায়েবী মামলায় ফেরারী জীবনযাপন করার কারনে হাফিজুর রহমান মনি তার স্ত্রীর সঠিক চিকিৎসা করাতে পারেননি। এদিকে মরহুমার মৃত্যুর সংবাদে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। সকাল থেকেই মরহুমার বাড়িতে হাজার হাজার মানুষ ভীড় করেন। মরহুমার নামাজে জানাযা রবিবার বাদ যোহর বসুপাড়াস্থ সিদ্দিকিয়া মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় কয়েক হাজার লোকের উপস্থিতি দেখা গেছে। জানাজা শেষে বসুপাড়া কবরস্থানে মরহুমার দাফন সম্পন্ন হয়। মরহুমার নামাজে জানাজায় মহানগর বিএনপির আহবায়ক এড. শফিকুল আলম মনা, সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিনসহ মহানগর, থানা, ওয়ার্ড বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপির শোক: খুলনা মহানগর বিএনপির সদস্য, সোনাডাঙ্গা থানা বিএনপির আহ্বায়ক, কেসিসি ১৮ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর হাফিজুর রহমান মনি’র সহধর্মিণী ও মহানগর ছাত্রদল নেতা ইসবুর রহমান ইমুল’র মমতাময়ী মায়ের মৃত্যুতে গভীর শোক ও শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করে বিবৃতি দিয়েছেন খুলনা বিএনপি নেতৃবৃন্দ। রবিবার (১৩ অক্টোবর) মিডিয়া সেল প্রদত্ত বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, বিগত মাফিয়া সরকারের সাজানো পাতানো মিথ্যা মামলায় পলাতক জীবন যাপন করার কারনে বিএনপি নেতা হাফিজুর রহমান মনি তার স্ত্রীর সঠিক চিকিৎসা করাতে পারেননি। ফলে মরহুমার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটেছিলো। বিবৃতিদাতারা হলেন বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির তথ্য সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, মহানগর বিএনপির আহবায়ক এড. শফিকুল আলম মনা, সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন, যুগ্ম আহবায়ক যথাক্রমে স. ম. আ. রহমান, রেহেনা ঈসা, অ্যাডভোকেট নুরুল হাসান রুবা, কাজী মাহমুদ আলী, শের আলম সান্টু, আবুল কালাম জিয়া, বদরুল আনাম খান, মাহাবুব হাসান পিয়ারু, চৌধুরী শফিকুল ইসলাম হোসেন, একরামুল হক হেলাল, মাসুদ পারভেজ বাবু, শেখ সাদী, হাসানুর রশিদ চৌধুরী মিরাজ, সদর থানার আহবায়ক কেএম হুমায়ুন কবীর, সদস্য সচিব মোল্লা ফরিদ আহমেদ, সোনাডাঙ্গা থানার সদস্য সচিব সাজ্জাদ আহসান পরাগ, খালিশপুর থানার আহবায়ক জাহিদুর রহমান, সদস্য সচিব হাবিবুর রহমান বিশ্বাস, দৌলতপুর থানার আহবায়ক মুর্শিদ কামাল, সদস্য সচিব শেখ ইমাম হোসেন, খানজাহান আলী থানার আহবায়ক কাজী মিজানুর রহমান, সদস্য সচিব আবু সাঈদ হাওলাদার আব্বাস প্রমূখ। বিবৃতিদাতারা মরহুমার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেছেন। অনুরুপ বিবৃতি দিয়েছেন, সোনাডাঙ্গা থানা বিএনপির একরামুল কবির মিল্টন, সেখ জামাল উদ্দিন, শেখ ফারুক হোসেন, আলী আক্কাস, মিজা মাহমুদ, আসাদুজ্জামান আসাদ, মোস্তফা কামাল, শেখ আঃ আলিম, মাহমুদ আলম বাবু মোড়ল, শাহ জালাল, নজরুল ইসলাম, আজিজুর রহমান, মিজানুর রহমান মিজান, ওহিদুজ্জামান ওহিদ, আরিফুর রহমান বিপ্লব, আহসান হাবিব বাবু, মিজানুর রশীদ প্রমুখ ।
বন্ধনের শোক: মরহুমের মুত্যুতে গভীর শোক ও শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন খুবি বন্ধনের নেতৃবৃন্দ। বিবৃতিদাতারা হলেন- বন্ধনের সভাপতি আলহাজ্জ্ব আব্দুর রহমান, সাধারন সম্পাদক এস এম মোহাম্মদ আলী, আবু সালেহ মোঃ পারভেজ, শেখ শরাফত আলী দুলু, সেখ সাইফুল আলম বাদশাহ, এস এম মনিরুজ্জামান পলাশ, মোঃ জাবেদ এলাহী, লাভলী খাতুন, আব্দুল্লাহ শাহানুর কবির অয়ন, সহ-সভাপতি কাজী মোঃ ফেরদাউস, এস, এম শাকীল রহমান, সৈয়দ মিজানুর রহমান, কাজী আবু খালিদ, মোঃ রবিউল ইসলাম, মিজানুর রহমান খান মুকুল, মোঃ শফিকুল ইসলাম, শেখ আকতার হোসেন, সরদার ইস্রাফিল হোসেন, মোঃ নাসির জাহাঙ্গীর, মোঃ নুরুজ্জামান মিথুন, আব্দুর রব, মোঃ ইকবাল হোসেন, এস আতিকুর রহমান, এস,এম জাকির হোসেন, শেখ আফসার উদ্দিন, আলমগীর হাবিব সাগর, শেখ আবুয়াল আউয়াল, শেখ নাসির উদ্দিন, ফকির বিল্লাল হোসেন, মাওঃ গোলজার হোসেন, কাজী মোঃ জালাল উদ্দিন, মোঃ সাইফুল ইসলাম, মোঃ কামরুজ্জামান তুহিন, মোঃ শামীম রহমান, কুদরত-ই-এলাহী রঞ্জু, সাহারা বেগম, মোঃ জসিম উদ্দীন, সালেহা পারভেজ, লায়লা রুমঝুম, রোকেয়া পারভীন, শামীমা সুলতানা, শেখ আফসার উদ্দিন, সরদার ঈসরাফিল হোসেন, হারুনর রশিদ, মোঃ আবুল কালাম, মোঃ নুরুল আমিন, মোঃ ফেরদৌস, শেখ আব্দুল্লাহ, মোঃ আতিয়ার রহমান, মোর্শারফ হোসেন, মোঃ মোজাম্মেল হক, শেখ হুমায়ন কবির প্রমুখ।
ডুমুরিয়ায় আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস পালিত
ডুমুরিয়া(খুলনা)প্রতিনিধিঃ
ডুমুরিয়া উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস ২০২৪ উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা র্যালি ও মহড়া অনুষ্ঠিত। আগামী প্রজন্মেকে সক্ষম করি, দূর্যোগ সহনশীল ভবিষ্যৎ গড়ি এ সোলগান কে সামনে রেখে ডুমুরিয়ায় আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস-২০২৪’ পালিত হয়েছে। আলোচনা অনুষ্ঠান, গোলটেবিল বৈঠক, ভূমিকম্প ও অগ্নিকান্ড বিষয়ক সচেতনতা বৃদ্ধি মহড়া, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার ইত্যাদি । দিবসটি উদ্যাপনের অংশ হিসেবে ডুমুরিয়া উপজেলা প্রসাশনিক ভবন মিলনায়তনে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ কর্মকর্তা মোঃ আশরাফ হোসেনের সঞ্চালনায় সভায় সভাপতিত্ব করেন ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আল আমিন, বক্তব্য দেন ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ ইনসাদ ইবনে আমিন, সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা জিল্লুর রহমান রিগান, উপজেলা রিসোর্স সেন্টারের ইন্সট্রাক্টর মোঃ মনির হোসেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী হুমায়ুন কবির,চেয়ারম্যান শেখ দিদার হোসেন, গাজী হুমায়ূন কবির বুলু, শেখ হেলাল উদ্দিন, জহুরুল হক, সমারেশ মন্ডল, তুহিনুল ইসলাম তুহিন, সাবেক চেয়ারম্যান জি এম আমানুল্লাহ, সমাজ সেবক আলহাজ্ব হযরত মাওলানা মুফতী আব্দুল কাইয়ুম জমাদার,ডুমুরিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি এস এম জাহাঙ্গীর আলম, সাধারণ সম্পাদক শেখ মাহতাব হোসেন,ডুমুরিয়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলাম ডুমুরিয়া উপজেলা শাখার সেক্রেটারি মাওলানা হাবিবুর রহমান, খুলনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডুমুরিয়া জোনাল অফিসের এজি এম কম আব্দুস সালাম, শিক্ষক শরিফুল ইসলাম,সহ আরো অনেকে।
উল্লেখ্য যে কোনো দুর্যোগে যথাযথ পূর্বাভাস, প্রস্তুতি ও ঝুঁকিহ্রাস করে জনগণের জনমালের ক্ষতি কমিয়ে আনা সম্ভব। ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় বহুমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় বর্তমান সরকারের নীতি পরিকল্পনায় ইতোমধ্যে দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস কৌশল অন্তর্ভুক্ত হয়েছে এবং সবধরনের দুর্যোগের প্রস্তুতি সরকার বহুমুখী কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। এতে বহিঃর্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরো উজ্জ্বল হয়েছে এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় আমাদের সক্ষমতার পরিচিতি বৃদ্ধি পেয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার আলোচনা সভা শেষে ডুমুরিয়ার জলাবদ্ধতা নিরসনে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।
ফকিরহাটে সেনাবাহিনীর উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের পূজা মন্ডপ পরিদর্শণ
ফকিরহাট (বাগেরহাট) প্রতিনিধি :
বাগেরহাটের ফকিরহাট কেন্দ্রীয় কালি মন্দিরের দূর্গা পূজা মন্ডপ পরিদর্শণ করেন ২৮ পদাতিক বরিশাল সেনানিবাসের ব্রিগেড কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জোবায়ের হাসনাত। এসময় তার সাথে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা ও সেনাসদস্যগন উপস্থিত ছিলেন। রোববার (১৩ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পরিদর্শণ শেষে তিনি মন্দির কমিটির নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় করেন।
এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ফকিরহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামাল হোসেন, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল) মো. রবিউল ইসলাম শামীম, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আশরাফুল আলম, ফায়ার সার্ভিসের গ্রুপ লিডার মো. মনিরুজ্জামান, ভারপ্রাপ্ত স্টেশন কর্মকর্তা শাহাজান মিয়া, উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারন সম্পাদক সুমন ধর, হিন্দু, সহকারী অধ্যাপক মরারী মোহন পাল, ফকিরহাট কেন্দ্রীয় কালি মন্দিরের সভাপতি তাপস কুমার বিশ্বাস, সাধারন সম্পাদক প্রশান্ত মোদক বাবু, সহ অন্যান্যরা। #
পাইকগাছায় আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস পালিত
পাইকগাছা(খুলনা)প্রতিনিধি।।
খুলনার পাইকগাছায় আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস পালিত হয়েছে।রবিবার সকালে দিবসটি উপলক্ষ্যে উপজেলা প্রশাসন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের আয়োজনে একটি র্যালি পৌর সদরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিন শেষে উপজেলা চত্বরে এসে শেষ হয়।পরে দিবসটি উপলক্ষ্যে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ইমরুল কায়েসের সভাপতিত্বে আলোচনা সভা অনুষ্টিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহেরা নাজনীন। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা রিসোর্স সেন্টারের কর্মকর্তা ঈমান আলী,উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মোঃ হাসিবুর রহমান ও পাইকগাছা প্রেসক্লাবের সভাপতি এ্যাডঃ এফ এম এ রাজ্জাক প্রমুখ।
খর্ণিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন পূজা মন্ডপে শুভেচ্ছা বিনিময় ও নগদ অর্থ প্রদান
ডুমুরিয়া(খুলনা)প্রতিবেদকঃ
‘ধর্ম যার যার উৎসব সবার’ মোরা একই বৃত্তে দুটি কুসুম হিন্দু – মুসলমান, মুসলিম তাহার নয়নমণি হিন্দু তার প্রাণ এই প্রত্যয়কে বুকে লালন করে হিন্দু সম্প্রদায়ের সুবৃহৎ শারদীয় দূর্গা উৎসবের মহা দশমীতে ডুমুরিয়া উপজেলার খর্ণিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন পূজা মন্ডপে সকলের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় ও নগদ আর্থিক অনুদান প্রদান করেন খর্ণিয়া ইউনিয়নের তিনবারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান ও খর্ণিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি শেখ দিদারুল হোসেন দিদার। তিনি এসময়ে উপস্থিত সকল সনাতনী ভাই-বোনদের উদ্দেশ্যে বলেন, সকল ধর্মের মানুষ তাদের নিজ নিজ সত্ত্বায় এবং স্বাধীনভাবে ধর্মীয় নিয়ম নীতি মেনে ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করবে এটাই আমাদের সম্প্রীতির বন্ধন। বাংলাদেশের মানুষ সব সময় আমরা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে বসবাস করি।তিনি শারদীয় দূর্গা পূজায় সকলকে উৎসবমুখর আনন্দঘন পরিবেশে এ উৎসব উপভোগ করার আহবান জানান। তিনি আরোও বলেন সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই। হিন্দু সম্প্রদায়ের সুবৃহৎ শারদীয় দূর্গা পূজায় খর্ণিয়া ইউনিয়নের ১৬ টি পূজা মন্ডপ পরিদর্শন করেন এবং গোনালী,বামুন্দিয়া,টিপনা,খর্ণিয়া,ভদ্রদিয়া,আঙ্গারদোহা সহ ইউনিয়নের বিভিন্ন পূজা মন্দিরে সকল ভক্তদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় ও মন্দির কমিটির নেতৃবৃন্দের হাতে নগদ অর্থ বিতরণ করেন। এ সময়ে তার সাথে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির যুগ্ম-আহবায়ক শেখ শাহিনুর রহমান,খর্ণিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোঃ শফিকুল জোয়াদ্দার,ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি মেম্বার শেখ হযরত আলী,যুবদলনেতা মেম্বার শেখ রবিউল ইসলাম,ফজলু মোড়ল, শেখ হাফাজ উদ্দীন,কালাম বিশ্বাস,শহিদুল শেখ,উজ্বল শেখ,আলামিন শেখ,লিটন ফকির,সোহাগ মোড়ল,তৈয়েবুর শেখ,রফিকুল ফকির,সেলিম শেখ,বক্কার শেখ,হালিম শেখ,জিয়াউর গাজী,সাগর খান,আয়ুব আলী,শাহিন শেখ,মনা জোয়াদ্দার,সাঈদ জোয়াদ্দার,হালিম সরদার,মোল্যা আবুল কাশেম সহ উপজেলা, ইউনিয়ন পর্যায়ের বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের প্রমুখ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
নিউমার্কেটে ইসলামী আন্দোলন খুলনা সোনাডাঙ্গা থানার গণ-সমাবেশ আজ
খবর বিজ্ঞপ্তি
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আহতদের সুস্থতা ও বীর শহীদদের মাগফিরাত কামনায় দোয়া ও ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত গণহত্যার বিচার, দুর্নীতিবাজদের গ্রেফতার ও অবৈধ সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করা, সংখ্যানুপাতিক (চজ) পদ্ধতিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন, বন্ধ মিল কলকারখানা চালু, ইহকালীন শান্তি ও পরকালীন মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামী সমাজভিত্তিক কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে আজ ১৪ অক্টোবর সোমবার বিকাল ৩ টায় নগরীর নিউমার্কেট বাইতুন নূর মসজিদের সামনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ খুলনা মহানগরীর সোনাডাঙ্গা থানার উদ্যোগে গণ-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
গণসমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর নায়েবে আমীর হাফেজ মাওলানা আব্দুল আউয়াল। বিশেষ অতিথি হিসেবে থাকবেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ খুলনা মহানগর সহ-সভাপতি শেখ মোঃ নাসির উদ্দিন, সেক্রেটারি মুফতি ইমরান হোসাইন, জয়েন্ট সেকেটারি মোঃ আবু গালিব, আলহাজ্ব ডাক্তার এস এম সেলিম হোসেন, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের এস এম আবুল কালাম আজাদ, মোঃ ইব্রাহিম খান, ইসলামী যুব আন্দোলনের মোঃ ইমরান হোসেন মিয়া, মোঃ আব্দুস সবুর, ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন, মোহাম্মদ মোস্তফা অল গালিব, আব্দুল মান্নান সরদার, মোঃ নাজমুল ইসলাম, মোঃ আমিনুর ইসলাম।
আজকের গণসমাবেশে খুলনার সর্বস্তরের ধর্মপ্রান মুসলমানদেরকে উপস্থিত থাকার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ খুলনা সোনাডাঙ্গা থানার সভাপতি মোল্লা রবিউল ইসলাম তুষার, সেক্রেটারি মোহাম্মদ কবির হোসেন হাওলাদার।
রাশেদুল ইসলামকে কেশবপুর প্রেসক্লাবের সংবর্ধনা
কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি :
অন্তর্বতীকালীন সরকারের প্রধান উপদ্রেষ্টার প্রেস-উইং এর সদস্য ও বাংলাদেশ রাষ্টীয় সংবাদ সংস্থা (বাসস) এর নিউজ এডিটর যশোরের কেশবপুর উপজেলার কৃতি সন্তান বিশিষ্ট সাংবাদিক এস এম রাশেদুল ইসলামকে কেশবপুর প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়েছে।
শনিবার (১২ অক্টবর ২০২৪) রাতে তিনি আকষ্মিক ভাবে কেশবপুর প্রেসক্লাবে উপসি’ত হলে প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে তাকে তাৎক্ষণিক ফুলেল শুভেচ্ছা প্রদান করা হয় এবং অন্তর্বতীকালীন সরকারের প্রধান উপদ্রেষ্টা ড. মোহাম্মাদ ইউনুস এর প্রেস-উইং এর সদস্য নির্বাচিত হওয়ায় তাকে বিশেষ ভাবে অভিনন্দিত করা হয়।
প্রেসক্লাব মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ওই সংবর্ধনা প্রদান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কেশবপুর প্রেসক্লাবের নব-নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল ফুয়াদ। এসময় উপসি’ত ছিলেন কেশবপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আজিজুর রহমান, নব-নির্বাচিত সহ-সভাপতি আব্দুল হাই সিদ্দিকী, গ্রন’গার সম্পাদক মতিয়ার রহমান, ক্রীড়া সম্পাদক মাসুম বিল্লাহ, নির্বাহী সদস্য নুরুল ইসলাম খান, রমেশ চন্দ্র দত্ত, মেহদী হাসান জাহিদ, অলিয়ার রহমান, সদস্য এম আব্দুল করিম, শহিদুল ইসলাম, রুহুল আমিন খান, আলমগীর হোসেন, আব্দুল মোমিন, রাবেয়া ইকবাল, জাকির হোসেন প্রমুখ। সংবর্ধনা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে এস এম রাশেদুল ইসলাম কেশবপুর প্রেসক্লাবের উন্নয়নে ও কেশবপুরের বন্যা কবলিত ১০৬টি গ্রামের দুর্গত মানুষের পাশে থাকার প্রত্যয় ব্যাক্ত করেন। এসময় আরো বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট আইনজীবি এ্যাডভোকেট বদরুজ্জামান মিন্টু।
খালিশপুরে মাদক বিক্রিতে বাঁধা দেয়াকে কেন্দ্র করে হামলায় আহত ১
স্টাফ রিপোর্টার
নগরীর খালিশপুর ১১৩ নং রোড এলাকায় মাদক বিক্রিতে বাঁধা দেয়ায় চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী প্রিন্সের নেতৃত্বে সজীব (২১) নামের এক ইজিবাইক চালককে এলোপাথারি কুপিয়ে জখম করেছে দুর্বৃত্তরা।
ভুক্তভোগী সূত্রে জানা গেছে,১১৩ নং রোডের চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী প্রিন্স প্রসাশনের কিছু অসাধু কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে দীর্ঘদিন যাবত মাদক বিক্রি করে আসছিল। এ ব্যপারে বিভিন্ন সময়ে এলাকাবাসীরা আন্দোলন করলেও এখনো মেলেনি নিস্তার। এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার রাত ৭ টার দিকে মুজগুন্নী উত্তর পাড়ার কামরুল হাওলাদারের ছেলে সজীব (২১) বাঁধা দিলে প্রিন্স ও আজিজুলের নেতৃত্বে রায়হান,মধু,রুবেল,রুবেল,শাহীন,তুহিন সহ অন্তত ১৫-২০ জনের সংঘবদ্ধ একদল দুর্বৃত্তরা সজীবকে এলোপাথারি কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে স্থানীয়রা আহত সজীবকে উদ্ধার করে দ্রুত খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী সজীবের পিতা কামরুল হাওলাদার খালিশপুর থানায় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানান।
পূজার ছুটিতে পর্যটক পদচারণায় মুখরিত সুন্দরবন
মোংলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি
পূজার ছুটিতে পর্যটক পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে সুন্দরবন। টানা ৪দিনের ছুটির শেষ দিনে সবচেয়ে বেশি পর্যটকের আগমন ঘটেছে সুন্দরবনে। এ ছুটিতে কেউ এসেছেন পরিবারের সাথে আবার কেউ এসেছেন বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে। সুন্দরবন ভ্রমণে এসে আনন্দ উপভোগের পাশাপাশি নানান সমস্যার দিকগুলোও তুলে ধরছেন পর্যটকেরা।
যদিও এখন পর্যটন মৌসুম নয়। মুলত শীতকালে শুরু হয় পর্যটন মৌসুম। বাকী সময়টাতে স্বল্প সংখ্যক পর্যটকের দেখা মিলে সুন্দরবনে। আর বছরের বিভিন্ন ছুটির দিনেও বাড়ে পর্যটক। কিন্তু এরই মধ্যে পূজার ছুটিতে উৎসবমুখর হয়ে উঠেছে সুন্দরবন। পূজার ছুটি কাটাতে ও আনন্দ উপভোগে লোকজন বেছে নিয়েছেন সুন্দরবন ভ্রমণকে। ছুটির শেষ দিন রবিবার সবচেয়ে বেশি সংখ্যক পর্যটক এসেছে সুন্দরবনে। একদিকে সুন্দরবন ভ্রমণে আসা পর্যটকদের মনে রয়েছে বনের হিংস্রতার ভয়। অপরদিকে নৈসর্গিক সৌন্দর্যের মধ্যে ভয়কে জয় করে মেতে উঠছেন আনন্দ উপভোগে। বনের গাছপালা ও বন্যপ্রাণী দেখে খুশি দর্শনার্থীরা।
করমজল পর্যটন কেন্দ্রে ভ্রমণে আশা সেন্টমার্টিনের বাসিন্দা শিক্ষিকা জাহানারা আফরোজ বলেন, খোলা বনে বন্যপ্রাণীর আক্রমণের ভয় তো লাগছেই। বানর, হরিণ, কুমিরসহ অনেক প্রাণী দেখেছি, খুব ভাল লেগেছে। রাজশাহীর চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে আসা ব্যবসায়ী আতাউর রহমান বলেন, এবার নিয়ে সুন্দরবনে দুইবার আসা হলো। প্রকৃতির টানে ছুটে এসেছি, প্রাণ-প্রকৃতি সৌন্দর্য উপভোগ করতে ভালই লাগছে। কুমিল্লা থেকে আসা স্কুল শিক্ষার্থী জান্নাত বৃষ্টি আক্ষেপ করে বলেন, বাঘ দেখতে পারিনি, দেখতে পারলে ভালই লাগতো। বাঘ ছাড়া অন্যান্য পশুপাখি দেখছি, আনন্দ লেগেছে।
চাঁদপুর থেকে আসা জান্নাতুল ফেরদৌস ও আমিনুল দম্পতি বলেন, সুন্দরবনের স্পটগুলোতে বিদ্যুৎ নেই, তাই গরমে কষ্ট হয়েছে। এছাড়া খাবার পানিরও কোন ব্যবস্থা নেই, নেই হাত-মুখ ধোয়ার পানির ব্যবস্থাও। তাই আনন্দ অনেকটা নিরানন্দে পরিণত হয়েছে। গোপালগঞ্জের মোকসেদপুর থেকে আসা সাখাওয়াত হোসেন বলেন, এখানকার ব্যবস্থাপনা মোটামুটি, তবে আরো ভাল হতে পারতো।
করমজল পর্যটন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আজাদ কবির বলেন, দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটায় সুন্দরবনের পর্যটকদের আগমন বাড়তে শুরু করেছে। আর পূজার ছুটিতে পপর্যটকের আগমন আরো বেশি। আমরা আগত পর্যটকদের সাধ্যমত সেবা দিয়ে যাচ্ছি। যারা একবার আসবেন, তারা বারবারই আসতে চাইবেন এখানে।
রামপালে কুপিয়ে আহতের ঘটনায় ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা
রামপাল (বাগেরহাট) সংবাদদাতা
রামপালে মাদক সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে আহত করার ঘটনায় রামপাল থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। শুক্রবার (১১ অক্টোবর) বিকালে ৪ জনের নাম উল্লেখ করে মামলটি করেন, ভিকটিম রাজু ও রনির পিতা ইন্তাজ সরদার।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়, উপজেলার বেলাই, সিদামখালী এলাকায় মাদক বেচাকেনা করে আসছিল রামপালের মিজানুর রহমানের ছেলে নোমান আহমেদ জনি, সিদামখালী গ্রামের সফরুল শেখের ছেলে রোমান আহমেদ তালহা, সদরের মৃত আ. সালামের ছেলে আবেনুর ও বেলাই গ্রামের তৈয়বুর রহমানের ছেলে মুজিবর রহমান। তাদের নিষেধ করেন, ভিকটিম রাজু সরদার, রনি শেখ ও মাসুম মল্লিক। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গত ইংরেজি ৪ ০৪-১০-২০২৪ তারিখে রাত ৯ টায় উপজেলার নলবুনিয়া গ্রামের রাস্তার মুখে আসামীরা ভিকটিমদের মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে। তাদের হাতে থাকা রাম দা ও চাপাতি দিয়ে উপুর্যপুরি কুপিয়ে আহত করে বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়। ওই সময় আসামীরা ১টি লাল এ্যাপাসি মোটরসাইকেল ও ৩টি মোবাইল ছিনিয়ে নেয়। তাদের ডাক চিৎকারের স্থানীরা ছুটে এসে হাসপাতালে ভর্তি করেন।
অভিযোগের বিষয়ে হুড়কা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি হাওলাদার মুজিবর রহমান বাবুল জানান, মাদক সংক্রান্ত বিরোধে যুবলীগ ও আওয়ামীলীগের ক্যাডারদের মধ্যে বিরোধের জেরে নিজেদের মধ্যে হামলার ঘটনা ঘটে। যা নিয়ে ইতিমধ্যে সাংবাদিকেরা অনুসন্ধানি রিপোর্ট করেন। তারপরেও আমাকে এক নেতার নির্দেশে মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। তিনি নিরপেক্ষ তদন্তের দাবী করেন।
এ বিষয়ে রামপাল থানার ওসি সোমেন দাশের কাছে জানতে চাইলে তিনি মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন তদন্তে যদি কোন কারো সম্পৃক্ততা না পাওয়া গেলে বিধি অনুযায়ী ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে।#
খুলনা প্রেসক্লাবের অন্তর্র্বতীকালীন কমিটির নেতৃবৃন্দকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়েছেন
খবর বিজ্ঞপ্তি
খুলনা প্রেসক্লাবের অন্তর্র্বতীকালীন কমিটির নেতৃবৃন্দকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির নেতৃবৃন্দ। রবিবার দুপুরে প্রেসক্লাবের আহবায়ক এনামুল হক, সদস্য সচিব রফিউল ইসলাম টুটুল, নির্বাহী মো. মিজানুর রহমান মিলটন ও আহমদ মুসা রঞ্জু ও আশরাফুল ইসলাম নূরসহ নেতৃবৃন্দকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির নেতৃবৃন্দ।
ক্লাবের হুমায়ুন কবীর বালু মিলনায়তনে শুভেচ্ছা বিনিময় কালে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় বক্তৃতা করেন বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. নিজাম উর রহমান লালু, সহ-সভাপতি অধ্যাপক মো. আবুল বাশার ও মো. মিজানুর রহমান বাবু, ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মো. মনিরুজ্জামান রহিম, যুগ্ম-মহাসচিব এ্যাড. শেখ হাফিজুর রহমান হাফিজ, খুলনা প্রেসক্লাবের আহবায়ক এনামুল হক, সদস্য সচিব রফিউল ইসলাম টুটুল, নির্বাহী সদস্য আশরাফুল ইসলাম নূর, ক্লাব সদস্য এহতেশামুল হক শাওন ও কে এম জিয়াউস সাদাত প্রমুখ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন খুলনা প্রেসক্লাবের সদস্য মো. জাহিদুল ইসলাম, শেখ কামরুল আহসান, আব্দুর রাজ্জাক রানা, ক্লাবের ইউজার সদস্য বশির হোসেন বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাস্টার মনিরুল ইসলাম, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক সরদার রবিউল ইসলাম রবি, সমাজ কল্যাণ সম্পাদক শেখ গোলাম সরোয়ার, সাংস্কৃতিক সম্পাদক মোল্লা মারুফ রশিদ, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক রকিব উদ্দিন ফারাজী, শিক্ষা সম্পাদক অধ্যাপক মো. আজম খান, শিল্প বিষয়ক সম্পাদক মো. খলিলুর রহমান, সদস্য মো. আবদুস সালাম, মো. ইলিয়াস মোল্লা, শেখ আবদুস সালাম, শিকদার আব্দুল খালেক ও প্রমিত দফাদারসহ অন্যান্য সাংবাদিকবৃন্দ।
দিঘলিয়ায় পূজামন্ডপ পরিদর্শন ও সহায়তা প্রদান
নিজস্ব প্রতিনিধি
রূপসা তেরখাদা দিঘলিয়ার প্রাণ পূরুষ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক জননেতা আজিজুল বারী হেলালের পক্ষ থেকে সনাতণ ধর্মাবলম্বীদের সব চেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দূর্গা পূজা উপলক্ষে দিঘলিয়া উপজেলার সাবেক ছাত্রনেতৃবৃন্দের শুভেচ্ছা ও অনুদান প্রদান করেন বিভিন্ন মন্দিরে। বক্তব্য রাখেন খুলনা জেলা যুবদলের সাবেক সাধাঃ সম্পাদক শেখ পারভেজ সাজ্জাদ বাবলা, ছাত্রদলের সোনালী অতীত খুলনা জেলা বি এন পির সাবেক প্রচার সম্পাদক মোঃ ওয়াহিদুজ্জামান রানা, সাবেক ছাত্রনেতা জেলা যুবদলের সাবেক সহ সভাপতি মোঃ জহিরুল ইসলাম, খুলনা জেলা সেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি সৈয়দ রাশেদুজ্জামান রাশেদ, সাবেক ছাত্রনেতা খুলনা জেলা বি এন পি নেতা মনিরুল ইসলাম ভুট্টো, সাবেক ছাত্রনেতা দিঘলিয়া উপজেলা যুবদলের বিপ্লবী আহবায়ক কুদরত-ই- এলাহী স্পিকার, বিএনপি নেতা তারেক সাইফুল ইসলাম টুটুল, সাবেক ছাত্রনেতা শফিউল আযম দোদুল, মোঃ কামাল হোসেন, লোকমান হোসেন, মোঃ শাহিন হোসেন, সেনহাটী ইউনিয়ন যুবদলের সংগ্রামী আহবায়ক মোঃ সোহেল শেখ ছাড়াও সাবেক ছাত্রদলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
খালিশপুরে সিরাতুন্নবী (সা.) কুইজ প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী
খবর বিজ্ঞপ্তি
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় শূরা সদস্য ও খুলনা মহানগরী আমীর অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান রাসূল (সা.) এর জীবনী অধ্যয়নের উপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, রাসূল (সা.) এর জীবনী ভালোভাবে উপলব্দি করতে হবে। কেন আল্লাহ তায়ালা রাসূল (সা.) কে দুনিয়ায় পাঠিয়েছেন, তা জানতে হবে। তিনি আরো বলেন, রাসূল (সা.) কে দুনিয়ায় পাঠানোই হয়েছে দ্বীনকে বিজয়ী করার জন্য। সংগ্রাম করে এই দ্বীনকে বিজয়ী করার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। যারা এই দ্বীনকে অপছন্দ করবে তারাই এর বাধা হয়ে দাড়ায়। দ্বীনকে বিজয়ী করার ক্ষেত্রে যাদের অশ্বস্তি হয়, তারা কখনই ইসলাম বা মুসলমানের বন্ধু হতে পারে না। তিনি বলেন, দ্বীনকে বিজয়ী করা ছাড়া সীরাত আলোচনা অর্থহীন। তিনি তাবুক যুদ্ধের বর্ণনা দিয়ে বলেন, রাসূল (সা.) এর সঙ্গী সাথীরা কেউ দ্বীনকে বিজয়ী করার চেষ্টার বাইরে জীবনযাপন করেননি। তিনি বলেন, সীরাত পাঠ করতে হবে। এই আলোচনা ঘরে ঘরে পৌছে দিতে হবে। এতে বাধা আসতে পারে। জুলুম নির্যাতনের শিকার হতে হবে। তাই আমাদের করণীয় হচ্ছে দ্বীন কায়েমের আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে দ্বীনকে বিজয়ী করা। খুলনা মহানগরীর খালিশপুর থানাধীন বয়রাস্থ বিআইএম মিলনায়তনে ১৪ নং ওয়ার্ড জামায়াতে ইসলামীর সিরাত কুইজ প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ সব কথা বলেন।
ওয়ার্ড আমীর আব্দুল আউয়ালের সভাপতিত্বে ও ওয়ার্ড সেক্রেটারি মাওলানা মাসুম বিল্লাহ’র সঞ্চালনায় ক্বারী জুবায়ের হুসাইনের অর্থসহ কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে শুরু হয়। অনুষ্ঠানে প্রত্যাশা, প্রেরণা ও টাইফুন শিল্পী গোষ্ঠীর শিল্পীবৃন্দ সাংস্কৃতিক পরিবেশনা উপস্থাপন করেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন খালিশপুর থানা আমীর অধ্যাপক ইকবাল হুসাইন, সেক্রেটারি মাওলানা আব্দুল্লাহ আল মামুন, প্রকৌশলী শেখ জাকিরুজ্জামান, সরকারি বিএল কলেজের সাবেক ভিপি এডভোকেট শেখ জাকিরুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে ইঞ্জিনিয়ার মঈনুল হক, ইঞ্জিনিয়ার সালমান ফারসি, ইস্কান্দার আলী, জি এম আব্দুল্লাহ, শফিকুল ইসলাম, শওকত হোসেন, আবুল কাশেম, আব্দুর রাজ্জাক, রবিউল আরিফ, নাজিমুদ্দিন সোহাগ, আব্দুল্লাহ আল মামুন, ত্বহা ইমাম, সিদ্দিক হেলাল, তসলিম উদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। প্রধান অতিথি সিরাতুন্নবী (সা.) কুইজ প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন।
প্রধান অতিথি আরও বলেন, রাসূল (সা.) এর জীবনী আলোচনার সময় তার সংগ্রামী জীবন বাদ দিলে সেই আলোচনা পূর্ণাঙ্গ হবে না। রাসূল (সা.) যেমন একজন দ্বাঈ ছিলেন ছিলেন, তেমনি সেখানে প্রধানও ছিলেন, রাষ্ট্র প্রধানও ছিলেন। রাসূল (সা.) তার কাজ করতে গিয়ে বাধার সম্মুখিন হয়েছিলেন। শিয়াবে আবু তালেবে বন্দী জীবন কাটিয়েছিলেন। তায়েফে নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন। যদি বাধাই না আসে তাহলে কীসের দাওয়াত? এ কাজ করতে গিয়ে যুগে যুগে বাধা এসেছে, বাধা আসবে। তিনি বলেন, রাসূল (সা.) এর আগমনে সে সমাজ থেকে আলোকের দিশা পেয়েছিল। নানা সমস্যায় জর্জরিত সমাজ কে আদর্শের সমাজে রূপান্তরিত করেছিলেন। যেখানে নারীদের জ্যান্ত পুঁতে ফেলা হতো, সেখানে নারীরা পেয়েছিল তাদের যথাযথ অধিকার।#
কয়রা থানায় হরিণের মাংস উদ্ধারসহ আটক ১
।।সংবাদ বিজ্ঞপ্তি।।
নৌবাহিনীর নেতৃত্বে পরিচালিত যৌথ বাহিনীর অভিযানে খুলনা জেলার কয়রা থানায় হরিণের মাংসসহ ১ জন আটক হয়েছে। ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার এর আওতায় নিয়োজিত বাংলাদেশ নৌবাহিনী দায়িত্বপ্রাপ্ত এলাকায় যৌথ অভিযান পরিচালনা করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় গোয়েন্দা তত্ত্বের ভিত্তিতে রবিবার (১৩ অক্টোবর-২০২৪) মধ্যরাতে খুলনার কয়রা থানায় নিয়োজিত নৌবাহিনী কন্টিনজেন্ট কমান্ডার লেঃ কমান্ডার ফয়সাল আল ইমরান, (এস), বিএন এর নেতৃত্বে নৌবাহিনীর একটি টহল দল ৪ নং কয়রা লঞ্চঘাট এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১০০ কেজি হরিণের মাংসসহ মোঃ ইয়াকুব সানা নামক ১ জনকে আটক করা হয়। উক্ত অভিযানে কয়রা থানার পুলিশ সদস্য উপস্থিত ছিলেন। পরবর্তীতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জব্দকৃত মালামালসহ উক্ত ব্যক্তি কে কয়রা থানায় হস্তান্তর করা হয়। উল্লেখ্য, বর্তমান সরকারের নির্দেশনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ‘ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার’ এর আওতায় দায়িত্বপূর্ণ এলাকাসমূহে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর নিয়মিত টহল অভিযান চলমান থাকবে।
খুলনায় আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস পালিত
তথ্য বিবরণী
‘আগামী প্রজন্মকে সক্ষম করি, দুর্যোগ সহনশীল ভবিষ্যৎ গড়ি’ প্রতিপাদ্য নিয়ে রবিবার খুলনায় আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস পালন করা হয়।
দিবসটি উপলক্ষ্যে সকালে খুলনা জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের পাশাপাশি মানবসৃষ্ট দুর্যোগেও আমরা কষ্ট পাই। কিছু মানুষের দায়িত্বহীন আচরণ অনেকের জন্য ভোগান্তি নিয়ে আসে। নদীর কূল ভরাট করা ও খাল আটকে জলাবদ্ধতা তৈরি করার মতো মন্দ কাজ বন্ধে অনেক কিছু করার আছে। মনে রাখা দরকার, সমস্যা যতটা প্রকট সমাধানে ততটাই সক্রিয় হতে হবে। তিনি আরও বলেন, খুলনার বিল ডাকাতিয়ায় জলাবদ্ধতার কারণে অনেক কৃষিজমি পানির নিচে রয়েছে। এসমস্যা সমাধানে শোলমারি নদীর মুখে পলি সরাতে দুটো ড্রেজার কাজ করছে এবং বরিশাল থেকে হেভিডিউটি পাম্প এনে কাজে লাগানো হয়েছে। একই সাথে পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে এসমস্যা সমাধানে প্রায় ৫০ কোটি টাকার একটি স্কিম অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে। এগুলো বাস্তবায়ন হলে সংকট থেকে উত্তরণের সুযোগ সৃষ্টি হতে পারে। তবে প্রকৃতির সাথে যুদ্ধ করে পেরে ওঠা কঠিন। প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় সবাইকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।
আলোচনা অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বিতান কুমার মন্ডল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বি-সার্কেল) মোঃ আসিফ ইকবাল, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালক মোঃ ফারুক হোসেন সিকদার, বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির প্রতিনিধি মোঃ তৌফিকুল ইসলাম, জেজেএস এর মোঃ মামুনুর রশিদ ও মানবাধিকারকর্মী মোঃ আব্দুল হালিম বক্তৃতা করেন। স্বাগত বক্তৃতা করেন জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল করিম।
এর আগে দিবসটি উপলক্ষ্যে খুলনা কালেক্টরেট চত্বর থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে একই স্থানে এসে শেষ হয়। শোভাযাত্রায় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন। এছাড়া বয়রা পিডব্লিউডি মাধ্যমিক বিদ্যালয় চত্বরে অগ্নিকান্ড ও ভূমিকম্পকালে রক্ষা পাওয়ার উপায় নিয়ে মহড়া অনুষ্ঠিত হয়।
সাম্য ও মানবিক সমাজ বিনির্মাণে
যুবদল স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের দিকনির্দেশনামূলক কর্মী সভা খুলনায়
খবর বিজ্ঞপ্তি
‘আমরাই গড়বো আগামীর স্বপ্নের বাংলাদেশ’ স্লোগানকে সামনে রেখে সাম্য ও মানবিক সমাজ বিনির্মাণে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের দিকনির্দেশনামূলক যৌথ কর্মীসভা আজ সোমবার (১৪ অক্টোবর) খুলনায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে। খুলনা প্রেসক্লাবের ব্যাংকুয়েট হলে বেলা ১১টায় মহানগর যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল এবং বিকেল ৩টায় জেলা যুবদল, স্বেচ্ছাসেবকদল ও ছাত্রদলের কর্মীসভা অনুষ্ঠিত হবে।
বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় গত ৯ অক্টোবর অনুষ্ঠিত যৌথ সভায় যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্না, সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন, স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি এসএম জিলানী, সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন। দেশব্যাপী এ ব্যাতিক্রম ধর্মী কর্মসূচির দ্বিতীয় পর্যায়ে খুলনা থেকেই শুরু হচ্ছে আজ। ১০ জেলার ১৫টি ইউনিটের যৌথ কর্মীসভা শেষ হলেও দ্বিতীয় পর্বে ২৭টি জেলার ৩২টি ইউনিটের কর্মসূচি শুরু হল খুলনা দিয়েই।
দলীয় সূত্রমতে, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের খুলনা মহানগর ও জেলা ভিত্তিক কর্মীসভা ও গণসংযোগে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন। খুলনা মহানগর যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ও ছাত্রদলের সদ্য সাবেক পূর্ণাঙ্গ কমিটির সকল নেতৃবৃন্দ, মহানগরের অন্তুর্ভুক্ত সকল ওয়ার্ড ও ইউনিয়নের ঘোষিত কমিটির সুপার ফাইভ ‘প্রতিনিধি কার্ড’ প্রদর্শন করে বেলা ১১টায় প্রেসক্লাবের ব্যাংকুয়েট হলে অনুষ্ঠিতব্য যৌথসভায় অংশ নিতে পারবেন। প্রতিনিধি কার্ড ব্যতীত কেউ মূল হলের ভিতরে প্রবেশ করতে পারবেন না বলে দলীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে। অনুরুপভাবে বিকেল ৩টায় একই ভেন্যুতে নির্ধারিত প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে বিএনপি’র ভ্যানগার্ড খ্যাত এ তিনটি অঙ্গ সংগঠনের যৌথকর্মী সভা অনুষ্ঠিত হবে।
যুবদলের কেন্দ্রীয় সদ্য সাবেক সহ-সভাপতি ও মহানগর শাখার প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হুদা চৌধুরী সাগর বলেন, অনেক রক্ত ও ত্যাগের বিনিময়ে ফ্যাসিস্ট সরকারকে হটিয়েছে এ দেশের ছাত্র-জনতা। ফ্যাসিবাদমুক্ত দেশে সাম্য ও মানবিক সমাজ বিনির্মাণে জিয়ার সৈনিকদের অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। একটি গণতান্ত্রিক দেশ গড়তে কাজ করার পাশাপাশি পতিত স্বৈরাচার যাতে ফেরত না আসতে পারে সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে সবাইকে। ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে হটাতে আমাদের সাতশ’ নেতাকর্মী গুমের শিকার হয়েছেন, ৪০ লাখ নেতাকর্মীকে মামলা দিয়ে হয়রানি করা হয়েছে, কাউকে কাউকে ব্যবসা-বাণিজ্য করতে দেয়া হয়নি। বিগত ১৬ বছর আমরাই ফ্যাসিবাদের দ্বারা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। এসময়ে এসেও আমাদের ধৈর্য ধরে সততার সঙ্গে এগোতে হবে, যাতে সাম্য ও মানবিক সমাজ গঠন করতে পারি। এটিই আমাদের নেতা তারেক রহমানের নির্দেশনা।#
যশোরে শহরের লাল দিঘিতে প্রতিমা নিরঞ্জনের মধ্য দিয়ে দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন
শহিদুল ইসলাম দইচ যশোর।।
যশোর সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গোৎসব প্রতিমা নিরঞ্জনের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়েছে। ১৩ অক্টোবর সন্ধ্যা থেকে যশোর শহরের প্রাণকেন্দ্রে লাল দিঘিতে শুরু হয় এই প্রতিমা( নিরঞ্জন) বিসর্জন। অনুষ্ঠানে সভাপত্বি করেন জেলা পূজা উপযাপন পরিষদের সভাপতি দীপংকর দাস রতন।এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ ইসলাম অমিত, যশোর জেলা প্রশাসক আজহারুল ইসলাম, জেলার পুলিশ সুপার জিয়াউর উদ্দিন আহম্মেদ,যশোর সেনা ক্যাম্পে দায়িত্বে নিয়োজিত লেফটেন্যান্ট কর্নেল মীর মোস্তফা কামাল, যশোর পৌরসভার প্রশাসক রফিকুল ইসলাম, যশোর জেলার জামাতে ইসলামীর আমির গোলাম রসুল, প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন ও সংবাদপত্র পরিষদের সভাপতি ইকরাম -উদ- দ্দৌলাসহ যশোরের বিশিষ্ট যনেরা উপস্থিত ছিলেন।
পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি দীপঙ্কর দীপঙ্কর দাস রতন বলেন, এবার যশোর জেলায় ৬৫৬টি মন্ডপে দুর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর মধ্যে ৪৯টি মন্দিরের প্রতিমা যশোর শহরের লালদীঘিতে নিরঞ্জন করা হলো। জেলার বাকি মন্দিরের প্রতিমাগুল নিজ নিজ এলাকায় নিরঞ্জন করা হয়েছে।
গণহত্যা সমর্থনকারী সাংবাদিকদের বিচার হবে: নাহিদ ইসলাম
ঢাকা অফিস
সাংবাদিকদের মধ্যে যারা সরাসরি ফ্যাসিস্ট সরকারের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল, উস্কানিদাতা ছিল এবং গণহত্যার সমর্থন করেছে তাদের বিচারের আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আন্দোলনে আহতদের অনুদানের চেক হস্তান্তরের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
এ সময় নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন থেকে আন্দোলনে আহত-নিহতদের আর্থিক অনুদান দেওয়া হচ্ছে।’
আহতদের বিদেশে চিকিৎসার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সংশ্লিষ্ট ডাক্তারদের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘ঢাকা মেডিকেলে আসার আগে অনেকে বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসা নিয়েছেন, তাদের সেই খরচ আমরা দিয়ে দেবো।’
সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে নাহিদ বলেন, ‘যারা সরাসরি ফ্যাসিস্ট সরকারের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল, উস্কানিদাতা ছিল এবং গণহত্যার সমর্থন করেছে তাদের বিচারের আওতায় আনা হবে। এর বাইরে অন্যায়ভাবে কারও বিরুদ্ধে কোনো মামলা করা হলে, তা খতিয়ে দেখতে তথ্য মন্ত্রণালয়ে কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে।’
‘যদি কোনো সাংবাদিক বা তার পরিবার মনে করে যে মামলার মাধ্যমে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে, তাহলে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে আমরা তাদের সহযোগিতা করব,’ বলেন তিনি।
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে গভীর ডাকাতি: গ্রেপ্তার ১১ জনের পাঁচজনই বিভিন্ন বাহিনীর বরখাস্ত সদস্য
ঢাকা অফিস
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে গভীর রাতে সেনাবাহিনী ও র্যাবের পোশাক পরে সংঘবদ্ধ ডাকাত দল একটি বাসা থেকে সাড়ে ৭৫ লাখ টাকা ও ৬০ ভরি স্বর্ণালংকার লুট করে। এ ঘটনায় ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদের মধ্যে আটজনকে র্যাব ও তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর (গোয়েন্দা) পুলিশ। একই সঙ্গে ডাকাতির ঘটনায় লুট করা সাত লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে র্যাব।
ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (ক্রাইম) মো. ফারুক হোসেন জানান, গত শুক্রবার দিনগত রাতে মোহাম্মদপুরের তিন রাস্তার মোড় বেড়িবাঁধ এলাকায় ব্যবসায়ীর বাসায় ডাকাতির ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অভিযান চলমান।
জানতে চাইলে র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনীম ফেরদৌস বলেন, গ্রেপ্তার ১১ জনের মধ্যে পাঁচজন বিভিন্ন বাহিনীর চাকরিচ্যুত সদস্য। বাকি তিনজন সাধারণ মানুষ। তাদের কাছ থেকে সোনার একটি ব্রেসলেট ও আংটি উদ্ধার করা হয়েছে।
ডাকাতির এ ঘটনায় কোনো বাহিনীর কেউ জড়িত থাকলে গ্রেপ্তার করা হবে বলে জানান মুনীম ফেরদৌস।
এর আগে শুক্রবার দিনগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে মোহাম্মদপুর তিন রাস্তা মোড়ের কাছে একটি বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
ডেঙ্গুতে একদিনে আরও ৪ মৃত্যু, হাসপাতালে ৬৬০
ঢাকা অফিস
গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ৬৬০ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এই সময়ের মধ্যে মারা গেছেন ৪ জন। এ নিয়ে চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ২১৪ জনের এবং হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৪২ হাজার ৪৭০ জন। রোববার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের দেওয়া তথ্য থেকে এসব জানা যায়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, সারা দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে বর্তমানে ৩ হাজার ৬১০ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি আছেন। যার মধ্যে ঢাকায় ১ হাজার ৮৫৩ জন, বাকি ১ হাজার ৭৫৭ জন ঢাকার বাইরে বিভিন্ন বিভাগে।
হজের প্রাথমিক নিবন্ধনের শেষ দিন ২৩ অক্টোবর
ঢাকা অফিস
হজযাত্রীদের প্রাথমিক নিবন্ধন শেষ করার সময়সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। ২৩ অক্টোবরের মধ্যেই প্রাথমিক নিবন্ধন শেষ করার আহ্বান জানিয়েছে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের হজ অনুবিভাগ। রোববার এ সংক্রান্ত বিশেষ একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে।
ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সৌদি সরকারের ঘোষিত রোডম্যাপ অনুসারে মিনা ও আরাফায় তাবু নির্ধারণ ও সার্ভিস কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি সম্পাদন কার্যক্রম ২৩ অক্টোবর হতে শুরু হবে। তাবু বরাদ্দ দেওয়ার ক্ষেত্রে ‘আগে আসলে আগে পাবেন’ নীতি অনুসরণ করা হয়ে থাকে। এ কারণে ২৩ অক্টোবরের মধ্যে হজযাত্রী নিবন্ধন শেষ না হলে মিনা ও আরাফায় কাঙ্খিত জোনে তাবু বরাদ্দ পাওয়া যাবে না।
এতে বলা হয়, তাবু গ্রহণ ও সার্ভিস কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি সম্পাদনে দেরি হলে হজযাত্রীদের জামারাহ হতে অনেক দূরে পাহাড়ি এলাকা কিংবা নিউ মিনা এলাকায় অবস্থান করতে হবে। ফলে হজযাত্রীদের সৌদি আরবে প্রখর রোদ ও গরমের মধ্যে দীর্ঘপথ হাঁটতে হবে যা হজযাত্রীদের জন্য কষ্টকর হবে। এ কারণে সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনার স্বার্থে ২৩ অক্টোবরের মধ্যে হজগমনেচ্ছু ব্যক্তিদের তিন লাখ টাকা ব্যাংকে জমা দিয়ে প্রাথমিক নিবন্ধন সম্পন্ন করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।
ভেদাভেদ ভুলে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান রাষ্ট্রপতির
ঢাকা অফিস
দেশকে এগিয়ে নিতে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে ভেদাভেদ ভুলে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। তিনি বলেন, এখানে মেজরিটি বা মাইনরিটি নয়, আমরা সবাই বাংলাদেশি। রোববার (১৩ অক্টোবর) বঙ্গভবনে শারদীয় দুর্গোৎসব ও বিজয়া দশমী উপলক্ষে হিন্দু ধর্মাবলম্বীর বিশিষ্ট ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে মতবিনিময়ের আগে এক শুভেচ্ছা বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, সকল ধর্মের মূল বাণী হচ্ছে মানব কল্যাণ। আমরা সবাই বাংলাদেশি। এখানে সবাই একই সূত্রে গাঁথা। এখানে মেজরিটি বা মাইনরিটির কোনো স্থান নেই। সবাই এক এবং অভিন্ন সত্তা। ধর্মীয় মূল্যবোধকে দেশ ও জনকল্যাণে কাজে লাগাতে হবে।
তিনি বলেন, আবহমান বাঙালি সংস্কৃতিতে বিদ্যমান অসাম্প্রদায়িক চেতনা, পারস্পরিক ঐক্য, সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতি একটি সুন্দর আগামী ও আধুনিক বাংলাদেশ গঠনে কার্যকর অবদান রাখবে।
সাহাবুদ্দিন বলেন, সমগ্র বিশ্বে যুদ্ধ-বিগ্রহ পরিস্থিতির কারণে মানবতা আজ বিপর্যস্ত। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং মধ্যপ্রাচ্যের সংবাদ পুরো বিশ্ব অর্থনীতির সঙ্গে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছে। এছাড়া দেশের বন্যা কবলিত এলাকার লোকজন মানবেতর জীবনযাপন করছে।
পরোপকারের মহান ব্রত নিয়েই রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন দেশের এ সংকটকালে সহায়-সম্বলহীন মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বার্তা প্রদান শেষে রাষ্ট্রপতি দরবার হলে সকল অতিথির সাথে কুশল বিনিময় করেন।
এ সময় রাষ্ট্রপতির সহধর্মিনী ড. রেবেকা সুলতানা, অন্তর্র্বতী সরকারের ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার, বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর, বিচারপতি বিশ্বজিৎ দাস, কূটনৈতিক মিশনের সদস্যবৃন্দ, হিন্দু ধর্মীয় গুরু রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশনের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ স্বামী পূর্ণাত্মানন্দ মহারাজ, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের সচিব ড. কৃষ্ণেন্দু কুমার পাল, উপ-পরিচালক প্রশান্ত কুমার বিশ্বাস, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি শ্রী বাসুদেব ধর, সাধারণ সম্পাদক শ্রী সন্তোষ শর্মা এবং মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি শ্রী জয়ন্ত কুমার দেব ও সাধারণ সম্পাদক ড. তাপস কুমার পাল অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
শেখ হাসিনাকে ফেরাতে ইন্টারপোলের সহায়তা নেওয়া হবে: চিফ প্রসিকিউটর
ঢাকা অফিস
জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণহত্যার হুকুমদাতা ও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ বিদেশে পলাতকদের দেশে ফেরাতে ইন্টারপোলের সহায়তা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম। রোববার রাজধানীর ধানমন্ডিতে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার কার্যালয়ে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।
আইনজীবী তাজুল ইসলাম বলেন, বিচারক নিয়োগের পর এ সপ্তাহেই গণহত্যায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ও দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হবে। শেখ হাসিনাসহ বিদেশে পলাতকদের ফিরিয়ে আনতে ইন্টারপোলের সহায়তা নেওয়া হবে।
জানা গেছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন ও তদন্ত সংস্থায় এখন পর্যন্ত গুম, হত্যা, গণহত্যাসহ ৬০টির বেশি অভিযোগ জমা পড়েছে। শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগ, ১৪ দলের নেতা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাবেক শীর্ষ কর্মকর্তাদের অভিযোগের তালিকায় নাম রয়েছে।
আইনজীবী তাজুল ইসলাম বলেন, বিচারক নিয়োগ হওয়া মাত্রই ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম শুরু হবে। এরপর আমরা ট্রাইব্যুনালের কাছে প্রয়োজনীয় কিছু আদেশ চাইব। এ বিচার শুরুর আগে যেগুলো দরকার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা, আসামিদের বিদেশ যাওয়া বন্ধ করা, অনেক রকমের তথ্য উপাত্ত এগুলো সিজ করার জন্য আদেশ লাগবে। তাদের দ্রুততার সঙ্গে গ্রেপ্তারের বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাহায্য লাগবে। সে ব্যাপারে ট্রাইব্যুনালের পক্ষ থেকে আদেশ আসবে। তিনি বলেন, আদেশ বাস্তবায়ন করার দায়িত্ব কিন্তু ট্রাইব্যুনালের হাতে না, এটা দায়িত্ব রাষ্ট্রকে নিতে হবে।
তাজুল ইসলাম আরও বলেন, ‘মূলত যাদের নির্দেশে ও যাদের কারণে এই গণহত্যা, মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়েছিল তাদেরকে আমরা অগ্রাধিকার তালিকায় শুরুতে নিয়ে এসেছি। আইন অনুযায়ী তাদের গ্রেপ্তারে ইন্টারপোলের সাহায্য চাওয়া হবে। কোনো অপরাধী বিশ্বের যে কোনো প্রান্তে থাকলে ইন্টারপোলের সিস্টেমের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পৃক্ততা থাকায় তাদের গ্রেপ্তারে বাংলাদেশ ইন্টারপোলে রেড নোটিশ পাঠাতে পারে। আর এর কল্যাণে আমরা অনেককেই দেশে ফেরত আনতে পারব।’
ভারতীয় ঠিকাদার লাপাত্তা: খুলনায় হাই-টেক পার্কের নির্মাণকাজ বন্ধ
স্টাফ রিপোর্টার
খুলনায় হাই-টেক পার্কের নির্মাণকাজ বন্ধ রয়েছে প্রায় দুই মাস। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর চলে গেছে ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ফলে প্রায় ৩৬ শতাংশ কাজ শেষ হওয়ার পর প্রকল্পের ভবিষ্যৎ নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। কবে থেকে আবার কাজ শুরু হবে, সুনির্দিষ্টভাবে বলতে পারছে না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
হাই-টেক পার্ক নির্মাণের স্থানে গিয়ে দেখা যায়, ২-৩ জন সিকিউরিটি গার্ড ও দেশি দুয়েকজন কর্মকর্তা ছাড়া সেখানে আর কেউ নেই। নির্মাণকাজের শ্রমিকরা অন্যত্র চলে গেছে। ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানেরও কেউ সেখানে নেই। ৭ তলা ভবনের ৩ তলা পর্যন্ত সম্পন্ন হওয়ার পর কাজ থেমে গেছে। চারদিকে নির্মাণসামগ্রী ও যন্ত্রপাতি ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।
বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ খুলনা নগরীর লবণচরা এলাকায় দাদা ম্যাচ ফ্যাক্টরির ৩ দশমিক ৫৯ একর জমিতে স্থাপনাটি নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। ২০১৭ সালের ২৫ এপ্রিল প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদন পায়। প্রকল্পের বাস্তবায়নকাল ধরা হয় ২০১৭ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত। তবে বিভিন্ন জটিলতায় প্রকল্পের কাজ শুরু হয় অনেক দেরিতে। ২০২২ সালের জুনে এর নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়।
প্রকল্পের আওতায় রয়েছে স্টিল স্ট্রাকচারের ৭ তলা মাল্টিটেনেন্ট ভবন ও একটি সিনেপ্লেক্স ভবন নির্মাণ, বাউন্ডারি ওয়াল, গেট হাউস ও অভ্যন্তরীণ রাস্তা নির্মাণ, অভ্যন্তরীণ ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও ওয়াকওয়ে, নলকূপ স্থাপন ও অভ্যন্তরীণ পানি সরবরাহ এবং ইলেকট্রো মেকানিক্যাল কাজ। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ১৭০ কোটি টাকা।
ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান লার্সেন অ্যান্ড টুবরো এর কাজ পায়। ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের প্রায় ৬ মাস পর ২০২২ সালের নভেম্বরে কাজ শুরু হয়। তিনতলা পর্যন্ত নির্মাণ ব্যতীত এখনও অন্য কোনো কাজ শুরু হয়নি। গত জুনে প্রকল্প সম্পন্ন করার সময়সীমা শেষ হয়। এ ব্যাপারে সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) খুলনার সভাপতি অ্যাডভোকেট কুদরত ই খুদা বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে খুলনার তরুণ-তরুণীরা আইটি বিষয়ে দক্ষতা অর্জনের পাশাপাশি বিনোদনের সুযোগ তৈরি হতো।
খুলনা নাগরিক সমাজের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট বাবুল হাওলাদার বলেন, খুলনার মানুষ দীর্ঘদিন ধরে হাই-টেক পার্ক নির্মাণের জন্য আন্দোলন করেছিল। শুরু থেকেই কাজে ধীরগতি ছিল। এখন কাজ পুরোপুরি বন্ধ। তিনি বলেন, সরকারের উচিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজনকে নিরাপত্তা দিয়ে আবার কাজ শুরু করানো। অথবা সরকার ঠিকাদার পরিবর্তন করে দ্রুত কাজ শুরু করতে পারে।
এ ব্যাপারে প্রকল্প পরিচালক ফজলুল হক বলেন, জমি অধিগ্রহণ এবং করোনা পরিস্থিতির কারণে নির্মাণকাজ শুরু করতে দেরি হয়েছিল। আর সরকার পরিবর্তনের পর নিরাপত্তা ইস্যুতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন ভারতে ফিরে গেছে। তারা ফিরে না আসা পর্যন্ত আপাতত কাজ শুরু করা হচ্ছে না। তিনি জানান, প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি ৩৬ শতাংশ। প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৭ সালের জুন পর্যন্ত বৃদ্ধির জন্য প্রস্তাবনা পাঠানো রয়েছে। প্রকল্প ব্যয় সামান্য বাড়তে পারে।
টেনে-হিঁচড়ে রাস্তায় নিয়ে নারী ইউপি সদস্যকে মারধর
শ্যামনগর (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি
সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় মাজিদা বেগম (৬০) নামে এক ইউপি সদস্যকে বাড়ি থেকে টেনে হিঁচড়ে রাস্তায় নিয়ে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। রোববার উপজেলার ঈশ্বরীপুর ইউনিয়নের বংশীপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
মাজিদা বেগম ওই ইউনিয়নের ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত সদস্য। ঘটনার পর থেকে তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন। তাঁকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে প্রতিবেশী আব্দুল মাজেদ, তার দুই ছেলে মনিরুল ও আনারুল এবং ছোট ভাই মানা গাজীর বিরুদ্ধে।
মাজিদা বেগমের নাতি নাসরুল্লাহ নয়ন বলেন, ‘গতকাল সকাল ১১টার দিকে বাইরে থেকে এসে প্রতিবেশী হাসিনা বেগমের বাড়ির বারান্দায় বসেছিল দাদি। এ সময় মানা গাজি ও মনিরুল সেখানে এসে চুলের মুঠি ধরে টেনে হিঁচড়ে তাঁকে রাস্তায় নিয়ে যায়। একপর্যায়ে আনারুল ও তার বাবা আব্দুল মাজেদ যোগ দিয়ে চারজন মিলে আমার দাদিকে মারধর করে। পরে স্থানীয়রা গিয়ে তাদের সরিয়ে দেয়। বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে দাদির বমি শুরু হলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাই।’
সন্ধ্যায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক শাকির হোসেন জানান, মাজেদা বেগমের বমি হচ্ছে। অবস্থা অবনতি হলে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হবে।
চিকিৎসাধীন মাজিদা বেগম বলেন, ‘৬-৭ মাস আগে যশোরের এক মেয়েকে তার পরিবারের অসম্মতিতে বিয়ে করে আনারুল। এ নিয়ে ঝামেলার সৃষ্টি হয়। আমি মধ্যস্ততাকারীর ভূমিকা পালন করি এবং বিষয়টি মীমাংসা করি। কিছুদিন ধরে মেয়েটির বাবা অসুস্থ। এ জন্য তার পরিবারের লোকজন আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে বলেন, আনারুল যেন তার স্ত্রীকে নিয়ে শ্বশুরকে একবার দেখে যায়। আমি বিষয়টি আনারুল ও তার পরিবারকে জানাই। এতে আমার ওপর ক্ষুব্ধ হয় তারা। এর জেরে আমাকে মারধর করা হয়েছে।’
অভিযোগের বিষয়ে মানা গাজী বলেন, ‘উনি (মাজিদা বেগম) আমাদের চাচি হন। তাকে মারধর করা হয়নি। সামান্য তর্কাতর্কি হয়েছে। বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা চলছে।’
শ্যামনগর থানার ওসি (তদন্ত) ফকির তাইজুর রহমান জানান, বিষয়টি জানার পর ভুক্তভোগীর পরিবারকে লিখিত অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। অভিযোগ পেলে পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
অনুমোদন ২৪২০, ভারতে ইলিশ গেল ৫৩২ টন
বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি
বাংলাদেশ সরকারের ২ হাজার ৪৫০ টন ইলিশ পাঠানোর ঘোষণার বিপরীতে যশোরের বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারতে সর্বমোট ৫৩৩ টন ইলিশ রপ্তানি হয়েছে। এছাড়া সময় স্বল্পতা, ইলিশ সংকট ও মূল্যবৃদ্ধির কারণে ২৯টি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান ইলিশ রপ্তানি করেনি। ফলে এবার অনুমোদনের ২২ শতাংশ ইলিশ পাঠাতে পেরেছেন রপ্তানিকারকরা।
গতকাল শনিবার বেনাপোল ফিশারিজ কোয়ারেন্টাইন অফিসার মাহবুবুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ২৫ সেপ্টেম্বর ৪৯টি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানকে ২ হাজার ৪২০ টন ইলিশ রপ্তানির জন্য অনুমোদন দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে ১২ অক্টোবর পর্যন্ত ৫৩৩ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানি হয়েছে। যার মূল্য ৫৩ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার। যা বাংলাদেশি টাকায় ৬৩ কোটি ৯৬ লাখ।
ইলিশ রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান সততা ফিসের রেজাউল করিম বলেন, সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার বেনাপোল থেকে সড়ক পথে ভারতে সব ধরনের পণ্য রপ্তানি বন্ধ থাকে। শনিবার খোলা থাকে। রোববার সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় আমদানি বন্ধ রাখে ভারত। সপ্তাহের এই ২দিন বাদ দিলে ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে ১২ অক্টোবর পর্যন্ত মাত্র ১২ দিন ভারতে ইলিশ রপ্তানি হয়েছে। বাজারে ইলিশ সংকট ও মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেকেই ইলিশ রপ্তানি করতে পারেনি। প্রতি কেজি ইলিশের রপ্তানি মূল্য ১০ মার্কিন ডলার যা বাংলাদেশি ১১৮০ টাকা হয়। কিন্তু বাজারে ১৮০০ টাকার নিচে ইলিশ কেনা যায়নি। বাজারে ইলিশের সংকট তো আছেই।
বেনাপোল স্থলবন্দরের উপ-পরিচালক (ট্রাফিক) রাশেদুল সজীব নাজির বলেন, ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন পাওয়া ৪৯টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২০টি প্রতিষ্ঠান রপ্তানি করতে পেরেছে।
বিসর্জনের মধ্যদিয়ে শেষ হলো শারদীয় দুর্গোৎসব
ঢাকা অফিস
রাজধানীসহ সারাদেশে বিজয়া দশমী ও প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে রোববার শেষ হয়েছে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। রোববার সকালে দর্পণ-বিসর্জনের মাধ্যমে বিদায় জানানো হয় দেবী দুর্গাকে। পরে বিকেল ৪টা থেকে শুরু হয় প্রতিমা বিসর্জন। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, মানুষের মনের আসুরিক প্রবৃত্তি, কাম, ক্রোধ, হিংসা, লালসা বিসর্জন দেয়াই মূলত বিজয়া দশমীর মূল তাৎপর্য। এ প্রবৃত্তিগুলোকে বিসর্জন দিয়ে একে অন্যের সঙ্গে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা করাই এ আয়োজনের উদ্দেশ্য।
চন্ডীপাঠ, বোধন ও অধিবাসের মধ্য দিয়ে ষষ্ঠী তিথিতে ‘আনন্দময়ীর’ আগমনে গত ৯ অক্টোবর থেকে দেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসবের সূচনা হয়। পরবর্তী ৫দিন রাজধানীসহ দেশব্যাপী পূজামণ্ডপগুলোতে পূজা-অর্চনার মধ্যদিয়ে ভক্তরা দেবী দুর্গার প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেন। দশমী তিথিতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে উৎসবের শেষ হয়।
এবছর দেবী দুর্গার আগমন হয় দোলায় বা পালকিতে। দেবীর এই আগমনের ফলাফল হবে মড়ক। যা শুভ ইঙ্গিত নয়। এছাড়াও দেবী স্বর্গে গমন করবেন ঘোটকে বা ঘোড়ায়। শাস্ত্র মতে দেবীর গমন বা আগমন ঘোটকে হলে ফলাফল ছত্রভঙ্গ হয়। শাস্ত্রমতে এই ঘোটকে গমনের ফলে সামাজিক ও রাজনৈতিক বিশঙ্খল অবস্থাকে ইঙ্গিত করে। এটি যুদ্ধ, বিগ্রহ, আশান্তি, বিপ্লবের ইঙ্গিত দিয়ে থাকে।
সনাতন ধর্মের বিশ্বাস অনুযায়ী, বিসর্জনের মধ্য দিয়ে দেবী ফিরে গেলেন স্বর্গলোকের কৈলাসে স্বামীর ঘরে। পরের বছর শরতে আবার তিনি আসবেন এই ধরণীতে যা তার বাবার গৃহ। প্রতিমা বিসর্জনের জন্য সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
বিদায়ের করুণ ছোঁয়ায় সারিবদ্ধভাবে একে একে বুড়িগঙ্গা নদীতে বিসর্জন দেয়া হয় প্রতিমা। একই সময় রাজধানীর উপকণ্ঠে তুরাগ নদীতে চলে বিসর্জন। সড়কে পুলিশ ও নদীতে ছিল নৌপুলিশের টহল। ফায়ার সার্ভিসের টিমও দায়িত্ব পালন করে।
এদিকে দুপুরে পূজা উদযাপন পরিষদ এবং মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির যৌথ উদ্যোগে বের হয় বর্ণাঢ্য বিজয়া শোভাযাত্রা। বিজয়া শোভাযাত্রা ও প্রতিমা বিসর্জনে অংশ নিতে দুপুর গড়াতেই ভক্তরা রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার পূজামণ্ডপ থেকে ট্রাকে করে প্রতিমা নিয়ে সমবেত হতে শুরু করেন পলাশীর মোড়ে।
পরে শত শত ট্রাক প্রতিমা নিয়ে সদরঘাটের উদ্দেশে রওনা দেয়। ঢাকেশ্বরী থেকে শুরু করে বিজয়া শোভা যাত্রাটি শহীদ মিনার, হাইকোর্ট, পুলিশ হেড কোয়ার্টার, গোলাপ শাহ মাজার, কোর্ট এলাকা হয়ে সদরঘাট পৌঁছে। রাস্তায়, বিভিন্ন ভবনে পুলিশ ছিল সতর্কাবস্থায়। রাস্তার পাশে দর্শনার্থীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো।
অধিকাংশ মণ্ডপের প্রতিমা বিসর্জন দেয়া হলেও ঢাকেশ্বরী মন্দিরের প্রতিমাটি রেখে দেয়া হয়। কিন্তু পূজার কাজে ব্যবহৃত দেবীর ফুল, বেলপাতা ও ঘট বিসর্জন দেয়া হয়।
প্রথা অনুযায়ী প্রতিমা বিসর্জনের পর সেখান থেকে জল এনে (শান্তিজল) মঙ্গলঘটে নিয়ে তা আবার হৃদয়ে ধারণ করা হয়। আগামী বছর আবার এ শান্তিজল হৃদয় থেকে ঘটে, ঘট থেকে প্রতিমায় রেখে পূজা করা হবে। রামকৃষ্ণ মিশনে সন্ধ্যা আরতির পর মিশনের পুকুরে প্রতিমা বিসর্জন দেয়া হয়। এরপর ভক্তরা শান্তিজল গ্রহণ করেন ও মিষ্টিমুখ করেন।
সারাদেশে এবছর ৩১ হাজার ৪৬১টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকা মহানগরে পূজার সংখ্যা ২৫২টি। এসব মণ্ডপে শারদীয় উৎসব নির্বিঘ্নে উদযাপন করার জন্য প্রশাসনের পাশাপাশি প্রতিটি পূজা উদযাপন কমিটিও নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করে। প্রতিটি মণ্ডপে মণ্ডপে লাগানো হয় সিসিটিভি ক্যামেরা এবং স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটি করা হয় মণ্ডপ পাহারার জন্য।
বেগুনের কেজি ১৬০
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে প্রতি কেজি বেগুন বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকায়। যা কুমারখালীর ইতিহাসে সর্বোচ্চ বলে জানিয়েছেন ক্রেতা, বিক্রেতা ও প্রশাসন। রোববার (১৩ অক্টোবর) কুমারখালী পৌর তহবাজার, স্টেশন বাজার, যদুবয়রা জয়বাংলা বাজার ঘুরে দেখা যায়, দুই দিনের ব্যবধানে কেজিতে ৪০ টাকা বেড়ে বেগুন বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকায়। তবে অধিকাংশ বিক্রেতার কাছেই ছিল না বেগুন।
সবজি বিক্রেতা মনজু শেখ বলেন, বেগুনের সরবরাহ নেই বললেই চলে। দুই দিনের ব্যবধানে কেজিতে ৪০ টাকা বেড়ে ১৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আমার ব্যবসায়ী জীবনে এটা বেগুনের সর্বোচ্চ দাম।
রাজীব হোসেন নামে আরেক ব্যবসায়ী বলেন, বেগুন পাওয়াই যাচ্ছে না। বেগুনের দাম অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে ফেলেছে। দাম বেশি হওয়ায় এক সপ্তাহ ধরে বেগুন বিক্রি করছি না।
কৃষক বাবু আলী বলেন, চলতি বছর ১২ শতাংশ জমিতে বেগুনের চাষ করেছি। মাস দেড়েক আগে প্রতি সপ্তাহে ৫ থেকে ৬ মণ বেগুন তুলতাম। কিন্তু অতিবৃষ্টির কারণে ফুল-ফল মরে যাচ্ছে। বেগুন হচ্ছে না। গত সপ্তাহে মাত্র ৩৪ কেজি বেগুন তুলেছি।
শামিম হোসেন নামে আরেক কৃষক বলেন, গত বছর ৮ শতাংশ জমিতে ৩০ হাজার টাকা খরচ করে এক লাখ ৫ হাজার টাকার বেগুন বিক্রি করেছি। এ বছর বৃষ্টিতে সব ফুল মরে গেছে। এক কেজি বেগুনও তুলতে পারিনি। এক মাস ধরে থেমে থেমে বৃষ্টি ও হালকা বাতাস লেগেই আছে। এতে জমিতে পানি জমে মরিচ, বেগুন, উস্তেসহ সব ধরনের সবজি নষ্ট হয়ে গেছে। উৎপাদন না হওয়ায় সরবরাহ কমে দাম বেড়ে গেছে।
উপজেলার অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা মো. রাইসুল ইসলাম বলেন, অতিবৃষ্টির কারণে প্রায় ৯০ হেক্টর জমিতে লাগানো সবজির ক্ষতি হয়েছে। বৃষ্টিতে গাছের ফুল-ফল নষ্ট হয়ে গেছে। সরবরাহ কম থাকায় দাম একটু বেশি। তবে দামে রেকর্ড করেছে বেগুন।
কুমারখালী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আমিরুল আরাফাত বলেন, অতীতে বেগুনের এত দাম কেউ শোনেনি। বৃষ্টিতে সবজি নষ্ট হওয়ায় দাম বেড়েছে। বাজার মনিটরিং আরও জোরদার করা হবে।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসা হবে লন্ডনে, নেয়া হচ্ছে প্রস্তুতি
ঢাকা অফিস
বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসা হবে লন্ডনে। এজন্য পুরো প্রস্তুতি শুরু করেছেন তার পরিবারের সদস্য ও চিকিৎসকরা। এরই মধ্যে নবায়নকৃত পাসপোর্ট খালেদা জিয়ার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
বিএনপির উচ্চ পর্যায়ের একাধিক নেতা এ তথ্য জানিয়েছেন।
খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে একটু স্ট্যাবল আছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য গঠিত চিকিৎসক বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাকে বিদেশে নেয়া হচ্ছে। লন্ডনেই তার পরবর্তী চিকিৎসা হবে।
গত ৭ জুলাই শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন। এরপর ২১ আগস্ট সন্ধ্যায় বাসভবনে ফিরে আসেন। এর আগে, ১৫৬ দিন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে চলতি বছরের ১১ জানুয়ারি বাসায় ফেরেন খালেদা জিয়া।
২০১৮ সালে খালেদা জিয়ার শারীরিক নানা জটিলতা দেখা দেয়। ৭৮ বছর বয়সী এই সাবেক প্রধানমন্ত্রী দীর্ঘদিন ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, কিডনি, লিভার সিরোসিসহ নানা রোগে ভুগছেন। এরই মধ্যে কয়েক দফা হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন তিনি। ২০২৩ সালের ২৭ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্র থেকে ৩ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ঢাকায় এসে এভারকেয়ার হাসপাতালে বিএনপি নেত্রীর রক্তনালিতে অস্ত্রোপচার করেন।
বিএনপি নেতাকর্মীরা জানান, বিমানে সফর করার ক্ষেত্রে খালেদা জিয়ার কোনো শারীরিক সমস্যা হয় কিনা, সেটিকে প্রধান বিবেচনায় রেখে সব ধরনের প্রস্তুতি চালাচ্ছেন চিকিৎসকরা। দলের বিভিন্ন নেতারা বিভিন্ন দায়িত্ব ভাগ করে নিয়ে তৎপরতা চালাচ্ছেন। ফ্লাইট সংক্রান্ত তৎপরতা শেষ হলেই ভ্রমণের প্রস্তুতি নেবেন খালেদা জিয়া।
রোববার বিএনপি চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে এখনো কোনো নির্দেশনা আসেনি। তবে খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান ঢাকায় রয়েছেন। তিনি গত সেপ্টেম্বরে ঢাকায় এসেছেন।
বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন। দলের নেতাকর্মী, অনুসারীরা সবসময় এই প্রত্যাশা করে।
স্বামীর প্রতারণার পর বাবার বকুনি, ফাঁস নিলেন গৃহবধূ
নিজস্ব প্রতিনিধি
সাতক্ষীরার শ্যামনগরে বাবার বকুনি খেয়ে আসমা আক্তার নামে (২২) এক গৃহবধূ আত্মহত্যা করেছেন। শনিবার (১২ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে উপজেলার রমজাননগর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
আসমা আক্তার একই গ্রামের মুজিবর গাজী ওরফে বাঘ মুজিবরের মেয়ে এবং সোনারমোড় এলাকার আবুজার হোসেনের স্ত্রী। ইয়াছিন আরাফাত নামে সাড়ে ৩ বছরের একটি সন্তান রয়েছে তার।
নিহতের পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, স্বামীর সঙ্গে মনোমালিন্যের জেরে গত তিন-চার মাস ধরে বাবার বাড়িতে অবস্থান করছিলেন আসমা। শনিবার বিকেলে বাবা মুজিবর রহমান বকুনি দিয়ে তাকে নিজের বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে বলেন। সন্ধ্যার পর পরিবারের সদস্যরা অন্য কক্ষে অবস্থানের সুযোগে আসমা শোবার ঘরের আড়ার সঙ্গে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন।
মুজিবর রহমান জানান, পারিবারিক কারণে তাকে সামান্য বকাঝকা করেছিলেন। তবে মেয়ের আত্মহত্যার জন্য তার জামাই আবুজার দায়ী। তালাক দেওয়া প্রথম স্ত্রীকে আবারো সংসারে ফিরিয়ে আনায় কষ্ট পেয়ে তার মেয়ে তিন-চার মাস আগে স্বামীর বাড়ি ছেড়ে চলে এসেছিল। সে মানসিক কষ্টে ভুগছিল বলেও দাবি করেন তিনি।
এ বিষয়ে আবুজার হোসেন জানান, তার প্রথম স্ত্রীর বিষয়ে আসমা সবকিছু জানতেন। পরবর্তীতে বাবা-মার প্ররোচনায় সে রাগ করে বাবার বাড়িতে চলে যায়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য শেখ জাহাঙ্গীর আলম জানান, স্বামীর প্রতারণার পর বাবার বকুনি খেয়ে অভিমানে আত্মহত্যা করেছে আসমা।
শ্যামনগর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) ফকির তাইজুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।
পদ্মায় বিলীন ১০০ একর জমি-টাওয়ার
নিজস্ব প্রতিনিধি
কুষ্টিয়ার মিরপুরে পদ্মায় আবারো তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। উপজেলার বহলবাড়িয়া ইউনিয়নের মির্জানগর এলাকায় পদ্মার পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে ভাঙনের তীব্রতা বেড়েছে।
শনিবার (১২ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পানির তোড়ে তলিয়ে গেছে জাতীয় গ্রিডের দ্বিতীয় নম্বর বৈদ্যুতিক টাওয়ার পোল। নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে আবাদি জমি, বসতবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ অনেক স্থাপনা। হুমকির মুখে রয়েছে কুষ্টিয়া-পাবনা মহাসড়ক।
এর আগে, গত ১৯ সেপ্টেম্বর কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার পদ্মা নদীতে তলিয়ে যায় পাওয়ার গ্রিড অব বাংলাদেশের (পিএলসি) ১ লাখ ৩২ কেভি একটি টাওয়ার পোল। গত এক সপ্তাহে মিরপুর উপজেলার সাহেবনগর, মির্জানগর, তালবাড়িয়া এলাকায় প্রায় ১০০ একর জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
মিরপুর উপজেলার বহলবাড়িয়া গ্রামের কৃষক ইসাহক জানান, এরই মধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে বেশ কয়েক বিঘা জমি। বসতবাড়িই এখন সম্বল। যেভাবে ভাঙছে নদী তাতে শেষ সম্বল বসতবাড়ি যেকোনো সময় বিলীন হয়ে যাবে।
একই এলাকার আমেনা খাতুন জানান, সহায় সম্বল বলতে বাড়িটুকুই। জমি জায়গা যা ছিল তা আগেই নদী কেড়ে নিয়েছে। বাড়িটুকু হারালে পরিবার নিয়ে কোথায় গিয়ে দাঁড়াবো।
বহলবাড়িয়া জামিউল মাদরাসার সহকারী শিক্ষক ফিরোজ আহমেদ জুয়েল জানান, মাদরাসার খুব কাছাকাছি চলে এসেছে পদ্মা নদী। যেভাবে ভাঙছে তাতে যেকোনো মুহূর্তে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে মাদরাসাটি। এ নিয়ে চরম আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন বলেও জানান তিনি।
স্থানীয় পদ্মা নদী রক্ষা কমিটির নেতা মুফতি ইয়াকুব বিন আজমল বলেন, পদ্মার পানি কমার কারণে সম্প্রতি ভাঙনের তীব্রতা বেড়েছে। শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় পদ্মা নদীতে তলিয়ে গেছে জাতীয় গ্রিডের দ্বিতীয় নম্বর বৈদ্যুতিক টাওয়ার পোল। হুমকির মুখে রয়েছে স্থানীয় সাহেবনগর জামিউল মাদরাসার ভবনটি।
এদিকে, শনিবার দুপুরে ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শনে যান বিআইডব্লিউটিএ ও কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা।
কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাশিদুর রহমান জানান, পদ্মায় পানি কমার সঙ্গে ভাঙনও তীব্র হচ্ছে। প্রাথমিক পর্যায়ে যেসব এলাকায় ভাঙন তীব্র হচ্ছে সেই এলাকায় ভাঙন রোধে জিও ব্যাগ ফেলানো হচ্ছে। এরই মধ্যে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। পানি কমলেই কাজ শুরু করা হবে।
৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সাগরে লঘুচাপ সৃষ্টি, রূপ নেবে ঘূর্ণিঝড়ে
ঢাকা অফিস
দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদফতর।
এদিকে, ভারতের আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, লঘুচাপটি পরবর্তীতে উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে এবং শক্তি বাড়িয়ে সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হতে পারে। পরে এটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়ে উপকূলে উঠে আসতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। রোববার সকালে বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু চট্টগ্রাম অঞ্চল ব্যতীত বাংলাদেশ থেকে বিদায় নিয়েছে। পরিস্থিতি অনুকূলে থাকলে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বাংলাদেশের অবশিষ্টাংশ থেকে বিদায় নিতে পারে। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাতের বিষয়ে বলা হয়েছে, রংপুর, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী বর্ষণ হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুঙ্ক থাকতে পারে। সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
সরকারি স্কুলে ভর্তিতে ৬৮ শতাংশ কোটা, ‘অসহায়’ অভিভাবকরা
ঢাকা অফিস
সরকারি স্কুলে ভর্তিতে এবারও শিক্ষার্থী নির্বাচন করা হবে লটারির মাধ্যমে। লটারি প্রক্রিয়া অনিশ্চয়তাপূর্ণ হওয়ায় ভালো স্কুল পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় থাকেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। লটারির মাধ্যমে ভর্তিকে ‘অসুস্থ প্রতিযোগিতা’ কমানোর মাধ্যম বলা হলেও রয়েছে কোটা পদ্ধতি। এ কোটা পদ্ধতি বহাল থাকায় অসহায় ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
প্রকাশিত ভর্তি নীতিমালা অনুযায়ী, এবারও সরকারি স্কুলগুলোতে ভর্তিতে ৬৮ শতাংশ কোটা বণ্টন পদ্ধতি অনুসরণ করা হবে। এ নিয়ে আপত্তি রয়েছে অনেক অভিভাবকের। বিশেষ করে যারা কর্মসূত্রে ঢাকায় অস্থায়ীভাবে বসবাস করেন, তারা এ কোটা পদ্ধতি বাতিল চান।
তবে শিক্ষা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের দাবি, বিশৃঙ্খলা ও ভোগান্তি এড়াতে ক্যাচমেন্ট এরিয়া কোটা রাখা হয়। এতে শিশুরা নিজের আশপাশের এলাকার বিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পায়। বাকি অন্য কোটা খুবই কম।
ভর্তি নীতিমালায় দেখা গেছে, মোট শূন্য আসনের ৪০ শতাংশ ক্যাচমেন্ট এরিয়া কোটা। অর্থাৎ, স্কুলের আশপাশের এলাকার বাসিন্দা যারা, তাদের সন্তানদের জন্য এ কোটা রাখা হয়। এ কোটায় ভর্তির জন্য স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলের কার্যালয় থেকে প্রত্যয়নপত্র নিতে হয়। অনেক সময় যারা ভাড়াটিয়া, তাদের এ প্রত্যয়নপত্র নিতে ভোগান্তিতে পড়তে হয়।
রাজধানীর বনশ্রী এলাকার বাসিন্দা সিরাজুল ইসলাম গত বছর এ নিয়ে ভোগান্তিতে পড়েছিলেন বলে জানান। তিনি বলেন, ‘এ কোটার ক্ষেত্রে অনেকে অনলাইনে জালিয়াতি করেন। ভিন্ন এলাকার বাসিন্দা হওয়া সত্ত্বেও অনলাইন আবেদনের সময় ক্যাচমেন্ট এরিয়া সুবিধাজনক এলাকা দেন। সন্তান লটারিতে টিকে গেলে তখন মোটা অংকের টাকা দিয়ে প্রত্যয়নপত্র নিয়ে নেন। এটা এক ধরনের জালিয়াতি।’
ভর্তি নীতিমালা অনুযায়ী বাকি যে ২৮ শতাংশ কোটা রয়েছে তার মধ্যে বীর ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য ৫ শতাংশ। এছাড়া, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও অধীন দপ্তর-সংস্থাগুলোর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য এক শতাংশ, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা ১০ শতাংশ, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীরা ২ শতাংশ, অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীর যমজ ও সহোদর ভাই-বোনরা ৫ শতাংশ কোটায় সংরক্ষিত আসনে ভর্তির সুযোগ পাবে।
তাছাড়া দূর থেকে বদলি হয়ে আসা সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানের জন্য ৫ শতাংশ আসন কোটায় সংরক্ষণ করা হয়। পাশাপাশি কোটা সুবিধা নিয়ে ওই প্রতিষ্ঠানে ভর্তির সুযোগ পাবে সরকারি হাইস্কুলের শিক্ষক-কর্মচারীদের সন্তানরাও।
এ বিষয়ে জানতে চেয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মাধ্যমিক শাখার দুজন কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তবে তারা এ নিয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি।
তাদের মধ্যে একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘যদিও আমি শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তা, তারপরও আমার মনে হয় শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও অধীন দপ্তর-সংস্থাগুলোর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য যে কোটা রাখা হয়েছে, সেটার প্রয়োজন নেই। যদিও সেটা খুবই অল্প। আর ক্যাচমেন্ট এরিয়ার বিষয়টি নিয়ে অনেক আলোচনা রয়েছে। এক্ষেত্রে নিয়ম কঠোরভাবে মানা হলে এ কোটায় তেমন ক্ষতি নেই।’
মাউশির মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক এ বি এম রেজাউল করীম বলেন, ‘শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগে সভা করে এ নীতিমালা ঠিক করা হয়। যদি এতে কোনো আপত্তি থাকে বা ভবিষ্যতে ওঠে, তাহলে মন্ত্রণালয় আলোচনা সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেবে। এবার যে নীতিমালা প্রকাশ হয়েছে, সে অনুযায়ী লটারির মাধ্যমে ভর্তি করানো হবে।’
অজ্ঞাত স্থান থেকে রবিউলের বিবৃতি
তামিমের মৃত্যু অনাকাঙ্ক্ষিত, এর পেছনে দখলদারত্ব ছিল না
ঢাকা অফিস
সম্প্রতি বেসরকারি দীপ্ত টেলিভিশনের কর্মকর্তা হত্যার যে অভিযোগ উঠেছে তা নিয়ে অজ্ঞাত স্থান থেকে বিবৃতি দিয়েছেন বিএনপি নেতা শেখ রবিউল আলম রবি। বিবৃতিতে তিনি বলেন, তামিমের অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুর ঘটনা কোনো দখলদারির বিষয় ছিল না। বরং পুরো বিষয়টিই ছিল আমার ব্যবসায়িক কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত। রোববার (১৩ অক্টোবর) গণমাধ্যমে তার এই বিবৃতি দেন দলটির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান।
বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, ৩৫ বছর ধরে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। পাশাপাশি আমি একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। আমি বর্তমানে প্লিজেন্ট প্রপার্টি নামের একটি সুপ্রতিষ্ঠিত আবাসন প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং ডিরেক্টর হিসেবেও কর্মরত। সব নিয়মনীতি মেনেই ২০ বছর ধরে রিয়েল এস্টেট ব্যবসা পরিচালনা করে আসছি। অতীতে কখনোই কোনো আবাসন প্রকল্পে বড় ধরনের কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেনি।
তবে দুর্ভাগ্যজনকভাবে বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) আমার প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে নির্মিত হাতিরঝিল থানাধীন মহানগর প্রকল্পে একটি ফ্ল্যাটের মালিকানা নিয়ে চরম অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা ঘটে। একটি ফ্ল্যাটের অর্ধেকাংশের মালিকানা নিয়ে তিন বছর ধরে চলা অমীমাংসিত ঘটনার সূত্র ধরে তানজিল ইসলাম তামিম নামের একজন অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে মৃত্যু বরণ করে।
হাতিরঝিল থানাধীন মহানগর প্রজেক্টে যেই জমির ওপর আবাসন প্রকল্পটি নির্মাণ করা হয় ওই জমির মালিক মোট তিনজন। আমার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জমির মালিকদের চুক্তির পর যথানিয়মে ভবন নির্মাণ করে তিন বছর আগেই জমির মালিক ও ফ্ল্যাট ক্রেতাদের সব ফ্লাট হস্তান্তর করে দেওয়া হয়। জমির তিনজন মালিকের মধ্যে দুজন যথাক্রমে জনাব মোজাম্মেল হক কবির এবং খুরশিদা আহমেদ স্বেচ্ছায় চুক্তির ৯/সি এর পরিবর্তে ১/সি এবং ৭/সি এর পরিবর্তে ২/এ ফ্ল্যাট পরিবর্তন করেন। সংশ্লিষ্টদের সম্মতি অনুযায়ী আমার কোম্পানি যথানিয়মে ফ্ল্যাট বিক্রি করে।
জমির তিনজন মালিকের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী প্রত্যেক জমির মালিক সাড়ে চারটা ফ্ল্যাট পাবেন। চুক্তি অনুযায়ী আরও অর্ধেক ফ্ল্যাট কোম্পানির কাছ থেকে ক্রয় করে প্রত্যেকে পাঁচটি করে ফ্ল্যাটের মালিকানা ভোগ করবেন। চুক্তি অনুসারে তিনজনের মধ্যে দুজন যথাক্রমে মোজাম্মেল হক কবির এবং আয়েশা আক্তার তাদের প্রাপ্ত সাড়ে চারটি ফ্ল্যাটের সঙ্গে আমার কোম্পানির কাছ থেকে আরও অর্ধাংশ ফ্ল্যাট কিনে তারা প্রত্যেকে পাঁচটি করে ফ্ল্যাট বুঝে নিয়ে দীর্ঘ তিন বছর যাবত ভোগ দখল করছেন। কিন্তু জমির আরও একজন মালিক খুরশিদা আহমেদ তার সাড়ে চারটি ফ্ল্যাটের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী আরও অর্ধাংশ ফ্ল্যাট না কিনেই মোট পাঁচটি ফ্লাট দীর্ঘ তিন বছর ধরে জবরদখল করে ভোগ করে আসছেন।
এ ব্যাপারে কোম্পানির পক্ষ থেকে যথানিয়মে খুরশিদা আহমেদকে একাধিকবার কোম্পানির মালিকানাধীন ফ্ল্যাটের অর্ধাংশের মূল্য পরিশোধ অথবা ফ্ল্যাটের অর্ধাংশ ছেড়ে দেওয়ার জন্য বিভিন্ন সময়ে তাগাদা দেওয়া হয়। কিন্তু খুরশিদা আহমেদ ফ্ল্যাটের অর্ধাংশ ছেড়ে না দিয়ে কিংবা মূল্য পরিশোধ না করেই বিগত সরকারের আমলে প্রভাব খাটিয়ে সালিশ-বিচার বসান। আমার কোম্পানির প্রতিনিধিরা সালিশ-বিচারের মীমাংসা মেনে নিলেও খুরশিদা আহমেদ নিজেই সালিশ-বিচারের সিদ্ধান্ত অমান্য করেন।
গত ১০ অক্টোবরের অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা প্রায় একমাস আগে খুরশিদা আহমেদের প্রতিনিধি হিসেবে তার স্বামী সুলতান আহমেদ আমাদের আবাসন প্রতিষ্ঠান প্লিজেন্ট প্রপার্টির কার্যালয়ে আসেন। তিনি জানান যে, ৭/বি (যৌথ মালিকানাধীন) ফ্ল্যাটের অর্ধাংশ তিনি ক্রয় করবেন না। তিনি ফ্ল্যাটের অর্ধাংশ কোম্পানিকে বুঝিয়ে দেবেন।
কোম্পানির বিদ্যমান নিয়ম অনুযায়ী ফ্ল্যাটের অর্ধেকাংশের মালিকানা মালিকের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দায়িত্ব। আমি কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক, তবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা এবং দুজন সহকারী ওইদিন কখন মহানগর প্রকল্পে গেছেন আমি সে ব্যাপারে অবগত ছিলাম না। কারণ আবাসন প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তারা যথানিয়মে যার যার বিভাগের নির্ধারিত দায়িত্ব তারা নিজ উদ্যোগেই পালন করেন। এ কারণেই ওইদিন হাতিরঝিলে মহানগর প্রকল্পে যাওয়ার কথা আমাকে জানানোরও প্রয়োজন ছিল না।
তবে অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর ঘটনা সম্পর্কে আমি অবগত হই। আমি জানতে পারি, কোম্পানির ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল লতিফ এবং ফ্ল্যাটের অর্ধেকাংশের মালিক ফজলুর রহমানসহ সংশ্লিষ্টরা ওই ভবনে যাওয়ার পর ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল লতিফ দেখতে পান খুরশিদা আহমেদের লোকজন ফ্ল্যাটের অর্ধেকাংশের মালিকানা বুঝিয়ে না দিয়ে বরং ভেতর থেকে দরজা বন্ধ করে পুরো ফ্ল্যাটে ডেকোরেশনের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
এ ব্যাপারে জানার জন্য তাদের ডাকা হলেও তারা দরজা খোলেননি। একপর্যায়ে ফ্ল্যাটের দরজা খোলার পর ফ্ল্যাটের অর্ধাংশের ক্রেতা ফজলুর রহমান, তার দুই ছেলে ও মেয়েজামাই মামুন এবং কোম্পানির ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল লতিফ এবং দুই সহকারীর সঙ্গে খুরশিদা আহমেদের দুই ছেলে, স্বামী এবং তাদের ফ্ল্যাটে উপস্থিত লোকজনের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা, ধাক্কাধাক্কি, হাতাহাতি ও মারামারির ঘটনা ঘটে। ঘটনার কিছুক্ষণের মধ্যেই ফোন পেয়ে হাতিরঝিল থানার দায়িত্বরত পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।
তামিমের মৃত্যুর ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক এবং প্লিজেন্ড প্রপার্টিস লিমিটেড তামিমের অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুতে শোকাহত। ওইদিনের ওই দুর্ঘটনার সময় আমি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলাম না। ঘটনার আগেও বিষয়টি সম্পর্কে অবগত ছিলাম না। তামিমের মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা এজাহারেও ঘটনাস্থলে আমার উপস্থিতির কথা উল্লেখ নেই।
তামিমের অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুর কারণে এ ঘটনাকে প্রচার মাধ্যমে দখলদারত্ব হিসেবে প্রচারের চেষ্টা করা হলেও এটি কোনো দখলদারির বিষয় ছিল না। এটি যদি দখলদারির ঘটনা হতো এই জমির তিনজন মালিকের অন্যতম মোজাম্মেল কবিরের নাম এজাহারভুক্ত হওয়ার কোনো কারণ ছিল না। বরং এই জমির তিনজন মালিকের মধ্যে মোজাম্মেল কবিরসহ দুজনই অবগত যে অন্য মালিক খুরশিদা আহমেদ শুরু থেকেই চুক্তি অনুযায়ী কোম্পানিকে ফ্ল্যাটের অতিরিক্ত অর্ধাংশের মূল পরিশোধ করতে অনিচ্ছুক ছিলেন।
সুতরাং এটি স্পষ্ট মহানগর প্রকল্পে ১০ অক্টোবরের ঘটনার পেছনে কোনো সন্ত্রাসী কার্যকলাপ কিংবা রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার, কোনো রকমের দখলদারত্ব কিংবা আমার কোনো অসৎ উদ্দেশ্য ছিল না। বরং পুরো বিষয়টিই ছিল আমার ব্যবসায়িক কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত। তামিমের দুঃখজনক মৃত্যুর কারণে প্রচার মাধ্যমে ঘটনাটি ভিন্নভাবে উপস্থাপন করলেও প্রকৃতপক্ষে এটি ছিল নিছক একটি অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু। তবে যেহেতু একটি অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু হয়েছে এবং এই ঘটনার সঙ্গে আমার কোম্পানির নাম জড়িয়ে পড়েছে সেহেতু দেশের প্রচলিত আইনগত ব্যবস্থায় আমি আইনগতভাবে বিষয়টি মোকাবিলা করতে প্রস্তুত। কিন্তু আমি রাজনীতির সঙ্গে জড়িত হওয়ার কারণে বিশেষ করে দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল বিএনপির সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে এ ঘটনাটিকে পুঁজি করে বিএনপি সম্পর্কে জনমনে বিরূপ ধারণা দেওয়ার সুগভীর চক্রান্তের অংশ হিসেবেই অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
আমি আবারও বিনীতভাবে জানাতে চাই, তামিমের মৃত্যুর ঘটনা সম্পূর্ণ অনাহুত, অনাকাঙ্ক্ষিত। এর পেছনে কোনো সন্ত্রাসী কার্যকলাপ, দখলদারত্ব, অসৎ উদ্দেশ্য সাধন কিংবা কোনো রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের বিষয় ছিল না।
গভীর রাতে অসহায় এক মায়ের অপারেশন করে প্রশংসায় ভাসছেন ডা. মজিদ
পাইকগাছা প্রতিনিধি
পূজা মন্দির পরিদর্শন শেষে গভীর রাতে অসহায় এক মায়ের সিজারিয়ান অপারেশন করে প্রশংসায় ভাসছেন পাইকগাছা উপজেলা বিএনপি সভাপতি ডা. আব্দুল মজিদ। বিকেল থেকে টানা দুই ইউনিয়নের ১৩টি মন্দির পরিদর্শন করে গভীর রাতে অপারেশন করে তিনি মানবতার উদাহরণ সৃষ্টি করলেন বলে দাবি রোগীর পরিবারসহ সাধারণ মানুষের।
শনিবার (১২ অক্টোবর) বিকাল থেকে রাত প্রায় ১২টা পর্যন্ত চাঁদখালী ইউনিয়নের ৭টা ও লস্কর ইউনিয়নে ৬টাসহ মোট ১৩টা পূজা মন্দির পরিদর্শন করেন তিনি। মন্দির পরিদর্শনকালে রাত ১২টার দিকে হঠাৎ খবর আসে লস্কর ইউনিয়নের তন্ময় সরকারের স্ত্রী কৃষ্ণা সরকারকে পৌর সদরের রংধনু ক্লিনিকে সিজারিয়ান অপারেশন জন্য ভর্তি করানো হয়েছে। কিন্তু পূজার ছুটিতে কোনো ডাক্তার ক্লিনিকে না থাকায় বিপাকে পড়েছে রোগীর পরিবার। মুমূর্ষু অবস্থা থাকা রোগীর কথা শুনে অনেকটাই দলীয় প্রোগ্রাম সমাপ্ত না করেই সফর সঙ্গীদের সঙ্গে নিয়ে অসহায় মায়ের সিজারিয়ান অপারেশনের জন্য চলে আসেন বিশিষ্ট সার্জন ডা. মজিদ এমবিবিএস।
টানা মন্দির পরিদর্শন করে ক্লান্ত শরীর নিয়ে একজন মুমূর্ষু মায়ের সিজারিয়ান অপারেশন করায় বিষয়টি এখন পুরো পাইকগাছায় আলোচনার কেন্দ্রবৃন্দে পরিণত হয়েছে।
এবিষয়ে ডা. আব্দুল মজিদ বলেন- রাজনীতি করতে এসেছি জনগণের সেবা করার জন্য। আর সেই সেবা করতে গিয়ে যদি সময় অসময় হিসাব করতে হয় তাহলে সেবক হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এ সময় তিনি সুন্দর পরিবেশ পূজা উদযাপন করার জন্য সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সহযোগিতা করার জন্য উপজেলাবাসীকে বিএনপির পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানান।
প্রভাবশালীদের দখলে হিসনা নদী, গড়ে উঠছে অট্টালিকা
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার প্রাণ হিসেবে পরিচিত হিসনা নদী গিলে খাচ্ছে প্রভাবশালীরা। কোনো কিছুর তোয়াক্কা না করে স্থানীয় একটি মহল ভেড়ামারার পৌর অংশে নদীর জায়গা দখল করে নির্মাণ করেছে স্থায়ী অট্টালিকা, নদীতে বাঁধ দিয়ে লিজের নামে ব্যক্তি মালিকানায় চলছে মাছ চাষ আর শুকনো মৌসুমে চাষাবাদ।
স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, হিসনা নদী প্রতিনিয়তই দখল হচ্ছে কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ জেলা প্রশাসন নির্বিকার। তাদের দাবি সরকার আসে, সরকার যায়, দখলদারিত্বের কিছু অংশ হাতবদল হয় কিন্তু হিসনার ভাগ্য অপরিবর্তিত থেকে যায়।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, এক সময়ের খরস্রোতা হিসনা নদী ও এর শাখাসমূহ উপজেলার পৌরসভাসহ ধরমপুর, জুনিয়াদহ, চাঁদগ্রাম, মোকারমপুর ইউনিয়নের অন্তত ২০ গ্রামের ওপর দিয়ে বয়ে চলেছে। নদীটি দৌলতপুরের মুসলিমনগরে পদ্মা নদীর শাখা হিসেবে উৎপত্তি হয়ে মিরপুরের চিথুলিয়া হতে সাগরখালী নাম ধারণ করে চাপাইগাছি বিলে পতিত হয়েছে। এর দৈর্ঘ্য ৫২ কিলোমিটার ও প্রস্থ ৪২ মিটার। ভেড়ামারা অংশে নদীটির দৈর্ঘ্য প্রায় ১৫-২০ কিমি এবং এর শাখা নদীসহ আরও ২০ কিমি।
উপজেলার বিভিন্ন ভূমি অফিস থেকে পাওয়া তথ্যমতে, উপজেলার হিসনা ব্রিজ পয়েন্ট থেকে কাঠেরপুলের শেষ সীমানা পর্যন্ত ১৩৬০, ১৩৬২, ১৩৫৩, ১৩৪০-৪১, ১৩২৪-২৫, ১৩১৮, ১৩১৬ দাগগুলো নদীর ভেতরে অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু ৫৩ ও ৬২ দাগ ব্যক্তি মালিকানায় অধিভুক্ত আছে। ১৩৫৩ দাগের রেকর্ড সালেহা খানমের নামে। সম্প্রতি তাকে ভূমি অফিসে ডেকে নোটিশ করা হয়েছে। ১৩৬২ দাগের ওপর নির্মিত বাড়ি নিয়ে ইউএনও অফিসে একাধিকবার সালিশ হয়েছে কিন্তু সুরাহা হয়নি।
বাকি দাগগুলো নদীর খাসজমি, যা অন্যরা চাষাবাদ ও ভোগ দখল করছে। জানা গেছে, ১৯৫৬-৫৭ সালে অনেকেই ‘স্থায়ী বন্দোবস্ত’ (পিআর) এর মাধ্যমে নদীর জমি সরকারের থেকে লিজ নিয়ে ১৯৭৬ সালে আর এস (রিভিশনাল সার্ভে) এর মাধ্যমে তা নিজ নামে রেকর্ড করে নেয়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হিসনা ব্রিজের দক্ষিণ পাশে নদীর কিছু অংশে প্রস্থ ৪০ মিটার আছে। বাদবাকি অধিকাংশ জায়গায় তা কমে ১৫-২০ মিটারের মতো আছে। কৌশলে ব্রিজের নিচে বাঁধ দিয়ে পানি চলাচলের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়েছে। দুই পাশে চলছে নদী দখল ।
কাঠেরপুল অংশে গিয়ে দেখা যায়, নদীর দুপাশ দখল হয়ে প্রস্থ কমে সরু হয়ে নদী মরাখালে পরিণত হয়েছে। অথচ এই অংশ দিয়েই চলত এক সময় বড় বড় নৌকা। অভিযোগ আছে, এখানে নদীর জায়গা দখল করে নির্মিত হয়েছে অন্তত ১০টি দালান বাড়ি। তবে প্রতিটি বাড়িওয়ালা নিজেদের কাগজ আছে বলে সাফাই গেয়েছেন। এই অংশে নদীর ওপর নির্মিত কাঠেরপুল নদীর প্রস্থের অর্ধেকেরও কম।
ভূমি অফিস থেকে পাওয়া তথ্যে দেখা গেছে, ১ ও ১৫২ দুটি পাশাপাশি দাগের নদীর অস্তিত্ব ম্যাপে থাকলেও নদীর জায়গা বিভিন্ন ব্যক্তি মালিকদের নামে রেকর্ড হয়ে আছে। এখানে নদীর ওপর নির্মিত ব্রিজের ১৫১নং দাগটি আবার সরকারের নামে। ব্রিজটি নদীর প্রস্থের ৮ ভাগের ১ ভাগ (যা আইনসিদ্ধ নয়)। ১ নং ও ১৫২নং দাগের ঠিক পাশের ৭২১নং দাগটি আবার নদীর নামে। প্রফেসর পাড়ার এই অংশেও নদীর জায়গা হরিলুট করে বাড়ি, স্থাপনা আর বাঁধ দিয়ে চলছে মাছ চাষের কাজ।
সম্প্রতি নদীর জায়গা দখল করে বালি ফেলার অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগ নেতা তাপস ও ব্যবসায়ী রুবেলের বিরুদ্ধে। ভূমি অফিস থেকে বারবার মাটি সরানোর নোটিশ করেও সুরাহা মেলেনি। তাদের সঙ্গে মোবাইলে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।
তাছাড়াও বিত্তিপাড়ায় তাপসের জায়গার পাশেই ওয়াল দিয়ে নদীর জায়গা দখলের অভিযোগ আছে আওয়ামী লীগ নেতা কুষ্টিয়ার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আতার বিরুদ্ধে। তার পার্শ্ববর্তী বাসিন্দা আশরাফুল বলেন, আতার জমি ৪ কাঠা কিন্তু সে বাউন্ডারি দিয়েছে ১০ কাঠার ওপরে। আতা পলাতক থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
ভেড়ামারার উত্তর রেলগেট এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, শুকনো মৌসুমে নদীতে ধান চাষ হয়। দখলরা নদীর অস্তিত্ব অস্বীকার করে। দখলকৃত জমি একাধিকবার হাত বদলও হয়েছে। নদীর এই অংশের ওপর নির্মিত ফারাকপুর ব্রিজের নিচে ইট দিয়ে স্থায়ী বাঁধ দেওয়া হয়েছে। স্রোত ও নাব্যতা হারিয়ে মরাখালে পরিণত হয়েছে নদীর এই অংশটি।
স্থানীয় বাসিন্দা রমজান আলী বলেন, প্রশাসন মাঝেমধ্যে ব্যবস্থা নিলেও অজ্ঞাত কারণে আবার চলতে থাকে। এভাবে চললে আগামী ২০ বছরেই হিসনা নদীর অস্তিত্ব সম্পূর্ণ বিলীন হয়ে যাবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাশেদুর রহমান বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, আমরাও বিষয়টি লক্ষ করেছি। সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক নদীর ওপর নির্মিত প্রত্যেকটি ব্রিজকে অবশ্যই নদীর প্রস্থের সমান হতে হবে।
নদীর জায়গা দখল নিয়ে তিনি বলেন, মূলত বন্দোবস্তের মাধ্যমে অনেকেই সরকারের থেকে লিজ নেওয়া নদীর জায়গা পরবর্তীতে নিজের নামে রেকর্ড করে রেখেছে। সরকারিভাবে নদী খননের উদ্যোগ নিলেই কেবল অবৈধ স্থাপনা দূর করতে পারব।
ভেড়ামারা উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা শাম্মি শিরিন বলেন, উপজেলার মধ্যে সরকারি খাস খতিয়ানের অন্তর্ভুক্ত কোনো জলাধারের আয়তন যদি ২০ একরের কম হয় তবেই সেটা উপজেলা জলমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটি নিয়ন্ত্রণ করে। প্রবহমান কোনো নদীর গতিরোধ করে মাছ চাষ করার কোনো সুযোগ নেই।
উপজেলা জলমহাল কমিটির সদস্য ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) আনোয়ার হোসাইন বলেন, ইতোমধ্যে সংস্কারের লক্ষ্যে হিসনা নদীর নাম আমরা পাঠিয়েছি। নদী সংস্কারের ব্যাপারে নির্দেশনা পেলে নদী দখল মুক্ত করার জন্য যা প্রয়োজন সেটাই আমরা করব।
ভেড়ামারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা জলমহালের সভাপতি মো. মিজানুর রহমান বলেন, যারা বাঁধ দিয়ে নদীর স্রোতপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত করছে, নদীর জমি দখল করে ঘরবাড়ি নির্মাণ করেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইজারা দিয়ে উন্মুক্ত নদীতে ব্যক্তি বিশেষকে মাছ চাষ করতে দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
বৃষ্টিতে সবজি খেত ক্ষতিগ্রস্ত, বাজারে সরবরাহ কমে যাওয়ায় দাম চড়া
মাগুরা প্রতিনিধি
মাগুরায় দুই সপ্তাহের টানা বৃষ্টিতে নিম্নাঞ্চলের বেশির ভাগ সবজি খেতে পানি জমেছে। তাতে সরবরাহ কমে যাওয়ায় বাজারে সবজির দাম বাড়ছে। এ নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি, এমনকি হাতাহাতির ঘটনাও ঘটছে। রোববার মাগুরার কয়েকটি কাঁচা বাজার ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এই তথ্য জানা গেছে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বেগুন কেজিতে ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহে ছিল ১০০ টাকা। কাঁচা মরিচের কেজি ৫০০ টাকা, পটল ৯০ টাকা, বরবটি ৭০, সবুজ শাক ৬০, উস্তে ১০০, লাউ ১০০, কচুর মুখী ৭০, পুঁই শাক ৬০, ঢেড়শ ৬০, মিষ্টি কুমড়ো ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতারা বলছেন, গত সপ্তাহে এসব সজবির দাম কেজিতে গড়ে ১০ থেকে ২৫ টাকা কম ছিল।
পুরোনো বাজারের খুচরা বিক্রেতা রশিদ মিয়া বলেন, ‘দুই সপ্তাহ ধরে প্রতিদিনই বৃষ্টি হচ্ছে। তবে দুই দিন ধরে বৃষ্টি নে। এর আগে এক মাস বৃষ্টি হয়েছে এলাকায়। ফলে সবজির এলাকা আলিধানী, বেলনগর, হাজিপুর, শিবরামপুর, শালিখার তালখড়িসহ নানা জায়গায় পানি জমেছে। এ জন্য সেখান থেকে সবজি কম আসছে। সামনে নতুন করে সবজি জমিতে না হলে এই সংকট কাটবে না।’
নতুনবাজারে লাউ কিনতে আসা গৃহিণী লতিফা বানু বলেন, ‘এই সপ্তাহে তরকারির দাম বেশি বেড়েছে। এমনকি প্রতিদিনই দাম বাড়ছে। এখন ৫০০ টাকার শুধু তরকারি কেনা লাগছে। মাছ বা দুধ কেনা যাচ্ছে না। বিক্রেতাদের কিছু বললে মারমুখী আচরণ করছে। বাজারে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটছে। এ জন্য সঠিক বাজার মনিটরিং দরকার সরকারের পক্ষ থেকে।’
দাম বেশি হওয়ায় অনেক খুচরা বিক্রেতা সবজি বেচাকেনা করতে পারছেন না বলে জানান খুচরা বিক্রেতা সমিতির সভাপতি জিয়াউল হাসান। তিনি বলেন, ‘এখন অনেক বিক্রেতাই বেশি সবজি কিনতে পারছে না। কারণ দাম বেশি হওয়ায় তা কিনে বিক্রি করাটা কঠিন হয়ে গেছে। বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি, ঝগড়া কেউ করতে চায় না। এ জন্য খুচরা বাজারে সবজির সংকট দেখা দিয়েছে।’
মাগুরা একতা কাঁচা সবজির পাইকারি বাজারের বিক্রেতা বাবলু বিশ্বাস বলেন, মাল খুব কম পাচ্ছি। ধরেন পেঁয়াজ ও আলু বাদে আর সব সবজির দাম বেশি। প্রতিদিন যে পরিমাণ মালের চাহিদা সে পরিমাণ বাজারে আসছে না। ফলে দাম বেশি হয়ে যাচ্ছে। খুচরা বাজারে তা আরও বেড়ে যাচ্ছে। পানি না কমলে নতুন করে সবজি চাষ হবে কি করে। নতুন সবজি বাজারে আসতে এখনো দেড়-দুই মাস লাগবে। সে পর্যন্ত বাজারে সবজি পাওয়াটাও কঠিন হয়ে যাবে বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে মাগুরা সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হুমায়ন কবির বলেন, ‘নভেম্বরে বোরো মৌসুম শুরু হচ্ছে। এখন টানা বৃষ্টিতে কিছু জমি ক্ষতির মুখে পড়েছে। বলা যায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে নিম্নাঞ্চলের কৃষি জমিতে। এর ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণের চেষ্টা করা হচ্ছে। মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের সহযোগিতা করার চেষ্টা করা হচ্ছে। পানি কমে গেলে খুব তাড়াতাড়ি সবজিসহ অন্য ফসল আবার চাষাবাদ শুরু হবে। তখন বাজারে কৃষিপণ্যের সরবরাহ ঠিক হয়ে যাবে।’
যশোরে গৃহবধূর লাশ উদ্ধার, স্বামী পলাতক
অভয়নগর (যশোর) প্রতিনিধি
যশোরের অভয়নগরে পিতি মণ্ডল (২১) নামে এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার উপজেলার সুন্দলী ইউনিয়নের আড়পাড়া গ্রাম থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনার পর থেকে তার স্বামী পলাতক রয়েছেন।
পিতি মণ্ডল উপজেলা সুন্দলী ইউনিয়নের ডাঙ্গামশিহাটি গ্রামের উত্তম মণ্ডলের মেয়ে ও আড়পাড়া গ্রামের সৌমিত্র ধরের স্ত্রী। তিনি যশোর মহিলা কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষে বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন।
পিতি মণ্ডলের বাবা উত্তম মণ্ডলের অভিযোগ; পারিবারিক কলহের জের ধরে স্বামী সৌমিত্র পিতিকে হত্যার পরে পালিয়ে যায়।
স্থানীয়রা জানান, দুই বছর আগে পরিবারের অমতে সৌমিত্র ধরের হাত ধরে পিতি মণ্ডল তাদের বাড়ি চলে যায়। সৌমিত্রের পরিবার নিজেদের দায়িত্বে তাদের বিয়ের ব্যবস্থা করে। বিয়ের পর থেকেই সৌমিত্রের পরিবার তাকে মেনে নিতে পারেনি। প্রায় তাদের মধ্যে সাংসারিক বিষয় নিয়ে ঝগড়া বিবাদ লেগে থাকত।
পিতি মণ্ডলের বড় ভাই হরিনাথ বিশ্বাস বলেন, ‘আমার বোন মারা গেছে এমন খবর পেয়ে দ্রুত তার স্বামীর বাড়ি আড়পাড়াতে যাই। গিয়ে দেখি খাটের ওপর পিতির মরদেহ পড়ে আছে। তার স্বামী ও পরিবারের লোকেরা পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। আমার বোনকে হত্যা করে বাড়ি থেকে সবাই পালিয়েছে। এখন মিথ্যা নাটক সাজাচ্ছে, গলায় ফাঁস দেওয়ার কথা বলে। আমার বোনের হত্যাকারীর গ্রেপ্তার ও কঠোর শাস্তির দাবি করছি।’
অন্যদিকে সৌমিত্র মণ্ডলের মা স্বপ্না মণ্ডল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। আমার বউমা নিজেই গলায় শাড়ি পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করছে।’
এ বিষয়ে অভয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম আকিকুল ইসলাম বলেন, ‘রাতেই গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য যশোর জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এটা হত্যা নাকি আত্মহত্যা বলা যাচ্ছে না। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে তারপর বলা যাবে।’
কয়রায় আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রমশন দিবস পালন
কয়রা(খুলনা)প্রতিনিধি
কয়রা উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস পালন উপলক্ষে শোভাযাত্রা, আলোচনা, ভুমিকম্প ও অগ্নিকান্ড বিষয়ক মহড়া অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার (১৩ অক্টোবর) সকাল ১০ টায় এ উপলক্ষে শোভাযাত্রা ,মহড়া শেষে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুলী বিশ্বাসের সভাপতিত্বে ও৷ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার মোঃ মামুনার রশিদের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন উপজেলা জমায়াতের আমির মাওলানা মিজানুর রহমান, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক এম,এ হাসান,জামায়াতের সেক্রেটারী মাওলানা সাইফুল্লাহ, প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মোস্তফা শফিকুল ইসলাম, আলহাজ্ব সদর উদ্দিন আহমেদ, উপজেলা ব্লাড ডোনার ক্লাবের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান, শিক্ষক অরবিন্দ কুমার মন্ডল, এনজিও প্রতিনিধি মোঃ মোস্তাক মাহমুদ, নিজাম উদ্দীন, ফারুক হোসেন, আঃ মজিদ, কুদরত উল্লাহ বিজু, সিপিপি সদস্য সাইফুল ইসলাম, সাদিয়া আক্তার প্রমুখ।
বাগেরহাটে ডেঙ্গু প্রতিরোধে বিএনপি’র লিফলেট বিতরণ
স্টাফ রিপোটার,বাগেরহাট
বাগেরহাটে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতামুলক লিফলেট বিতরণ করেছে জেলা বিএনপি। রবিবার দুপুরে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এম এ সালাম দলীয় নেতৃবৃন্দকে সাথে নিয়ে শহরের রেল রোড থেকে শুরু করে শহরের বিভিন্ন দোকানে ও সাধারণ মানুষের মধ্যে এডিস মশা থেকে রক্ষায় গণসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে লিফলেট বিতরণ করেন। বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে বাগেরহাটে ৬ অক্টোবর থেকে জেলাব্যাপী ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতামুলক লিফলেট বিতরণ করছে বিএনপি।
বাগেরহাটে লিফলেট বিতরন কালে অন্যান্যেরা মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক খাদেম নিয়ামুল নাসির আলাপ, আহবায়ক কমিটির সদস্য শেখ শাহেদ আলী রবি,মাহাবুবর রহমান টুটুল, মেহেবুবুল হক কিশোর, হাদিউজ্জামান হিরো, জেলা শ্রমিকদলের সাবেক সভাপতি সরদার লিয়াকত আলী, বিএনপি নেতা শেখ নজরুল ইসলাম, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি এ্যাড মোশারেফ হোসেন মন্টু, জেলা সেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম শান্ত, জেলা জাসাসের সভাপতি মো. কামরুজ্জামান প্রমূখ।
খুলনার স্টার জুট মিলস উচ্চ বিদ্যালয় : ক্ষমতার দাপটে বিতর্কিত প্রধান শিক্ষক গাজী লুৎফর এখনও বহাল তবিয়তে
মো. জামাল হোসেন।।
খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার চন্দনিমহলস্থ বাংলাদেশ পাটকল কর্পোরেশনের (বিজেএমসি) নিয়ন্ত্রণাধীন স্টার জুট মিলস উচ্চ বিদ্যালয়ের বিতর্কিত ও বহুলালোচিত সহকারী শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক) গাজী লুৎফর রহমান পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের অবৈধ ক্ষমতার দাপটে এখনও বহাল তবিয়তে রয়েছেন। নানা অনিয়ম-দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত হলেও ধূর্ত প্রকৃতির এ ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়নি। ফলে পার পেয়ে যাচ্ছেন তিনি। গাজী লুৎফর রহমান দিঘলিয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের সভাপতি পদে রয়েছেন।
অভিযোগ রয়েছে, গাজী লুৎফর রহমান ২০০১ সালে স্টার জুট মিলস উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাইমারি শাখায় ১৬তম গ্রেডের জুনিয়র শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ প্রাপ্ত হন। ২০০২ সালে মিল কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া বিএড পাস করেন। বিজিএমসি’র নীতিমালা অনুযায়ী আট বছর পূর্তিতে কর্মচারী হিসাবে একটি টাইম স্কেল পান ২০০৯ সালে। ২০১০ সালের ৩০ জুন মিলের একটি নোট সিটের মাধ্যমে প্রাইমারি শাখা থেকে মাধ্যমিক শাখায় স্থানান্তর হন। পরবর্তীতে তিনি তৎকালীন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ লীগের প্রভাব বিস্তার করে অবৈধ ক্ষমতার দাপটে ১৬ তম গ্রেট থেকে মাধ্যমিক শাখার সহকারি শিক্ষক হিসেবে ১০ তম গ্রেটে উন্নীত হন। যেখানে মিলের বোর্ড মিটিং বা বিজেএমসি’র কোন অনুমোদন না থাকায় ২০১৫-১৬ অর্থ বছরের বাণিজ্যিক অডিট হয়। অডিটে তার বিএড স্কেল বাতিল করে ১৬ তম গ্রেট কার্যকরের সুপারিশ এবং গ্রহণকৃত ১ লাখ ৭৭ হাজার টাকাসহ বর্তমান পর্যন্ত অতিরিক্ত গ্রহণকৃত টাকা আদায়ের নির্দেশ দেওয়া হয়। গত ২০১৯ সালের ৪ এপ্রিলে অডিটের একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করে গাজী লুৎফর রহমান নিয়োগের সকল প্রক্রিয়া সঠিক ছিল অথাৎ প্রাইমারি শাখার নিয়োগ সঠিক।
বাণিজ্যিক অডিট অধিদপ্তরের তৎকালীন উপ-পরিচালক পলাশ বাকচী স্বাক্ষরিত একপত্রে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়।
দীর্ঘ পাঁচ বছর আগে ২০১৯ সালের ২৬ মে স্টার জুট মিলস লিমিটেডের প্রকল্প প্রধানের কাছে নির্দেশনার এ কপি এসে পৌঁছালেও এখন পর্যন্ত রহস্যজনক কারণে তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গাজী লুৎফর রহমান মাধ্যমিক শাখার কোন পদোন্নতিপত্র বা সহকারি শিক্ষক কোন নিয়োগপত্র নেই। সহকারী মাধ্যমিক শাখায় শিক্ষক হিসেবে তিনি কখনো যোগদান করেননি। এমনকি তাকে রাজশাহী বিজিএমসি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বদলি করা হলেও তিনি সেখানে যাননি।
সূত্র জানায়, প্লাটিনাম মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে আইয়ুব আলী নামে এক শিক্ষককে স্টার জুট মিলস স্কুলে সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসাবে বদলি করেন কর্তৃপক্ষ। কিন্তু আওয়ামী লীগের ক্ষমতার দাপটে গাজী লুৎফর রহমান তাকে বিদ্যালয়ের দায়িত্ব বুঝে দেননি। বরং ভয়ভীতি দেখিয়ে থেকে তাড়িয়ে দেন। গত ৫ আগষ্ট দেশ আওয়ামী লীগের দুঃশাসন থেকে মুক্ত হলেও স্টার জুট মিলস উচ্চ বিদ্যালয়টি পতিত সরকারের দোসর থেকে মুক্ত হতে পারেনি বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষক গাজী লুৎফর রহমান নিজেকে দিঘলিয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের সভাপতি পদে থাকার বিষয়টি স্বীকার করেন। কিন্তু অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়ে জানতে চাইলে কৌশলে এড়িয়ে যান তিনি।
উল্লেখ্য, স্টার জুট মিলস উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক) গাজী লুৎফর রহমানের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ৯০ জন এসএসসি পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে বোর্ড নির্ধারিত ফি’র চেয়ে মাথাপিছু ৫শ’ টাকা করে অতিরিক্ত ৪৫ হাজার টাকা গ্রহণের ঘটনায় বিজেএমসি কর্তৃপক্ষ তাকে সতর্ক করেন। সর্বশেষ ২০১৫ সালের ২৬ নভেম্বর গাজী লুৎফর রহমানকে স্টার জুট মিলস উচ্চ বিদ্যালয় থেকে রাজশাহী পাটকল উচ্চ বিদ্যালয়ে বদলী করা হয়। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এবং বিজেএমসির দপ্তর আদেশ মোতাবেক তাকে দু’ সপ্তাহের মধ্যে বদলীকৃত কর্মস্থলে যোগদানের নির্দেশ দেয়া হয়। কিন্তু রহস্যজনক কারণে আজ অবধি কর্মস্থল ছাড়েননি তিনি।
স্টার জুট মিলের প্রকল্প প্রধান আবুল কালাম আজাদ এ প্রতিবেদককে বলেন,তখন আমি ছিলাম না মিলে । গাজী লুৎফর রহমানের বিষয়টি বিজে এম সি ভালো বলতে পারবে।
তালায় নানান কর্মযজ্ঞের মধ্য দিয়ে শেষ হলো শারদীয় দূর্গা উৎসব
ইলিয়াস হোসেন, তালা(সাতক্ষীরা)::
সাতক্ষীরার তালায় টানা পাঁচ দিন ধরে ঢাকের বোল, কাঁসরের ঘণ্টা, শাঁখের ধ্বনি আর পুণ্যার্থীদের সমাগমে জমজমাট হয়ে থাকা পূজামণ্ডপগুলো নীরব হয়ে পড়েছে। রবিবার মধ্যাহ্নের পর থেকে, প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে বাঙালি হিন্দু ধর্মালম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দূর্গাপূজা। গত বুধবার ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছিল পাঁচ দিনের এই উৎসব। এবার তালা উপজেলায় প্রায় ১৭৮ টি মণ্ডপে পূজা হয়েছে।
তালার অন্যতম মাঝিয়াড়া মহাশ্মান মন্দির এর পূজারি প্রাকাশ ভাট্রাচর্জ্য জানান, দশমী পূজা ছিল ভোর ৬টা ১৩ মিনিট থেকে শুরু হয়ে বেলা ১২টা পর্যন্ত । এর মধ্যেই বিভিন্ন মন্দিরে দশমীর বিহিত পূজা সম্পন্ন হয়েছে। এরপর দর্পণ বিসর্জনের ভেতর দিয়ে পাঁচ দিনের শারদীয় দূর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়। দর্পণ বিসর্জনের ভেতর দিয়েই মূলত দেবী দূর্গার বিসর্জন সম্পন্ন হয়।
প্রাকাশ ভাট্রাচর্জ্য বলেন, এবার দেবী এসেছেন দোলায়, গেছেন ঘোটকে। এর তাৎপর্য এ বছর মহমারী, বণ্যা, অনাকাঙ্খিত দূর্ঘটনার হার বাড়বে। তবে দেবীর চরণে অঞ্জলি দিয়ে শান্তি আর কল্যাণই কামনা করেছেন সকলেই।
দর্পণ বিসর্জনের পরে তালার বিভিন্ন মন্দিরে বিবাহিত নারীরা সিঁদুর খেলায় অংশ নেন। প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরেও তালা উপজেলার স্থায়ী মন্দিরগুলোতেই সিঁদুর খেলার আয়োজন করা হয়। তবে এ বছর তরুণীরা সিঁদুর খেলায় অংশ না নিলেও দেবীকে বিজয়ার প্রণাম জানাতে অনেক তরুণ তরুণী মন্দিরগুলোতে আসেন। তাতে বিজয়ার বিষাদের মধ্যেও মিশে থাকে আনন্দের আবহ।
তালা বাজার দূর্গ মন্দিরে সাকালে গিয়ে দেখা গেল, লাল-সাদা শাড়ি পরে শত শত গৃহিণী বরণডালা ও সিঁদুরের কৌটা নিয়ে মেতেছেন দেবীর চরণ স্পর্শ করে সঙ্গী বা উপস্থিত অন্য ভক্তদের কপালে কপালে সিঁদুর মাখিয়ে দেওয়াই।
তালা সদরের রত্না মজুমদার বলেন, আমি বরণডালা নিয়ে এসেছি আমার স্বামী একজন চাকুরীজীবি, কাজ করেন বে-সরকারী একটি সংস্থায়। স্বামীর সংসারের কল্যাণ কামনায় বরণডালা সাজিয়ে এনেছি আমদের দূর্গা মন্দিরে। তিনি জানান, বিসর্জনের পর এই সিঁদুর খেলা মূলত বিবাহিত নারীদের একটি মাঙ্গলিক আচার। স্বামী-সংসারের মঙ্গল কামনা করে সবাই বরণডালা সাজিয়ে বা সিঁদুরের কৌটা সঙ্গে নিয়ে আসেন। এই সিঁদুর দেবীর চরণ স্পর্শ করিয়ে কৌটায় করে সংরক্ষণ করেন। এই সিঁদুরই তাঁরা সারা বছর ব্যবহার করেন। যাঁরা বরণডালা সাজিয়ে আনেন, তাতে থাকে ধান, দূর্বা, বেলপাতা, কাঁচা হলুদ, কড়ি, যেকোনো ধরনের অন্তত একটি ফুল, নাড়ু আর মিষ্টি। আর সিঁদুরের কৌটা তো থাকেই। এই বরণডালা নিয়েই দেবী প্রণাম করে ঘরে ফিরবো।
তালা কেন্দ্রীয় মহা শশ্মানের সভাপতি কল্যাণ বসু বলেন, এবার তাঁরা মণ্ডপ তৈরি ও সাজসজ্জায় দেশি ও পরিবেশবান্ধব উপকরণের প্রাধান্য দিয়েছেন। পূজায় প্রতিদিনই প্রসাদ বিতরণ করা হয়েছে। তালা উপজেলার অধিকাশং মন্দির এর প্রতিমা কপোতাক্ষ নদের পাড়ে আনা হয়। এরপর সন্ধ্যায় বিসর্জন দেওয়া হয় কপোতক্ষ নদে।