শেষ মুহুর্তে বাজারগুলোতে ইলিশ কিনতে উপচে পড়া ভীড়, চড়া দামে ক্ষুব্ধ ভোক্তারা

4
Spread the love

মা ইলিশ রক্ষায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা

স্টাফ রিপোর্টার।।
মা ইলিশ রক্ষায় ২২দিন অবরোধের কবলে পড়ছেন জেলেরা। এই সময়ে সমুদ্র ও নদীতে ইলিশ আহরণ, পরিবহন, মজুদ ও বিক্রয় নিষিদ্ধ থাকবে। আজ রবিবার (১৩ অক্টোবর) প্রথম প্রহর থেকে এই নিষেধাজ্ঞা শুরু হবে, শেষ হবে ৩ নভেম্বর। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী শনিবার (১২ অক্টোবর) ইলিশ বিক্রি ও ক্রয়ের শেষ দিন। শেষ দিনে ইলিশ কিনতে খুলনার বাজারগুলোতে ভীড় জমিয়েছেন ভোক্তারা। শনিবার সকাল থেকে উপচে পড়া ভীড় ছিল বাজার গুলোতে। চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে ইলিশসহ সবধরণের সামুদ্রিক মাছ। শেষ দিনে দাম বেশি থাকায় ক্ষুব্ধ ভোক্তারা যেমন ক্ষুব্ধ, তেমনি মাছ কম হওয়ায় হাসি নেই জেলে-ব্যবসায়ীদের মুখে।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, এক কেজি ওজনের ইলিশ ২২শ থেকে ২৪শ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ৫শ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১৪-১৫শ টাকা, ৫-৭টায় কেজি ওজনের ইলিশ ৬শ থেকে ৮শ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। কয়েক দিন আগেও, বিভিন্ন বাজারে গুলোতে কেজি কেজি ওজনের ১৩শ থেকে ১৫শ টাকা, ৫শ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৮শ থেকে ১ হাজার এবং ৫-৭টায় কেজি ওজনের ইলিশ ৪শ থেকে ৫শ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
শুধু ইলিশ নয় অন্যান্য মাছের দামও ছিল সাধারণ ক্রেতাদের বাজেটের থেকে বেশি। ঢেলা চেলা, চাপিলা, তুলার ডাটি, রুপচাঁদা, কঙ্কন, মেদ, মোচন গাগড়া, সাগরের বাইলা, লইট্টাসহ সব ধরণের মাছ বিক্রি হয়েছে বেশি দামে। সাগরে কাঙ্খিত মাছ না পাওয়া, ক্রেতাদের চাহিদার তুলনায় মাছের পরিমান কম হওয়ায় বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে বলে দাবি ট্রলার মালিকদের।
ট্রলার মালিক রুহুল আমিন বলেন, কাল থেকে সাগরে অবরোধ শুরু। এবার তেমন মাছও পাইনি। যা পাইছি, তাই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। বেশি দামে বিক্রির পরেও ঠিকঠাক খরচ উঠবে কিনা বলা যাচ্ছে না।
জাহিদুল ইসলাম নামের এক ক্রেতা বলেন, মাইকিংয়ের মাধ্যমে শুনেছি কাল থেকে ইলিশ বিক্রয় বন্ধ। তাই ভোরেই আসছি মাছ কিনতে। ভেবেছিলাম দাম কম হবে। কিন্তু খুচরো বাজারের থেকে দাম অনেক বেশি।
হাফিজুর রহমান নামের এক মাছ ব্যবসায়ী বলেন, সপ্তাহে দুই-তিন দিন এখান থেকে মাছ কিনে বিভিন্ন স্থানে খুচরো বিক্রি করি। আজকে যে দামে মাছ কিনলাম তাতে খুচরো খরিদদারদের কাছে বেচতে খুব কষ্ট হবে।
মৎস্য আড়ৎদার শেখ আবেদ আলী বলেন, এবার জেলেরা সাগরে তেমন মাছ পায়নি। অনেক জেলেরই খরচ উঠবে না। আর গেল বছরগুলোতে শেষ দিনে যে পরিমান মাছ থাকে, তার তুলনায় ১০ শতাংশ মাছও নেই। আর শেষ সময়ে সবাই মাছ কিনতে চাচ্ছেন, তাই দাম বেশি। রাত ১২টা পর্যন্ত মাছ ক্রয়-বিক্রি চলবে বলে জানান এই ব্যবসায়ী। এদিকে নিষেধাজ্ঞার খবরে বঙ্গোপসাগর থেকে মাছধরা ট্রলারগুলো লোকালয়ে চলে আসছে। কেউ কেউ বাজার সংলগ্ন নদে অবস্থান নিয়েছেন। কেউ কেউ নিজ গন্তব্যে পৌছেছেন।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বলেন, মা ইলিশ রক্ষায় ১৩ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর মধ্য রাত পর্যন্ত বঙ্গোপসাগরসহ নদীতে ইলিশ মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকবে। নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে মৎস্য সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পাশাপাশি কোস্টগার্ড, নৌ পুলিশ ও নৌবাহিনী কাজ করবে। এই কাজকে তরান্বিত করতে মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। অবরোধ কার্যকর করতে দিন-রাত সব সময় আমাদের টহল জোরদার থাকবে।এই সময়ে জেলেদেরকে সরকারি সহায়তাও দেওয়া।