পাট নিয়ে বিড়ম্বনায় কৃষক: খাল-বিলে পানি নেই

14
Spread the love

খোকসা (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি

স্বাভাবিক বৃষ্টি না হওয়ায় খাল-বিলে তেমন পানি জমেনি। মৌসুম শুরু হলেও কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার কৃষকরা পাট জাগ দিতে না পেরে চিন্তিত। ক্ষেতেই পাট শুকিয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ নিচু জমিতে গর্ত করে পাটের আঁশ ছাড়াচ্ছেন। এ অবস্থায় পাটচাষিরা লোকসানের আশঙ্কা করছেন।

কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় চলতি মৌসুমে ৪০১০ হেক্টর জমিতে পাট আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়। আবাদ হয়েছে ৪০৩৫ হেক্টরে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫৮,৯০০ বেল পাট। লক্ষ্য পূরণে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে ২২৫০ কৃষকের মধ্যে সার ও বীজ সরবরাহ করা হয়।

চলতি বছর বৃষ্টির অভাবে প্রতিটি জমিতে ৩ থেকে ৪ বার সেচ দিতে হয়েছে। প্রচণ্ড তাপদাহের কারণে পাটের আবাদও ভালো হয়নি। ইতোমধ্যে পাট কাটার সময় পার হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু খাল-বিলে পানি না থাকায় এখনও ৮০ শতাংশ জমিতে পাট পড়ে আছে। জমিতেই পাটের পাতা ঝরে যাচ্ছে। কোথাও আবার পোকার আক্রমণ হয়েছে। পাটের মাঝখান থেকে শুকিয়ে লাল হয়ে যাচ্ছে। পাট জাগে (পচানো) পানির সংকট মোকাবিলায় কৃষি বিভাগের উদ্ভাবিত রিবন রেটিং পদ্ধতির সঙ্গেও পরিচয় নেই বেশির ভাগ কৃষকের।

সরেজমিন মালিগ্রাম, মির্জাপুর, সিংঘড়িয়া, মানিকাটসহ ৭টি গ্রাম ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে। এসব এলাকার বেশির ভাগ জমিতে পাট পড়ে আছে। কেউ কেউ ধান লাগানোর জন্য জমি ফাঁকা করে রাস্তায় স্তূপ করে পাট রেখে দিয়েছেন। অনেকেই জমির কাছাকাছি ডোবায় জমে থাকা বৃষ্টির পানিতে পাট জাগ দিচ্ছেন। শুকিয়ে নষ্ট পাট গাছ নিয়ে বাড়িতে রেখেছেন কেউ কেউ। জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার হবে সেগুলো।

মালিগ্রামের কৃষক শহর আলী দুই বিঘা জমি ইজারা নিয়ে পাট চাষ করেছেন। প্রতিটি জমিতে ৪ বার সেচ দিয়েছেন। এতে ব্যয় বেড়ে হয়েছে ৩০ হাজার টাকা। এখন আবার পাট জাগ দেওয়ার পানি নেই। দূরে সিঅ্যান্ডবির খাদে পাট জাগ দিতে হচ্ছে। এতে পরিবহন খরচ ছাড়াও অতিরিক্ত শ্রমিক লাগছে। ফলে পাট চাষ করে এ বছর তাঁকে লোকসান গুনতে হবে।

শুকিয়ে নষ্ট পাট নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন একই গ্রামের জাহিরন। তিনি জানান, পানির অভাবে পাট জাগ দিতে পারেননি। শুকিয়ে নষ্ট পাট দিয়ে রান্নার খড়ি তৈরি করবেন।

কৃষি কর্মকর্তা সবুজ কুমার সাহা বলেন, এ বছর পাটের আবাদ ভালো হয়েছে। প্রতিবিঘা জমিতে ৯ থেকে ১০ মণ হারে ফলন হচ্ছে। ইতোমধ্যে ৫০ শতাংশ জমি থেকে পাট কাটা হয়েছে। পানি সংকট মোকাবিলায় রিবন রেটিং পদ্ধতিতে পাট পচানোর পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে কৃষকদের।