স্টাফ রিপোর্টার।।
খুলনায় দাফনের ৮ দিন পর থানায় আত্মসমর্পণ করে নিজেকে বাবার খুনি বলে স্বীকারোক্তি দিয়েছে এক কিশোরী (১৬)। শুক্রবার (১২ জুলাই) দুপুর আড়াইটার দিকে দৌলতপুর থানায় আত্মসমর্পণ করে ওই কিশোরী মৌখিক স্বীকারোক্তি দেয়। সে পুলিশকে জানায়, রাতের খাবারের সঙ্গে ঘুমের ট্যাবলেট দিয়ে এবং পরবর্তীতে বালিশচাপা দিয়ে বাবা শেখ হুমায়ুন কবিরকে (৫২) হত্যা করেছে সে। এর আগে ৪ জুলাই খুলনার দৌলতপুর দেয়ানা উত্তরপাড়া এলাকায় চাঞ্চল্যকর এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গত বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) রাত ৮টার দিকে রাতের খাবার খেয়ে শেখ হুমায়ুন কবির নিজ ঘরে ঘুমিয়ে পড়েন। পরদিন শুক্রবার সকাল ৭টায় ঘুম থেকে না ওঠায় তার স্ত্রী ডাকাডাকি করেন। কোনো সাড়া না দিলে স্ত্রীর সন্দেহ হয়। পরবর্তীতে তার মেয়ে ও ভাইকে ডাকলে তারা এসে মৃত্যুবরণ করেছেন বলে জানান।
পরবর্তীতে এলাকার লোকজন এসে মৃত ব্যক্তির দাফনের ব্যবস্থা করেন। কিন্তু সুস্থ লোক রাতে খাবার খেয়ে ঘুমের ঘরে মারা যাওয়ার বিষয়টি সবার রহস্যজনক মনে হয়। এরপর গোসলের সময় তার বাম হাতের বাহুর কনুইয়ের ওপরে দুটি ছিদ্র দেখে অনেকে সাপের ছোবলে মৃত্যু হয়েছে বলে সন্দেহ করেন। এরপর জানাজা শেষে মরদেহ দাফন করা হয়।
কিন্তু দাফনের পাঁচ-ছয় দিন পর থেকে মৃত ব্যক্তির ছোট মেয়ের কথাবার্তা আচরণে তার মা এবং বোনের সন্দেহ হয়। তার বাবার মৃত্যু নিয়ে বিভিন্ন কথাবার্তা আলোচনা হয়।
এক পর্যায়ে অভিযুক্ত ওই কিশোরী বলে, বাবাকে আমি মেরে ফেলেছি।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ওই কিশোরী বলে, রাতের খাবারের সঙ্গে ঘুমের ট্যাবলেট খাইয়েছি এবং পরবর্তীতে বালিশচাপা দিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করেছি। আমার বাবার মৃত্যুর জন্য আমি নিজেই দায়ী।
পরে পরিবার এবং এলাকার লোকের চাপে পড়ে শুক্রবার দুপুর আড়াইটার দিকে নিজে দৌলতপুর থানায় এসে আত্মসমর্পণ করে এবং বাবার মৃত্যুর জন্য সে নিজেই দায়ী বলে জানায়। বর্তমানে ওই কিশোরীকে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারের রয়েছে।
দৌলতপুর থানার অফিসার ইনচার্জ প্রবীর কুমার বিশ্বাস বলেন, মেয়েটির মানসিক সমস্যা, এক এক সময় এক এক কথা বলছে। তাকে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রাখা হয়েছে। তার মা ও মেঝ বোনের কোনো অভিযোগ নেই। বড় বোন একটু সন্দেহ করেন। রোববার তাদের কোর্টে মামলা বা অভিযোগ করতে বলা হয়েছে। পরে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব।