দুই পাশে উঁচু মাঝখানে নিচু: খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়ক বেহাল

36
Spread the love

খুলনাঞ্চল রিপোর্ট।।

খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়কের নিঝুম পল্লির সামনে থেকে ডুমুরিয়ার দিকে প্রায় অর্ধকিলোমিটার এখন উঁচু-নিচু হয়ে গেছে। দুই পাশে উঁচু ও মাঝখানে নিচু। দেখলে মনে হয় রেললাইন। একইভাবে গুটুদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের মোড় থেকে উপজেলা পরিষদের সামনে পর্যন্ত একই অবস্থা। শুধু এ দুটি স্থানই নয়, আরও বেশ কয়েকটি স্থানে সড়ক এবড়োখেবড়ো। ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন। সংস্কারের চার বছরের মাথায় পিচ সরে গিয়ে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

অভিযোগ উঠেছে, সংস্কার কাজে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করায় এমন অবস্থা। তবে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের দাবি, পদ্মা সেতু চালুর পর এই সড়কে যানবাহন বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। সড়কের সক্ষমতার চেয়ে এখন ভারী যান চলায় সড়ক ভেঙে যাচ্ছে।

সওজ সূত্রে জানা গেছে, খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়কের দৈর্ঘ্য ৬৪ কিলোমিটার। সড়কটি পুনর্নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল ২০১৮ সালে, শেষ হয় ২০২০ সালের জুনে। খুলনার জিরো পয়েন্ট থেকে ডুমুরিয়া উপজেলার আঠারো মাইল এলাকা পর্যন্ত সড়কটি সওজের খুলনা কার্যালয়ের অধীন। খুলনা অংশের এই ৩৩ কিলোমিটার সড়ক পুনর্নির্মাণ ও প্রশস্ত করার জন্য ব্যয় হয় ১৬০ কোটি টাকা। সড়কটি ১৮ ফুট থেকে ৩৬ ফুটে প্রশস্ত করা হয়। বালু, খোয়া, পাথরসহ বিভিন্ন উপাদান দিয়ে সড়ক প্রায় তিন ফুট পুরু করা হয়।

এই সড়কের বাসচালক ইব্রাহিম শেখ ও দিদারুল ইসলামের অভিযোগ, নিম্নমানের বিটুমিন ও নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করায় চার বছরের মধ্যেই বহু স্থানে পিচ সরে গেছে। রাতে যে কোনো সময় দুর্ঘটনার শঙ্কা বেড়ে গেছে।

মাহিন্দ্রাচালক সুলতান শেখ ও ইজিবাইকচালক রিয়াজ উদ্দিন বলেন, সড়কের সংস্কারকাজ মানসম্মত হয়নি। গাড়ি চালাতে খুবই সমস্যা হয়। প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। রাতের বেলা বেশি সমস্যা হয়। রাস্তা দেবে গিয়ে ঢেউয়ের মতো হওয়ায় গাড়ির নিয়ন্ত্রণ ঠিক রাখা যায় না বলে জানালেন মোটরসাইকেল চালক ইয়াসিন মোড়ল।

সড়কে নিয়মিত চলাচলকারীরা জানান, সড়কটি পুনর্নির্মাণের পর প্রথম দুই বছর ভালো ছিল। প্রথম দিকে ছোট-বড় গর্ত সংস্কার করা হয়। এখন সড়কের ১২ থেকে ১৫ কিলোমিটার উঁচু-নিচু হয়ে গেছে। ফলে চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। পাশাপাশি যানবাহনের বাড়তি চাপের সড়কটি দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

সওজ খুলনার উপবিভাগীয় প্রকৌশলী প্রসেনজিৎ পাল বলেন, সড়কটির সর্বোচ্চ ওজন নেওয়ার সক্ষমতা সাড়ে ২২ টন। কিন্তু ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে পাথরসহ যেসব পণ্য খালাস করে ঢাকায় নেওয়া হয়, সেসব ট্রাকের ওজন প্রায় ৫০ টন। এ কারণে সড়কটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সওজ খুলনার নির্বাহী প্রকৌশলী আনিসুজ্জামান মাসুদ বলেন, সড়কের দেবে যাওয়া স্থান দ্রুত সংস্কার করা হবে। ইতোমধ্যে তিনটি বাঁক সরলীকরণ ও ডিভাইডার দেওয়া হয়েছে। আরও তিন-চারটি শিগগির দেওয়া হবে।-সমকাল