মোদি ও মমতার কথার লড়াই

6
Spread the love


খুলনাঞ্চল ডেস্ক।।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নির্বাচনী প্রচারণায় পশ্চিমবঙ্গে এসে এক জনসভায় রাজ্যের নানা অনিয়ম-দুর্নীতির জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করেছেন। অন্যদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও আরেকটি জনসভায় নরেন্দ্র মোদির কড়া সমালোচনা করেছেন। এ অবস্থায় রাজ্যটিতে রাজনৈতিক মেরূকরণ বাড়ছে।

বিবিসি লিখেছে, মোদি এমন এক সময় পশ্চিমবঙ্গে জনসভা করলেন, যখন রাজ্যটিতে শিক্ষাক্ষেত্রে দুর্নীতির মামলায় প্রায় ২৬ হাজার ব্যক্তি চাকরি হারিয়েছেন। এ নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে তোলপাড় চলছে। ভারতে দ্বিতীয় দফা নির্বাচনের আওতায় উত্তরবঙ্গের তিনটি লোকসভা আসনে শুক্রবার ভোটগ্রহণ হয়। মালদায় এক জনসভায় মোদি বলেন, ‘শিক্ষকদের’র এ দুর্দশার জন্য দায়ী ক্ষমতাসীন তৃণমূল। তাঁর দাবি, সারদা, ‘রোজ ভ্যালি চিট ফান্ড’ থেকে শুরু করে সাম্প্রতিক শিক্ষাক্ষেত্রে নিয়োগ–একের পর এক দুর্নীতিতে জড়িয়েছে মমতার দল।

হাইকোর্টের রায়ে ২০১৬ সালের স্কুল সার্ভিস কমিশনের পুরো নিয়োগ বাতিলের প্রসঙ্গ টেনে মোদি বলেন, তৃণমূল কংগ্রেস শিক্ষকদেরও ছাড়েনি। তাদের জন্য ২৬ হাজার পরিবারের রুটিরুজি শেষে হয়ে গেল।

অন্যদিকে, চাকরি বাতিলের জন্য আবারও বিজেপিকেই দায়ী করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার মেদিনীপুরের নির্বাচনী জনসভা থেকে বিজেপিকে কাঠগড়ায় তুলে তিনি বলেন, তারা (বিজেপি) চাকরিহারাদের দুর্দশার জন্য দায়ী। রাজ্য কিন্তু চাকরিহারাদের পাশেই আছে।

কলকাতা হাইকোর্টের রায় দেওয়ার পর থেকেই তৃণমূল নেত্রী বিজেপিকেই দুষে এসেছেন চাকরি বাতিলের জন্য। আদালতের রায় ঘিরে বিচার ব্যবস্থাকে বারবার আক্রমণ করেছেন তিনি। যে কারণে তাঁর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদন জমা দেওয়া হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে।

লোকসভা নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা হওয়ার পর থেকে শুক্রবারের সভা মিলিয়ে ৯ বার পশ্চিমবঙ্গে এসেছেন নরেন্দ্র মোদি। প্রতিবারই তাঁর বক্তব্যের কেন্দ্রে ছিল তৃণমূলের বিরুদ্ধে ওঠা একের পর এক অভিযোগ, নারী সুরক্ষার প্রসঙ্গ। তিনি পশ্চিমবঙ্গের সন্দেশখালীর নারী নির্যাতনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত তৃণমূলের শেখ শাহজাহান ও তাঁর অনুগামীদের কথাও ঘুরেফিরে তুলে ধরেন।

এসব অভিযোগের জবাব দিয়েছেন মমতাও। শুক্রবার পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুরের ঘাটাল কেন্দ্রের পিংলাতে জনসভা ছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। মোদির অভিযোগের জবাবে তিনি বলেন, কারও চাকরি যাবে না। বিজেপি চায় না পশ্চিমবঙ্গের যুবসম্প্রদায় চাকরি পাক। গ্রামগঞ্জে মানুষ বলে মানুষখেকো বাঘ। আপনারা মানুষখেকো বাঘ দেখেছেন, চাকরিখেকো মানুষ দেখেছেন? চাকরিখেকো বিজেপি পার্টি দেখেছেন? চাকরিখেকো সিপিএম পার্টি দেখেছেন? চাকরিখেকো রাম-বাম-শাম দেখেছেন। ২৬ হাজার জনের চাকরি খেয়েছে। আবার ১২ শতাংশ সুদসমেত ফেরত দিতে হবে! মগের মুলুক। তিনি বলেন, এবার ভোটে বিজেপি আসবে না। ভয় পেয়ে ভুলভাল বলছে। কখনও মুসলমানদের তাড়িয়ে দিচ্ছে, কখনও হিন্দুদের তাড়িয়ে দিচ্ছে, কখনও আদিবাসীদের অসম্মান করছে।