ফিরছে পরীক্ষা পদ্ধতি, ৫ ঘণ্টা ধরে চলবে এক বিষয়ে মূল্যায়ন

7
Spread the love

 

ঢাকা অফিস।।

গত বছর চালু হওয়া নতুন শিক্ষাক্রমে (কারিকুলাম) শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন পদ্ধতি এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তবে নানা আলোচনা-সমালোচনার পর মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন (অ্যাসেসমেন্ট) পদ্ধতি নিয়ে একটি খসড়া প্রস্তাব তৈরি করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)।

এনসিটিবি বলছে, স্কুল সময়ে (সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা) প্রতিদিন একটি বিষয়ে মূল্যায়নের জন্য খসড়া প্রস্তাব তৈরি করা হয়েছে। এতে টানা পাঁচ ঘণ্টা বসে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা দিতে হবে না। তবে বিষয়ভেদে এক থেকে দেড় ঘণ্টার লিখিত পরীক্ষা হবে।

খসড়া প্রস্তাব অনুযায়ী, প্রতিটি বিষয়ে মিডটার্ম ও বার্ষিক পরীক্ষা হবে পাঁচ ঘণ্টার। পাঁচ ঘণ্টায় হবে এসএসসি ও এইচএসসির মতো পাবলিক পরীক্ষা। এই দুটি পরীক্ষা হবে অন্য কেন্দ্রে। আর চতুর্থ থেকে নবম শ্রেণির পরীক্ষা হবে নিজ নিজ স্কুলে। সকাল ১০টা থেকে এই মূল্যায়ন চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। মাঝখানে এক ঘণ্টার বিরতি থাকবে।

সোমবার এনসিটিবির সদস্য (শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান বলেন, ‘এগুলো এখনও আলোচনার পর্যায়ে আছে, চূড়ান্ত হয়নি। চূড়ান্ত হলে সবাইকে জানিয়ে দেওয়া হবে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা গতবার পরীক্ষা নিয়েছি তিন দিনে, নাম ছিল অ্যাসেসমেন্ট উৎসব। শিক্ষার্থীরা প্রথম দিন ইনস্ট্রাকশন পেয়েছে, দ্বিতীয় দিন ডেটা প্রসেস করেছে, তৃতীয় দিনে ফাইনাল রেজাল্ট দিয়েছে। তিনটি ভাগে কাজটি করেছে। প্রতিদিন ক্লাস রুটিন অনুযায়ী সেগুলো হয়। তবে পরে আমরা জানতে পারি, এক দিনে একাধিক বিষয়ের কাজ করা বেশ কঠিন হয়। তাই এখন আমরা বলেছি, এক দিনে একটি বিষয় নিয়ে কাজ হবে। সেদিন আর অন্য বিষয়ে কাজ হবে না।’

নতুন মূল্যায়ন প্রস্তাবনার ব্যাখ্যা দিয়ে এনসিটিবির এ সদস্য বলেন, ‘একটি এক্সপেরিমেন্ট দেওয়া হবে। শিক্ষার্থীরা সকাল ১০টায় সেটি শুরু করবে। শেষ সময়ে এক ঘণ্টা বা বিষয় অনুযায়ী সোয়া ঘণ্টা এর একটি লিখিত অংশ থাকবে। বাদবাকি সময় তাদের কাজের মধ্যে যাবে। বিষয়টি আগের মতো, তিন ঘণ্টার লিখিত পরীক্ষা দেওয়ার মতো নয়।’

অধ্যাপক মশিউজ্জামান জানান, স্কুল যেভাবে মূল্যায়ন করে সেভাবেই করবে। তবে পাবলিক পরীক্ষায় সেন্টারে যেতে হবে। পাবলিক পরীক্ষায় বাইরের মূল্যায়নকারী অর্থাৎ অন্য স্কুলের শিক্ষক থাকবেন। তিনি বলেন, ‘গতবার ফাইনাল পরীক্ষা যেভাবে হয়েছে, আগামীতে সেভাবেই হবে এবং অবজারভেশন-চেকলিস্ট অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা হবে। ফাইনালি তারা একটি লিখিত রূপ জমা দেবে। সেটি বোর্ডের খাতায় হবে।’

এনসিটিবির খসড়া প্রস্তাবনা অনুযায়ীু এসএসসি, এইচএসসিতে পাবলিক পরীক্ষা হলেও পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণিতে হবে না। দশম শ্রেণির ভিত্তিতে এসএসসি পরীক্ষা হবে। এরপর একাদশে ও দ্বাদশে একটি করে পরীক্ষা হবে।

পুরোনো কারিকুলাম অনুযায়ী, শিক্ষার্থীদের তিন ঘণ্টার লিখিত পরীক্ষায় অংশ নিতে হতো। আর পৃথক দিনে ব্যবহারিক পরীক্ষা হতো। নতুন কারিকুলাম অনুযায়ী মূল্যায়ন প্রক্রিয়াও ভিন্ন হচ্ছে। পরীক্ষা ও মূল্যায়ন নিয়ে শিক্ষাবিদদের মতামত নিয়ে এই খসড়া প্রস্তাবনা তৈরি করার কথা জানিয়েছে এনসিটিবি। এটি এখন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। সেখানে হবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, গত বছর ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন কারিকুলাম চালু হয়েছে। চলতি বছর দ্বিতীয়, তৃতীয়, অষ্টম ও নবমে এবং ২০২৫ সালে চতুর্থ, পঞ্চম ও দশম শ্রেণিতে এটি চালু হবে। নতুন কারিকুলামে এসএসসি পরীক্ষা হবে ২০২৬ সালে।