সেই মানসিক ভারসাম্যহীন মা-যমজ নবজাতকদের ঠাঁই মিলছে

10
Spread the love

যশোর অফিস।।
বাবার পরিচয় না পাওয়া যশোর জেনারেল হাসপাতালে থাকা যমজ দুই সন্তান ও তাদের মানসিক ভানসাম্যহীন মায়ের অবশেষে ঠাঁই মিলছে। যমজ দুই সন্তানকে পাঠানো হচ্ছে খুলনা ছোট মণি নিবাসে আর ভানসাম্যহীন মায়ের ঠাঁই হচ্ছে ঢাকার কাশিমপুর সরকারি আশ্রয় কেন্দ্রে।

সোমবার দুপুরে যশোর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে শিশু কল্যাণ বোর্ডের সভায় এই সিন্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবরাউল হাছান মজুমদার। এর আগে গত বৃহস্পতিবার পুলিশের আবেদনের শুনানিতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত-১-এর বিচারক বিষয়টি নিষ্পত্তি করার বিষয়ে জেলা শিশু কল্যাণ বোর্ডকে দায়িত্ব দেন।

সমাজসেবা অধিদপ্তর যশোরের উপ-পরিচালক অসীত কুমার সাহা বলেন, অবশেষে ঠাঁই হচ্ছে যশোরে যমজ সন্তান জন্ম দেওয়া মানসিক ভারসাম্যহীন নারী ও তার দুই সন্তানকে। যমজ দুই সন্তানকে পাঠানো হচ্ছে খুলনা ছোট মণি নিবাসে আর তাদের ভারসাম্যহীন মায়ের ঠাঁই হচ্ছে ঢাকা কাশিমপুর সরকারি আশ্রয় কেন্দ্রে। তবে এখই তাদের পাঠানো হচ্ছে না। বর্তমানে মা ও সন্তানরা সুস্থ রয়েছেন। বাচ্চাদের কোনো নামও রাখা হয়নি। আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তিনি বলেন, আশা করছি, চলতি সপ্তাহে তাদের সেখানে পাঠাতে পারবো।

গত ১৫ দিন ধরে যশোর জেনারেল হাসপাতালে যমক সন্তান ও তাদের মা চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তারা সুস্থ আছেন। কিন্তু তাদের দায়িত্ব স্বজনদের কেউ নিতে রাজি হননি। এতে ওই মা ও তার দুই সন্তানকে নিয়ে বিপাকে পড়েন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। মানসিক ভারসাম্যহীন ওই মা নার্সদের সঙ্গেও খারাপ ব্যবহার করছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্ববধায়ক হারুন- অর রশিদ বলেন, ‘মানসিক ভারসাম্যহীন ওই নারী ও যমজ সন্তান সুস্থ রয়েছে। যে কোনো সময় তাদেরকে হাসপাতাল থেকে নেওয়া যাবে। মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় ওই নারী নার্সদের সঙ্গে দুর্বহার করছে। বিছানায় মলত্যাগ করছে। তার কাছে কেউ যেতে পারছে না। ওয়ার্ডের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। বিষয়টি দ্রুত সমাধান হওয়া জরুরী।’ তিনি জানান, তাদের দেখাশোনা করার জন্য দু’জন আনসার সদস্য রয়েছেন। তারা বাচ্চাদের দুধ খাওয়ান ও নিরাপত্তা দিচ্ছেন।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ৩ সেপ্টেম্বর যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার নতুন গ্রামের জামিরুল ইসলামের পরিত্যক্ষ ঘরে মানসিক ভারসাম্যহীন ওই নারী জমজ সন্তান প্রসব করেন। পরে গৃহকর্তা জামিরুল ওই নারীকে বাঘারপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। ওইদিন সন্ধ্যায় তাদের যশোর জেনারেল হাসপাতালে স্খানান্তর করা হয়। এরপর থেকে মা ও দুই নবজাতক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। হাসপাতালে ভর্তির সময় ওই নারীর পরিচয় অজ্ঞাত থাকলেও পরবর্তীতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন ( পিবিআই) যশোর ওই নারীর পরিচয় শনাক্ত করে। ওই নারীর নাম মোসাম্মৎ মাহিনুর। তিনি খুলনার তেরখাদা উপজেলার বারাসাত গ্রামের চান্দু মিয়ার মেয়ে।

পিবিআই কর্মকর্তারা মাহিনুরের মা ও ভাইয়ের সঙ্গে ৎযোগাযোগ করলেও তারা মাহিনুর ও তার সন্তানদের নিতে রাজী হননি। এই অবস্থায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় জেলা প্রতিবন্ধীবিষয়ক কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রসূতি মা ও দুই নবজাতকের তত্ত্ববধায়ন করে। সার্বক্ষণিক দেখভালের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দু’জন নারী আনসার সদস্যকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।