ঢাকা অফিস।।
ঢাকায় বিএনপি’র মহাসমাবেশ ঘোষণার পর থেকেই উত্তাপ-উত্তেজনা। কী হবে, কী হচ্ছে এমন আলোচনার মধ্যে আবার সমাবেশের স্থান নিয়ে টানাপড়েন। বিএনপি’র মহাসমাবেশ ঘোষণার পরপরই আওয়ামী লীগের তিন সহযোগী সংগঠন শান্তি সমাবেশ করার ঘোষণা দেয়। সহযোগী সংগঠন সমাবেশ ডাকলেও তা সফল করতে মরিয়া হয়ে ওঠে আওয়ামী লীগ। দলীয় এমপি ও নেতাদের সমাবেশ সফল করার নির্দেশনা দেয়া হয়। মহাসমাবেশ সফল করতে গত কয়েকদিন ধরেই নীরব প্রস্তুতি নেয় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠন।
দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি প্রস্তুতির পেছনেও ছিল নানা কৌশল। কৌশলের লড়াইয়ে নির্ধারিত দিন বৃহস্পতিবারের সমাবেশ আর মহাসমাবেশ পিছিয়ে যায় একদিন। সমাবেশ নিয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশও একের পর এক কৌশল বদল করেছে। শেষতক বৃহস্পতিবার দুই দলকে ২৩ শর্তে সমাবেশ করার অনুমতি দেয়। এরপর শুরু হয় প্রস্তুতি।
অনেকটা নীরব নয়া পল্টন মুহূর্তে সরগরম হয়ে ওঠে। বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে শুরু হয়ে যায় মঞ্চ তৈরির কাজ। সমাবেশের অনুমতি দেয়ার পর এক ধরনের উৎকণ্ঠার অবসান হয়। প্রধান দুই দলের কৌশলের লড়াই শেষে আজ তাদের শক্তির পরীক্ষা। দুই পক্ষই ব্যাপকসংখ্যক নেতাকর্মীদের সমাবেশে এনে শক্তির জানান দিতে চাইছে। এজন্য নেয়া হয়েছে নানা উদ্যোগ। বিএনপি নেতাকর্মীদের অনেকে আগেই ঢাকায় চলে এসেছেন। আজ আসবেন অনেকে। বলা হচ্ছে মহাসমাবেশ হবে স্মরণকালের সবচেয়ে বড় জমায়েত। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকেও ব্যাপক লোকসমাগমের চেষ্টা করা হচ্ছে। শান্তি সমাবেশে ঢাকার আশপাশের জেলাসহ সারা দেশ থেকেই নেতাকর্মীরা অংশ নেবেন বলে জানা গেছে।
সমাবেশ আর মহাসমাবেশ ঘিরে দুই দিনের টানাপড়েনের অবসান ঘটিয়ে গতকাল বিকালে ডিএমপি’র মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক দুই দলকে একই শর্তে সমাবেশ করার অনুমতির বিষয় জানান। কর্মদিবসে সমাবেশ না করায় রাজনৈতিক দলগুলোকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, শুক্রবার ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবলীগের সমাবেশ ও বিএনপি’র মহাসমাবেশ করার জন্য অনুমতি চেয়ে দরখাস্ত দিয়েছে। বিএনপি তাদের পার্টি অফিসের সামনে সমাবেশ করার অনুমতি চেয়েছে। আওয়ামী লীগ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে সমাবেশ করার অনুমতি চেয়েছে। আমরা দুই দলকেই ২৩টি শর্ত সাপেক্ষে সমাবেশ করার অনুমতি দিচ্ছি।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, আমরা দুই দলকেই চৌহদ্দি নির্ধারণ করে দিয়েছি। বিএনপি নাইটিঙ্গেল মোড় থেকে পুলিশ হাসপাতাল মোড় পর্যন্ত জায়গার মধ্যে তাদের সমাবেশ ও মাইকের ব্যবহার সবকিছু সীমাবদ্ধ রাখতে হবে। আওয়ামী লীগ মহানগর নাট্যমঞ্চ থেকে পশ্চিমে মুক্তাঙ্গন পর্যন্ত তাদের সমাবেশ ও মাইকিং সীমাবদ্ধ রাখতে হবে। দুই দলের নেতাকর্মীরা সমাবেশে কোনো লাঠিসোটা আনতে পারবেন না। কোন ব্যাগ বহন কারা যাবে না। রাষ্ট্রবিরোধী কোনো বক্তব্য দেয়া যাবে না। এছাড়া জনদুর্ভোগ এড়াতে দলগুলোকে নিজেদের ভলান্টিয়ার রাখার পরামর্শ দেন তিনি এবং আইনশৃঙ্খলার অবনতি হয় এমন কিছু না করার অনুরোধও জানান।
রেকর্ড জনসমাগমের লক্ষ্য বিএনপির ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশ আজ। দুপুরে নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে এই মহাসমাবেশ শুরু হবে। ইতিমধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে বিএনপি। আজকের মহাসমাবেশে রেকর্ডসংখ্যক লোক সমাগম করতে চাইছেন দলটির নেতাকর্মীরা। মহাসমাবেশের একদিন আগেই ঢাকায় এসেছেন সারা দেশের অনেক নেতাকর্মী। গত রাতেও বিভিন্ন জেলা থেকে রওয়ানা হয়েছেন অনেকে। ঢাকা ও পাশের জেলাগুলোর নেতকর্মীরা আজ দুপুরে নয়াপল্টনের মহাসমাবেশে যোগ দেবেন। একদফার দাবিতে নয়াপল্টন থেকে সরকারকে কঠোর বার্তা দেবেন দলটির শীর্ষ নেতারা। সরকার পতন নিশ্চিতে পরবর্তী কর্মসূচিও ঘোষণা করবেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আগামী রোববার থেকে লাগাতর কর্মসূচির ঘোষণা আসতে পারে। এদিকে আজকের মহাসমাবেশেকে ঘিরে অপ্রীতিকর কোনো ঘটনা সৃষ্টি হলে সেক্ষেত্রে তাৎক্ষণিকভাবে বড় কর্মসূচিও ঘোষণা করতে পারে বিএনপি। গতকাল সমমনা দলগুলোর সঙ্গে সম্ভ্যাব্য নতুন কর্মসূচির বিষয়ে আলোচনা করেছেন বিএনপি নেতারা।
বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, মহাসমাবেশ সফল করার লক্ষ্যে সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। দলের নেতাকর্মীরা অত্যন্ত উৎসাহ ও উদ্দীপনায় শান্তিপূর্ণ এই মহাসমাবেশে দলে দলে যোগ দেবেন।
এদিকে বিএনপির মহাসমাবেশ নিয়ে চলে নানা নাটকীয়তা। ২৪ ঘণ্টারও কম সময় আগে মহাসামবেশের অনুমতি পায় দলটি। গতকাল বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে বিএনপিকে নয়াপল্টনে অনুমতি দেয় ডিএমপি। এর আগে বুধবার থেকে গতকাল বিকাল পর্যন্ত নয়াপল্টনে দলটির কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। দিনভর বিএনপি অফিস ছিল নেতাকর্মী শূন্য। থমথমে ছিল নয়াপল্টন এলাকা। তবে সমাবেশের অনুমতির পর কেন্দ্রীয় নেতারা নয়াপল্টনে আসেন। বিভিন্ন জেলা থেকে আসা নেতাকর্মীরাও নয়াপল্টনে ভিড় করেন। যদিও বিএনপির পক্ষ থেকে নেতাকর্মীদেরকে সরিয়ে দেয়া হয়। একইসঙ্গে নির্ধারিত সময়ে মহাসমাবেশে যোগ দেয়ার জন্য আহ্বান জানান দলটির শীর্ষ নেতারা।
বিএনপি নেতারা বলছেন, এবারের মহাসমাবেশের জনসমাগম অতীতের সকল রেকর্ড অতিক্রম করবে। গণপরিবহন বন্ধ ও বাধার আশঙ্কায় এবার আগেভাগেই নেতাকর্মীরা ঢাকায় পৌঁছেছেন।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, মহাসমাবেশ শান্তিপূর্ণভাবে হবে। আর মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে ঢাকার আশপাশের জেলা থেকে বিএনপির নেতাকর্মীরা এসেছেন। সবাই উৎসবমুখর মনোভাব নিয়ে আসতে শুরু করেছেন। এই মহাসমাবেশ সফল ও সার্থক হবে।
এদিকে মহাসমাবেশে যোগ দিতে আগেই ঢাকায় আসা নেতাকর্মীদেরকে গ্রেপ্তারের অভিযোগ করেছে বিএনপি। গতকাল দুপুরে রুহুল কবির রিজভী বলেন, মহাসমাবেশ সামনে রেখে একদিনে ঢাকায় ৫ শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রাজধানীর বিভিন্ন আবাসিক হোটেল ও বাসাবাড়িতে অভিযান চালিয়েছে।
পূর্বঘোষিত মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে গত কয়েকদিন ঢাকায় আসা নেতাকর্মীদের বাধা না দিলেও বুধবার থেকে বিভিন্ন এলাকায় বাধার অভিযোগ পাওয়া গেছে। রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশি বাধা-তল্লাশির ঘটনা ঘটেছে। গ্রেপ্তার, হয়রানি এড়াতে মেস-আবাসিক হোটেলে না উঠে আত্মীয় স্বজনের বাসাবাড়িতে উঠছেন নেতাকর্মীরা। আজকের কর্মসূচিতে জেলাভিত্তিক ও নিজ নিজ সংগঠনের ব্যানারে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে অংশ নেবেন তারা। জেলার নেতারা জানান, তাদের অস্তিত্বের প্রয়োজনে এবং দেশের গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার আন্দোলনে অংশ নিয়ে তারা ইতিহাসে স্থান পেতে নিজ উদ্যোগে ঢাকায় ছুটে এসেছেন। থাকা-খাওয়া সবকিছু নিজেরাই বহন করছেন। মহাসমাবেশকে সফল করতে দলের যেকোনো নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে তারা প্রস্তুত রয়েছেন।
মহাসমাবেশের অনুমতি পাওয়ার পর সংবাদ সম্মেলনে মির্জা আব্বাস বলেন, সরকারের পদত্যাগসহ নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার একদফা আন্দোলনে আজ সারা জাতি ঐক্যবদ্ধ। বিএনপি একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক সংগঠন। বিএনপি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে বলেই আন্দোলন-সংগ্রামের কর্মসূচিতে জনগণের অংশগ্রহণকেই গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচনা করে। সুতরাং গণতন্ত্রে বিশ্বাসী দল হিসেবে বিএনপি সুশৃঙ্খল ও শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করে এসেছে। সুতরাং বার বার বিএনপির কর্মসূচির উপর নৃশংস হামলা করার পরও বিএনপি শান্তিপূর্ণভাবে তার লক্ষ্য অর্জনে এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, কয়েকমাস ধরে বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর ধারাবাহিক কর্মসূচিতে সরকারের পক্ষ থেকে হামলা হলেও বিএনপি ও এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকে কখনোই সহিংস সন্ত্রাসের পথে পা বাড়ায়নি। বরং সরকারের পক্ষ থেকেই গুলি ও অস্ত্র দিয়ে হামলা চালিয়ে আমাদের নেতাকর্মীকে খুন, জখম ও পঙ্গু করা হয়েছে। বিএনপির সমাবেশ, পদযাত্রা, তারুণ্যের সমাবেশ ইত্যাদি নানা কর্মসূচিতে সরকারি দল বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে হামলা হলেও এর প্রতিবাদ জানাতে বিএনপি তার নিয়মতান্ত্রিক শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি থেকে সরে আসেনি এবং কোনো উস্কানিতে পা দেয়নি।
সমমনা দলগুলোর সমাবেশ আজ: যুগপৎ ধারায় ঘোষিত একদফা আন্দোলনে বিএনপির সমমনা দল ও জোটগুলো আজ ঢাকায় পৃথকভাবে সমাবেশ করবে। গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বিকাল ৩টায় রাজধানীর মৎস্য ভবনের সামনে সমাবেশ করবেন। লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপির উদ্যোগে বিকাল ৩টায় কাওরান বাজার এফডিসি সংলগ্ন এলডিপি অফিসের সামনে, ১২ দলীয় জোটের উদ্যোগে বিকাল ৩টায় বিজয়নগর পানির ট্যাঙ্কির সামনে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। গণঅধিকার পরিষদ (নুর)এর উদ্যোগে বিকাল ৩টায় কালভার্ট রোড কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করবে। জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের উদ্যোগে সকাল ১১টায় পুরানা পল্টন আলরাজী কমপ্লেক্সের সামনে সমাবেশ, গণফোরামের উদ্যোগে বিকাল ৩টায় মতিঝিল নটরডেম কলেজের উল্টোদিকে গণফোরাম চত্বরে, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিকাল ৪টায় গণঅধিকার পরিষদ (ড. রেজা), জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সকাল সাড়ে ১০টায় গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য, বিকাল ৩টায় মালিবাগ হোসাফ টাওয়ারের সামনে এনডিএম, বিকাল সাড়ে ৩টায় বিজয় নগর পানির ট্যাঙ্কি সংলগ্ন লেবার পার্টি এবং সকাল ১০টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী সমমনা পেশাজীবী জোটের সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
রাজপথ দখলে রাখতে মরিয়া আওয়ামী লীগ: রাজধানীর প্রবেশ মুখগুলোতে দলীয় নেতাকর্মীরা থাকবেন সতর্ক পাহারায়। পাশাপাশি রাজধানীর প্রতিটি ওয়ার্ডের অলিগলিতে অবস্থান করবেন তারা। প্রতিটি ওয়ার্ডের একটি বড় অংশ থাকবে শান্তি সমাবেশে। আরেকটি অংশ থাকবে নিজ এলাকায়। এ ছাড়া রাজধানীজুড়ে মোটরসাইকেলে করে দলীয় কর্মী-সমর্থকরা মহড়া দেবেন। এমন প্রস্তুতি নিয়েই আজ রাজধানীর বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে আওয়ামী লীগের তিন সংগঠন যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের শান্তি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
দলটির নেতারা জানান, বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো যেভাবে রাজপথে আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে তাতে আওয়ামী লীগ বিন্দুমাত্র ছাড় দেবে না। তারা যদি কোনোরকম বিশৃঙ্খলা তৈরির চেষ্টা করে তাহলে তা রুখে দেয়া হবে। বিএনপি বৃহস্পতিবারের পরিবর্তে সমাবেশ একদিন পেছানোর পর আওয়ামী লীগও সমাবেশ পিছিয়েছে। এরপরও যদি তারা কোনো কর্মসূচি ঘোষণা করে একইদিন আওয়ামী লীগও কর্মসূচি পালন করবে। মূলত রাজপথ দখলে রাখতেই দলটির পক্ষ থেকে এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এদিকে গতকাল দলটির পক্ষ থেকে ঢাকার সব সংসদ সদস্যকে নিজ নির্বাচনী এলাকায় কর্মী-সমর্থকদের সতর্ক পাহারায় থাকার নির্দেশ দেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
বুধবার সমাবেশ ঘিরে অনেক নাটকীয়তা হয়েছে। শেষপর্যন্ত আজ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটেই আওয়ামী লীগের তিন সংগঠনের ‘শান্তি সমাবেশ’ অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক একেএম আফজালুর রহমান বাবু। তিনি বলেন, শুক্রবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনকেন্দ্রে রাষ্ট্রপতির একটি প্রোগ্রাম রয়েছে। সেখানে সকল বিচারপতিরা উপস্থিত থাকবেন। এ কারণে এসএসএফ আমাদের পারমিশন দেয়নি। সেজন্য আমরা আমাদের নির্ধারিত পুরাতন স্থান বায়তুল মোকাররম দক্ষিণ গেটেই সমাবেশ করবো। আওয়ামী লীগের তিন সংগঠন যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগ এর আগে বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে বৃহস্পতিবার শান্তি সমাবেশ করতে চেয়েছিল। কিন্তু বুধবার দিনভর নাটকীয়তা শেষে রাতে জানানো হয়- শুক্রবার বিকাল ৩টায় আগারগাঁওয়ে বাণিজ্যমেলার (পুরোনো) মাঠে তাদের শান্তি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
দলীয় নেতারা জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক সময়ে সবচেয়ে বড় সমাবেশ করতে চায় তারা। এজন্য রাজধানীতে কয়েক লাখ নেতাকর্মীকে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি আজকের কর্মসূচি ঘিরে রাজধানীর পার্শ্ববর্তী ৫টি জেলাকে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থান নিয়ে থাকার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ। এসব জেলার মধ্যে রয়েছে- মানিকগঞ্জ, নরসিংদী, মুন্সীগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুর। গত মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এসব জেলার আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের ডেকে ওই নির্দেশনা দেয়া হয়। এতে রাজধানীতে লোক আনার পাশাপাশি নিজ নিজ জেলায়ও কড়া নজর রাখতে বলা হয়েছে। শান্তি সমাবেশ প্রসঙ্গে যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, শুক্রবারের কর্মসূচিতে ৫ থেকে ৭ লাখ লোক সমাগম হবে বলে প্রত্যাশা করছি।
এদিকে আজকের শান্তি সমাবেশ উপলক্ষে গতকাল বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করা হয়। সেখানে যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, ২৮শে জুলাই বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ গেটের সামনে শান্তি সমাবেশের অনুমতি পেয়েছি। বিএনপি একটি দেশ ধ্বংসকারী দল। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার দল কখনো বিএনপি’র দেখাদেখি কর্মসূচি দেয় না। আমরা বিএনপি’র দেখাদেখি সমাবেশ করছি না। তিনি বলেন, শুক্রবার সারা বাংলাদেশ থেকে শুধু আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী না, সাধারণ জনগণ এই সমাবেশে উপস্থিত হবে। কতো লোক হবে তার হিসাব মেলাতে পারবেন না, লোকে লোকারণ্য হবে। জনতার ঢল নামবে ঢাকাতে। সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপি-জামায়াতের হামলায় ১০ জন প্রাণ দিয়েছে জানিয়ে মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, সারা বাংলাদেশ থেকে শুধু আওয়ামী লীগের নয় বরং শান্তির পক্ষে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষের মানুষও সমাবেশে আসবে। সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চু, সাধারণ সম্পাদক একেএম আফজালুর রহমান বাবু, ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হুসাইন প্রমুখ।- সুত্র- মানব জমিন