বিশ্ব ডেস্ক।।
কম্বোডিয়ায় একতরফা নির্বাচনের পর প্রধানমন্ত্রী হুন সেনের ছেলে হুন ম্যানেট উল্লসিত সমর্থকদের বলেছেন, দেশকে নেতৃত্ব দিতে সক্ষম একমাত্র কম্বোডিয়ান পিপলস পার্টি (সিপিপি)। একটি ট্রাকের পিছনে বসে জনতাকে অভ্যর্থনা জানিয়ে তিনি এমন ঘোষণা দিচ্ছিলেন। অন্যদিকে রোববার অনুষ্ঠিত নির্বাচনকে নির্বাচনের চেয়ে বেশি রাজ্যভিষেক হিসেবে দেখা হচ্ছে। গণতান্ত্রিক রীতিনীতির তোয়াক্কা না করে নির্বাচন করায় কম্বোডিয়ার সুনির্দিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। একই সঙ্গে সাহায্য সহযোগিতায় স্থগিতাদেশ দিয়েছে। রোববার ভোট গণনা করার সময়ই সিপিপি দলের মুখপাত্র সোক ইয়াসান দাবি করেন তারা ভূমিধস বিজয় পেয়েছেন।
অনলাইন বিবিসির খবরে বলা হয়, রাজধানী নমপেনে বৃষ্টি উপেক্ষা করে এদিন বিপুল সংখ্যক মানুষ উপস্থিত হন। উল্লাস করে দীর্ঘ মোটরসাইকেলের বহর চলতে থাকে। পতাকা দোলাতে থাকেন সমর্থকরা। রাস্তায় পাশাপাশি লম্বা লাইন করে দাঁড়িয়ে থাকেন জনতা। তাদের চিবুকে সিপিপির স্টিকার।
মাথায় আকাশী-নীল হ্যাট ও গায়ে শার্ট। তাদেরকে অভ্যর্থনা জানাচ্ছিলেন হুন ম্যানেট। শুধু তিনি একাই নন, তার পিতা প্রধানমন্ত্রী হুন সেনও নিশ্চিত করে বলেছেন, একমাত্র সিপিপি দলই আছে। এই দলটিই নির্বাচনে বিজয়ী হতে পারে। ৩৮ বছর ধরে কম্বোডিয়া শাসন করছেন ৭০ বছর বয়সী হুন সেন। ভিয়েতনাম প্রতিষ্ঠিত প্রথম কমিউনিস্ট শাসক তিনি। এরপর বহুদলীয় ব্যবস্থা পুনঃস্থাপন করে জাতিসংঘ। তারও প্রধান ছিলেন তিনি। আর সম্প্রতি তিনি ক্রমশ পরিণত হয়েছেন একজন অসহিষ্ণু স্বৈরাচারে।
তার শাসনকে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারে এমন একটি দল হলো ক্যান্ডেললাইট পার্টি। কিন্তু নির্বাচনের আগে মে মাসে কৌশলে তাদেরকে নিষিদ্ধ করা হয়। বাকি থেকে যায় ১৭টি দল। তারা এত ছোট্ট যে তা ধর্তব্যের মধ্যে নয়। ফলে তারা হুন সেনের ক্ষমতার জন্য কোনো হুমকি নয়। রোববার ভোটগ্রহণ শেষ হতেই সিপিপি দাবি করতে থাকে তারা ভূমিধস বিয় পেযেছে। ভোট পড়েছে শতকরা কমপক্ষে ৮০ ভাগ। কিছু কিছু কেন্দ্রে ছেড়া কিছু ব্যালটপেপর দেখা যায়। বিরোধীদের প্রতি সমর্থন প্রকাশের এটাই হতে পারে ভোটারদের জন্য একমাত্র নিরাপদ সমর্থন প্রকাশ। নির্বাচনের কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ক্ষমতা ছেলে হুন ম্যানেটের কাছে হস্তান্তর করার কথা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী হুন সেন। ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য দীর্ঘদিন ধরে এই প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। একে নির্বাচনের চেয়ে অধিক রাজ্যভিষেক হিসেবে দেখা হচ্ছে।
সিএনআরপি নামে নামে আরেকটি দলকে ২০১৭ সালে নিষিদ্ধ করে কম্বোডিয়া কর্তৃপক্ষ। ফলে এই দলটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী মু সোচুয়া নির্বাসনে এখন। তিনি বলেছেন, একে লজ্জার নির্বাচন বলা যাবে বলেও আমার মনে হয় না। আমরা একে বলতে পারি একটি ‘সিলেকশন’। এই সিলেকশনের মাধ্যমেই তার ছেলে হুন ম্যানেটকে কম্বোডিয়ার আগামী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিশ্চিত করে গেলেন। এতে অব্যাহতভাবে হুন পরিবারতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হলো।