দৃষ্টিনন্দন পার্ক হচ্ছে মেহেরপুরের গড়পুকুর

4

নিজস্ব প্রতিনিধি।।
ব্যস্ততম জীবনে বিনোদনের প্রয়োজন হলেও মেহেরপুর জেলা শহরে এখনও গড়ে ওঠেনি কোনো বিনোদন কেন্দ্র। বিষয়টি বিবেচনায় শহরের ঐতিহ্যবাহী গড়পুকুরকে নতুনভাবে সাজিয়ে গড়ে তোলা হচ্ছে । এর ফলে শহরবাসীর অবসরকালীন আনন্দময় হবে বলে প্রত্যাশা নাগরিক সমাজের। আর চলতি অর্থবছরেই কাজটি শেষ হবে বলে জানাচ্ছে পৌর কর্তৃপক্ষ।

জেলা শহর মেহেরপুরে খেলার মাঠগুলো কমে যাওয়ায় সংকুচিত হয়েছে শিশুদের খেলার স্থান। যে দুই একটি মাঠ রয়েছে সেখানেও খেলার জায়গা মেলে না অনেক শিশুর। মানসিক অবসাদ নিয়ে ঘরেই সময় কাটায় অনেকেই। ফলে ইন্টারনেট কিংবা বিভিন্ন কার্টুনের প্রতি আসক্ত হয়ে যাচ্ছে শিশুরা।

দুই সন্তানের জননী সুখী খাতুন জানান, বাচ্চাদের নিয়ে কোথাও বেড়াতে যাওয়ার জন্য শহরে কোনো জায়গা নেই। স্বল্প সংখ্যক মাঠ হওয়ায় সেগুলোতেও থাকে প্রচণ্ড ভিড়। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলো ঘরেই অবসাদ নিয়ে কাটাতে হচ্ছে তাদের।

শিক্ষার্থী প্রীতু বলেন, বাবা-মাকে নিয়ে এক বেলার জন্য আনন্দঘন দিন কাটাবো এমন স্থান শহরে নেই। সব সময় রেস্টুরেন্ট কিংবা কফি হাউসে যাওয়ার সুযোগ থাকে না। তাই ঘরেই সময় কাটাতে হচ্ছে আমাদের।
‘ছেলেদের বাইরে ঘোরার কিছুটা সুযোগ থাকলেও মেয়েদের সুযোগ নাই বললেই চলে, ইচ্ছা না থাকলেও তাই ঘরেই সময় কাটাতে হচ্ছে’ এমন মন্তব্য একাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী লামিয়া ফারজানার।

নাগরিক সমাজের এমন পরিস্থিতিতে আশার আলো জুগিয়েছে পৌরসভার গড়পুকুর প্রকল্প। প্রায় ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে শহরের প্রাণকেন্দ্রে ঐতিহাসিক গড়পুকুরকে সাজানো হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন রূপে। এর ফলে জেলাবাসী পাবে নতুন বিনোদনকেন্দ্র। স্থানটিকে সাজাতে পুকুরের চারপাশে তৈরি করা হচ্ছে ওয়াকওয়ে, বিশ্রামাগার, কফি হাউস, কনসার্ট গ্যালারিসহ নানা স্থাপনা। এছাড়াও শিশুদের বিনোদনের জন্য খেলার স্থানের পাশাপাশি ব্যবস্থা করা হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের রাইডের।

শহরের বাসিন্দা রাজিব পৌর কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ দিয়ে বলেন, ‘এমন একটি বিনোদন কেন্দ্র আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল। এখন থেকে অবসর সময় আমরা এই স্থানটিতে কাটাতে পারব। দ্রুত কাজটি শেষ হলে আমাদের জন্য ভালো হবে।’

ইতিমধ্যে প্রকল্পটির ৭০ শতাংশ সমাপ্ত হয়েছে। বাউন্ডারি দেয়াল, পাড় বাঁধাই, সিঁড়ি তৈরিসহ প্রায় অধিকাংশ কাজ শেষ হয়েছে । তৃতীয় নগর উন্নয়ন পরিকল্পনার আওতায় বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে এ প্রকল্পটি চলতি বছরেই শেষ হবে বলে জানান মেহেরপুর পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী মহসিন আলী।

মেহেরপুর পৌরসভা একটি পুরাতন পৌরসভা হওয়া সত্ত্বেও এখানে কোনো বিনোদনের স্থান তৈরি হয়নি। গড়পুকুর প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে জেলাবাসী পাবে অত্যাধুনিক একটি বিনোদন কেন্দ্র। এর ফলে পৌরসভারও একটি আয়ের উৎস তৈরি হবে বলে জানান পৌর মেয়র মাহফুজুর রহমান রিটন।