খালেদা জিয়ার অবস্থা বলতে গিয়ে আবেগাপ্লুত ফখরুল

9
Spread the love

ঢাকা অফিস।।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার কারাগারের সময়ের কথা বলতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সোমবার (১০ জুলাই) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়ার শারীরিক সুস্থতা কামনা করে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন বিএনপি মহাসচিব।

এ সময় মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপির অনেক নেতাই বর্তমানে অসুস্থ আছেন। তারা অসুস্থ কারণ, শারীরিক ও মানসিক নানাবিধ নির্যাতন ও নিপীড়নের জন্য তারা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, স্যাঁতসেঁতে পরিবেশ, পুরোনো কক্ষ, দেয়াল দিয়ে পানি পড়ে, কক্ষে ইঁদুর দৌড়াত–এমন পরিবেশে বিএনপি চেয়ারপারসনকে জেলে রাখা হয়েছিল। ম্যাডাম নিজে আমাকে এসব কথা বলেছেন। কারাগারে তাকে যতবার দেখতে গিয়েছি, ততবার সেখানকার লোকজনও এসব কথা জানিয়েছিলেন।

জেলে তার চিকিৎসার কোনো ব্যবস্থা করা হয়নি। চিকিৎসকরা বারবার সংবাদ সম্মেলন করে বলেছেন, তার চিকিৎসা দরকার। কিন্তু সরকার তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করেনি। যখন করোনা শুরু হয়ে গেল, তখন চট করে তাকে পিজি হাসপাতালে নেওয়া হয়। এরপর তাকে গুলশানের বাড়িতে পাঠানো হয়। প্রধানমন্ত্রী আবার বলেন, তিনি নাকি করুণা করেছেন! এটা নাকি তার দয়া ছিল। কিন্তু আমাদের নেত্রী বা আমরা তো তার কাছে দয়া চাইনি। আমরা ন্যায়বিচার চেয়েছি এবং প্রাপ্য চেয়েছি বলে জানান বিএনপি মহাসচিব।

মির্জা ফখরুল বলেন, নিপীড়নকারী সরকার গণতন্ত্রকে সচেতনভাবে ধ্বংস করেছে। গোটা জাতি ও রাষ্ট্রকে অসুস্থ করেছে। তাদের লক্ষ্য হচ্ছে, গণতন্ত্র ও বিরোধীদল ও মতের সবাইকে ধ্বংস করে একদলীয় ফ্যাসিজম কায়েম করা। এজন্য নির্বাচনকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের পাঁয়তারা করছে।

এমন পরিস্থিতিতে আমাদের দল ও যুগপৎ আন্দোলনে অংশ নেওয়া সব রাজনৈতিক দল সিদ্ধান্ত নিয়েছে, নতুন আন্দোলনের যাত্রা ১২ তারিখে ঘোষণা করা হবে। প্রত্যেকেই নিজ নিজ অবস্থান থেকে, একটা নিরপেক্ষ নির্দলীয় নির্বাচনের জন্য নতুন আন্দোলনের যাত্রার ঘোষণা করব।

তিনি বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছি। দেশটাকে বাঁচানোর জন্য সরকারের শুভবুদ্ধির উদয় হোক, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীন নির্বাচনের মাধ্যমে সংকট সমাধান হবে, বলেও আশা করেন বিএনপি মহাসচিব।

তিনি আরও বলেন, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া ছাড়াও ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার ও নজরুল ইসলাম খানও অসুস্থ। রিজভীও খুব অসুস্থ। তারপরও কিন্তু কেউ থেমে নেই। আমরা সংগ্রাম করছি, লড়াই করছি। আমাদের লক্ষ্য, অসুস্থ রাষ্ট্রকে সুস্থ করা এবং জাতিকে এই অসুস্থতার হাত থেকে মুক্ত করা।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, দোয়া মাহফিলে আল্লাহ তাআলার কাছে দোয়া চাইব, আল্লাহ যেন আমাদের নেতাদের রোগমুক্ত করেন। আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়াকে যেন সুস্থ করে আমাদের মাঝে ফিরিয়ে দেন। তারেক রহমানকে যেন আমাদের কাছে ফিরিয়ে নিয়ে আসেন। আপনারা আল্লাহ তাআলার কাছে দোয়া করবেন যেন শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচিগুলো পালন করতে পারি। এই শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে যেন এ দেশের মানুষকে আমরা মুক্ত করতে পারি। মানুষের ভোটাধিকার যেনো ফিরিয়ে দিতে পারি।