খুলনাঞ্চল রিপোর্ট।।
বাড়ির পাশে ঘাস কাটতে গিয়ে সাপের কামড়ে আক্রান্ত হলে মুন্সিগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ১৮ বছরের ছেলে সাজ্জাদকে। কিন্তু বিধি বাম, নেই এন্টিভেনম বা সাপের বিষের প্রতিষেধক। নিরুপায় হয়ে নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকা মেডিকেলে। এরমধ্যে বিষ ততটা সময় দেয়নি সাজ্জাদকে। প্রাণ হারায় সাজ্জাদ।
সাজ্জাদের মা অশ্রুসিক্ত চোখে বলেন, ওঝার বাড়ি নিলেই আমার ছেলে সুস্থ থাকত, সদরের ডাক্তারকে বিশ্বাস করে ছেলেকে হারিয়েছি।
সাপের বিষে বাঁচেনি এই জেলার মিরাজও। ছটফট করতে থাকা ৮ বছরের ছেলেটিকে ঢাকার মিটফোর্ডে আনে তার পরিবার। তারা ভাবতেও পারেননি খোদ রাজধানীর এতো বড় হাসপাতালেও মিলবে না এন্টিভেনম। পরিবারের অভিযোগ মিটফোর্ডে নেয়ার পর এখানে থেকে নেয়া হয়েছিলো ঢাকা মেডিকেলে তবুও ছেলে ছটফট করতে করতে মারা যায়।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, সাপে কাটা রোগীকে যত দ্রুতসম্ভব দিতে হবে এন্টিভেনম কিন্তু বাস্তবতা এখানে ভিন্ন। কাউকে সাপে কামড় দিলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তো দূরের কথা জেলা সদর হাসপাতালে নেই এর প্রতিষেধক। যার জন্য যেতে হয় কয়েক ঘণ্টার পথ রাজধানীতে। ফলে বাড়ছে মৃত্যুহার। গেল এক বছরে মারা গেছে ৭ হাজারের বেশি মানুষ।
গবেষক গওহার নঈম ওয়ারার মতে, সকলের মনে রাখা উচিত যেভাবেই হোক ১ ঘণ্টা ৪০ মিনিটের মধ্যে রোগীর চিকিৎসা শুরু করতে হবে নইলে বাঁচানো খুবই কঠিন হয়ে যাবে।
দেশের বেশিরভাগ উপজেলা, সদর হাসপাতালেই নেই এন্টিভেনম। এ হাসপাতাল, সে হাসপাতাল যাওয়া আসা কিংবা ওঝার ঝাড়ফুঁকের মাঝেই একসময় প্রাণ যায় রোগীর।
যদিও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা অধ্যাপক রোবেদ আমিন জানালেন ভিন্ন মত। তার মতে জেলা পর্যায়ে যতটা সম্ভব ডোজ দিয়ে রাখা হয়েছে। কিন্তু দুঃখজনক প্রস্তুতি থাকা সত্ত্বেও স্থানীয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দায়িত্বহীনতায় বাড়ছে মৃত্যু।
বর্ষার মৌসুমে জলমগ্ন এলাকায় সাপের উপদ্রব বেশি দেখা যায়। সরকারি হিসাব বলছে, এ সময়ই সবচেয়ে বেশি সাপের ছোবলের শিকার হয় মানুষ। যাদের ৯৫% বসবাস গ্রামে।