কুষ্টিয়া প্রতিনিধি।।
কুরবানির ঈদের আগ থেকেই শুরু হয়েছে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় বৃষ্টিপাত। জমিতে পর্যাপ্ত পানি জমে আছে। বীজতলায় চারাও প্রস্তুত। এই সুযোগে জমি তৈরি করে রোপা আমনের চারা রোপণের কাজ শুরু করে দিয়েছেন ভেড়ামারার কৃষকরা। প্রকৃতির ওপর নির্ভরশীল এই আমন ধানের কচি চারা জমিতে লাগানোর ধুম পড়েছে গোটা উপজেলায়। বীজতলা থেকে চারা তুলে জমিতে রোপণ করতে ব্যস্ত কৃষক-কৃষানিরা।
মৌসুমের শেষ দিকে বৃষ্টি না হওয়ার আশঙ্কায় সময়ের আগেই মজুরি বেশি দিয়ে হলেও জমিতে চারা রোপণ শুরু করেছেন কৃষকরা। একসঙ্গে আমন চারা রোপণের কাজ শুরু হওয়ায় দেখা দিয়েছে শ্রমিক সঙ্কট। সেই সঙ্গে রয়েছে হালের সঙ্কটও। তারপরও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করবে বলে কৃষি বিভাগ আশাবাদ ব্যক্ত করেছে।
ভেড়ামারায় সাধারণত জমিভেদে মধ্য আষাঢ় থেকে শুরু করে শ্রাবণের শেষ পর্যন্ত আমন ধানের চারা জমিতে রোপণ করা হয়। এ বছর আষাঢ়ের শুরু থেকেই বৃষ্টি শুরু হওযায় কৃষকরা মধ্য আষাঢ় থেকেই শুরু করে দিয়েছেন জমিতে আমন চারা রোপণের কাজ। প্রথম অবস্থায় কৃষকরা আগাম জাতের আমন ধানের চারা রোপণ শুরু করে। পরবর্তীতে অন্য ধানের চারা রোপণ করা হবে। অনেক নিচু জমিতে বেশি পানি জমে থাকায় এখনই চারা রোপণ সম্ভব নয়। তাই অনেকে আবার আগেভাগেই অপেক্ষাকৃত উঁচু জমিতে দোগাছি চারা রোপণ করে রেখেছে। মৌসুমের শেষে এসে সেই ধানের চারা তুলে জমিতে পুনরায় রোপন করা হবে। কৃষকদের ধারণা, সাধারণ রোপা আমনের চেয়ে দোগাছি চারা দিয়ে অধিক পরিমাণে ফলন পাওয়া যায়।
এদিকে সব কৃষক একসঙ্গে চারা লাগানোর কাজ শুরু করে দেয়ায় দেখা দিয়েছে শ্রমিক সংকট। ৫০০ টাকায় পুরুষ ও ৩০০ টাকায় নারী শ্রমিকদের মজুরি দিয়েও তাদের পাওয়া যাচ্ছে না। অধিকাংশ শ্রমিক প্রতি বিঘা জমিতে দুই হাজার টাকা চুক্তিতে আমন চারা লাগাচ্ছে।
উপজেলার জুনিয়াদহ গ্রামের কৃষক জামিরুল ইসলাম জানান, ৫ বিঘা জমিতে চারা লাগানোর জন্য জমি ও চারা প্রস্তুত। কিন্তু শ্রমিক না পাওয়ায় ছেলেকে নিয়ে নিজেই চারা লাগানো শুরু করে দিয়েছি।
এদিকে কৃষকের হালের বলদ কমে যাওয়ায় অধিকাংশ কৃষক কলের লাঙলের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। এজন্য একমাত্র ভরসা ট্রাক্টর। অনেক জায়গায় আবার পাওয়ার টিলার দিয়েও জমি চাষ করা হচ্ছে। এগুলো প্রতি বিঘা জমিতে দুইবার চাষ দিতে নিচ্ছে এক হাজার টাকা করে। তারপরও সিরিয়াল দিতে হয় কয়েক দিন আগে। ভেড়ামারা উপজেলায় এখন পর্যন্ত রোপা লাগানোর জন্য যন্ত্রের ব্যবহার তেমনভাবে শুরু হয়নি।
ভেড়ামারা কৃষি অফিসার শায়েখুল ইসলাম জানান, আমন চাষের জন্য এবার আবহাওয়া অনুকূলে। এমন আবহাওয়া থাকলে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক বেশি জমিতে আমন চাষ হতে পারে। এতে করে উৎপদনের লক্ষ্যমাত্রাও অতিক্রম করবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।