খুলনাঞ্চল রিপোর্ট।।
দুদিন আগে দুই সন্তান নিয়ে বাপের বাড়ি যান স্ত্রী। সেই সুযোগে এক নারীকে (যৌনকর্মী) টাকার বিনিময়ে বাসায় নিয়ে আসেন ব্যবসায়ী হায়দার আলী। পরে অতিরিক্ত টাকা দাবি করলে নারীকে খুন করে লাশ গুম করার চেষ্টা তিনি। বিছানায় পড়ে থাকা চুলের সূত্র ধরে হত্যাকারীকে শনাক্ত করে পুলিশ
হত্যার রহস্য উদঘাটনের পর আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে নিজের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান।
গ্রেপ্তারকৃত হায়দার আলী পেশায় মোবাইল পার্টসের ব্যবসায়ী। তিনি ফরিদপুরের সদরপুর থানার চর ডোবাইল গ্রামের ইয়াদ উল্লাহ মোল্লার ছেলে। সাভার পৌরসভার ব্যাংক কলোনি মহল্লার রতন মিয়ার ছয় তলা ভবনের দ্বিতীয় তলায় তিনি ভাড়া থাকেন। ওই ভবনের কলাপসিবল গেটের ভেতরে সিঁড়ির সামনে বুধবার ভোরে ওই নারী লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান জানান, গত মঙ্গলবার রাতে বাসায় ফেরার পথে খুশি নামের এক নারীকে টাকার বিনিময়ে বাড়িতে নিয়ে আসেন হায়দার আলী। বাসায় ফেরার সময় তার কাছে ৫০ হাজার টাকা ছিল। চুক্তি অনুযায়ী ১ হাজার টাকা দেওয়ার কথা ছিল। পরে ওই নারী আরও এক হাজার টাকা দাবি করেন। সেই দাবি মেটানোর পর আরও ৫ হাজার টাকা দাবি করেন। হায়দার টাকা দিতে গড়িমসি করলে ওই নারী তাকে হত্যার ভয় দেখান। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে গামছা দিয়ে ওই নারীকে হত্যার পর লাশ বস্তায় ভরেন। লাশ বস্তায় ভরে নিচে গিয়ে দেখেন ভবনের কলাপসিবল গেট বন্ধ। তখন লাশটি সিঁড়ির সামনে ফেলে বাসায় চলে যান হায়দার আলী।
সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দীপক চন্দ্র সাহা বলেন, ‘ওই ভবনের কোনো একটি ফ্লোরে হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে আমরা নিশ্চিত। আমরা দোতলায় গিয়ে দেখতে পাই- হায়দার আলীর বিছানা এলোমেলো। এক গোছা চুল পড়ে আছে বিছানায়। সেই চুলের সঙ্গে লাশের চুলের মিল পাওয়া পেলে তাকে জেরা করা হয়। প্রথম দিকে তিনি ‘ভালোমানুষ’ সাজার চেষ্টা করলেও পরে অকপটে সব স্বীকার করেন।’
পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান জানান, ‘জিজ্ঞাসাবাদে হায়দার আলী আমাদের বলেছেন, ওই নারী তার কাছে থাকা ৫০ হাজার টাকার বান্ডিল দেখে ফেলেছিল। সব টাকা নিয়ে যাবে এমন আশঙ্কা থেকে তাকে হত্যা করে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল্লাহিল কাফি, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোবাশশিরা হাবীব খান, সাভার সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহীদুল ইসলাম, সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দীপক চন্দ্র সাহা, ঢাকা জেলা উত্তর ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রিয়াজ উদ্দিন বিপ্লব।