ঘূর্ণিঝড়ে জন্ম নেওয়া শিশুর নাম ‘মোখা’

2
Spread the love

খুলনাঞ্চল রিপোর্ট//
অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ জয়নব বেগম (১৯) ঘূর্ণিঝড় মোখার কারণে কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার রাজাখালী ইউনিয়নের এয়ার আলী খান আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নেন। আশ্রয়কেন্দ্রে আসার কয়েক ঘণ্টা পর তার প্রসব বেদনা শুরু হয়। তাকে হাসপাতালে নেওয়ার জন্য আশপাশে কোনও পরিবহন পাওয়া যাচ্ছিল না। খবর পেয়ে পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ওমর হায়দার শনিবার গভীর রাতে আশ্রয়কেন্দ্রে গিয়ে পুলিশের গাড়িতে তুলে অন্তঃসত্ত্বা জয়নবকে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। আজ রবিবার ভোরে সেখানে জয়নব এক পুত্রসন্তানের জন্ম দেন। ঘূর্ণিঝড় মোখার দিনে জন্মগ্রহণ করায় নবজাতকের নাম রাখা হয় ‘মোখা’।

গৃহবধূ জয়নব বেগম উপজেলার রাজাখালীর বামুলাপাড়া এলাকার মোহাম্মদ আরকানের স্ত্রী। জয়নব তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘ওসি স্যারকে ধন্যবাদ জানাই। স্যার না হলে আমার কী অবস্থা হতো জানি না।’

জানা যায়, ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাব শুরু হওয়ার পর গতকাল শনিবার রাত নয়টার দিকে আশ্রয়কেন্দ্রে যান জয়নব বেগম। রাত দেড়টার দিকে তার প্রসব বেদনা শুরু হয়। এ সময় উপকূলীয় এলাকা রাজাখালীতে কোনও গাড়ি পাওয়া যাচ্ছিল না। বিভিন্ন মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পারেন পেকুয়া থানার ওসি মোহাম্মদ ওমর হায়দার। তাৎক্ষণিক তিনি রাজাখালীর এয়ার আলী খান উচ্চবিদ্যালয়ে পৌঁছে প্রসব বেদনায় কাতরাতে থাকা জয়নব বেগমকে নিজের গাড়িতে তুলে নেন। এরপর ১০ কিলোমিটার দূরের পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে আজ ভোর সাড়ে চারটার দিকে জয়নব ফুটফুটে এক পুত্রসন্তানের জন্ম দেন।

জয়নবের স্বামী মো. আরকান বলেন, ‘দুর্যোগকালীন সময়ে বিপদে এগিয়ে আসা পুলিশের প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। ওসি মোহাম্মদ ওমর হায়দার রাতে আমার স্ত্রীকে হাসপাতালে না নিলে যেকোনও বিপদ হয়ে যেত। ঘূর্ণিঝড় মোখার দিনে জন্ম নেওয়ায় আমার ছেলের নাম রাখা হয়েছে মোখা।’

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা মুজিবুর রহমান বলেন, ‘ওই নারী স্বাভাবিকভাবে সন্তান জন্ম দিয়েছেন। মা ও ছেলে ভালো আছে।’

ওসি মোহাম্মদ ওমর হায়দার জানান, গতকাল সারা দিন ও রাতে মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করতে ও আশ্রয়কেন্দ্রে পৌঁছাতে তারা কাজ করেছেন। রাতে আশ্রয়কেন্দ্র পরিদর্শন করার সময় খবর পান, এয়ার আলী খান আদর্শ উচ্চবিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে এক নারী প্রসব বেদনায় কাতরাচ্ছেন। তিনি জানতেন, রাত দেড়টায় সেখানে কোনও গাড়ি পাওয়া যাবে না। তখন তিনি গাড়ি নিয়ে সেখানে পৌঁছে ওই নারীকে হাসপাতালে নিয়ে যান।

তিনি আরও বলেন, ‘পুলিশ সব সময় মানবিক কাজ করে। ঘূর্ণিঝড়ের রাতে প্রসূতি মাকে হাসপাতালে নিতে পেরে নিজের কাছে অনেক ভালো লাগছে।’