খুলনায় চিকিৎসক ও পুলিশের পাল্টাপাল্টি মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে

10

স্টাফ রিপোর্টার।।
খুলনায় চিকিৎসক শেখ নিশাত আবদুল্লাহর করা মামলা এবং ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে করা পাল্টা মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন (ফাইনাল রিপোর্ট) আদালতে দাখিল করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার খুলনা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দুটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হলেও রোববার বিকেলে বিষয়টি জানাজানি হয়। রবিবার রাত আটটায় চিকিৎসক নিশাত আবদুল্লাহর ওপর হামলাকারীকে গ্রেপ্তারের দাবিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করার কথা বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) খুলনার নেতা-কর্মীদের। এমন সময় চূড়ান্ত প্রতিবেদনের বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় চিকিৎসক নেতারা ক্ষুব্ধ। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে বিএমএ খুলনার সভাপতি শেখ বাহারুল আলম বলেন, ‘আমরা সবাই এখন ঢাকায়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করব, বিচারহীনতার বিরুদ্ধে কথা বলব। চিকিৎসকের ওপর হামলাকারী পুলিশ উপসহকারী পরিদর্শক (এএসআই) নাঈমুজ্জামানের গ্রেপ্তার দাবি করব। যে তদন্তকারী কর্মকর্তা চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন, তাঁর বিচার দাবি করব।’
চূড়ান্ত প্রতিবেদনে ভুল-বোঝাবুঝির কারণে মামলা দুটি দায়ের ও তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি বলে উল্লেখ করা হয়। মামলা হওয়ার ৯ দিনের মধ্যে মামলা দুটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হলো। মামলা দুটি নগরের সোনাডাঙ্গা থানায় করা হয়েছিল। এর মধ্যে চিকিৎসক নিশাত আবদুল্লাহর করা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ছিলেন সোনাডাঙ্গা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মাসুম বিল্লাহ। আর চিকিৎসকের বিরুদ্ধে করা শিশুর অঙ্গহানি ও যৌন হয়রানির মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ছিলেন একই থানার এসআই সুকান্ত দাস।
গত ২৮ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যার দিকে চিকিৎসক নিশাত আবদুল্লাহকে মারধর ও হাসপাতাল ভাঙচুরের অভিযোগে সোনাডাঙ্গা থানায় মামলা করা হয়। মামলায় মো. নাঈমুজ্জামান ও তাঁর স্ত্রী নুসরত আরাকে (ময়না) আসামি করা হয়। অন্যদিকে সাত বছরের মেয়ের অঙ্গহানি ও যৌন হয়রানির অভিযোগে নিশাত আবদুল্লাহর বিরুদ্ধে মামলা করেন নুসরত আরা। নাঈমুজ্জামান পুলিশের উপসহকারী পরিদর্শক (এএসআই) হিসেবে সাতক্ষীরা পুলিশ লাইনে কর্মরত ছিলেন। চিকিৎসকদের দাবির মুখে তাঁকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।
সোনাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমতাজুল হক বলেন, আসলে ভুল-বোঝাবুঝির কারণে মামলা দুটি দায়ের করা হয়েছিল। তদন্তে দুটি ঘটনারই সত্যতা পাওয়া যায়নি। এ জন্য আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। মামলা নিষ্পত্তিতে দুই পক্ষের কারও আপত্তি নেই বলে তাঁরা মৌখিকভাবে জানিয়েছিলেন।
২৫ ফেব্রুয়ারি নগরের হক ‘নার্সিং হোম’ নামের একটি ক্লিনিকে নিশাত আবদুল্লাহকে পুলিশের এএসআই নাঈমুজ্জামান মারধর করেছেন বলে চিকিৎসক নেতারা অভিযোগ করেন। ওই ঘটনায় নাঈমুজ্জামানকে গ্রেপ্তারের দাবিতে টানা চার দিন কর্মবিরতি পালন করেছিলেন খুলনার চিকিৎসকেরা। এতে খুলনায় চিকিৎসা খাতে অচলাবস্থা শুরু হয়। ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ রোগীরা।
সমস্যা নিরসনে ৪ মার্চ খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেনের আশ্বাসে চিকিৎসকেরা এক সপ্তাহের জন্য কর্মবিরতি স্থগিত করেছিলেন। এরপর ১১ মার্চ আবার মেয়রের আশ্বাসে বিএমএ তাদের কর্মবিরতি ১৫ দিনের জন্য স্থগিত করে।