বিদেশ পাঠানোর নামে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার তিনি

2

কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি।।
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে বিদেশ পাঠানোর নামে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে রনি মিয়া নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তার নামে সম্প্রতি মানব পাচার আইনে ঝিনাইদহ আদালত ও কালীগঞ্জ থানায় বেশ কয়েকটি মামলা হয়েছে। রনি উপজেলার ভাটাডাঙ্গা গ্রামের আলতাব একমাত্র হোসেনের ছেলে। সম্প্রতি সে দুবাই থেকে দেশে আসলে পুলিশ তাকে আটক করে পরে একাধিক মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

রনির বিরুদ্ধে করা একটি মামলার বাদী কালীগঞ্জ পৌরসভাধীন কাশিপুর গ্রামের বিদেশ ফেরত আবির হোসেন জানায়, দুবাই যাওয়ার জন্য প্রতারক রনি মিয়ার কাছে দুই কিস্তিতে চার লাখ টাকা দেয়। এরপর ২০২২ সালের তারিখে আবিরকে দুবাই পাঠিয়ে দেওয়া হয়। যাওয়ার আগে সেদেশের একটি কোম্পানিতে অ্যালুমেনিয়াম ফিটিংসের কাজ দেওয়ার কথা থাকলেও কোনো কাজ না দিয়ে একটি বদ্ধ ঘরে আটকিয়ে রাখা হয়। পরে জানতে পারে তাকে ৩ মাসের একটি ট্যুরিষ্ট ভিসায় দুবাই আনা হয়েছে। তার সঙ্গে আরও দুই যুবককে দুবাই নিয়ে যায় প্রতারক রনি। বাকি দুইজন হলেন- কালীগঞ্জ উপজেলার মল্লিকপুর গ্রামের রিপন হোসেন ও একই জেলার কোটচাঁদপুর উপজেলার কাগমারি গ্রামের হাফিজুর রহমান। তাদের তিনজনকে ৮৫ দিন সেদেশের একটি বদ্ধ ঘরে আটকিয়ে রাখার পর দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

আবির হোসেন বলেন, ‘দুবাই যাওয়ার পর রনি আমাদের বিমানবন্দর থেকে নিয়ে একটি শহরের বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে আমাদের রেখে বাইরে যেতে নিষেধ করার পরামর্শ দিয়ে বলে- কাজ পেলে তোমাদের সেখানে নিয়ে যাওয়া হবে। কিন্তু দিনের পর দিন পার হয়ে গেলেও কোনো কাজ তো দূরের কথা, পরিবারের কাছে বিভিন্ন সময় ভয়ভীতি দেখিয়ে আরও টাকা আদায় করতে থাকে। এ সময় আমরা বাংলাদেশ থেকে পাঠানো টাকায় পাশের একটি হোটেল থেকে কোনো রকমে খেয়ে না খেয়ে বেঁচে ছিলাম।’

তিনি বলেন, এ অবস্থায় আমাদেরকে দেশে ফিরিয়ে আনতে প্লেন ভাড়া এবং খরচ বাবদ পাঁচ লাখ টাকা চায় রনি। পরে আমাদের বাড়ি থেকে টাকা পাঠানোর পর প্লেনের টিকিট কেটে দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। দেশে ফিরে টাকা ফেরত পেতে জনপ্রতিনিধি ও পুলিশ প্রশাসনের কাছে জানিয়েও কোনো সমাধান না হওয়ায় আদালতে মামলা করি। সম্প্রতি রনি দেশে আসলে পুলিশ তাকে গত ১৮ জানুয়ারি তারিখে গেপ্তার করে জেল হাজতে পাঠায়।

কালীগঞ্জ থানার এসআই প্রকাশ জানান, মানব পাচার আইনে করা একটি মামলায় প্রতারক রনিকে আটকের পর গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠিয়েছি। তার সঙ্গে আরও কয়েকজন জড়িত আছে। তাদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।