ডাণ্ডাবেড়ি পরিয়ে মায়ের জানাজায় নেওয়া অমানবিক: মানবাধিকার কমিশন

5

ঢাকা অফিস।।

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলায় হাতকড়া ও ডাণ্ডাবেড়ি নিয়ে বিএনপি নেতা আলী আজমের মায়ের জানাজা পরানোর ঘটনাটি ‘অমানবিক’ বলে মন্তব্য করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। আজ বৃহস্পতিবার কমিশনের উপ-পরিচালক ফারহানা সাঈদের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ ঘটনায় নিন্দা জানায় কমিশন।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়—আলী আজমের মা সাহেরা বেগম বার্ধক্যজনিত কারণে গত ১৮ ডিসেম্বর মারা যান। শেষবার মায়ের মরদেহ দেখতে এবং জানাজায় অংশ নেওয়ার সুযোগ পেতে আইনজীবীর মাধ্যমে ১৯ ডিসেম্বর জেলা প্রশাসক বরাবর প্যারোলে মুক্তির আবেদন করেন তিনি। গত ২০ ডিসেম্বর তিন ঘণ্টার জন্য তাকে প্যারোলে মুক্তি দেওয়া হয় এবং তিনি তার মায়ের জানাজায় উপস্থিত থাকার সুযোগ পান।

প্যারোলের পুরোটা সময় হাতকড়া ও ডাণ্ডাবেড়ি পরা অবস্থায় ছিলেন আলী আজম। এমনকি জানাজা পড়ানোর সময় অনুরোধ করা হলেও তা খুলে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।

বিষয়টি উল্লেখ করে কমিশন জানায়, ধর্মীয় অনুভূতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে প্যারোলে মুক্তি দেওয়ার পরও একজন বন্দিকে মায়ের জানাজায় ডাণ্ডাবেড়ি পরিয়ে নিয়ে যাওয়া কেবল অমানবিকই নয়, বরং দেশের সংবিধান ও মৌলিক মানবাধিকারের পরিপন্থি। বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৫ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, বিচার বা দণ্ড প্রদানের ক্ষেত্রে কোনো ব্যক্তিকে যন্ত্রণা দেওয়া যাবে না কিংবা নিষ্ঠুর, অমানুষিক বা লাঞ্ছনাকর দণ্ড দেওয়া যাবে না। পাশাপাশি কোনো অভিযুক্ত ব্যক্তিকে ডাণ্ডাবেড়ি পরানো বিষয়ক উচ্চ আদালতের যে নির্দেশনা রয়েছে সেটাও এক্ষেত্রে অনুসরণ করা হয়নি, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, নিরাপত্তা জোরদার করার লক্ষ্যে অতিরিক্ত নিরাপত্তা কর্মী মোতায়েনসহ যথাযথ নজরদারির অন্যান্য পদক্ষেপ নেওয়া সমীচীন ছিল। এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করার জন্য এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ ও ভবিষ্যতে এ ধরনের কাজে যথার্থ পদক্ষেপ গ্রহণে যত্নবান হতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে কমিশন।

উল্লেখ্য, গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা ত্রিমোড় এলাকায় গত ২৯ নভেম্বর আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে হামলার অভিযোগে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে করা মামলায় ২ ডিসেম্বর গ্রেপ্তার হন আলী আজম। তিনি উপজেলার বোয়ালী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি।