‘স্কয়ার মাতা’ অনিতা চৌধুরী আর নেই

4

ঢাকা অফিস।।
শিল্পপ্রতিষ্ঠান স্কয়ার গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান স্যামসন এইচ চৌধুরীর সহধর্মিণী অনিতা চৌধুরী মারা গেছেন। রোববার দুপুর ১টা ৬ মিনিটে স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তার বয়স হয়েছিল ৯০ বছর।

তিনি তিন ছেলে, এক মেয়ে, নাতি-নাতনিসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তার মৃত্যুর খবরে স্কয়ার পরিবার এবং স্বজন ও পরিচিতজনদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে আসে। ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তাসহ সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ অনিতা চৌধুরীর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করে শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

‘স্কয়ার মাতা’ হিসেবে পরিচিত অনিতা চৌধুরী বার্ধক্যজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন। তিনি স্কয়ার গ্রুপের বর্তমান চেয়ারম্যান স্যামুয়েল এস চৌধুরী, স্কয়ার ফার্মার ভাইস চেয়ারম্যান রত্না পাত্র, স্কয়ার ফার্মার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তপন চৌধুরী এবং স্কয়ার টয়লেট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অঞ্জন চৌধুরীর মা।

তিন ছেলে, এক মেয়ে ও স্বামী স্যামসন এইচ চৌধুরীর সঙ্গে অনিতা চৌধুরী। ছবি- স্কয়ার গ্রুপের সৌজন্যে
স্কয়ার গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান মিডিয়াকম লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অজয় কুমার কুণ্ডু গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, বার্ধক্যজনিত কারণে রবিবার দুপুরে স্কয়ার মাতা অনিতা চৌধুরী মারা গেছেন।

স্কয়ার গ্রুপের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্কয়ারের প্রতিষ্ঠালগ্নে স্যামসন এইচ চৌধুরীর উদ্যোগ সফল করতে শুরু থেকেই অনিতা চৌধুরী স্বামীর পাশে থেকে শক্তি, সাহস ও প্রেরণা যোগান। প্রয়াত স্যামসন এইচ চৌধুরীকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠা ও উন্নতির প্রতিটি ক্ষেত্রে পাশে থেকে শক্তি, সাহস ও উৎসাহ যোগান অনিতা চৌধুরী। স্কয়ার গ্রুপ দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে ওঠার ক্ষেত্রে তার অনবদ্য অবদান রয়েছে। ২০১২ সালে স্যামসন এইচ চৌধুরী মারা যাওয়ার পর এ গ্রুপের ৬৪ হাজার কর্মীকে সন্তানতুল্য ভালোবাসা দেন অনিতা চৌধুরী। আমৃত্যু সকলকে মাতৃছায়ায় আগলে রাখেন। এ কারণে তিনি ‘স্কয়ার মাতা’ হিসেবে পরিচিতি ও ভালোবাসা পেয়েছেন।

চার বন্ধুর হাত ধরে ১৯৫৮ সালে যাত্রা করে স্কয়ার গ্রুপ। তবে স্কয়ার গ্রুপের মূল কাণ্ডারি ছিলেন স্যামসন এইচ চৌধুরী। ২০১২ সালের ৫ জানুয়ারি সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান স্কয়ার গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা স্যামসন এইচ চৌধুরী।

ওষুধের ব্যবসা দিয়ে যাত্রা করলেও স্কয়ার গ্রুপের ব্যবসা এখন আটটি খাতে বিস্তৃত। স্বাস্থ্যসেবা, ভোগ্যপণ্য, বস্ত্র, মিডিয়া, টিভি ও তথ্যপ্রযুক্তি, নিরাপত্তা সেবা, ব্যাংক ও ইনস্যুরেন্স, হেলিকপ্টার ও কৃষিপণ্য খাত মিলিয়ে তাদের প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ২০টি।

১৯৩২ সালের ৫ আগস্ট অনিতা চৌধুরীর জন্ম। ১৯৪৭ সালের ৬ আগস্ট স্যামসন এইচ চৌধুরীর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবন্ধ হন তিনি।

অনিতা চৌধুরী স্কয়ার গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান স্কয়ার টেক্সটাইলস, স্কয়ার ফার্মা, স্কয়ার হাসপাতাল, স্কয়ার টলয়েট্রিজ, স্কয়ার ফর্মুলেশনস, স্কয়ার ফুড এন্ড বেভারেজ, স্কয়ার সিকিউরিটিজ ম্যানেজমেন্ট, মাছরাঙা টেলিভিশনসহ ২৫টি প্রতিষ্ঠানের উদ্যোক্তা শেয়ারহোল্ডার ছিলেন। এছাড়া তিনি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বিভিন্ন ধর্মীয়, সামাজিক উন্নয়ন ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের নানামুখী কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। রোববার সন্ধ্যায় রমনা ক্যাথেড্রাল চার্চে অনিতা চৌধুরীর জন্য প্রার্থনা হওয়ার কথা রয়েছে। আগামীকাল সোমবার ভোরে তার মরদেহ পাবনায় গ্রামের বাড়ি নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে তাকে সমাহিত করা হবে।