বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী নিহতের তদন্ত চান জাতিসংঘ মহাসচিব

9
Spread the love

খুলনাঞ্চল ডেস্ক।।

মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রে শান্তিরক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার সময় বিস্ফোরণে তিন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী নিহতের ঘটনা তদন্ত করতে বলেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।

গতকাল মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টেফান দুজারিক জানান, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষীদের ওপর হামলা আন্তর্জাতিক আইনে যুদ্ধাপরাধ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব।
জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র বলেন, ‘অপরাধীদের শনাক্ত করতে সব ধরনের পদক্ষেপ নিতে সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব। যাতে তাদের দ্রুত সময়ে বিচারের আওতায় আনা সম্ভব হয়।’

গতকাল আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক বিবৃতিতে জানায়, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের অপারেশন কার্যক্রম পরিচালনার সময় সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকে গতকাল সোমবার স্থানীয় সময় রাত ৮টা ৩৫ মিনিটে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের একটি গাড়িতে ইমপ্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) বিস্ফোরণ হয়। এতে ৩ বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী নিহত এবং একজন গুরুতর আহত হন।

নিহতরা হলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর থানার কাটিঙ্গা গ্রামের জসিম উদ্দিন, নীলফামারীর ডিমলা থানার দক্ষিণ টিটপাড়া গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম এবং সিরাজগঞ্জের বেলকুচি থানার বাড়াক রুয়া গ্রামের শরীফ হোসেন। এ সময় গুরুতর আহত হয়েছেন শান্তিরক্ষী মেজর আশরাফুল হক।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকের পশ্চিম সেক্টরে বোয়ার এলাকায় মোতায়েন করা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি পদাতিক ব্যাটালিয়ন ২০২১ সালের ৯ নভেম্বর থেকে বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে শান্তিরক্ষায় নিয়োজিত রয়েছে। গতকাল অস্থায়ী ক্যাম্প কুই হতে একটি টহল দল মেজর আশরাফের নেতৃত্বে কাইতা এলাকায় টহলে যায়। ফেরার পথে টহল কমান্ডার মেজর আশরাফকে বহনকারী প্রথম গাড়িটি মাটিতে পুঁতে রাখা আইইডি বিস্ফোরণ হয়। এতে গাড়িটি প্রায় ১৫ ফুট দূরত্বে ছিটকে পড়ে। এতে সৈনিক শরীফ, সৈনিক জাহাঙ্গীর ও সৈনিক জসিম ছাড়াও মেজর মো. আশরাফুল হক মারাত্মক আহত হন।

পরে ঘটনাস্থল থেকে তাদেরকে দ্রুত উদ্ধার করে বোয়ারের মিনুসকা হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক সৈনিক শরীফ, সৈনিক জাহাঙ্গীর ও সৈনিক জসিমকে মৃত ঘোষণা করেন। এছাড়া আহত অপর শান্তিরক্ষী মেজর মো. আশরাফুল হক হাসপাতালটিতে চিকিৎসাধীন। তার অবস্থা বর্তমানে স্থিতিশীল।

নিহত শান্তিরক্ষীদের দেশে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া চলছে। এ ছাড়া মিশনে নিয়োজিত অন্যান্য শান্তিরক্ষী নিরাপদে আছেন বলেও বিবৃতিতে জানানো হয়েছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়েও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর শান্তিরক্ষীরা আফ্রিকার ৮টি দেশে শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব বজায় রেখে বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশের মর্যাদা অক্ষুন্ন রেখে চলেছে এবং জাতিসংঘে শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ হিসেবে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে।

জাতিসংঘের ঢাকা কার্যালয়ের শোক:

এ ঘটনায় আজ বুধবার শোক জানিয়েছে জাতিসংঘের ঢাকা কার্যালয়। এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে অসামান্য ঝুঁকি নিয়ে থাকেন জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীরা। শান্তির জন্য যেসব নারী-পুরুষ নিজেদের জীবন ও সুখকে বাজি রাখেন, আমরা সবসময় তাদের পাশে আছি এবং তাদের ত্যাগকে সম্মান জানাই।’