স্টাফ রিপোর্টার ।।
নগরীর সোনাডাঙ্গা মডেল থানার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের মামলায় দোষী সাবস্থ্য হওয়ায় ৪ আসামির প্রত্যেককে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড, ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছ আলাদাত। বুধবার (২৪ আগস্ট) দুপুরে খুলনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল- ৩ এর বিচারক আ. ছালাম খান এ রায় ঘোষণা করেছেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, যশোর জেলার মনিরামপুর থানার চালকিভাদ্দী গ্রামের আজগর আলী গাজীর স্ত্রী শিউলী বেগম (৪৫), একই থানার রতনপুর গ্রামের রেজাউল সরদারের স্ত্রী হাসিনা (৩০), একই থানার গৌরঙ্গ গ্রামের মৃত. হোসেন গাজীর ছেলে আমিন (৩৮) ও যশোর জেলার ঝিকরগাছা থানার রাজদিয়া গ্রামের ফজর হাওলাদারে ছেলে আব্দুর রব ওরফে রাহুল (৩৫)। শিউলী বেগম স্বামী আজগর আলী গাজী ও মেয়ে লাবনীকে নিয়ে নগরীর গোবরচাকা হাজী বাড়ি রোডে ভাড়া বাসায় থাকত। রায় ঘোষণাকালে শিউলী বেগম ও আমিন আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন এবং হাসিনা ও রাহুল পলাতক রয়েছেন। মামলার অপর দু’আসামি শিউলী বেগমের স্বামী আজগর আলী গাজী (৪৯) ও হাসিনার স্বামী রেজাউল সরদার (৪০) কে বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী (পেশকার) মো. রুবেল খান নথীর বরাত দিয়ে জানান, খুলনা জেলার পাইকগাছা থানার মৌখালী গ্রামের মো. শহর আলী গাজী তার স্ত্রি ও মেয়ে রিমাকে নিয়ে নগরীর সোনাডাঙ্গা মডেল থানাধিন আসামী শিউলির বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করতেন। অভাবের সংসার হওয়ায় স্থানীয় একটি বিউটি পার্লারে কাজ করতেন রিমা। আর এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে শিউলির মেয়ে লাবনী ২০১১ সালের ২১ নভেম্বর রিমাকে ঢাকায় গার্মেন্টেসে কাজ দেয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে নিয়ে যায়। এর কিছুদিন পর শিউলী ও লাবনী বাড়ি ফিরে আসে। ভিকটিমের বাবাকে তারা জানায়, তার মেয়ে ঢাকায় একটি গার্মেন্টেসে চাকুরী করছে। অনেক টাকা বেতন পায়। অল্প সময়ের মধ্যে বাড়ি ফিরে আসবে। এ কথা বলে ভিকটিমের বাবার হাতে ১ হাজার টাকা ধরিয়ে দেয়। মেয়ে ফিরে না আসায় বাবা আসামিদের জিজ্ঞাসা করে। কিন্তু তাদের কথায় সন্দেহ হয় বাবার। পরবর্তীতে কয়েকজনকে নিয়ে আসামিদের বাড়িতে গেলে তারা স্বীকার করে যে তাকে চাকরী দেয়ার কথা বলে ঢাকায় না নিয়ে ভারতে বিক্রি করা হয়েছে। এ ব্যাপারে সোনাডাঙ্গা থানায় ভিকটিমের বাবা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন যার ন- ১০। ঘটনার দিন শিউলী বেগম ভিকটিমকে ভারতে পাচারের উদ্দেশ্যে আসামি আমিনের সহায়তায় বোম্বে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে ওই দু’ আসামি হাসিনার হেফাজতে রাখেন। পরবর্তীতে একটি বাসা ভাড়া করে শিউলী ও ভিকটিম একই স্থানে অবস্থান করে। পরে ওই তিনজন আসামি যোগসাজেশে তাকে আ: রব ওরফে রাহুলের কাছে বিক্রি করে দেন। পরে হাসিনা ভারত থেকে দেশে ফিরে আসে। সেখানে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর পূর্বক দেহ ব্যবসায়ে নিয়োজিত করে। পরে পুলিশের সহায়তায় ভিকটিমকে ভারতের বোম্বে থেকে উদ্ধার করা হয়। ২০১২ সালের ৫ মে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মুন্সি শফিকুল ইসলাম ৬জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন বিশেষ পিপি এডভোকেট ফরিদ আহমেদ।