৭ কোটি টাকা লোপাট: বোর্ড কর্মচারী আবদুস সালাম চাকরিচ্যুত

2
Spread the love

যশোর অফিস।।

যশোর শিক্ষাবোর্ডে চেক জালিয়াতির মাধ্যমে ৭ কোটি টাকা লোপাটের ঘটনায় পলাতক হিসাব সহকারী আবদুস সালামকে চাকরিচ্যুত করেছে কর্তৃপক্ষ। তদন্ত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার তাকে চূড়ান্তভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়।

মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড যশোরের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মো. আহসান হাবীব স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

জানা যায়, ২০২১ সালের ৭ অক্টোবর যশোর শিক্ষা বোর্ডের ৩৮টি চেকে জালিয়াতির মাধ্যমে লোপাট করা হয় ৭ কোটি টাকা। এই ঘটনার পর বোর্ড কর্তৃপক্ষ যশোর দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) লিখিত অভিযোগ করেন। তদন্তে নেমেই দুদক দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়ায় মামলা করেন।

এতে আসামি করা হয় ৫ জনকে। তারা হলেন, তৎকালীন শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মোল্লা আমীর হোসেন, সচিব অধ্যাপক এএমএইচ আলী আর রেজা, কর্মচারী আব্দুস সালাম, ভেনাস প্রিন্টিং এন্ড প্যাকেজিংয়ের মালিক রাজারহাট এলাকার বাসিন্দা আবদুল মজিদ আলীর ছেলে শরিফুল ইসলাম বাবু ও শেখহাটী জামরুলতলা এলাকার শাহীলাল স্টোরের মালিক মৃত সিদ্দিক আলী বিশ্বাসের ছেলে আশরাফুল আলম।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগ হন দুদকের তৎকালীন উপপরিচালক নাজমুচ্ছায়াদাত। মামলার কাজ যখন এগিয়ে যাচ্ছিল তখন (ডিসেম্বরে) তদন্তকারী কর্মকর্তা বদলি হন। নতুন উপপরিচালক হিসেবে মো. আল আমিন যোগদান করেন। বর্তমানে তিনি মামলাটির তদন্ত করছেন।

শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, গত ২২ ফেব্রুয়ারি বোর্ডের হিসাব সহকারী আবদুস সালামকে শোকজ করা হয়েছিল। ১০ কর্মদিবসে তাকে জবাব দিতে বলা হয়। গত ৫ মার্চ আবদুস সালাম শোকজ নোটিশ জবাবের সময় বৃদ্ধির আবেদন করেন। কিন্তু বোর্ড কর্তৃপক্ষ তাতে সাড়া না দেয়ায় ৯ মার্চ ডাকযোগে শোকজ নোটিশের জবাব পাঠানো হয়।

শোকজ নোটিশের জবাব পাওয়ার পর কর্মচারী সালামের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেয়া হবে সেজন্য তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। যার প্রধান ছিলেন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাধব চন্দ্র রুদ্র।

এই বিষয়ে অভিযুক্ত আবদুস সালামের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তবে অভিযুক্ত আবদুস সালামের ছোট ভাই শহিদুল ইসলাম জানান, আমরা শোকজ নোটিশের জবাব ডাকযোগে ও চেয়ারম্যান সাহেবের পিএর হাতে পৌঁছে দিয়েছিলাম। জবাবে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের কথা উল্লেখ করা হয়েছিল।

আত্মস্বীকৃত দুর্নীতিবাজ বোর্ড কর্মচারী আব্দুস সালাম ২০২১ সালের অক্টোবরে দুই দফায় প্রায় ৩১ লাখ টাকা ফেরত দেন। গত ৭ ফেব্রুয়ারি জেলা প্রশাসন ও দুদক কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে সালামের তালাবদ্ধ কক্ষটি খুলে দেয়। আলমারির তালা ভেঙ্গে পাওয়া যায় জাল চেক, সিল ও প্যাড।

যশোর শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক মাধব চন্দ্র রুদ্র জানান, গত ২৫ জুন আমরা চেয়ারম্যানের কাছে তদন্ত কমিটির রিপোর্ট পেশ করি। সেখানে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে আবদুস সালামের যোগসাজসে ৭ কোটি টাকা লোপাট করা হয়েছে। এছাড়া সে নিজেই আত্মস্বীকৃত দুর্নীতিবাজ।

বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মো. আহসান হাবীব জানান, তদন্ত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার আবদুস সালামকে চূড়ান্তভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।