স্টাফ রিপোর্টার।।
খুলনার রেলিগেট এলাকার ভৈরব নদীতে অবস্থিত একটি ফেরীঘাটের ইজারা নিয়ে মুখোমুখি হয়েছে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষ। যার ফলে সাধারণ ঠিকাদাররা এই ঘাটের শিডিউল কিনতে পারেনি। মাত্র দুটি শিডিউল জমা পড়েছে।
এরমধ্যে প্রভাবশালীরা ক্ষমতার দাপটে প্রতিপক্ষের উপস্থিতি ছাড়াই শিডিউল ওপেনিং করার অভিযোগ মিলেছে।
এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার সড়ক ও জনপদের খুলনা জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগ নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান হায়দার আলী মোড়ল। অভিযোগের অনুলিপি সড়ক ও জনপদ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, সচিব এবং প্রধান প্রকৌশলী বরাবার পাঠানো হয়েছে।
জানা যায়, খুলনা হইতে দিঘলিয়া (রেলিগেট)-আড়ুয়া-গাজীরহাট তেরখাদা সড়কের ১ কিলোমিটারে অবস্থিত নগরঘাটা ফেরীঘাট ইজারা কোটেশনের দরপত্র আহবান করা হয়। মেসার্স মো. হায়দার আলী মোড়ল এ বিজ্ঞপ্তির ইজারা কোটেশন অনুযায়ী ৪র্থ আহবানে সর্বোচ্চ দরদাতা হয়। যা গত ২৬ মে অনুমোদনের জন্য সওজের প্রধান প্রকৌশলী বরাবর পাঠানো হয়।
কিন্তু কোন কারণ ছাড়াই কর্তৃপক্ষ ৫ম বারের মত দরপত্র আহবান করেন। যার শিডিউল জমা দেওয়ার শেষ সময় ছিল গত ৬ জুলাই দুপুর ১টা এবং শিডিউল ওপেনিং ছিল দুপুর ৩টায়।
অভিযোগ পত্রে আরও উল্লেখ করা হয়, ইজারা কোটেশন প্রকাশ্যে দরদাতাদের সম্মুখে খোলার নিয়ম থাকলেও কর্তৃপক্ষ সেটা না মেনে ওইদিন সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত দরপত্র প্রকাশ্যে খোলেননি।
এমনকি গত ৭ জুলাই অবধি তাদের জানানো হয়নি। যেটা সম্পূর্ণ নিয়ম বর্হিভূত।
হায়দার আলী মোড়ল লিখিত অভিযোগে আরও উল্লেখ করেন একটি প্রভাবশালী মহলের প্রভাবে এসব কাজ করা হয়েছে।
দিঘলিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও দিঘলিয়া ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ফিরোজ মোল্যা বলেন, আওয়ামী লীগের কিছু লোক আছে যারা নিজেদের স্বার্থ উদ্ধারের জন্য ঘাটের টেন্ডারের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছে। গতবার তারা খুবই কম টাকায় ঘাটটি ক্ষমতা দেখিয়ে ইজারা নিয়েছিল। কিন্তু এবার সুষ্ঠুভাবেই সকল কর্মকাণ্ড সম্পাদন হয়েছে। আমি ফারদিন ষ্টোন বাজার নামে একটি লাইসেন্সে শিডিউল জমা দিয়েছি। শুনেছি সর্বোচ্চ দরদাতা হয়েছি। তবে অফিস থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে কিছুই জানাইনি।
খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য, দিঘলিয়ার ইউপি চেয়ারম্যান এবং মেসার্স মো. হায়দার আলী মোড়ল প্রতিষ্ঠানের মালিক হায়দার আলী মোড়ল বলেন, তিন বছর আগে আমি মাত্র ৫১ লাখ টাকায় ঘাটটি ইজারা নিয়েছিলাম। এবছর তিনগুণ ইজারামূল্য দেওয়া লাগছে। চারবার রি-টেন্ডার হয়েছে। প্রতিপক্ষ যারা তারা ক্ষমতার অপব্যবহার করছে। আমার লোকদের শিডিউল ওপেনিং করার সময় রাখা হয়নি। যা অন্যায় হয়েছে। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করেছি। আশাকরি কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা নিবেন।
আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের বিষয়ে তিনি বলেন, আগ্রহী দুইজনই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। তবে নিয়ম কানুন মেনে সকল কাজ করলে আমার আপত্তি থাকত না।
খুলনা সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আনিসুজ্জামান মাসুদ জানান, নিয়ম মেনে টেন্ডার ওপেন করা হয়েছে। ফারদিন ষ্টোন বাজার এবং মেসার্স মো. হায়দার আলী মোড়ল নামে দুটি টেন্ডার জমা পড়েছিল। যথাযথ নিয়ম মেনেই টেন্ডার ওপেন করা হয়। দরপত্র দুটিতে ১ কোটি ৫৬ থেকে ১ কোটি ৬৬ লাখ টাকার মধ্যে রয়েছে। মূল্যয়ন কমিটি সিদ্ধান্ত নিবে কারা ইজারা পাবে।
অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, অভিযোগ ঠিকাদাররা করতেই পারে।