মাগুরা প্রতিনিধি ।।
দুই বছর পর পরীক্ষা শুরু হলেও বৃহস্পতিবার প্রথম দিনেই মাগুরার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হয়। অনলাইনে সময়মতো প্রশ্নপত্র না পাওয়ায় সকাল ১০টার পরীক্ষা নিতে হয়েছে দেড় ঘণ্টা পরে।
স্থানীয় অভিভাবকদের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট শিক্ষকরা এ ঘটনার জন্যে যশোর শিক্ষা বোর্ডের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের অদূরদর্শিতা ও গাফিলতিকে দায়ী করলেও তারা এটিকে সার্ভারজনিত সমস্যা বলে দায়িত্ব এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।
তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, যশোর শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষ বোর্ডের অধীন মাগুরাসহ ১০ জেলার সকল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অষ্টম, নবম এবং দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের অভিন্ন প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেওয়ার উদ্যোগ নেয়। যেখানে বোর্ড কর্তৃপক্ষ পরীক্ষার আগে নির্দিষ্ট সার্ভারের মাধ্যমে ওই তিন শ্রেণির প্রশ্নপত্র সংযুক্ত করবেন। যেখান থেকে প্রশ্ন সংগ্রহের পর নিজ নিজ বিদ্যালয় শিক্ষার্থীর সংখ্যার ভিত্তিতে প্রশ্নপত্র প্রস্তুত করে পরীক্ষা গ্রহণ করবে। কিন্তু বৃহস্পতিবার প্রথম দিনের পরীক্ষা নিতে গিয়েই হোঁচট খেতে হয়েছে।
মাগুরার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার প্রথম দিনে সকাল ১০টা থেকে অষ্টম শ্রেণির ইংরেজি, নবম শ্রেণির গণিত এবং দশম শ্রেণির বাংলা প্রথমপত্র পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা। কিন্তু যশোর বোর্ডের নির্দিষ্ট সার্ভারে প্রশ্নপত্র পাওয়া গেছে সকাল ৯টা ৫০ মিনিটের দিকে।
এ অবস্থায় নির্দিষ্ট সময়ে পরীক্ষা নেওয়া কোনো বিদ্যালয়ের পক্ষেই সম্ভব হয়নি। বিধায় পরীক্ষার্থীদের বাইরে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়েছে। এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের সামনে উপস্থিত অভিভাবকরা ক্ষুব্ধতা প্রকাশ করে শিক্ষা বোর্ডের গাফিলতিকে দায়ী করেন।
মাগুরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জিয়াউল হাসান জানান, পরীক্ষাকে সামনে রেখে বিদ্যালয়ে নতুন ফটোকপি মেশিন কেনা হয়েছে। এছাড়াও একাধিক প্রিন্টার থাকলেও তিনটি শ্রেণির প্রশ্নপত্র ফটোকপি করতে শেষ পর্যন্ত বাইরে দোকানে যেতে হয়েছে। বিধায় ১০টার পরীক্ষা শেষ পর্যন্ত সাড়ে ১১টায় শুরু করতে হয়েছে।
এ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ইন্দ্রজিত বিশ্বাস বলেন, নবম ও দশম শ্রেণির প্রশ্ন দুই পাতার হলেও অষ্টম শ্রেণির প্রশ্ন হয়েছে তিন পাতার। এতে প্রশ্নপত্র প্রস্তুত করতে অধিক সময় ব্যয় হয়ে গেছে।
একই রকম ভোগান্তির খবর পাওয়া গেছে মাগুরা সরকারি বালিকা বিদ্যালয়, দুধ মল্লিক বালিকা বিদ্যালয়, এজি একাডেমি, ধলহরা চাঁদপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিদ্যালয়ে।
অপেক্ষাকৃত কম শিক্ষার্থীর বিদ্যালয়গুলোতে পরীক্ষা শুরু করতে আধঘণ্টা দেরি হলেও শহরের প্রায় সব বিদ্যালয়েই পরীক্ষা শুরু হয়েছে সাড়ে ১১টায়। পাশাপাশি যেসব বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় শিফটে দুপুর ২টায় পরীক্ষা হওয়ার কথা সেখানেও শুরু করতে বিলম্ব হয়েছে। এতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি অভিভাবকদেরও ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হয়।
তবে পরবর্তী পরীক্ষাতে এ সমস্যা থাকবে না বলে জানিয়েছেন যশোর শিক্ষা বোর্ডের নিয়ন্ত্রক মাধব চন্দ্র রুদ্র। তিনি বলেন, দুই বছর পর পরীক্ষা শুরু হলো। সার্ভারের ত্রুটি ছিল। যে কারণে প্রশ্নপত্র পেতে সমস্যা হয়েছে। তবে পরবর্তী পরীক্ষাগুলোতে এমন সমস্যা হবে না। একাধিক গেটওয়ে ব্যবহার করা হবে। সেক্ষেত্রে বেশ আগেই বিদ্যালয়গুলো তাদের প্রশ্নপত্র সংগ্রহ করতে পারবে।