স্টাফ রিপোর্টার।।
খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলায় ধান কাটা ও মাড়াই শেষ করেছেন কৃষকরা। তবে লটারি না হওয়ায় চলতি বোরো মৌসুমে সরকারিভাবে এখনও ধান সংগ্রহ অভিযান শুরু হয়নি।
উপজেলা কৃষি অফিস ও খাদ্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর বোরো মৌসুমে ডুমুরিয়া উপজেলায় ২২ হাজার হেক্টর জমিতে বিভিন্ন প্রজাতির ধান চাষ হয়েছে। সেখান থেকে এক লাখ ৩২ হাজার মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হয়। আর সেই ধান উৎপাদনকারী কৃষক যাতে ন্যায্যমূল্য পান, সে লক্ষ্যে সরকার অ্যাপের (লটারি) মাধ্যমে কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি ধান কিনে থাকে।
এ বছর সরকার এক হাজার ৮০ টাকা মণ দরে ডুমুরিয়া উপজেলা থেকে তিন হাজার ৯২ মেট্রিক টন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। সেই লক্ষ্যে গত ২৫ মার্চ থেকে ৭ মে পর্যন্ত ডুমুরিয়ার এক হাজার ৬৭৫ কৃষক উপজেলা ধান সংগ্রহ কমিটির কাছে অ্যাপের মাধ্যমে ধান বিক্রির জন্য আবেদন করেন। কিন্তু ৭ মে’র পর থেকে ১৭ মে পর্যন্ত কৃষকের কাছ থেকে ডুমুরিয়া খাদ্যগুদামে এক কেজি ধানও কেনা হয়নি।
ডুমুরিয়া এলাকার কৃষকরা জানান, এপ্রিলের শুরু থেকে মে মাসের প্রথম সপ্তাহেই তাদের ক্ষেতের বোরো ধান কাটা ও মলা-ডলা শেষ করেছেন। আর এলাকার দরিদ্র চাষিরা সাধারণত ধান কাটা শ্রমিকের মজুরি দিতে অনেক কষ্টের উৎপাদিত ধান মাঠ থেকেই বিভিন্ন ব্যাপারীর কাছে কম দামে বিক্রি করতে বাধ্য হন। আর যে চাষিরা আবেদন করেছেন, লটারি না হওয়ায় তারা হতাশ।
বলাবুনিয়া বিলের কৃষক জয়ন্ত মৈত্র বলেন, ‘সরকারের গুদামে বিক্রির কোনও ব্যবস্থা না হওয়ায় ১২ দিন আগে আমি ক্ষেত থেকে ৩০০ মণ ধান বিক্রি করে দিয়েছি।’
ডুমুরিয়া বিলের কৃষক মোশাররফ হোসেন কচি বলেন, ‘এলাকায় ধান কাটা শেষ হলেও ডুমুরিয়ার কর্মকর্তারা লটারি না করায় সরকারের ঘরে ধান বিক্রির সুযোগ পেলাম না। আর অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধিত অনেক কৃষকই নিজে ধান না দিয়ে বেপারীর কাছে টিকিট বিক্রি করে দেন। এটা বন্ধ করা জরুরি।’
ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোছাদ্দেক হোসেন বলেন, ‘ধান কেনার বিষয়টি উপজেলা খাদ্য অফিস থেকেই তদারকি করা হয়। তবে শুনেছি লটারি হয়নি বলে এখনও ধান কেনা শুরু হয়নি।’
ডুমুরিয়া উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম বলেন, ‘উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) মাধ্যমে লটারি হওয়ার কথা ছিল। তাই গত ৭ মে থেকে ওই দফতরে অনুষ্ঠানের চেষ্টা করছি। কিন্তু ইউএনও বদলি হওয়ায় মঙ্গলবারও সেই লটারি অনুষ্ঠিত হয়নি। তাই কোনও ধান কেনাও সম্ভব হয়নি। নতুন ইউএনও যোগদান করেছেন। বুধবার লটারি হওয়া ও অ্যাপের মাধ্যমে ধান সংগ্রহ শুরু করা সম্ভব হতে পারে।’