অর্জুন বিশ্বাস, গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি ।।
গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে বাস-প্রাইভেটকার-মোটরসাইকেল ও থান মাড়াইকলের মধ্যে ত্রিমুখি সংঘর্ষে এক পরিবারের তিনজন, অন্য এক পরিবারের স্বামী-স্ত্রীসহ ৯ জন নিহত ও ২৫ যাত্রী আহত হয়েছেন। নিহতরা হলো -কাশিয়ানী উপজেলার ফুকরা গ্রামের রুমা বেগম, তার স্বামী ফিরোজ মোল্লা, অনিক মিয়া, জেসমিন আক্তার, গোপালগঞ্জ শহরের ডাঃ বাসুদেব সাহা,তার স্ত্রী শিবানী সাহা, ছেলে স্বপ্নীল সাহা ও প্রাইভেট চালক ঢাকার আদাবর থানার দোয়ারী এলাকার আঃ রশিদ মিয়ার ছেলে মোঃ আজিজ মিয়া।
আজ শনিবার বেলা ১১ টার দিকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের কাশিয়ানী উপজেলার দক্ষিন ফুকরা নামক স্থানে এ দুর্ঘটনা ঘটে। গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা ও পুলিশ সুপার আয়েশা সিদ্দীকা দূর্ঘটনাস্থল ও হাসপাতাল পরিদর্শন করে নিহত ও আহতদের খোজখবর নিয়েছেন।
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাজিব পরিবহন নামে একটি বাস বরগুনার পাথরঘাটা থেকে ঢাকা যাচ্ছিল। এ সময় কাশিয়ানী উপজেলার দক্ষিন ফুকরা এলাকায় ঢাকা থেকে গোপালগঞ্জগামী একটি প্রাইভেটকার ( ঢাকা মেট্রো-গ ৩৩-২৫০০), মোটর সাইকেল ও ধান মাড়াইকলের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে ধান মাড়াইকলসহ তিনটি বাহনই দুমড়ে মুচড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই ৭ জন নিহত হয়। এরপর নিহত ও আহতদের উদ্ধার করে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পর সেখানে দুইজনের মুত্যু ঘটে।গুরুতর আহত কলি খানম, দিদার শরীফ, বদর মিয়া, সোবাহান, বায়েজীদ, আর্জু বেগম, কালাম মিয়া, মাহফুজ, কামরুল, ফারুক, মাসুম মোল্লা, হীরা, হাওয়া বেগম, হোসাইন, আঃ রহমান, জোহরা, এসমোতারা, আলিফ, সিফাতকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে দু’জনের অবস্থা আশংকাজনক বলে চিকিতসক জানিয়েছেন।
স্থানীয়রা আরো জানায়, প্রথমে ধানমাড়াইকলের স্থানে ঢাকাগামী প্রাইভেট কারের গোপালগঞ্জগামী মোটর-সাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। একই সময়ে পেছন থেকে আসা রাজীব পরিবহন ওই প্রাইভেট কার ও মাড়াইকলের সাথে লেগে নিয়ন্ত্রন হারিয়ে খাদে পড়ে সবগুলি বাহন দুমড়ে মুচড়ে হতাহতের ঘটনা ঘটে।
জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা বলেছেন, মহাসড়কে ধান মাড়াই ও দ্রুত গতির কারনে এই দূর্ঘটনা ঘটেছে। দূর্ঘটনার সংবাদ পেয়ে ফায়ার-সার্ভিস, পুলিশ, জেলা প্রশাসন ও স্থানীয়রা দূর্ঘটনায় নিহত ও আহতদের উদ্ধার করে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়। আমি দূর্ঘটনাস্থল ও হাসপাতালে গিয়ে নিহত ও আহতদের খোজখবর নিয়েছি। আহতদের সঠিক চিকিতসা দেওয়ার জন্য চিকিতসকদের নির্দেশ দিয়েছি। নিহতদের পরিবার প্রতি ১০ হাজার টাকা ও আহতদের প্রত্যেককে চিকিতসার জন্য ৫ হাজার টাকা করে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দিব। মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে, মহাসড়ক যান চলাচলের জন্য সম্পুর্ন নিরাপদ করতে জরুরী উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে।
নিহতদের পরিচয় সনাক্তের পর তাদের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হচ্ছে।