স্টাফ রিপোটার,বাগেরহাট।।
সুন্দরবনে চিংড়ি মাছ ধরতে গিয়ে বিভিন্ন প্রকারের কোটি কোটি মাছের পোনা নিধন করা হচ্ছে। বঙ্গোপসাগর থেকে বয়ে আসা নদীর মোহনায় সূক্ষ্ম ফাঁসের শত শত ওই জাল পেতে চলে এ নিধনযজ্ঞ। ফলে সুন্দরবনসহ উপকূলীয় নদ-নদীতে ক্রমান্বয়ে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে।
জেলেরা জানায়, বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন সুন্দরবনের বলেশ্বর নদের শুকপাড়া, ডিমের চরের বাইর পাশ থেকে বাদামতলা পর্যন্ত, কটকা ও দুধমুখী নদীর মোহনা, ছাপড়াখালী ও শেলা নদীর মোহনা, দুবলার চরের বিভিন্ন নদী খালের মোহনায় চিংড়ি ধরার জন্য সূক্ষ্ম ফাঁসের ওই বাঁধাজাল পাতা হয়। প্রতিগোনে (আময়বশ্বা ও পূর্ণিমার সময় ৭ দিন করে) নির্দিষ্ট হারে জেলে নৌকা প্রতি জ্ঞানপাড়া, কচিখালী, কটকা, কোকিলমনি, শেলা ও দুবলার বন অফিসে উৎকোচ দিয়ে এ জাল পাততে হয়।
প্রতি বছরের চৈত্র থেকে আষাঢ় মাস পর্যন্ত নিষিদ্ধ এ জাল দিয়ে তারা কোটি কোটি মাছের পোনা ধ্বংস করে চলছে। জেলেদের জালে এক কেজি চিংড়ি মাছ ধরতে যেয়ে বিভিন্ন প্রজাতির কমপক্ষে এক মণ মাছের পোনা মারা পড়ছে। এর মধ্যে রয়েছে ইলিশ, কোরাল, বোয়াল, দাতনে, আইড়, তাড়িয়াল, তপশে, পোয়া, টেংড়া, কাইন ও কাঁকড়া, কচ্ছপ, হাঙ্গরসহ শত শত প্রজাতির মাছের পোনা। জেলেরা শুধু চিংড়ি মাছ সংগ্রহ করে অন্যসব মাছের মারা যাওয়া পোনা পানিতেই ফেলে দেয়। ফলে অন্য জেলেরা সুন্দরবনসহ উপকূলের নদ-নদীতে আর তেমন মাছ পাচ্ছেন না। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সহ-সভাপতি সাইফুল ইসলাম খোকন জানান, নিষিদ্ধ ওই বাঁধা জালে সাগরের সব ধরনের মাছের পোনা মারা পড়ছে। এভাবে চলতে থাকলে অচিরেই সুন্দরবনসহ উপকূলীয় নদ নদীতে কোনো মাছ পাওয়া যাবে না।
শরণখোলা উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা বিনয় কুমার রায় বলেন, বঙ্গোপসাগর থেকে বয়ে আসা নদীর মোহনায় এ ধরনের সূক্ষ্ম ফাঁসের জাল পাতার কারণে ইলিশসহ সব ধরনের মাছের পোনা নিধন হচ্ছে। তাই ওই জাল বন্ধের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে বন বিভাগকে জানানো হবে।
বন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জ কর্মকর্তা (এসিএফ) মো. শহিদুল ইসলাম জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে এ ধরনের জাল পাতা হলে তা বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।