খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইনের অধ্যাপকের বেআইনি নিয়োগ!

2
Spread the love

স্টাফ রিপোর্টার।।

আইন না মেনে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) আইন ডিসিপ্লিনে (বিভাগে) অধ্যাপক পদে একজনকে নিয়োগ দেওয়ার বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। বর্তমানে তিনি ওই বিভাগের একমাত্র অধ্যাপক।

আলোচিত ওই শিক্ষকের নাম ড. ওয়ালিউল হাসনাত। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, নিয়োগ দেওয়ার সময় প্রয়োজনীয় যোগ্যতা তার ছিল না। যদিও পাঁচ বছর আগে নিয়োগ পাওয়া ওই অধ্যাপক এরই মধ্যে অনুষদের ডিন, ডিসিপ্লিন প্রধান, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের সভাপতি হয়েছেন।

শিক্ষকদের একাংশ ড. ওয়ালিউল হাসনাতের বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ দায়ের করেছে। দুদক বিষয়টি তদন্তের জন্য ইউজিসিতে পত্র দেয়। ইউজিসি দুদকের পত্রের পরিপ্রেক্ষিতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে সাত দিনের মধ্যে জবাব সংবলিত প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেয়। ৭ এপ্রিল এই সাত দিন শেষ হয়েছে। প্রতিবেদনে নিয়োগকালীন ওই শিক্ষকের কাম্য যোগ্যতা না থাকার বিষয়টি স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে বলে প্রশাসনের একাধিক সূত্রে জানা গেছে। তবে ড. ওয়ালিউল হাসনাত তার সহকর্মীদের করা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

জানা গেছে, ড. ওয়ালিউল হাসনাত খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক পদে ২০১৭ সালের ১ জানুয়ারি নিয়োগ পান। অধ্যাপক পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে অন্যান্য সব যোগ্যতা ও শর্তের সঙ্গে ‘সহযোগী অধ্যাপক পদে কমপক্ষে চার বছরের বাস্তব শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা’ থাকা বাধ্যতামূলক। কিন্তু ড. ওয়ালিউল হাসনাতকে সরাসরি অধ্যাপক পদে নিয়োগ দেওয়ার সময় তা মানা হয়নি। তার নিজ হাতে লেখা অধ্যাপক পদের আবেদনপত্রে দেখা যায়, সহযোগী অধ্যাপক পদে তার বাস্তব অভিজ্ঞতা তিন বছর ৬ মাস ৭ দিন। কিন্তু তার লিয়েন কার্যকাল ১০ মাস ১৪ দিনকে অভিজ্ঞতা হিসেবে দেখিয়ে সহযোগী অধ্যাপক পদে অভিজ্ঞতা চার বছর ৪ মাস ২১ দিন দেখিয়ে অধ্যাপক পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। এটি বেআইনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ড. ওয়ালিউল হাসনাত বলেন, দুদক ও ইউজিসির তদন্ত সম্পর্কে তিনি অবহিত। এটা রাজনৈতিকভাবে তাকে হেয় করতে কেউ কেউ অভিযোগ করেছেন।
তার ভাষ্য, ‘নিয়োগকালীন পুরো যোগ্যতা আমার ছিল। আমি শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের দায়িত্বে ছিলাম। ঈর্ষান্বিত হয়ে কেউ এসব করছে।’

এ নিয়ে জানতে চাইলে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহমুদ হোসেন  বলেন, ‘ইউজিসি থেকে সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য পত্র দেওয়া হয়েছিল। আমরা প্রতিবেদন দিয়েছি।’ ‘তার নিয়োগ বৈধ ছিল কিনা’- প্রশ্নের জবাবে উপাচার্য বলেন, এটা এভাবে আমি জবাব দেব না। বিশ্ববিদ্যালয়ে নানা পক্ষ থাকে, আমি জবাব দিলে এ নিয়ে তারা নানা সুযোগ নেবে।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তর থেকে জানা গেছে, ইউজিসিতে পাঠানো প্রতিবেদনে ড. ওয়ালিউল হাসনাতের নিয়োগকালীন ‘বাস্তব শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা’ কম থাকার বিষয়টি স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে।