নড়াইল কণ্ঠ’র সম্পাদকসহ ৫ জনের নামে ডিজিটাল আইনে মামলা

6
Spread the love

 

 

 

মোঃ তাহের আলী, নড়াইল ।।

নড়াইলের সাপ্তাহিক ও অনলাইন সংস্করণ নড়াইল’কণ্ঠ পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক কাজী হাফিজুর রহমানসহ ৫ জনের নামে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত বুধবার (২৩ মার্চ ) নড়াইল

পৌরসভার বিসিআইসির সার ডিলার মোঃ হাসানুজ্জামান বাদী হয়ে খুলনা বিভাগীয় ট্রাইবুন্যাল এ মামলা দায়ের করেন। “ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন” মামলার অন্য আসামীরা হলেন কাজী আনিচ, নড়াইল পৌরসভার উজিপুরের কৃষক আলী মোহাম্মদ মন্ডল, কুড়িগ্রামের শাহেদ আলী শান্ত ও নড়াইল গ্রামের বাকিউল আজম। মামলার বাদী হাসানুজ্জামান মামলায় আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন, যেহেতু তিনি (হাসানুজ্জামান) নড়াইল জেলার সারের

ডিলারদের প্রতিনিধি হওয়ার সুবাদে আসামীগণ বাদীর নিকট বিভিন্ন সময়ে বাদীকে নড়াইল জেলার ডিলারদের নিকট হইতে ১,০০,০০০/- (এক লক্ষ) টাকা আদায় করে দিতে বলে। বাদী ডিলারদের কাছ থেকে টাকা আদায় করে দেওয়া যাইবে না বলায় উল্লখিত ১, ২ নং আসামী বাদীকে হুমকী দেয় যে, কয়েক দিনের মধ্যে দেখা হবে। গত ইং ১৭/২/২২ তারিখে সকাল অনুমান ১০:৩০ ঘটিকার সময় উল্লেখিত ১, ২ নং আসামীদের ইন্দনে ৩ নং আসামী বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বি.এন.পি) এর নড়াইল পৌর শাখার ৮ নং ওয়ার্ডের সহ সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী মোন্ডলকে কৃষক সাজাইয়া বাদীর রূপগঞ্জ বাজার সারের দোকানে পাঠাইয়া বাদীর কর্মচারী হিরামনকে এক বস্তা সার দিতে বলে। মামলায় বাদী এজাহারে বলেন, বাদীর কর্মচারী সরকার নির্ধারিত মূল্যে উক্ত আলী মোহাম্মদ মোল্ডলকে এক বস্তা এমওপি সার দেয়। কিছুক্ষণ পর উল্লেখিত আসামীগণ দূরে দাঁড়াইয়া উল্লেখিত আলী মোহাম্মদ মন্ডলকে পুনরায় সার কিনতে বাদীর দোকানে পাঠাইলে আলী মোল্ডল বাদীর কর্মচারীর নিকট পুনরায় এক বস্তা এমওপি সার চায়। তখন বাদীর

কর্মচারী উল্লেখিত ব্যক্তিকে বলে যে, ১০ মিনিট পূর্বে আপনি এক বস্তা এমওপি সার নিয়ে গেলেন আবার সার কেন ? এমওপি এক বস্তা পুনরায় নিতে হলে সংগে এক বস্তা ড্যাপ সার নিতে হবে। তখন উক্ত ব্যক্তি বাদীর কর্মচারীকে বলে যে, শালা মালাউনের বাচ্ছা এমওপি এক বস্তা সার

না দিলে তোকে খুন করবো এবং বাদীর কর্মচারীরকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করিতে থাকে। তখন বাদীর কর্মচারী সারক্রেতা মোহাম্মদ

আলী মন্ডলকে গালি দিতে নিষেধ করিলে উক্ত ক্রেতা তাকে মারতে গেলে বাদীর কর্মচারী হিরামন উল্লেখিত ক্রেতাকে টানিতে টানিতে বাজারের দিকে আনতে গেলে রূপগঞ্জ বাজারের উপস্তিত ব্যবসায়ীগণ বাদীর অগোচরে বিষয়টি মিমাংসা করে দেয়। মামলায় বলা হয়, উক্ত ঘটনার সূত্র ধরে এবং উল্লেখিত ১,২ নং আসামীগণ বাদীর কাছ থেকে অনৈতিকভাবে টাকা আদায় করিতে না পারিয়া কিছু সখ্যক নড়াইলের স্থানীয় বিএনপি নেতাদের পরামর্শ মত বর্তমান সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার উদ্দেশ্যে এবং বাদীকে সমাজে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য ইচ্ছাকৃতভাবে, জ্ঞাতসারে অপদস্ত করার জন্য,

ভীতি প্রদর্শনের জন্য বাদীর সারের ডিলারশীপ বাতিল করার কু-উদ্দেশ্যে প্রকৃত সত্য ঘটনাকে আড়াল করে সম্পূর্ণ ইচ্ছাকৃতভাবে বাদীর মান

সম্মান ক্ষুন্ন করার অভিপ্রায়ে মিথ্যা কাহিনী অবলম্বনে বাদীর বিরুদ্ধে মানব বন্ধন সহ আসামীদের সরবরাহকৃত মিথ্যা তথ্য দিয়া সাংবাদিক সম্মেলন করেন। ১নং আসামীর “নড়াইল কণ্ঠ” নিউজ নিজ নামীয় ফেসবুক আইডি থেকে গত ইং ১/২/২২ তারিখ হইতে বাদীর বিরুদ্ধে ধারাবাহিকভাবে অসত্য তথ্য ইলেকট্রনিক বিন্যাসে করিয়া বাদীর এক কোটি টাকার মান সম্মান ক্ষুন্ন করেছে বলে দাবি করেন। আসামী কর্তৃক পরস্পর যোগসাজসে বাদীর বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য প্রচার করে বাদী সমাজে হেয় প্রতিপন্ন হইয়াছে। তাহাছাড়া বাদীর

বিরুদ্ধে প্রশাসনিক তদন্তে আসামিদের প্রচারিত তথ্য মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। সার ক্রেতা আলী মোল্ডল কোনো কৃষক নহে, তৎসত্তেও তিনি

সাংবাদিকদের ইন্দনে বিবৃত্তি দিয়াছে। শুধুমাত্র উল্লেখিত আসামীগণ ও বিএনপি নেতাদের মদদে সরকারের ভাবমূর্তি ও বাদীর মানসম্মান ভূলুষ্ঠিত করিবার কুমানসে ও উল্লখিত আসামীদের দাবীকৃত টাকা বাদী না দেয়ায় ইচ্ছাকৃতভাবে বাদীর বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য প্রচার

করে অপরাধ করিয়াছেন। এই ঘটনা স্থানীয় সাক্ষীগণ সহ অনেকেই জ্ঞাত আছে। বাদী উল্লেখিত ঘটনায় নড়াইল সদর থানায় ইং ২৪/০২/২০২২ তারিখে  মামলা করিতে গেলে থানা কর্তৃপক্ষে কয়েকদিন ঘুরাইয়া অবশেষে

মামলা গ্রহণ না করে বিজ্ঞ আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেন। সে কারণে হুজুরাদালতে মামলা করিতে বিলস্ব হইল বলেও অভিযোগ করে এজাহারে। উল্লেখ্য, কৃষক আলী মোহাম্মদ মন্ডল সার কিনতে গেলে দোকানের ম্যানেজার হিরামন তাকে ঘাড়ধাক্কাতে ধাক্কাতে বাজারের মধ্যে নিয়ে যায় এবং হাসানুজ্জামান তাকে গালাগালি ও কিলঘুষি মারার ঘটনার প্রতিবাদ ও হাসানের সারের ডিলারশীপ বাতিলের দাবীতে কৃষক লীগের মানববন্ধন করে। এ কর্মসূচির ওপর একটি দৈনিক পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর কৃষিমন্ত্রণালয় হতে সরেজমিনে তদন্ত করার জন্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব রবীন্দ্রশ্রী বড়ুয়াকে দিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।