চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি।।
চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদায় শাশুড়ি-পুত্রবধূকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে পুলিশের দুই সদস্যের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় অপমানে ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন ওই পুত্রবধূ। ঘরের দরজা ভেঙে তাকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে দামুড়হুদা উপজেলার পুরাতন বাস্তবপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। মারধরে আহতরা হলেন- পুরাতন বাস্তবপুর গ্রামের শওকত আলীর স্ত্রী সোহানা বেগম (৩৬) ও তার পুত্রবধূ মেহরিমা ইসলাম স্নেহা (১৬)।
মেহরিমা ইসলাম স্নেহা বলেন, গত বছরের ৪ জুলাই পুরাতন বাস্তবপুর গ্রামের শওকত আলীর ছেলে জিহাদের (২২) সঙ্গে ঢাকার আদাবর এলাকার একটি কাজি অফিসে আমরা বিয়ে করি। ওই সময় আমার মা ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। বিয়ের পর থেকে আমি শ্বশুরবাড়িতেই থাকি। কয়েক দিন আগে আমাকে আটকে রেখেছে বলে দামুড়হুদা মডেল থানায় একটি অভিযোগ করেন আমার নানি। মঙ্গলবার দুপুরে আমি ও আমার শাশুড়ি ঘরে টেলিভিশন দেখছিলাম। এ সময় দামুড়হুদা মডেল থানার এক নারী কনস্টেবলসহ তিন-চারজন পুলিশ সদস্য আসেন। কিছু বুঝে ওঠার আগেই এক নারী ও এক পুরুষ পুলিশ সদস্য আমার শাশুড়িকে চুলের মুঠি ধরে মারধর করে মাটিতে ফেলে দেন। এ সময় আমাকে জোর করে নিয়ে যেতে চাইলে আমি রাজি হইনি। আমাকেও মারধর করে তারা।
মেহরিমার স্বামী জিহাদ আলী বলেন, আমার স্ত্রী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালালে প্রতিবেশী ও ওই পুলিশ সদস্য দরজা ভেঙে তাকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে। আমার স্ত্রী দামুড়হুদা উপজেলার কোষাঘাটা গ্রামে নানির বাড়িতে থাকতো। বিয়ের পর আমার বাড়িতে সংসার করছে।
জিহাদ আলী বলেন, অভিযোগ যতই থাকুক, তারা আমার মা ও স্ত্রীকে মারধর কেন করলো? তারা বললে আমরা থানায় যেতাম।
সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, মেহরিমা ইসলাম স্নেহা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। তিনি শঙ্কামুক্ত কিনা এখনই বলা যাচ্ছে না। তাকে অক্সিজেন দিয়ে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
দামুড়হুদা মডেল থানা সূত্রে জানা গেছে, আহত মেহরিমা ইসলাম স্নেহার নানি নয়ন তারা সম্প্রতি দামুড়হুদা মডেল থানায় তার নাতনিকে জোর কেরে আটকে রেখেছে বলে একটি অভিযোগ দেন। এর পরিপেক্ষিতে মঙ্গলবার মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রাজিব, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) ইখলাসসহ মহিলা পুলিশ সদস্যরা মেহরিমাকে উদ্ধার করতে যান।
দামুড়হুদা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস ওয়াহিদ জাগো নিউজকে বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ নাবালিকা ওই মেয়েকে উদ্ধার করতে গিয়েছিলো। এ সময় ওই বাড়ির লোকজন উদ্ধারকাজে বাধা সৃষ্টি করে। তবে মারামারির কোনো ঘটনা ঘটেনি।
সহকারী পুলিশ সুপার (দামুড়হুদা সার্কেল) মুন্না বিশ্বাস বলেন, ভুক্তভোগীকে উদ্ধারে গিয়ে এক নারী কনস্টেবল তাদের মারধর করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে জেনেছি। তদন্ত করে বিস্তারিত জানাতে পারবো।